Surah Al Waqiah Tafseer
Tafseer of Al-Waqi'ah : 91
Saheeh International
Then [the angels will say], "Peace for you; [you are] from the companions of the right."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮৮-৯৬ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
এখানে আল্লাহ তা‘আলা প্রাগুক্ত তিন শ্রেণির মানুষের মৃত্যু ও পুনরুত্থানকালীন মর্যদাগত পার্থক্যের বর্ণনা করছেন। আলোচ্য আয়াতে তার প্রথম শ্রেণির কথা বলা হচ্ছে, যাদেরকে নৈকট্যপ্রাপ্ত বলা হয়। অর্থাৎ মুমূর্ষু ব্যক্তি যদি السَّابِقُوْنَ বা নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে তার জন্য রয়েছে উত্তম রিযিক, সুঘ্রাণ ও সুখময় জান্নাত যার সুসংবাদ ফেরেশতাগ.ণ মৃত্যুকালীন সময়ে প্রদান করেন। যেমন হাদীসে এসেছে : নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তির আত্মা কবয করার সময় রহমতের ফেরেশতা বলবে : হে পবিত্রআত্মা যা পবিত্র দেহে ছিলে, তুমি তাকে উত্তমভাবে পরিচালনা করেছো, আরাম ও বিশ্রামের দিকে বেরিয়ে আস, তোমার প্রতিপালক কখনো তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন না। (ইবনু মাযাহ হা. ৪২৬২, সহীহ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : رَوْحٌ অর্থ : বিশ্রাম رَيْحَانٌ অর্থ আরাম। এছাড়া এ ব্যাপারে অনেক উক্তি বর্ণিত আছে। (ইবনু কাসীর) আয়িশাহ (রাঃ) বলেন : নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) فَرُوحٌ (রা অক্ষরে পেশ দিয়ে) পড়তেন। (তিরমিযী হা. ২৯৩৮, আবূ দাঊদ হা. ৩৯৯১, সহীহ) অর্থ হল : জান্নাতে তার অবস্থান ও সাচ্ছন্দ্য জীবন, এটাই হল রহমত যা হাসান বাসরী (রহঃ) তাফসীর করেছেন (কুরতুবী)।
দ্বিতীয় শ্রেণী হলো : যারা ডান হাতে আমলনামা পাবে। এরা হল সাধারণ মু’মিন। ফেরেশতাগণ এসব মু’মিনদের মৃত্যুকালীন সময়ে সুসংবাদ দিয়ে বলবে : তোমার প্রতি সালাম, অর্থাৎ তোমার কোন অসুবিধা নেই, তুমি শান্তিতে থাকবে, তুমি ডানপন্থীদের মধ্যে শামিল। কাতাদাহ ও ইকরিমা (রহঃ) বলেন : ফেরেশতারা সালাম দেবে। (ইবনে কাসীর)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
( اِنَّ الَّذِیْنَ قَالُوْا رَبُّنَا اللہُ ثُمَّ اسْتَقَامُوْا تَتَنَزَّلُ عَلَیْھِمُ الْمَلٰ۬ئِکَةُ اَلَّا تَخَافُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَاَبْشِرُوْا بِالْجَنَّةِ الَّتِیْ کُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَﭭ نَحْنُ اَوْلِیٰ۬ؤُکُمْ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَفِی الْاٰخِرَةِﺆ وَلَکُمْ فِیْھَا مَا تَشْتَھِیْٓ اَنْفُسُکُمْ وَلَکُمْ فِیْھَا مَا تَدَّعُوْنَﭮﺚنُزُلًا مِّنْ غَفُوْرٍ رَّحِیْمٍﭯ)
“নিশ্চয়ই যারা বলে : আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় ফেরেশতা এবং বলে : তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্র“তি দেয়া হয়েছিল তার সুসংবাদ পেয়ে আনন্দিত হও। আমরাই তোমাদের বন্ধু দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে; সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা চাইবে। এটা হল ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আল্লাহর পক্ষ হতে আপ্যায়ন।” (সূরা ফুসসিলাত ৪১ : ৩০-৩২)
তৃতীয় শ্রেণী হলো : কাফির বেইমান। মৃত্যুকালীন সময়ে আযাবের ফেরেশতারা জাহান্নামের অসহনীয় শাস্তির ভয় দেখাবে এসব সত্য বিবরণ তুলে ধরার পর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলছেন : সুতরাং তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
(إِنَّ هٰذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِيْنِ)
‘নিশ্চয়ই এটা চূড়ান্ত সত্য’ অর্থাৎ বান্দাদের আমলানুযায়ী ভাল মন্দ যে প্রতিদানের কথা আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করলেন তা সত্য, তাতে কোন সংশয় নেই। এটা অবশ্যই সংঘটিত হবে। প্রত্যেকে তা প্রত্যক্ষ করবে এবং আমলের প্রতিদান ভোগ করবে।
(فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ)
‘অতএব, তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর’ উকবা বিন আমের আল জুহানী (রাঃ) বলেন : যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন তিনি বলেন : এটা তোমরা তোমাদের সালাতের রুকূতে রাখ। আর যখন
(سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَي)
অবতীর্ণ হলো তখন বললেন : এটা তোমরা তোমাদের সালাতের সিজদাতে রাখ। (আবূ দাঊদ হা. ৮৬৯, ইবনু মাযাহ হা. ৮৮৭ কিন্তু হাদীসটি দুর্বল)
জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : যে ব্যক্তি
سبحان الله العظيم وبحمده
এ দু’আটি পড়বে তার জন্য জান্নাতে খেজুর গাছ রোপণ করা হবে। (তিরমিযী হা. ৩৪৬৪, ৩৪৬৫, ইবনু হিব্বান হা. ২৩৩৫, সিলসিলা সহীহাহ হা. ৬৪)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : দুটি বাক্য যা উচ্চারণ করতে খুবই সহজ নেকীর পাল্লায় ওজনে ভারী এবং দয়াময় আল্লাহ তা‘আলার কাছে অতি প্রিয়। বাক্য দুটি হলো :
سبحان الله وبحمده وسبحان الله العظيم
মহা পবিত্র আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা; মহা পবিত্র আল্লাহ তা‘আলা, তিনি মহামহিয়ান। (সহীহ মুসলিম, সহীহ বুখারী হা. ৭৫৬৩)
অতএব প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তির নৈকট্যশীল ও ডানপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য যথাযথ সৎ আমল করা উচিত এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে বেশি বেশি দু’আ করা উচিত যেন তিনি আমাদেরকে তাদের কাতারে শামিল করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. তিন শ্রেণির মানুষের মাঝে যারা নৈকট্যশীল ও ডানপন্থী হবে তাদের সুখের অন্ত থাকবে না।
২. নৈকট্যপ্রাপ্ত ও ডান হাতে আমলনামা প্রাপ্তদের মৃত্যুকালীন সুসংবাদের কথা জানলাম।
৩. কাফিরদের জন্য যে জাহান্নামের শাস্তি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে তার বিবরণ জানা গেল।
৪. যারা ঈমান আনার পর তার ওপর অটল থাকে তাদের ফযীলত জানলাম।
৫. দুটি বাক্যের (দু‘আর) ফযীলত জানলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings