Surah Al Mujadila Tafseer
Tafseer of Al-Mujadila : 8
Saheeh International
Have you not considered those who were forbidden from private conversation, then they return to that which they were forbidden and converse among themselves about sin and aggression and disobedience to the Messenger? And when they come to you, they greet you with that [word] by which Allah does not greet you and say among themselves, "Why does Allah not punish us for what we say?" Sufficient for them is Hell, which they will [enter to] burn, and wretched is the destination.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮-১০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
মু’মিনের সকল কাজ হবে সৎ ও তাক্বওয়ার সাথে, এমনকি কোন বিষয়ে গোপন পরামর্শ করার প্রয়োজন হলেও কেননা গুনাহ ও অবাধ্যতার কাজে গোপন পরামর্শ করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য নয় বরং তা শয়তানের কাজ।
النَّجْوٰي (নাজওয়া) বলা হয় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মিলে গোপন পরামর্শ করা। এটা ভালও হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে ভালকাজে গোপন পরামর্শ করতে অনুমতি প্রদান করেছেন আর খারাপ কাজে গোপন পরামর্শ করা নিষেধ করেছেন। তবে তিন বা ততোধিকের উপস্থিতিতে দুইজনে আলাদা হয়ে গোপন পরামর্শ করা নিষেধ, তা কোন ভাল কাজে হলেও। কারণ এতে তৃতীয়জন কষ্ট পায় ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : যখন তিনজন থাকবে তখন তৃতীয়জনকে বাদ দিয়ে দু জনে গোপন পরামর্শ করবে না। (সহীহ বুখারী হা. ৬২৮৮)
(نُهُوْا عَنِ النَّجْوٰي)
এখানে মদীনার ইয়াহূদী ও মুনাফিকদেরকে বুঝানো হযেছে। তাদের পাশ দিয়ে কোন মুসলিম অতিক্রম করে গেলে তারা বসে গোপন পরামর্শ করত। ফলে মু’মিনরা ধারণা করতো যে, তারা হয়তো আমাদের হত্যা করার জন্য গোপন পরামর্শ করছে। তাই মু’মিনরা এরূপ অবস্থা দেখলে ভয়ে পথ বর্জন করত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের এরূপ কার্যকলাপ থেকে নিষেধ করলেন কিন্তু তারা উপেক্ষা করে তাতেই লিপ্ত হয়, তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : আয়াতটি ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। তারা নিজেরা পরস্পর গোপন পরামর্শ করত আর মু’মিনদের দিকে তাকাত ও চোখ টিপ মারত। মু’মিনরা মনে করত তাদের কাছে হয়তো আমাদের ভাইদের কোন হত্যা, মসিবত বা দুঃসংবাদ পৌঁছেছে তাই তারা এরূপ করছে। এতে মু’মিনরা খুব কষ্ট অনুভব করত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অধিক হারে অভিযোগ করতে লাগল, তিনি তাদেরকে বারণ করলেন কিন্তু তারা মানল না, তখন এ আয়াতগুলো নাযিল হয় (কুরতুবী)।
(وَإِذَا جَا۬ءُوْكَ حَيَّوْكَ....)
‘তোমার কাছে আসে তখন তারা তোমাকে এমন শব্দে অভিবাদন করে, যার দ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন করেননি’ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলত : اَلسَّامُ عَلَيْكَ আপনার মৃত্যু হোক। এর মাধ্যমে তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গালি দিত। আর বলত : আমাদের কথার কারণে যদি আল্লাহ তা‘আলা আমাদের শাস্তি না দিত! তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (আহমাদ২/১৭০, বায়হাকী ৭/১২১ হাসান)
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : জনৈক ইয়াহূদী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করল এবং বলল
السام عليك يا ابا القاسم
হে আবূল কাসেম! তোমার মৃত্যু হোক। আয়িশাহ (রাঃ) বললেন :
عليك السام واللعنة
তোমার মৃত্যু হোক এবং তোমার ওপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : হে আয়িশাহ আল্লাহ তা‘আলা খারাপ ও যারা খারাপ কাজ করে তাদেরকে ভালবাসেন না। আয়িশাহ (রাঃ) বলছেন : আপনি কি তাদের কথা শোনেননি তারা আপনার মৃত্যু কামনা করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তুমি কি শোননি, আমি তাদের জবাবে কী বলেছি? অর্থাৎ তোমাদেরও এরূপ হোক। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করলেন। (সহীহ বুখারী হা. ৬২৫৬)
সুতরাং একজন মু’মিন অন্য মু’মিনকে এমন শব্দ দ্বারা অভিবাদন করবে যা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিখিয়েছেন। অমুসলিমদের তৈরি করা অভিবাদন বা শরীয়ত গর্হিত শব্দ দ্বারা অভিবাদন জানানো মুসলিমদের আচরণ নয়।
(وَيَقُوْلُوْنَ فِيْٓأَنْفُسِهِمْ لَوْلَا يُعَذِّبُنَا اللّٰهُ بِمَا نَقُوْلُ)
‘আর তারা মনে মনে বলে : কেন আল্লাহ আমাদের শাস্তি দেন না, আমরা যা বলি তার কারণে’ তারা বলে, যদি মুহাম্মাদ সত্য নাবী হত তাহলে আমরা যা বলি সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শাস্তি দিতেন, আল্লাহ তা‘আলা কেন শাস্তি দিচ্ছেন না? আরো বলত, তিনি সত্য নাবী হলে তার দ্‘ুআ কবুল হয়ে যেত; ফলে আমরা মরে যেতাম। এটা তাদের জন্য আশ্চর্যজনক কথা। কারণ তারা আহলে কিতাব, তারা জানে নাবীরা কারো প্রতি রাগ করলেই তাদের জন্য দ্রুত আযাব কামনা করেন না। বরং তাদের কর্মের জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট।
(وَيَتَنَاجَوْنَ بِالْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَمَعْصِيَتِ الرَّسُوْلِ)
‘গোপন পরামর্শ করে পাপকার্যে, সীমালঙ্ঘনে ও রাসূলের অবাধ্যাচরণে’ অর্থাৎ নিজেদের মাঝে এমন পাপ কাজের শলাপরামর্শ করত যা নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
(إِنَّمَا النَّجْوٰي مِنَ الشَّيْطٰنِ)
অর্থাৎ পাপাচার, সীমালঙ্ঘন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবাধ্যতার বিষয়ে গোপন পরামর্শ করা হল শয়তানের কাজ। শয়তান তাদেরকে এ গোপন পরামর্শ করায় মু’মিনদেরকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। তারা মু’মিনদের কোন প্রকার কষ্ট বা ক্ষতি করতে পারবে না আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা না করলে। অতঃপর মু’মিনদের উচিত শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত না হয়ে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করা। মু’মিনরা কষ্ট পায় এমন বিষয় বা প্রেক্ষাপটে গোপন পরামর্শ করা নিষেধ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :
إذَا كَانُوا ثَلاَثَةٌ، فَلاَ يَتَنَاجَي اثْنَانِ دُونَ الثَّالِث فَإِنَّ ذَلِكَ يَحْزُنُهُ
যখন তোমরা তিনজন থাকবে তখন দ্বিতীয়জনকে বাদ দিয়ে গোপন পরামর্শ করিও না কেননা এতে সে চিন্তায় পতিত হবে। (সহীহ বুখারী হা. ৬২৯০)
সুতরাং মু’মিনদের প্রত্যেক কাজ হবে কল্যাণকর ও তাকওয়াপূর্ণ। তারা কখানো মানুষের ক্ষতি করবে না এবং ক্ষতি করার জন্য কাউকে গোপনে পরামর্শও দেবে না। বরং যারা অপরের ক্ষতি করার জন্য পরামর্শ দেয় তারা শয়তানের অনুসারী।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. পাপকাজ, সীমালঙ্ঘন ও রাসূলের অবাধ্য কাজে গোপন পরামর্শ করা নিষেধ।
২. সৎকাজে গোপন পরামর্শ করা বৈধ।
৩. অসৎকাজে গোপন পরামর্শ করা শয়তানের কাজ।
৪. কোন স্থানে তিনজন থাকলে একজনকে রেখে দু জন মিলে গোপন পরামর্শ করা নিষেধ, যতক্ষণ না তৃতীয়জনের অনুমতি নেয়া হয়।
৫. ভরসা করতে হবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ওপর, অন্য কারো ওপর নয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings