Surah Al Mujadila Tafseer
Tafseer of Al-Mujadila : 4
Saheeh International
And he who does not find [a slave] - then a fast for two months consecutively before they touch one another; and he who is unable - then the feeding of sixty poor persons. That is for you to believe [completely] in Allah and His Messenger; and those are the limits [set by] Allah . And for the disbelievers is a painful punishment.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
الْمُجَادَلَةُ শব্দটি ক্রিয়ামূল। শব্দের অর্থ হল : বাদানুবাদ করা, কথা কাটাকাটি করা। এ সূরার প্রথম আয়াতে উক্ত ক্রিয়ামূলের উল্লিখিত ক্রিয়া تجادلك থেকে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
সূরার শুরুর দিকে যিহারের বিধান ও কাফফারা, যারা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের দুনিয়া ও আখেরাতের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তারপর বলা হয়েছে যারা ইসলামের শত্রু তারা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরস্পর গোপন পরামর্শ করে থাকে, তাদের এ ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে মু’মিনদেরকে দীনী বিষয়ে পরামর্শ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতঃপর মজলিস ও রাসূলের সাথে মুআমালাতের আদবের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষে বলা হয়েছে যারা মুনাফিক তারাই ইসলামের শত্রুদের সাথে সম্পর্ক রাখে, মু’মিনরা কখনো ইসলামের শত্রুদের সাথে সম্পর্ক রাখে না, যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়।
শানে নুযূল :
উম্মুল মু’মিনীন আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : বরকতময় সে আল্লাহ যার শ্রবণশক্তি সবকিছু বেষ্টন করে নিয়েছে। আমি খাওলা বিনতু সা‘লাবাহর কথা শুনতে ছিলাম। তবে কিছু কিছু আমার কাছে অস্পষ্ট ছিল (একই রুমে ছিলাম তবুও ফিসফিস করে বলার কারণে শুনতে পাইনি) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা সাত আকাশের ওপর থেকে শুনে নিলেন। সে মহিলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তার স্বামীর ব্যাপারে অভিযোগ করে বলছে : হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্বামী আমার সম্পদ খেয়ে ফেলেছে, আমার জীবন তার সাথেই কেটেছে। এখন আমি বুড়ি হয়ে গেছি, আমার সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা লোপ পেয়েছে, এমতাবস্থায় আমার স্বামী আমার সাথে যিহার করেছে, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে অভিযোগ পেশ করছি। আয়িশাহ (রাঃ) বললেন : একটু পরে জিবরীল (আঃ) (قَدْ سَمِعَ اللّٰهُ قَوْلَ الَّتِيْ تُجَادِلُكَ) আয়াত নিয়ে অবতরণ করেন। তার স্বামীর নাম আউস বিন সামেত। (ইবনু মাযাহ হা. ১৮৮, ২০৬৩, নাসায়ী হা. ৩৪৬০, ইমাম বুখারী কিতাবুত তাওহীদে সনদ ছাড়া নিয়ে এসেছেন)।
একদা উমার (রাঃ) এ মহিলার পাশ দিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, সাথে সাহাবীরাও ছিলেন। তখন এ মহিলা উমার (রাঃ)-কে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে কথা বলতে লাগলেন এবং অনেক নসীহত করলেন এবং বললেন : হে উমার! তোমাকে মানুষ উমাইর (ছোট উমার অর্থাৎ অল্প বয়সের ছেলে) বলে ডাকত, তারপর মানুষ উমার বলে ডাকতে লাগল, অতঃপর এখন মানুষ তোমাকে আমীরুল মু’মিনীন বলে ডাকে। হে উমার! তুমি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর। কারণ যে ব্যক্তি জানে মৃত্যু অবধারিত তার মাঝে দুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার ভয় বিদ্যমান থাকে, যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে তাকে হিসাব দিতে হবে সে আযাবকে ভয় করে। উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসব কথা শুনছিলেন। মানুষ উমার (রাঃ)-কে বলল : হে আমীরুল মু’মিনীন! এ জায়গায় একজন বৃদ্ধা মহিলার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন? তিনি বললেন : এ মহিলা যদি দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখে আমি ফরয সালাতের সময় বাদে তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকব। তোমরা কি জান কে এ বৃদ্ধা মহিলা? তিনি হচ্ছেন খাওলা বিনতে ছা‘লাবাহ, যার কথা আল্লাহ তা‘আলা সাত আকাশের ওপর থেকে শুনেছেন। আল্লাহ তা‘আলা তার কথা শুনবেন আর আমি তার কথা শুনব না? (তাফসীর কুরতুবী)
