Surah Ar Rahman Tafseer
Tafseer of Ar-Rahman : 46
Saheeh International
But for he who has feared the position of his Lord are two gardens -
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৪৬-৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবনে শাওযিব (রঃ) ও আতা খুরাসানী (রঃ) বলেন যে, (আরবী)-এ আয়াতটি হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। হযরত আতিয়্যা ইবনে কায়েস (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি ঐ লোকটির ব্যাপারে অবতীর্ণ হয় যে বলেছিলঃ “তোমরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে, তাহলে সম্ভবতঃ আল্লাহ তা'আলা আমাকে খুঁজে পাবেন না।” একথাটি বলার পর লোকটি একদিন ও এক রাত ধরে তাওবা করে এবং আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবূল করেন ও তাকে জান্নাতে নিয়ে যান। কিন্তু সঠিক কথা এই যে, আয়াতটি সাধারণ। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর উক্তি এটাই। ভাবার্থ এই যে, যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন স্বীয় প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় করে এবং নিজেকে কুপ্রবৃত্তি হতে বাঁচিয়ে রাখে, হঠকারিতা করে না, পার্থিব জীবনের পিছনে পড়ে আখিরাত হতে উদাসীন থাকে না, বরং আখিরাতের চিন্তাই বেশী করে এবং ওটাকে উত্তম ও চিরস্থায়ী মনে করে, ফরয কাজগুলো সম্পাদন করে এবং হারাম কাজগুলো হতে দূরে থাকে, কিয়ামতের দিন তাকে একটি নয়, বরং দু’টি জান্নাত দান করা হবে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “দু'টি জান্নাত চাদির হবে এবং ওর সমস্ত আসবাবপত্রও চাদিরই হবে। আর দুটো জানাত হবে স্বর্ণ নির্মিত। ওর বরতন এবং ওতে যা কিছু রয়েছে সবই হবে সোনার। ঐ জান্নাতবাসীদের মধ্যে ও আল্লাহর দীদারের (দর্শনের) মধ্যে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, থাকবে শুধু তাঁর কিবরিয়ার চাদর যা তার চেহারার উপর থাকবে। এটা থাকবে জান্নাতে আদনে।” (এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। সহীহ হাদীস গ্রন্থগুলোর মধ্যে সুনানে আবি দাউদ ছাড়া অন্যান্য সব গ্রন্থেই এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে)
এ হাদীসের বর্ণনাকারী হযরত হাম্মাদ (রঃ) বলেনঃ আমার ধারণায় তো এ হাদীসটি মার। এটা (আরবী) এবং (আরবী)-এর তাফসীর।
স্বর্ণ নির্মিত জান্নাত দুটি আল্লাহ তা'আলার নৈকট্যলাভকারী লোকেদের জন্যে এবং চাদি বা রৌপ্য নির্মিত জান্নাত দুটি আসহাবে ইয়ামীন বা ডান দিকের লোকদের জন্যে।
হযরত আবু দারদা (রাঃ) বলেনঃ “একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)। আয়াতটি পাঠ করেন। তখন আমি বললামঃ যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে? আবার তিনি এ আয়াতটি পাঠ করলেন এবং আমিও আবার ঐ প্রশ্নটি করলাম। পুনরায় তিনি আয়াতটি পাঠ করলেন এবং আমিও পুনরায় ঐ প্রশ্নই করলাম। তখন তিনি বললেনঃ “যদি আবু দারদা (রাঃ)-এর নাক ধুলায় ধূসরিত হয়। (এ হাদীসটি ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
কোন কোন সনদে এ রিওয়াইয়াতটি মাওকুফ রূপেও বর্ণিত আছে এবং আবু দারদা (রাঃ) হতে এটাও বর্ণিত আছে যে, যার অন্তরে আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার ভয় রয়েছে তার দ্বারা ব্যভিচার ও চুরি অসম্ভব।
এ আয়াতটি সাধারণ, দানব ও মানব উভয়ই এর অন্তর্ভুক্ত এবং এটা একথার স্পষ্ট প্রমাণ যে, জ্বিনদের মধ্যে যারা ঈমান আনয়ন করবে এবং আল্লাহর ভীতি অন্তরে রাখবে তারাও জান্নাতে যাবে। এ জন্যেই এরপরে দানব ও মানবকে সম্বোধন করে বলা হয়েছেঃ “সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?”
এরপর আল্লাহ তা'আলা জান্নাত দুটির গুণাবলী বর্ণনা করছেন যে, উভয় জান্নাতই বহু শাখা-পল্লব বিশিষ্ট বৃক্ষে পূর্ণ। নানা প্রকারের সুস্বাদু ফল তথায় বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং দানব ও মানবের উচিত নয় যে, তারা তাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করে। (আরবী) বলা হয় শাখা বা ডালকে। এগুলো বহু সংখ্যক রয়েছে এবং একটি অপরটির সাথে মিলিতভাবে আছে। এগুলো ছায়াদার হবে, যেগুলোর ছায়া দেয়ালগুলোর উপরও উঠে থাকবে। এই শাখাগুলো সোজা হবে ও ছড়িয়ে থাকবে। ওগুলো রঙ বেরঙ এর হবে। ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ওগুলো বিভিন্ন প্রকারের ফল থাকবে।
হযরত আসমা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সিদরাতুল মুনতাহার বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ “ওর শাখাগুলোর ছায়া এতো দীর্ঘ হবে যে, একজন অশ্বারোহীর এক শত বছর পর্যন্ত ঐ ছায়ায় চলে যাবে।” অথবা বলেছেনঃ “একশ জন অশ্বারোহী ওর নীচে ছায়া গ্রহণ করতে পারবে।” সোনার ফড়িংগুলো তাতে ছেয়েছিল। ওর ফলগুলো ছিল বড় বড় মটকার মত অত্যন্ত বড় ও গোল।” (হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ঐ জান্নাতদ্বয়ের মধ্য দিয়ে দুটি প্রস্রবণ প্রবাহিত হচ্ছে যাতে ঐ উদ্যানগুলোর গাছ ও শাখা সজীব ও সতেজ থাকে এবং অধিক ও উন্নত মানের ফল দান করে। তাই মহান আল্লাহ বলেনঃ অতএব হে দানব ও মানব! তে প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
প্রস্রবণ দুটির একটির নাম তাসনীম এবং অপরটির নাম সালসাবীল। এ দুটি প্রস্রবণ পূর্ণভাবে প্রবাহিত রয়েছে। একটি হলো স্বচ্ছ ও নির্মল পানির এবং অপরটি হলো সুস্বাদু সুরার যাতে নেশা ধরবে না।
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রত্যেক ফল দুই প্রকার। আরো বহু ফল রয়েছে যেগুলোর আকৃতি তোমাদের নিকট পরিচিত কিন্তু স্বাদ মোটেই পরিচিত নয়। কেননা, তথাকার নিয়ামত না কোন চক্ষু দেখেছে, না কোন কর্ণ শুনেছে, না মানুষের অন্তরে ওর কল্পনা জেগেছে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন নিয়ামত অস্বীকার করবে?
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, দুনিয়ায় যত প্রকারের তিক্ত ও মিষ্ট ফল আছে এগুলোর সবই জান্নাতে থাকবে, এমনকি হানযাল ফলও থাকবে। যা, এ তবে দুনিয়ার এই জিনিসগুলো এবং জান্নাতের ঐ জিনিসগুলোর নামে তো মিল থাকবে বটে, কিন্তু স্বাদ হবে সম্পূর্ণ পৃথক। এখানে তো শুধু নাম রয়েছে, মূলতত্ব তো রয়েছে জান্নাতে। এই মর্যাদার পার্থক্য ওখানে যাবার পরেই জানা যেতে পারে, পূর্বে জানা সম্ভব নয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings