Surah Al Hadid Tafseer
Tafseer of Al-Hadid : 23
Saheeh International
In order that you not despair over what has eluded you and not exult [in pride] over what He has given you. And Allah does not like everyone self-deluded and boastful -
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২-২৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
এখানে আল্লাহ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টির পূর্ব নির্ধারিত তাকদীরের বর্ণনা দিচ্ছেন। পৃথিবীতে যত বিপর্যয় ও বালা-মসিবত এবং মানুষের ব্যক্তিগত যে রোগ-ব্যাধি, কষ্ট- ক্লেশ ও অভাব-অনটনসহ ভাল-মন্দ যা কিছু আসে সব কিছুই সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার পূর্বেই লিপিবদ্ধ আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আকাশ-জমিন সৃষ্টি করার এক হাজার বছর পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা তাকদীর নির্ধারণ করে রেখেছেন। (সহীহ মুসলিম হা. ২৬৫৩, তিরমিযী হা. ২১৫৬)
(فِيْ كِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ)
‘পূর্বেই আমি তা কিতাবে লিপিবদ্ধ করে রেখেছি’ কিতাব বলতে লাওহে মাহফূয উদ্দেশ্য।
সাহাবী আলী (রাঃ) বলেন : আমরা বাকি গারকাদ নামক স্থানে এক জানাযায় ছিলাম, সেখানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমন করলেন। (জানাযা শেষে) তিনি বসলেন, তাঁর সাথে একটি লাঠি ছিল, লাঠি দ্বারা মাটিতে খোঁচাচ্ছিলেন, তারপর মাথা তুলে বললেন : তোমাদের এমন কেউ নেই যার ঠিকানা জান্নাতে অথবা জাহান্নামে লিখে রাখা হয়নি। এমনকি কে সৌভাগ্যশীল ও কে দুর্ভাগা তাও লিখে রাখা হয়েছে। মানুষের মধ্যে একজন লোক বলল : হে আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা কি আমাদের লিখিত তাকদীরের ওপর ভরসা করে থাকব না এবং আমল ছেড়ে দেবো না? কারণ, যে সৌভাগ্যশীল সে সৌভাগ্যবান হবেই আর যে দুর্ভাগা সে দুর্ভাগা হবেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তোমরা আমল করে যাও, প্রত্যেককে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তা তার জন্য সহজ করে দেওয়া হবে। (আবূ দাঊদ হা. ৪৬৯৬, তিরমিযী হা. ৩৩৪৪, হাদীসটি বুখারীতে রয়েছে)
(لِّكَيْلَا تَأْسَوْا) ‘এটা এজন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছ তাতে যেন তোমরা হতাশাগ্রস্ত না হও’ এখানে যে দুঃখ ও আনন্দ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তা হল এমন দুঃখ ও আনন্দ যা মানুষকে অবৈধ কাজ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তাছাড়া কোন কষ্টে দুঃখিত এবং কোন সুখে আনন্দিত হওয়া তো মানুষের একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। তবে মু’মিন বিপদে এ মনে করে ধৈর্য ধারণ করে যে, এটা আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছা ও ভাগ্যের লিখন। আর্তনাদ ও হা-হুতাশ করে কোন পরিবর্তন ঘটবে না বরং এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও উত্তম কিছু আশা করে। অনুরূপ মু’মিন সুখের দিন পেলে তাতে গর্ব ও অহংকার প্রদর্শন করে না। বরং এর জন্য আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর এ কথা মনে করে না যে, এ সুখ তার প্রাপ্য, এ শুধু তার পরিশ্রমেরই ফল। বরং বিশ্বাস করে, এ হল আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ ও দয়া।
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমাদের কেউ ঈমানের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে না যতক্ষণ না এ কথা জানবে যে, তার ওপর যত বিপদ-আপদ আসে তা ভুল করে আসে না এবং যে সব বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে যায় তা ভুল করে বেঁচে যায় না। (যিলালুল জান্নাত হা. ২৪৭, হাসান)
(الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ)
অর্থাৎ দুটি নিন্দনীয় বিষয় একত্রিত হয়েছে- (১) নিজে কৃপণতা করে (২) অপরকে কৃপণতা করার প্রতি উৎসাহিত করে। অথচ নিন্দার জন্য একটিই যথেষ্ট। কৃপণতা হল : ওয়াজিব হক যেমন যাকাত-ফিতরা ইত্যাদি আদায় না করা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :
إِيَّاكُمْ وَالشُّحَّ، فَإِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِالشُّحِّ
তোমরা কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করেছে। (আবূ দাঊদ হা. ১৬৯৮, সহীহ)
অতএব প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তিকে তাকদীরের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং বিপদাপদে আল্লাহ তা‘আলার ফায়সালাকে মেনে নিতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সৃষ্টি জীবের তাকদীর সৃষ্টির পূর্বেই নির্ধারিত।
২. এমন দুঃখ বা খুশি হওয়া উচিত না যা কুফরীর দিকে পৌঁছে দেয়।
৩. কৃপণতা করা নিন্দনীয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings