Surah Al Ma'idah Tafseer

Surah
Juz
Page
1
Al-Fatihah
The Opener
001
2
Al-Baqarah
The Cow
002
3
Ali 'Imran
Family of Imran
003
4
An-Nisa
The Women
004
5
Al-Ma'idah
The Table Spread
005
6
Al-An'am
The Cattle
006
7
Al-A'raf
The Heights
007
8
Al-Anfal
The Spoils of War
008
9
At-Tawbah
The Repentance
009
10
Yunus
Jonah
010
11
Hud
Hud
011
12
Yusuf
Joseph
012
13
Ar-Ra'd
The Thunder
013
14
Ibrahim
Abraham
014
15
Al-Hijr
The Rocky Tract
015
16
An-Nahl
The Bee
016
17
Al-Isra
The Night Journey
017
18
Al-Kahf
The Cave
018
19
Maryam
Mary
019
20
Taha
Ta-Ha
020
21
Al-Anbya
The Prophets
021
22
Al-Hajj
The Pilgrimage
022
23
Al-Mu'minun
The Believers
023
24
An-Nur
The Light
024
25
Al-Furqan
The Criterion
025
26
Ash-Shu'ara
The Poets
026
27
An-Naml
The Ant
027
28
Al-Qasas
The Stories
028
29
Al-'Ankabut
The Spider
029
30
Ar-Rum
The Romans
030
31
Luqman
Luqman
031
32
As-Sajdah
The Prostration
032
33
Al-Ahzab
The Combined Forces
033
34
Saba
Sheba
034
35
Fatir
Originator
035
36
Ya-Sin
Ya Sin
036
37
As-Saffat
Those who set the Ranks
037
38
Sad
The Letter "Saad"
038
39
Az-Zumar
The Troops
039
40
Ghafir
The Forgiver
040
41
Fussilat
Explained in Detail
041
42
Ash-Shuraa
The Consultation
042
43
Az-Zukhruf
The Ornaments of Gold
043
44
Ad-Dukhan
The Smoke
044
45
Al-Jathiyah
The Crouching
045
46
Al-Ahqaf
The Wind-Curved Sandhills
046
47
Muhammad
Muhammad
047
48
Al-Fath
The Victory
048
49
Al-Hujurat
The Rooms
049
50
Qaf
The Letter "Qaf"
050
51
Adh-Dhariyat
The Winnowing Winds
051
52
At-Tur
The Mount
052
53
An-Najm
The Star
053
54
Al-Qamar
The Moon
054
55
Ar-Rahman
The Beneficent
055
56
Al-Waqi'ah
The Inevitable
056
57
Al-Hadid
The Iron
057
58
Al-Mujadila
The Pleading Woman
058
59
Al-Hashr
The Exile
059
60
Al-Mumtahanah
She that is to be examined
060
61
As-Saf
The Ranks
061
62
Al-Jumu'ah
The Congregation, Friday
062
63
Al-Munafiqun
The Hypocrites
063
64
At-Taghabun
The Mutual Disillusion
064
65
At-Talaq
The Divorce
065
66
At-Tahrim
The Prohibition
066
67
Al-Mulk
The Sovereignty
067
68
Al-Qalam
The Pen
068
69
Al-Haqqah
The Reality
069
70
Al-Ma'arij
The Ascending Stairways
070
71
Nuh
Noah
071
72
Al-Jinn
The Jinn
072
73
Al-Muzzammil
The Enshrouded One
073
74
Al-Muddaththir
The Cloaked One
074
75
Al-Qiyamah
The Resurrection
075
76
Al-Insan
The Man
076
77
Al-Mursalat
The Emissaries
077
78
An-Naba
The Tidings
078
79
An-Nazi'at
Those who drag forth
079
80
Abasa
He Frowned
080
81
At-Takwir
The Overthrowing
081
82
Al-Infitar
The Cleaving
082
83
Al-Mutaffifin
The Defrauding
083
84
Al-Inshiqaq
The Sundering
084
85
Al-Buruj
The Mansions of the Stars
085
86
At-Tariq
The Nightcommer
086
87
Al-A'la
The Most High
087
88
Al-Ghashiyah
The Overwhelming
088
89
Al-Fajr
The Dawn
089
90
Al-Balad
The City
090
91
Ash-Shams
The Sun
091
92
Al-Layl
The Night
092
93
Ad-Duhaa
The Morning Hours
093
94
Ash-Sharh
The Relief
094
95
At-Tin
The Fig
095
96
Al-'Alaq
The Clot
096
97
Al-Qadr
The Power
097
98
Al-Bayyinah
The Clear Proof
098
99
Az-Zalzalah
The Earthquake
099
100
Al-'Adiyat
The Courser
100
101
Al-Qari'ah
The Calamity
101
102
At-Takathur
The Rivalry in world increase
102
103
Al-'Asr
The Declining Day
103
104
Al-Humazah
The Traducer
104
105
Al-Fil
The Elephant
105
106
Quraysh
Quraysh
106
107
Al-Ma'un
The Small kindnesses
107
108
Al-Kawthar
The Abundance
108
109
Al-Kafirun
The Disbelievers
109
110
An-Nasr
The Divine Support
110
111
Al-Masad
The Palm Fiber
111
112
Al-Ikhlas
The Sincerity
112
113
Al-Falaq
The Daybreak
113
114
An-Nas
Mankind
114

Al-Ma'idah : 1

5:1
يَٰٓأَيُّهَاٱلَّذِينَءَامَنُوٓا۟أَوْفُوا۟بِٱلْعُقُودِأُحِلَّتْلَكُمبَهِيمَةُٱلْأَنْعَٰمِإِلَّامَايُتْلَىٰعَلَيْكُمْغَيْرَمُحِلِّىٱلصَّيْدِوَأَنتُمْحُرُمٌإِنَّٱللَّهَيَحْكُمُمَايُرِيدُ ١

Saheeh International

O you who have believed, fulfill [all] contracts. Lawful for you are the animals of grazing livestock except for that which is recited to you [in this Qur'an] - hunting not being permitted while you are in the state of ihram. Indeed, Allah ordains what He intends.

Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল একটি হাদীসের উল্লেখ করে বলেছেন যে, আসমা বিনতে ইয়াযীদ বর্ণনা করেছেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আযরা নাম্নী উন্ত্রীর লাগাম ধারণ করেছিলাম। তখন হঠাৎ তার উপর সম্পূর্ণ সূরা মায়িদাহ্অবতীর্ণ হয়। এ সূরার ভারে তখন উন্ত্রীর পায়ের উপরিভাগ ভেঙ্গে চুরমার হবার উপক্রম হয়। আসেম আল আইওয়াল বর্ণনা করেন যে, আমর তাঁর চাচার নিকট থেকে তাঁর নিকট একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তাঁর চাচা একদা রাসূলল্লাহ (সঃ)-এর সাথে এক সফরে ছিলেন। সে সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর সূরা মায়িদাহ অবতীর্ণ হয়। সূরা মায়িদাহর। ভারে তাঁর বাহনের ঘাড় ভেঙ্গে চুরমার হবার উপক্রম হয়। আবার আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলে কারীম (সঃ) যখন তাঁর বাহনের উপর উপবিষ্ট ছিলেন তখন তার উপর সূরা মায়িদাহ্ অবতীর্ণ হয়, এর ফলে বাহনটি তাকে বহন করতে অসমর্থ হয়ে পড়ে। তখন তিনি তাঁর বাহন হতে অবতরণ করেন। এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল একাই বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে একটু অন্যভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর অবতীর্ণ সূরাগুলোর মধ্যে সূরা মায়িদাহ' ও সূরা আল-ফাতহ সর্বশেষ সূরা। এরপর ইমাম তিরমিযী (রঃ) এ হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, হাদীসের সংজ্ঞানুযায়ী এটা একটা গারীব’ ও ‘হাসান হাদীস। তিনি ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর অবতীর্ণ সর্বশেষ সূরা হলোঃ (আরবী) (১১০:১)

হাকিম তার মুসতাদরিক’ গ্রন্থে তিরমিযীর বর্ণনার ন্যায় আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাবের সনদের মাধ্যমে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, এটা ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) কর্তৃক আরোপিত শর্তানুযায়ী একটি সহীহ হাদীস। কিন্তু ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) কেউই এ হাদীসটিকে তাদের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেননি। হাকিম আরও বর্ণনা করেন যে, যুবাইর ইবনে নুফাইর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, আমি একদা হজ্বে গমন করি। এরপর আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর সাথে দেখা করি। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “হে যুবাইর (রাঃ)! তুমি কি সূরা মায়িদাহ্ পড়?' আমি উত্তরে বললামঃ হ্যা। তখন তিনি বললেনঃ “এটাই রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর অবতীর্ণ শেষ সূরা। সুতরাং তোমরা তার মাধ্যমে যেসব বিষয় বৈধ হিসেবে পাও সেগুলোকে বৈধ হিসেবে গ্রহণ কর। আর যেগুলোকে অবৈধ হিসেবে পাও সেগুলোকে অবৈধ হিসেবে গ্রহণ কর।” অতঃপর হাকিম এ হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, এটা ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) কর্তৃক আরোপিত শর্তানুযায়ী একটি সহীহ হাদীস। কিন্তু হাদীসটিকে তারা তাদের গ্রন্থে স্থান দেননি।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল আবদুর রহমান ইবনে মাহদীর সনদের মাধ্যমে মুআবিয়া ইবনে সালেহ হতে উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং কিছু বেশী অংশ যোগ করেন। এ বেশী অংশটুকু নিম্নরূপঃ

যুবাইর ইবনে নুফাইর (রাঃ) বলেনঃ “আমি একদা হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তখন তিনি বলেন যে, পবিত্র কুরআনই তাঁর চরিত্র।” ইমাম নাসাঈও (রঃ) এ হাদীসটিকে আবদুর রহমান ইবনে মাহ্দীর সনদের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন।

১-২ নং আয়াতের তাফসীর:

মা'আন অথবা আউফ হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর নিকট আগমন করেন এবং তাঁকে কিছু উপদেশ দিতে অনুরোধ করেন। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ “যখন তুমি (আরবী) কথাটি শ্রবণ কর তখন তার জন্যে তোমার কানকে সতর্ক করে দিও। কারণ, হয়তো তা দ্বারা আল্লাহ তা'আলা মুমিনদেরকে কোন ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করছেন। আবার যুহরী হতে বর্ণিত আছে যে, যখন আল্লাহ (আরবী) বলে কোন কাজের নির্দেশ দেন তখন তোমরা ঐ কাজ কর। কারণ, উক্ত সম্বোধনের মধ্যে যারা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে আল্লাহর নবীও (সঃ) আছেন। আবার খাইসুমা হতে বর্ণিত আছে যে, পবিত্র কুরআনে যে অবস্থায় (আরবী) বলে সম্বোধন করা হয়েছে সেই অবস্থায় পবিত্র তাওরাত গ্রন্থে (আরবী) বলে সম্বোধন করা হয়েছে। যায়েদ ইবনে ইসমাঈল তাঁর সনদের মাধ্যমে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির মূল রাবী ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত (আরবী) দ্বারা যাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে, হযরত আলী (রাঃ) তাঁদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ও সম্মানিত। কারণ, পবিত্র কুরআনে একমাত্র হযরত আলী (রাঃ) ছাড়া অন্যান্য সকল সাহাবীকে ভৎসনা করা হয়েছে। হযরত আলী (রাঃ)-কে কুরআনের কোথাও ভর্সনা করা হয়নি।” তাফসীরকারক ইবনে কাসীর মন্তব্য করেন যে, হাদীসের সংজ্ঞানুযায়ী এ হাদীসটি গারীব’। এ হাদীসের মধ্যে কতগুলো অশোভনীয় শব্দ রয়েছে এবং এর সনদ সম্পর্কেও মন্তব্য করার অবকাশ আছে। এ হাদীসের একজন রাবী ঈসা ইবনে রাশেদ সম্পর্কে ইমাম বুখারী (রঃ) মন্তব্য করেছেন যে, তিনি একজন অপরিচিত ব্যক্তি এবং হাদীসের সংজ্ঞানুযায়ী তাঁর হাদীস মুনকার'। ইবনে কাসীর (রঃ) উক্ত হাদীসের একজন রাবী আলী ইবনে বুজাইমা সম্পর্কে বলেন যে, যদিও তিনি একজন বিশ্বস্ত রাবী, কিন্তু তিনি শিয়া মতাবলম্বী। তার থেকে বর্ণিত এ ধরনের হাদীসের মধ্যে সন্দেহের অবকাশ থাকায় এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ হাদীসে উল্লেখ আছে যে, পবিত্র কুরআনে আলী (রাঃ) ছাড়া আর সকল সাহাবীকে ভৎসনা করা হয়েছে। অবশ্য এর দ্বারা পবিত্র কুরআনের ঐ আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে আয়াতে সাহাবীদেরকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে আলাপ করার পূর্বে সাদকা’ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। একাধিক ব্যক্তি উল্লেখ করেছেন যে, একমাত্র আলী (রাঃ) ছাড়া আর কেউই এ আয়াত অনুযায়ী কাজ করেননি। আর এ সাদকা দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ পাক পরবর্তীতে এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন“তোমরা কি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে আলোচনা করার পূর্বে সাদকা দিতে ভয় পাও? যখন তোমরা তা করনি তখন আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।”

এ আয়াতের দ্বারা যে ভৎর্সনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে সে সম্পর্কেও মন্তব্যের অবকাশ আছে। কেননা, কেউ কেউ বলেছেন যে, সাদকা দেয়ার নির্দেশটি মুস্তাহাব ছিল, ওয়াজিব ছিল না। আর তাছাড়া কার্যকরী করার পূর্বেই ততা আয়াতের নির্দেশকে তাদের জন্যে মওকুফ করা হয়েছে। অতএব দেখা যাচ্ছে যে, সাহাবীদের কারও নিকট থেকেই এ আয়াতের নির্দেশের বিপরীত কোন কাজ প্রকাশ পায়নি। আর এ ছাড়া পবিত্র কুরআনে হযরত আলী (রাঃ)-কে কখনই ভৎসনা করা হয়নি বলে রাবী যে মন্তব্য করেছেন সে সম্পর্কেও মন্তব্যের অবকাশ আছে। কেননা, যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি দিয়ে মুক্তিপণ গ্রহণের ব্যাপারে সূরা আনফালে যে আয়াতটি আছে তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, যারা মুক্তিপণ গ্রহণের ব্যাপারে মত দিয়েছিলেন তাদের সকলের ক্ষেত্রেই এ আয়াতটি প্রযোজ্য। হযরত উমার (রাঃ) ছাড়া আর কেউই এ তিরস্কার হতে মুক্ত নন। অতএব, পূর্বাপর ঘটনা হতে বুঝা যায় যে, উক্ত হাদীসটি দুর্বল। তবে আল্লাহ পাকই ভাল জানেন।

মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমর ইবনে হাকামকে যখন নাজরানে পাঠিয়েছিলেন তখন তিনি তাঁকে যে চিঠিটি দিয়েছিলেন সেই চিঠিটি আমি পড়েছি। উক্ত চিঠিটি পরবর্তীকালে আবু বকর ইবনে হাযমের নিকট ছিল। চিঠির প্রথমাংশ নিম্নরূপঃ

এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর নিকট হতে বর্ণনা-হে ঈমানদারগণ! তোমরা ওয়াদাগুলো পূরণ কর।' এরপর তিনি সূরা মায়িদাহ’র (আরবী) ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর’ (৫৪ ৪) পর্যন্ত লিখেন। আবদুল্লাহ তার পিতা আবু বকর থেকে বর্ণনা করেছেন যে, এটা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সেই চিঠি যা তিনি আমর ইবনে হাযমকে দিয়েছিলেন। যখন তিনি তাঁকে ইয়ামান বাসীদেরকে জ্ঞান দান, তার শিক্ষাদান এবং সাদকা আদায়ের জন্যে পাঠিয়েছিলেন। তখন তিনি এ চিঠিটি লিখে দিয়েছিলেন। উক্ত চিঠিতে তিনি তাঁকে কতগুলো উপদেশ এবং তাঁর কার্যাবলী সম্বন্ধে কতগুলো নির্দেশ দিয়েছিলেন। চিঠির শুরুতে তিনি লিখেনঃ দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর পক্ষ হতে চিঠি।' অতঃপর তিনি সূরা মায়িদাহ্র নিম্নের আয়াত দ্বারা শুরু করেনঃ

“হে মুমিনগণ! তোমরা প্রতিজ্ঞাগুলো পূরণ কর। যখন তিনি আমর ইবনে • হাযমকে ইয়ামানে পাঠান তখন তিনি তাকে একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। উক্ত অঙ্গীকারনামায় তিনি তাঁকে তাঁর প্রতিটি কাজে আল্লাহকে ভয় করার নির্দেশ দেন। কারণ আল্লাহ পরহেযগার ও সৎকর্মশীলদের সাথে থাকেন।

(আরবী) তাফসীরকারক এ অংশের ব্যাখ্যায় বলেন যে, ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুজাহিদ (রাঃ) এবং আরও অনেকে বলেছেন - শব্দের দ্বারা অঙ্গীকারকে বুঝানো হয়েছে। ইবনে জাবির (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে -এর অর্থের ব্যাপারে তাফসীরকারকগণ একমত। তিনি বলেন যে, কোন কিছুর ব্যাপারে পরস্পরের শপথ বা অঙ্গীকারকে (আরবী) বলা হয়ে থাকে। আলী ইবনে আবু তালহা (রঃ) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, (আরবী)-এর দ্বারা (আরবী) বা অঙ্গীকারকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক যেসব বিষয় বৈধ ও অবৈধ ঘোষণা করেছেন, যেসব বিষয় অবশ্যকরণীয় করেছেন এবং যেসব বিষয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে। (আরবী) বলে সাবধান করেছেন, (আরবী) দ্বারা সেসব বিষয়কে বুঝানো হয়েছে। এরপর আল্লাহ এ সম্পর্কে আরও কঠোর ভাষায় বলেনঃ “আল্লাহর সাথে ওয়াদা করার পর যারা উক্ত ওয়াদা ভঙ্গ করে এবং তিনি যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে বলেছেন তা ছিন্ন করে..........তাদের জন্যে জঘন্য আবাসস্থল রয়েছে। আবার যহহাক (রঃ) (আরবী)-এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, আল্লাহ পাক যেসব বিষয় বৈধ ও অবৈধ করেছেন এবং তাঁর কিতাব ও নবী (সঃ)-এর উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীদের নিকট হতে তিনি বৈধ ও অবৈধ সংক্রান্ত বিভিন্ন আবশ্যকীয় যে কাজগুলো করার ওয়াদা নিয়েছেন (আরবী) দ্বারা সেগুলোকে বুঝায়। যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ)-এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, (আরবী) দ্বারা ছয়টি বস্তুকে বুঝানো হয়েছে। (ক) আল্লাহর সাথে ওয়াদা, (খ) শপথ করা, চুক্তি করা, (গ) অংশীদারী সংক্রান্ত ওয়াদা, (ঘ) ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত ওয়াদা, (ঙ) বিবাহ বন্ধন এবং (চ) কসম খাওয়া। মুহাম্মাদ ইবনে কা'ব (রঃ) বলেন যে, (আরবী) বলতে পাঁচটি বস্তুকে বুঝানো হয়েছে। ওগুলোর একটি হচ্ছে অজ্ঞতার যুগে কৃত চুক্তিনামা। আর অন্যটি হচ্ছে অংশীদারী সংক্রান্ত চুক্তি। ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর উক্ত স্থানে অবস্থানকালেও উক্ত বস্তু গ্রহণ করা বা না করার কোন ইখতিয়ার ক্রেতা বা বিক্রেতার থাকে না। এ মতে যারা বিশ্বাসী তারা (আরবী) দ্বারা তাঁদের পক্ষে দলীল গ্রহণ করেছেন। তাঁরা বলেন যে, এ আয়াতটি উক্ত স্থানে থাকা অবস্থায়ও চুক্তিটিকে প্রতিষ্ঠিত ও অবশ্যপালনীয় করার প্রতি ইঙ্গিত করে এবং উক্ত স্থানে থাকা অবস্থায়ও বস্তু গ্রহণ করা না করার ইখতিয়ারকে অস্বীকার করে। এটাই ইমাম আবু হানীফা (রঃ) ও ইমাম মালিক (রঃ)-এর মত। কিন্তু ইমাম শাফিঈ (রঃ), ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) এবং অধিকাংশ আলেম এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। এ প্রসঙ্গে তাঁরা সহীহ বুখারী ও মুসলিমে গৃহীত আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ)-এর একটি হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করেন। হাদীসটি নিম্নরূপঃ

রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “বিক্রয়স্থল ত্যাগ করার পূর্বপর্যন্ত ক্রেতা ও বিক্রেতার বস্তু গ্রহণ করা বা না করার ইখতিয়ার আছে।” সহীহ বুখারীতে অন্যভাবেও হাদীসটি এসেছে। তা নিম্নরূপঃ

“যখন দু’জন লোক ক্রয়-বিক্রয় করে তখন বিক্রয়স্থল ত্যাগ করার পূর্বপর্যন্ত ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের বস্তুটি গ্রহণ করা বা না করার ইখতিয়ার আছে।” তাফসীরকারক ইবনে কাসীর (রঃ) মন্তব্য করেন যে, এ হাদীসটি ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তি সম্পাদনের পরেও উক্ত স্থানে থাকা অবস্থায় বস্তুটি গ্রহণ করা বা না করার ইখতিয়ারকে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে প্রকাশ্য দলীল। উক্ত ইখতিয়ারের প্রশ্নটি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরে আসে। অতএব এই ইখতিয়ার চুক্তি সম্পাদিত হওয়াকে অস্বীকার করে না, বরং চুক্তিকে আইনগতভাবে কার্যকরী করে। অতএব চুক্তিটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্থই হচ্ছে অঙ্গীকারকে পূর্ণ করা। (আরবী) -এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরকারক বলেন যে, চতুষ্পদ জন্তু বলতে এখানে উট, গরু ও বকরীকে বুঝানো হয়েছে। আবুল হাসান, কাতাদা এবং আরও অনেকের এটাই মত। ইবনে জারীর (রঃ) বলেন। যে, আরবদের ভাষা অনুযায়ী চতুষ্পদ জন্তু বলতে এটাই বুঝানো হয়। ইবনে উমার (রাঃ), ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং আরও অনেকে এ আয়াত হতে দলীল গ্রহণ করেছেন যে, যবেহকৃত গাভীর পেটে যদি মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তাহলে ঐ মৃত বাচ্চার গোশত খাওয়া মুবাহ। এ প্রসঙ্গে হাদীসের সুনান গ্রন্থসমূহে বহু হাদীস এসেছে। যেমন আবু দাউদ (রঃ), তিরমিযী (রঃ) এবং ইবনে মাজাহ (রঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমরা উট, গাভী এবং বকরী যবেহ করি। ওগুলোর পেটের মধ্যে কখনও কখনও বাচ্চা পাই। আমরা কি তা ফেলে দেবো, না ভক্ষণ করবো? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তোমরা ইচ্ছে করলে তা খেতে পার। কেননা, তার মাকে যবেহ করাই হচ্ছে তাকেও যবেহ করা।” ইমাম তিরমিযী (রঃ) হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, হাদীসের সংজ্ঞানুযায়ী এটি একটি হাসান হাদীস। ইমাম আবু দাউদ (রঃ) হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মাকে যবেহ করাই হচ্ছে বাচ্চাকেও যবেহ করা।” এ হাদীসটিকে ইমাম আবু দাউদ (রঃ) একাই তাঁর হাদীস গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন।

(আরবী) আলী ইবনে আবি তালহা ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, এর দ্বারা মৃত পশু, রক্ত এবং শূকরের মাংসকে বুঝানো হয়েছে। কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা মৃত পশু এবং যে পশুকে যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তাকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহই এর সঠিক অর্থ সম্পর্কে সমধিক জ্ঞাত। তবে প্রকাশ্যভাবে বুঝা যায় যে, এর দ্বারা (আরবী) (৫:৩)-এ আয়াতের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে , মৃত পশু, রক্ত, শূকরের মাংস, আল্লাহ ছাড়া অপরের নামে উৎসর্গীকৃত পশু, গলা টিপে মারা পশু, প্রহারে মৃত পশু, শিং-এর আঘাতে মৃত পশু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু”। যদিও এগুলো চতুষ্পদ জন্তুর অন্তর্ভুক্ত তবুও উল্লিখিত কারণে সেগুলোকে হারাম করা হয়েছে। এ জন্যে আল্লাহ বলেছেনঃ “তবে তোমরা যেগুলোকে যবেহ দ্বারা পবিত্র করেছ সেগুলো হালাল এবং যেগুলোকে মূর্তিপূজার বেদীর উপর বলি দেয়া হয়েছে সেগুলোও হারাম।” অর্থাৎ উক্ত পশুগুলোকে এজন্যে হারাম করা হয়েছে যে, তাদেরকে আর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না এবং হালাল পশুর সাথে আর যুক্ত করা যাবে না। আর এ কারণেই আল্লাহ পাক বলেছেনঃ “তোমদের জন্যে চতুষ্পদ জন্তুকে হালাল করা হয়েছে। তবে যেগুলো হারাম হওয়া সম্পর্কে তোমাদের উপর কুরআনের আয়াত নাযিল হয়েছে সেগুলো হারাম।” অর্থাৎ এসব পশুর মধ্য হতে বিশেষ অবস্থায় কোন কোন পশুর হারাম হওয়া সংক্রান্ত আয়াত অতিসত্বর তোমাদের উপর অবতীর্ণ হবে।

(আরবী) কোন কোন ব্যাকরণবিদের মতে এ বাক্যটি (আরবী) হওয়ার কারণে হালাতে নাসাবীতে আছে। আনআম বলতে উট, গরু, ছাগল প্রভৃতি গৃহপালিত পশু এবং হরিণ, গাভী, গাধা প্রভৃতি বন্য পশুকে বুঝানো হয়। আর গৃহপালিত হালাল পশুগুলোর মধ্যে উক্ত পশুগুলোকে এবং বন্য হালাল পশুগুলোর মধ্য হতে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিকার করা পশুগুলোকে হারাম বলে পৃথক করা হয়েছে। কোন কোন তাফসীরকারক বলেছেন যে, এর অর্থ হচ্ছে-আমরা তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুকে হালাল করেছি। তবে জন্তুগুলো হতে যেগুলোকে হারাম বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেগুলো হালাল নয়। আর এ নির্দেশ ঐ ব্যক্তির জন্যেই প্রযোজ্য যে ইহরাম অবস্থায় শিকার করাকে হারাম বলে গ্রহণ করেছে। যেহেতু আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেছেনঃ “তবে যে মৃতপ্রায় অথচ অন্যায়কারী ও সীমালংঘনকারী নয়, তার জন্যে অবৈধ জানোয়ার খাওয়া হালাল। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু”। অর্থাৎ উক্ত আয়াতের ন্যায় এখানেও আল্লাহ বলেনঃ আমরা যেভাবে সর্বাবস্থায় চতুষ্পদ জন্তুকে হালাল করেছি, ঠিক সেভাবে ইহরাম অবস্থায় শিকার করাকে হারাম মনে কর। কারণ আল্লাহ পাকই এ নির্দেশ দিয়েছেন। আর তিনি যা করা বা না করার নির্দেশ দেন সেগুলোর সবকিছুই হিকমতে পরিপূর্ণ। এজন্যেই তিনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর ইচ্ছামত হুকুম করেন।

(আরবী) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবী) শব্দের দ্বারা হজ্বের নিদর্শনাবলীকে বুঝানো হয়েছে। আর মুজাহিদ বলেন যে, এর দ্বারা সাফা, মারওয়া, কুরবানীর পশু ও উটকে বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে, এর দ্বারা আল্লাহ পাক যে সমস্ত বস্তুকে হারাম করেছেন সেগুলোকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ কর্তৃক হারাম ঘোষিত বস্তুগুলোকে হালাল মনে করো না। এ জন্যে আল্লাহ পাক বলেছেনঃ “নিষিদ্ধ মাসগুলোকেও তোমরা অবমাননা করো না।” অর্থাৎ মাসগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর এবং তোমরা এ মাসে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করার মত নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিহার কর। যেমন অল্লাহ পাক অন্যত্র বলেছেনঃ হে নবী (সঃ)! তারা তোমাকে নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। তুমি বল- ঐ মাসে যুদ্ধ করা বড় গুনাহ। আল্লাহ পাক অন্যত্র আরও বলেছেনঃ “আল্লাহর নিকট মাসের সংখ্যা ১২টি।” সহীহ বুখারীতে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেছিলেনঃ “আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার দিন আল্লাহ যামানাকে যেরূপ সৃষ্টি করেছিলেন এখন তা সেরূপে ফিরে এসেছে। ১২ মাসে একটি বছর হয়। এর মধ্যে ৪টি মাস নিষিদ্ধ। তার মধ্যে ৩টি মাস পরস্পর সংযুক্ত। যেমন যুলকাদা, যুলহাজ্বা এবং মুহাররম। আর অন্যটি হলো মুজার গোত্র কর্তৃক কথিত রজব মাস। এ মাসটি জমাদিউস্সানী এবং শাবান মাসের মাঝখানে অবস্থিত। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ মাসগুলোর এ জাতীয় সম্মান কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) (আরবী) -এর ব্যাখ্যায় বলেনঃ “তোমরা নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করাকে বৈধ মনে করো না।” মুকাতিল ইবনে হাইয়ান, আবদুল করীম ইবনে মালিক আলজারী এবং ইবনে জারীরও এ মতই পোষণ করেন। কিন্তু অধিকাংশ আলেমের মত এই যে, আয়াতটির নির্দেশ রহিত হয়ে গেছে এবং উক্ত নিষিদ্ধ মাসগুলোতে কাফিরদের বিরুদ্ধে প্রথমে যুদ্ধ ঘোষণা করা এখন বৈধ। কুরআনের নিম্নের আয়াতটি তাদের দলীলঃ

“যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতীত হয়ে যায় তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানে পাও সেখানেই হত্যা কর।" এর অর্থ এই যে, মাসগুলোর অতীত সম্মান যখন অতিক্রান্ত হয়ে গেছে তখন তোমরা কাফিরদের সাথে সব সময় জিহাদ করতে থাক। এটা এখন তোমাদের জন্যে বৈধ হয়ে গেল। পবিত্র কুরআন এরপর আর কোন মাসকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেনি। ইমাম আবু জাফর এ পর্যায়ে আলেমদের ইজমার উল্লেখ করে বলেন যে, আল্লাহ পাক যে কোন সময় এবং যে কোন মাসে জিহাদ করা বৈধ রেখেছেন। তিনি আলেমদের আর একটি ইজমার উল্লেখ করে বলেছেন যে, যদি কোন মুশরিক হারাম শরীফের যাবতীয় বৃক্ষের ছাল দ্বারা নিজেকে আবৃত করে এবং পূর্ব থেকে কোন মুসলমান তাকে নিরাপত্তা প্রদান না করে থাকে তবে সে নিরাপত্তা পাবে না। এ বিষয়টি এখানে বিস্তারিতভাবে বর্ণন করা সম্ভব নয়।

(আরবী) অর্থাৎ তোমরা কা'বা গৃহের দিকে কুরবানীর পশু পাঠানো হতে বিরত থেকো না। কারণ এতে আল্লাহর নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রকাশ পায়। আর তোমরা কুরবানীর পশুর গলায় কালাদা (চেইন) পরানো হতে বিরত থেকো না। কারণ এর দ্বারা এ পশুগুলোকে অন্যান্য পশু হতে পৃথক করা হয়। আর এর দ্বারা এটাও প্রকাশ পায় যে, পশুগুলো কুরবানীর উদ্দেশ্যে কা'বা গৃহে পাঠানো হয়েছে। ফলে মানুষ এ পশুগুলোর ক্ষতি করা হতে বিরত থাকে। আর পশুগুলোকে দেখে অন্যান্যরা এ জাতীয় পশু কুরবানী পাঠাতে উদ্বুদ্ধ হবে। আর যে ব্যক্তি অন্যকে কুরবানী করার প্রতি উৎসাহদান করে, তাকে তার অনুসরণকারীর অনুরূপ প্রতিদান দেয়া হয়। অথচ অনুসরণকারীর পুরষ্কার কোন অংশেই কম করা হয় না। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর বিদায় হজ্বের সময় যুলহুলাইফাতে রাত্রি যাপন করেন। এ যুলহুলাইফাকে ওয়াদিউল আকীকও বলা হয়। অতঃপর তিনি সকাল বেলা তার ৯ জন স্ত্রীর নিকট গমন করেন এবং গোসল শেষে খোশবু ব্যবহার করেন ও দু'রাকআত নফল নামায আদায় করেন। অতঃপর কুরবানীর পশুর চুটি ক্ষত করেন এবং ওর গলায় কালাদা (চেইন) পরান। এরপর হজ্ব এবং উমরার জন্যে তিনি ইহরাম বাঁধেন। তাঁর কুরবানীর পশুর সংখ্যা ছিল ষাটটির অধিক। তাদের গায়ের রং ও শারীরিক গঠন ছিল অতি উত্তম। যেমন আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেনঃ “যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তবে সেটা তার অন্তরের তাকওয়া প্রকাশ করে। কেউ কেউ সম্মান প্রদর্শন শব্দটির দ্বারা কুরবানীর পশুকে উত্তম স্থানে রাখা, ভাল খাওয়ানো এবং তাকে মোটা তাজা করানোর প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন। হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে কুরবানীর পশুর চোখ ও কানকে ভালভাবে লক্ষ্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন।" মুকাতিল ইবনে হাইয়ান বলেনঃ (আরবী) দ্বারা জাহেলিয়া যুগের লোকদের মত কালাদা ব্যবহার করাকে হালাল মনে করো না। কারণ জাহেলিয়া যুগে হারাম শরীফের বাইরে বসবাসকারী আরবরা যখন নিষিদ্ধ মাস ব্যতীত অন্য মাসে তাদের গৃহ হতে বের হতো তখন তারা তাদের গলায় কালাদা স্বরূপ পশম ও চুল ব্যবহার করতো। আর হারাম শরীফের মুশকির অধিবাসীগণ যখন তাদের গৃহ হতে বের হতো তখন তারা তাদের গলায় কালাদা স্বরূপ হারাম শরীফের গাছের ছাল ব্যবহার করতো। এর ফলে লোকেরা তাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করতো। ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সূরা মায়িদাহ্র দু’টি আয়াত মানসূখ হয়ে গেছে। একটি কালাদার আয়াত, আর অপরটি হচ্ছে (আরবী) (৫:৪২)-এ আয়াতটি। ইবনে আউফ (রঃ) বলেনঃ আমি হাসান (রঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম- সূরা মায়িদাহ্র কি কোন অংশ মানসূখ বা রহিত হয়েছে? তিনি উত্তরে বলেছিলেন :“না।” আতা (রঃ) বলেন যে, হারাম শরীফের অধিবাসীগণ বৃক্ষের ছাল দ্বারা কালাদা ব্যবহার করতো। ওটা দ্বারা তারা নিরাপত্তা লাভ করতো, ফলে আল্লাহ পাক হারাম শরীফের বৃক্ষ কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। মুতরাফ ইবনে আবদুল্লাহ ও মত পোষণ করেন।

(আরবী) -এ অংশের ব্যাখ্যায় তাফসীরকারক বলেন যে, আল্লাহর ঘরের উদ্দেশ্যে যারা রওয়ানা হয় তাদের সাথে যুদ্ধ করা হালাল মনে করো না। কারণ, ঐ ঘরে যে ব্যক্তি প্রবেশ করে সে শত্রু হতে নিরাপত্তা লাভ করে। এমনিভাবে যে ব্যক্তি আল্লাহর দয়া ও সন্তুষ্টি পাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়, তোমরা তাকে বাধা দিও না, বিরত রেখো না এবং কোন প্রকার কুৎসা রটনা করো না। কাতাদা, মুজাহিদ, আতা প্রমুখ মুফাসিরদের মতে আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণের অর্থ ব্যবসা করা। পবিত্র কুরআনের পূর্ববর্তী আয়াত (আরবী) (২:১৯৮) দ্বারাও ব্যবসাকে বুঝানো হয়েছে। আর শব্দের ব্যখ্যায়-ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, হজ্বে গমনকারী ব্যক্তিগণ হজ্বের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে থাকেন। ইকরামা ও ইবনে জারীর প্রমুখ তাফসীরকারকগণ বলেন যে, এ আয়াতটি হাতিম ইবনে হিন্দ আল বাকরীর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। একদা সে মদীনার একটি চারণভূমি লুণ্ঠন করে এবং পরবর্তী বছর সে বায়তুল্লাহ জিয়ারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। এ সময় কোন কোন সাহাবী পথিমধ্যে তাকে বাধা দেয়ার মনস্থ করলে আল্লাহ পাক এ আয়াত নাযিল করেন। ইবনে জারীর আলেমদের ইজমার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, কোন মুশরিক ব্যক্তিকে যদি কোন মুসলমান কর্তৃক নিরাপত্তা প্রদান করা না হয় তবে তাকে হত্যা করা বৈধ হবে। যদিও সে বায়তুল্লাহ বা বায়তুল মুকাদ্দাসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কেননা, উল্লিখিত আয়াতের নির্দেশ মুশরিকদের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। এমনিভাবে যে ব্যক্তি নাফরমানী, শিরক ও কুফরী করার উদ্দেশ্যে কাবা শরীফের দিকে রওয়ানা হয় তাকেও বাধা দেয়া বৈধ। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “হে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মুশরিকরা অপবিত্র। অতএব তারা যেন এ বছরের পর আর কখনও কা'বা গৃহের নিকটবর্তী না হয়।” এ জন্যেই রাসূলুল্লাহ (সঃ) নবম হিজরীতে যখন হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে আমীরুল ইজ্ব হিসেবে পাঠান তখন হযরত আলী (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান এবং তাকে এ ঘোষণা করতে। নির্দেশ দেন যে, মুসলমান ও মুশরিক একে অপর থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, এ বছরের পর যেন কোন মুশরিক হজ্ব করতে না আসে এবং কোন ব্যক্তি যেন উলঙ্গ অবস্থায় বায়তুল্লাহ তাওয়াফ না করে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, প্রথমে ঈমানদার ও মুশরিকগণ একত্রে হজ্ব করতো এবং আল্লাহ পাক কাফিরদেরকে বাধা প্রদান না করতে ঈমানদারদের প্রতি নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে (আরবী) (৯:২৮)-এ, আয়াত দ্বারা কাফিরদেরকে হজ্ব করতে নিষেধ করেন। আল্লাহ পাক অন্য জায়গায় বলেনঃ “যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে একমাত্র তারাই আল্লাহর ঘরকে আবাদ করবে।” অতএব উক্ত আয়াতগুলো দ্বারা মুশরিকদেরকে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কাতাদা বর্ণনা করেন যে, (আরবী)-এ আয়াতটি মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। অজ্ঞতার যুগে যখন কোন ব্যক্তি হজ্বের উদ্দেশ্যে তার গৃহ হতে বের হতো তখন সে বৃক্ষের ছাল দ্বারা কালাদা পরিধান করতো। ফলে কেউ তাকে কষ্ট দিতো না। আবার ঘরে ফেরার সময় চুলের তৈরী কালাদা পরিধান করতো। এর ফলে কোন লোক তাকে কষ্ট দিতো না। ঐ সময় মুশরিকদেরকে হজ্ব করতে নিষেধ করা হতো না। আর মুসলমানদেরকে নিষিদ্ধ মাসসমূহে এবং কা'বা গৃহের আশে পাশে যুদ্ধ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। অতঃপর এ আয়াতের নির্দেশকে আল্লাহর অপর আয়াত (আরবী) (৯:৫) দ্বারা মানসূখ করা হয়েছে। ইবনে জারীর এ মত পোষণ করেন যে, (আরবী) দ্বারা যদি মুশরিকরা হারামেরু বৃক্ষের ছাল দ্বারা কালাদা ব্যবহার করে তবে তোমরা তাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান কর’- এটাই বুঝানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, এ জন্যেই যে ব্যক্তি এ নির্দেশের অবমাননা করতো আরবরা তাকে সর্বদাই লজ্জা দিতো। তিনি এ পর্যায়ে হত্যাকারীদের প্রতি একজন কবির ব্যাঙ্গোক্তির উল্লেখ করেছেন।

(আরবী)-এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরকারক বলেন যে, যখন তোমরা তোমাদের ইহরাম খুলে ফেল এবং মুক্ত হয়ে যাও তখন তোমাদের জন্যে পূর্বে ইহরাম অবস্থায় যা হারাম ছিল এখন তা হালাল করা হলো। অর্থাৎ এখন শিকার করা হালাল ও হালাল হওয়ার এ নির্দেশটি অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর আবার বৈধ ঘোষিত হয়েছে। আর এ ব্যাপারে সঠিক মত এই যে, কোন বস্তু অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর বৈধ ঘোষিত হলে তা অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পূর্বাবস্থা (বৈধতা) ফিরে পাবে। সুতরাং পূর্বে যা ওয়াজিব ছিল পরে তা ওয়াজিব হবে, মুস্তাহাব মুস্তাহাব হবে এবং মুবাহ মুবাহ হবে। কারও মতে নির্দেশটি শুধু ওয়াজিবের জন্যে এবং কারও মতে শুধু মুবাহ কাজের জন্যে প্রযোজ্য। কিন্তু এ উভয় মতেরই বিপক্ষে পবিত্র কুরআনে যথেষ্ট আয়াত রয়েছে। সুতরাং আমরা যা বর্ণনা করেছি সেটাই সঠিক মত। আর এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। কোন কোন উসুলবিদও এ মত পোষণ করেন।

(আরবী) তাফসীরকারক এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ যে জাতি তোমাদেরকে হুদায়বিয়ার বছর কা'বা গৃহে যেতে বাধা দিয়েছিল, তোমরা তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে গিয়ে আল্লাহর হুকুম লংঘন করো না, বরং আল্লাহ তোমাদেরকে যেভাবে প্রত্যেকের সাথে ন্যায় বিচার করার নির্দেশ দিয়েছেন তা পালন কর। আর পবিত্র কুরআনের আর একটি আয়াতও এ অর্থ বহন করে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ কোন জাতির শত্রুতা তোমাদেরকে যেন ন্যায় বিচার না করতে উৎসাহিত না করে, বরং তোমরা ন্যায় বিচার কর। আর এটাই তাকওয়ার অতি নিকটবর্তী।' অর্থাৎ কোন সম্প্রদায়ের হিংসা-বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে ন্যায় বিচার না করতে উৎসাহিত না করে। কারণ, যে ন্যায় বিচার করা প্রত্যেকের উপর ওয়াজিব, ওটা যে কোন অবস্থায়ই প্রত্যেকের উপর ওয়াজিব। পূর্ববর্তী আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি তোমার ব্যাপারে আল্লাহর নাফরমানী করে তবে তোমার উচিত হবে তার ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজ করা। ন্যায়-নীতির উপরই আসমান-যমীন প্রতিষ্ঠিত ইবনে আবি হাতিম যায়েদ ইবনে আসলাম থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এবং তাঁর সাহাবীগণ যখন মুশরিকগণ কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হুদায়বিয়া প্রান্তরে কষ্টকর অবস্থায় কালাতিপাত করছিলেন তখন পূর্বাঞ্চলীয় একদল মুশরিক কাবা ঘর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল।

এমতাবস্থায় সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বললেনঃ “আমরা এ লোকগুলোকে কা'বা গৃহে যেতে বাধা দেবো যেমন তাদের সাথীরা আমাদেরকে বাধা দিয়েছে। তখন আল্লাহ তাআলা এ আয়াতটি নাযিল করেন। এখানে শব্দ দ্বারা হিংসা-বিদ্বেষকে বুঝানো হয়েছে। এটাই ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও অন্যান্যদের মত। ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, কোন কোন আরব (আরবী)-এর (আরবী) কে (আরবী) এর পরিবর্তে (আরবী) দিয়ে পড়েছেন এবং আরবী কবিতায়ও এ জাতীয় পঠনের রীতি দেখা যায়। অবশ্য কোন কারী এভাবে পড়েছেন কি-না তা আমাদের জানা নেই।

(আরবী) আল্লাহ পাক এ আয়াতের দ্বারা তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে উত্তম কাজে পরস্পরকে সাহায্য করতে এবং খারাপ কাজ পরিহার করে নৈকট্য ও পরহেযগারী অর্জন করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি তাদেরকে শরীয়ত পরিপন্থী কাজ, পাপ কাজ এবং অবৈধ কাজে পরস্পরকে সাহায্য করতে নিষেধ করছেন। ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, আল্লাহ যে কাজ করতে আদেশ করেছেন তা পরিহার করাকেই পাপ কাজ বলা হয় এবং (আরবী) বা সীমালংঘন করার দ্বারা ধৈর্যের নির্দষ্ট সীমা অতিক্রম করা এবং নিজের ও অন্যের ব্যাপারে অবশ্যকরণীয় কাজের সীমালংঘন করাকেই বুঝানো হয়েছে। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য কর যদিও সে অত্যাচারী বা অত্যাচারিত হয়।” তখন কোন কোন সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! অত্যাচারিত ভাইকে সাহায্য করার অর্থ তো আমরা বুঝলাম, কিন্তু অত্যাচারী ভাইকে কি করে আমরা সাহায্য করবো?” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তুমি তাকে অত্যাচার করা হতে বাধা প্রদান কর ও নিষেধ কর। আর এটাই তাকে সাহায্য করা হবে।” ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) একজন সাহাবী হতে বর্ণনা করেন যে, যে ঈমানদার ব্যক্তি মানুষের সাথে মেলামেশা করে এবং তাদের দেয়া কষ্ট সহ্য করে সেই ব্যক্তি ঐ ঈমানদার ব্যক্তি হতে অধিক প্রতিদান পাবে যে মানুষের সাথে মেলামেশা করে না এবং তাদের দেয়া কষ্টও সহ্য করে না। এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে অন্য একটি সনদেও এসেছে। ইমাম তিরযিমীও (রঃ) হাদীসটিকে অন্য আর একটি সনদে তাঁর গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন। আবু বকর আল বাযযার তাঁর হাদীস গ্রন্থে আবদুল্লাহ হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে সকাজের প্রতি পথ-প্রদর্শন করে সে সকর্মকারীর ন্যায় প্রতিদান পাবে।” ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন যে, এ হাদীসের অনুরূপ আর একটি সহীহ হাদীস আছে। তা হচ্ছে- “যে ব্যক্তি মানুষকে সৎপথে আহ্বান করে তাকে কিয়ামত পর্যন্ত ঐ সৎপথ যত ব্যক্তি অনুসরণ করবে তাদের সকলের প্রতিদানের অনুরূপ প্রতিদান দেয়া হবে। অথচ এ ব্যাপারে সৎপথ অনুসরণকারীদের প্রতিদান কমানো হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি মানুষকে অসৎ পথে আহ্বান করে, তাকে কিয়ামত পর্যন্ত ঐ অসৎ পথ যত লোক অনুসরণ করবে তাদের সকলের পাপের অনুরূপ পাপ প্রদান করা হবে। অথচ এ ব্যাপারে অসৎ পথ অনুসরণকারীদের পাপ কোন অংশে কমানো হবে না।" ইমাম তিবরানী আবুল হাসান ইবনে সাখার হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন অত্যাচারীর সাথে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে চলাফেরা করে, অথচ সে জানে যে, ঐ ব্যক্তি একজন অত্যাচারী, তাহলে সে ইসলাম হতে বহিস্কৃত বলে গণ্য হবে।”

Quran Mazid
go_to_top
Quran Mazid
Surah
Juz
Page
1
Al-Fatihah
The Opener
001
2
Al-Baqarah
The Cow
002
3
Ali 'Imran
Family of Imran
003
4
An-Nisa
The Women
004
5
Al-Ma'idah
The Table Spread
005
6
Al-An'am
The Cattle
006
7
Al-A'raf
The Heights
007
8
Al-Anfal
The Spoils of War
008
9
At-Tawbah
The Repentance
009
10
Yunus
Jonah
010
11
Hud
Hud
011
12
Yusuf
Joseph
012
13
Ar-Ra'd
The Thunder
013
14
Ibrahim
Abraham
014
15
Al-Hijr
The Rocky Tract
015
16
An-Nahl
The Bee
016
17
Al-Isra
The Night Journey
017
18
Al-Kahf
The Cave
018
19
Maryam
Mary
019
20
Taha
Ta-Ha
020
21
Al-Anbya
The Prophets
021
22
Al-Hajj
The Pilgrimage
022
23
Al-Mu'minun
The Believers
023
24
An-Nur
The Light
024
25
Al-Furqan
The Criterion
025
26
Ash-Shu'ara
The Poets
026
27
An-Naml
The Ant
027
28
Al-Qasas
The Stories
028
29
Al-'Ankabut
The Spider
029
30
Ar-Rum
The Romans
030
31
Luqman
Luqman
031
32
As-Sajdah
The Prostration
032
33
Al-Ahzab
The Combined Forces
033
34
Saba
Sheba
034
35
Fatir
Originator
035
36
Ya-Sin
Ya Sin
036
37
As-Saffat
Those who set the Ranks
037
38
Sad
The Letter "Saad"
038
39
Az-Zumar
The Troops
039
40
Ghafir
The Forgiver
040
41
Fussilat
Explained in Detail
041
42
Ash-Shuraa
The Consultation
042
43
Az-Zukhruf
The Ornaments of Gold
043
44
Ad-Dukhan
The Smoke
044
45
Al-Jathiyah
The Crouching
045
46
Al-Ahqaf
The Wind-Curved Sandhills
046
47
Muhammad
Muhammad
047
48
Al-Fath
The Victory
048
49
Al-Hujurat
The Rooms
049
50
Qaf
The Letter "Qaf"
050
51
Adh-Dhariyat
The Winnowing Winds
051
52
At-Tur
The Mount
052
53
An-Najm
The Star
053
54
Al-Qamar
The Moon
054
55
Ar-Rahman
The Beneficent
055
56
Al-Waqi'ah
The Inevitable
056
57
Al-Hadid
The Iron
057
58
Al-Mujadila
The Pleading Woman
058
59
Al-Hashr
The Exile
059
60
Al-Mumtahanah
She that is to be examined
060
61
As-Saf
The Ranks
061
62
Al-Jumu'ah
The Congregation, Friday
062
63
Al-Munafiqun
The Hypocrites
063
64
At-Taghabun
The Mutual Disillusion
064
65
At-Talaq
The Divorce
065
66
At-Tahrim
The Prohibition
066
67
Al-Mulk
The Sovereignty
067
68
Al-Qalam
The Pen
068
69
Al-Haqqah
The Reality
069
70
Al-Ma'arij
The Ascending Stairways
070
71
Nuh
Noah
071
72
Al-Jinn
The Jinn
072
73
Al-Muzzammil
The Enshrouded One
073
74
Al-Muddaththir
The Cloaked One
074
75
Al-Qiyamah
The Resurrection
075
76
Al-Insan
The Man
076
77
Al-Mursalat
The Emissaries
077
78
An-Naba
The Tidings
078
79
An-Nazi'at
Those who drag forth
079
80
Abasa
He Frowned
080
81
At-Takwir
The Overthrowing
081
82
Al-Infitar
The Cleaving
082
83
Al-Mutaffifin
The Defrauding
083
84
Al-Inshiqaq
The Sundering
084
85
Al-Buruj
The Mansions of the Stars
085
86
At-Tariq
The Nightcommer
086
87
Al-A'la
The Most High
087
88
Al-Ghashiyah
The Overwhelming
088
89
Al-Fajr
The Dawn
089
90
Al-Balad
The City
090
91
Ash-Shams
The Sun
091
92
Al-Layl
The Night
092
93
Ad-Duhaa
The Morning Hours
093
94
Ash-Sharh
The Relief
094
95
At-Tin
The Fig
095
96
Al-'Alaq
The Clot
096
97
Al-Qadr
The Power
097
98
Al-Bayyinah
The Clear Proof
098
99
Az-Zalzalah
The Earthquake
099
100
Al-'Adiyat
The Courser
100
101
Al-Qari'ah
The Calamity
101
102
At-Takathur
The Rivalry in world increase
102
103
Al-'Asr
The Declining Day
103
104
Al-Humazah
The Traducer
104
105
Al-Fil
The Elephant
105
106
Quraysh
Quraysh
106
107
Al-Ma'un
The Small kindnesses
107
108
Al-Kawthar
The Abundance
108
109
Al-Kafirun
The Disbelievers
109
110
An-Nasr
The Divine Support
110
111
Al-Masad
The Palm Fiber
111
112
Al-Ikhlas
The Sincerity
112
113
Al-Falaq
The Daybreak
113
114
An-Nas
Mankind
114
Settings