১-৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতগুলোতে যিহারের বিধান ও পদ্ধতি এবং কাফফারা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যিহার হল স্ত্রীকে বা স্ত্রীর কোন অঙ্গকে যাদের সাথে বিবাহ হারাম তাদের সাথে তুলনা করা। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ ৩/৩৬৯)
মূলত যিহার হল স্বামী তার স্ত্রীকে বলবে : তুমি আমার মায়ের পিঠের মত, কেননা যিহার শব্দটি যহরুন থেকে গৃহীত যার অর্থ পিঠ। তাই অনেক মনীষী বলেছেন : স্ত্রীকে মায়ের পিঠের সাথে তুলনা করলেই যিহার হবে অন্যথায় হবে না। সঠিক কথা হল যেকোন মাহরাম মহিলার যে কোন অঙ্গের সাথে তুলনা করলেই যিহার হবে। যিহারের হুকুম হল যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে যিহার করে তাহলে কাফফারা না দেওয়া পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস করা তার জন্য হারাম হয়ে যাবে। যিহারের কাফফারা ৩-৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। শুধু কাফফারা দিলেই হবে না সাথে সাথে মৌখিকবভাবে উক্ত কথা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বলছেন ‘পরে তারা ফিরে আসে যা তারা বলেছে’। এ সম্পর্কে সূরা আহযাবের শুরুতে আলোচনা করা হয়েছে।
(مَّا هُنَّ أُمَّهٰتِهِمْ ط إِنْ أُمَّهٰتُهُمْ إِلَّا الّٰـ۬ئِيْ وَلَدْنَهُمْ)
‘তাদের স্ত্রীগণ তাদের মাতা নয়। তাদের মাতা তো কেবল তারাই যারা তাদেরকে জন্মদান করেছেন।’ অর্থাৎ স্ত্রীকে মায়ের মাথে তুলনা করলেই স্ত্রী মা হয়ে যায় না, বরং কেবল জন্মদাতাই মা।
(مُنْكَرًا مِّنَ الْقَوْلِ وَزُوْرًا)
‘তারা তো একটি অসঙ্গত ও মিথ্যা কথাই বলছে’ অর্থাৎ স্ত্রীকে মায়ের সাথে তুলনা করা একটি খারাপ ও মিথ্যা কথা, যা বলা কখনো সঙ্গত নয়। সুতরাং এরূপ কথা ও আচরণ থেকে মু’মিনরা সতর্ক ও বিরত থাকবে।
(مِّنْ قَبْلِ أَنْ يَّتَمَآسَّا)
‘একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে’ এখানে স্পর্শ করার অর্থ হল সহবাস করা। অর্থাৎ সহবাসের পূর্বে যিহারের কাফফারা আদায় করতে হবে। কেউ কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাস করে ফেললে সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে ও আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অবাধ্য হবে, তাকে অবশ্যই তাওবা করতে হবে, তবে কাফফারা মাফ হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উচুঁ স্বরের ও নীচু স্বরেরসহ সকল কথা শুনতে পান এমনকি তিনি অন্তর্যামী।
২. বান্দার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ। তিনি মহিলা সাহাবীর অভিযোগ শুনলেন এবং সুন্দর সুষ্ঠু সমাধান দিলেন আর বিধানটি সকলের জন্য প্রযোজ্য করে দিলেন।
৩. যিহার শুধু স্ত্রীর সাথে হয়, অন্য কোন নারীর সাথে হয় না।
৪. যদি স্ত্রীকে মা অথবা এমন কোন নারীর অঙ্গের সাথে তুলনা করা হয় যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম তাহলে যিহার বলে গণ্য হবে।
৫. স্ত্রীকে মাহরাম নারীদের সম্বোধনে ডাকা নিষেধ। যেমন স্ত্রীকে এরূপ বলা যে, হে আমার মা, হে আমার বোন ইত্যাদি।
৬. স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পূর্বেই উল্লিখিত তিনটির কোন একটি কাফফারা প্রদান করা ওয়াজিব।
৭. কেউ যিহারের কাফফারাস্বরূপ মিসকীনকে খাওয়াতে চাইলে অবশ্যই ষাট জন মিসকিনকে খাওয়াতে হবে। ষাট জনের খাবার একত্রিত করে একজন বা একাধিক জনকে দিলে শরীয়ত সিদ্ধ হবে না। (তাফসীর সা‘দী)।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings