Surah Al Hashr Tafseer
Tafseer of Al-Hashr : 10
Saheeh International
And [there is a share for] those who came after them, saying, "Our Lord, forgive us and our brothers who preceded us in faith and put not in our hearts [any] resentment toward those who have believed. Our Lord, indeed You are Kind and Merciful."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮-১০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
ফাঈ ও গনীমতের মাল সে সকল দরিদ্র মুহাজিরদের জন্য যারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবং আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সহযোগিতা করার জন্য নিজেদের বাড়ি-ঘর, সহায় সম্পদ ছেড়ে হিজরত করে চলে এসেছে।
(وَالَّذِيْنَ تَبَوَّئُوا)
‘এবং মুহাজিরদের (আগমনের) পূর্বে যারা এ নগরীতে (মদীনায়) বসবাস করেছে’ এ থেকে আনসারী সাহাবীদেরকে বুঝানো হয়েছে। যারা মুহাজিরদের মদীনায় আসার পূর্বেই মদীনার বাসিন্দা ছিলেন এবং মুহাজিরদের হিজরত করে আসার পূর্বেই তাদের অন্তরে ঈমান প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, মুহাজির সাহাবীদের ঈমান আনার পূর্বেই আনসারীগণ ঈমান এনেছিলেন। কেননা তাদের অধিকাংশ মুহাজির সাহাবীদের ঈমান আনার পর ঈমান এনেছেন। এখানে (مِنْ قَبْلِهِمْ) বলতে
من قبل هجرتهم
অর্থাৎ তাদের হিজরত করার পূর্বে বুঝানো হয়েছে।
دار الهجرة বলতে মদীনাকে বুঝানো হয়েছে। উমার (রাঃ) বলেন : আমি আমার পরবর্তী খলীফাকে উপদেশ দিচ্ছি প্রথম শ্রেণির মুহাজিরদের সাথে উত্তম আচরণ করার জন্য। তাঁকে আমি আনসারদের সাথেও উত্তম আচরণের উপদেশ দিচ্ছি যারা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হিজরতের পূর্বে ঈমান এনেছিল ও মদীনায় বসবাস করত। তাদের মধ্যে যারা উত্তম আচরণকারী তাদের প্রতি এগিয়ে যাওয়ার এবং যারা মন্দ আচরণকারী তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার উপদেশ প্রদান করছি। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৮৮)
(وَلَا يَجِدُوْنَ فِيْ صُدُوْر)
অর্থাৎ মুহাজিরদের আল্লাহ তা‘আলা যে মর্যাদা প্রদান করেছেন এবং নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা কিছু দিতেন তাতে তাঁরা হিংসা করত না, আর মনে কোন প্রকার সংকীর্ণতা অনুভব করত না।
(وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰٓي أَنْفُسِهِمْ)
অর্থাৎ নিজেদের সকল প্রয়োজনের ওপর মুহাজিরদের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিত। এমনকি নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকলেও মুহাজিরদেরকে খাওয়াতেন। যেমন হাদীসে একটা ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যে, একদা একজন আনসারী সাহাবী এক মুহাজিরকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে জানালে স্ত্রী বললেন : ঘরে তো কেবল ছেলেদের খাওয়ার মত সামান্য কিছু আছে। পরে উভয়ে পরামর্শ করলেন যে, ছেলেদেরকে আজ (ভুলিয়ে-ভালিয়ে) ক্ষুধার্ত রেখেই ঘুম পাড়িয়ে দাও এবং আমরা নিজেরাও কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে যাব। তবে মেহমানকে খাওয়ানোর সময় (ছল করে) বাতিটা নিভিয়ে দেবে, যাতে সে আমাদের ব্যাপারে জানতে না পারে যে, আমরা তার সাথে খাচ্ছি না। সকালে যখন এ সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলেন, তখন তিনি তাঁকে বললেন : মহান আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে এ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন-
وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰٓي أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ।
(সহীহ বুখারী, সূরা হাশরের তাফসীর)।
তাদের ত্যাগের একটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত এও যে, একজন আনসারী সাহাবীর নিকট দুজন স্ত্রী ছিল। তিনি তার মুহাজির ভাইকে প্রস্তাব দিলেন যে, আমি তোমার জন্য আমার একজন স্ত্রীকে ত্বালাক দেব। ইদ্দত অতিবাহিত হওযার পর তুমি তাকে বিবাহ করে নেবে। (সহীহ বুখারী, বিবাহ অধ্যায়)।
(وَمَنْ يُّوْقَ شُحَّ نَفْسِه۪)- شُحَّ
অর্থ কৃপণ আর بخل অর্থও কৃপণ। তবে দুয়ের মাঝে পার্থক্য হল شُحَّ হলো নিজে কৃপণতা করে অন্যের কাছে পাওয়ার আশা করে, আর بخل শুধু কৃপণতা করা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমরা কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক, কারণ কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে। এ কৃপণতা তাদেরকে নিজেদের রক্তপাত করতে এবং হারামকে হালাল করে নিতে প্ররোচিত করেছিল। (সহীহ মুসলিম হা. ৬৭৪১)
(وَالَّذِيْنَ جَا۬ءُوْ مِنْۭ بَعْدِهِمْ)
অর্থাৎ যারা আনসার ও মুহাজিরদের পরে আগমন করে তারা নিজেদের জন্য ও সকল মু’মিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। এটা হল মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন : তোমাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তোমরা তাদেরকে গালি দিচ্ছো। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : এ জাতি ততক্ষণ পর্যন্ত ধ্বংস হবে না তাদেরকে যতক্ষণ না তাদের পরবর্তীগণ পূর্ববর্তী লোকদের অভিসম্পাত করবে। (মুসান্নফ ইবনু আবি শায়বাহ ১৫/১২৫, মুখতাসার তাফসীর বাগাভী ৬/৯৪৩) এ আয়াত প্রমাণ করছে সাহাবীদেরকে ভালবাসা ওয়াজিব। ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন; যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন সাহাবীর সাথে বিদ্বেষ পোষণ করবে অথবা অন্তরে কোন প্রকার হিংসা রাখবে তার জন্য মুসলিমদের ফাঈ মালে কোন হক নেই, তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করেন (কুরতুবী)।
সুতরাং আমাদের পূর্বে যারা ঈমান নিয়ে বিদায় নিয়েছে তাদের জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করব, কখনো তাদের ভুল বা অন্যায়ের কারণে অশালীন মন্তব্য ও বিদ্বেষমূলক কোন কথা বলব না। তাদের ভাল-মন্দ সকল কর্মের হিসাব আল্লাহ তা‘আলার কাছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আনসার ও মুহাজিরদের ফযীলত অবগত হলাম।
২. একজন মু’মিন অন্য মু’মিনকে ভালবাসবে, কোন হিংসা বিদ্বেষ রাখবে না-এটাই ঈমানের দাবী।
৩. নিজের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দেওয়ার ফযীলত অবগত হলাম।
৪. কৃপণতা নিন্দনীয়।
৫. সাহাবীদের গালি দেওয়া কুফরী কাজ, তাদের জন্য ক্ষমা চাওয়া ও সম্মানের সাথে স্মরণ ঈমানী দাবী।
৬. মুসলিমদের ঈমানী ভ্রাতৃত্ব রক্তের সম্পর্কের চেয়ে সুদৃঢ়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings