Surah Ar Rahman Tafseer
Tafseer of Ar-Rahman : 44
Saheeh International
They will go around between it and scalding water, heated [to the utmost degree].
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৭-৪৫ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতগুলোতে কিয়ামত ও জাহান্নামের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। সেদিন জাহান্নামীদের কিরূপ দেখাবে সে কথাও বর্ণনা করা হয়েছে।
কিয়ামতের দিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে পড়বে, ফেরেশতাগণ পৃথিবীতে অবতরণ করবেন। সেদিন আকাশ জাহান্নামের আগুনের প্রচণ্ড তাপের কারণে গলে রঙানো চামড়ার মতো লাল হয়ে যাবে।
الدِّهَانِ বলা হয় তেল বা লাল চামড়া। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَانْشَقَّتِ السَّمَا۬ءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَّاهِيَةٌ)
“এবং আকাশ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে নিস্তেজ অবস্থায় বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে।” (সূরা আল হা-ক্বক্বাহ্ ৬৯ : ১৬)
(فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُسْأَلُ.....)
‘সেদিন মানুষ ও জিনকে তার অপরাধ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হবে না’ এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করলেন কিয়ামত দিবসে কোন মানুষ ও জিনকে তার অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না। এরূপ অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَا يُسْأَلُ عَنْ ذُنُوْبِهِمُ الْمُجْرِمُوْنَ)
“অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না? ” (সূরা আল ক্বাসাস ২৮ : ৭৮)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন : রাসূল এবং যাদের কাছে তাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে সবাইকে জিজ্ঞাসা করবেন। যেমন
(فَلَنَسْئَلَنَّ الَّذِيْنَ أُرْسِلَ إِلَيْهِمْ وَلَنَسْئَلَنَّ الْمُرْسَلِيْنَ)
“অতঃপর যাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল তাদেরকে আমি অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব এবং রাসূলগণকেও জিজ্ঞাসা করব।” (সূরা আল আ‘রাফ ৭ : ৬)
উভয়ের সমাধান হলো : যে আয়াতগুলোতে জিজ্ঞাসা করা হবে না উল্লেখ করা হয়েছে সে আয়াতগুলো খাস বা সীমাবদ্ধ। আর যে আয়াতগুলোতে জিজ্ঞাসা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা আম বা ব্যাপক।
কেননা না বোধক আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে শুধু পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে না। আর হ্যাঁ বোধক আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে সকল আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। এছাড়াও ‘আলিমগণ বলেছেন যে, প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা করা দু প্রকার :
(১) তিরষ্কারমূলক জিজ্ঞাসা করা, এটা এক প্রকার শাস্তি।
(২) তদন্তমূলক জিজ্ঞাসা, তথ্য সংগ্রহ করার জন্য জিজ্ঞাসা করা।
যে আয়াতগুলোতে জিজ্ঞাসা করবেন না বলা হয়েছে তা দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত। কেননা আল্লাহ তা‘আলার তদন্ত করার প্রয়োজন নেই তিনি সবকিছু জানেন। অতএব আয়াতের অর্থ হলো : সেদিন কোন মানুষ ও জিনকে তার অপরাধ সম্পর্কে জানার জন্য জিজ্ঞাসা করা হবে না অর্থাৎ, তারা যে আমলনামা হাতে পেয়েছে এবং তাতে তাদেরযে অপরাধের কথা উল্লেখ রয়েছে তা তারা করেছে কিনা এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজনই হবে না, বরং তা সেদিন বিভিন্ন সাক্ষীর মাধ্যেমে প্রমাণিত হবে। যেমন তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও নবীদের সাক্ষ্য ইত্যাদি। (আযওয়াউল বায়ান)
بِسِيْمَاهُمْ- অর্থাৎ আলামত যা তাদের ওপর প্রকাশ পাবে, তা দ্বারা অপরাধীদের চেনা যাবে।
হাসান বাসরী ও কাতাদাহ্ (রহঃ) বলেন : অপরাধীদের চেনা যাবে কালো চেহারা ও নীল বর্ণ বিশিষ্ট চোখ দেখে। যেমন মু‘মিনদেরকে চেনা যাবে তাদের ওযূর অঙ্গসমূহে চাঁদের আলোর মতো চমকাতে দেখে।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
( یَّوْمَ تَبْیَضُّ وُجُوْھٌ وَّتَسْوَدُّ وُجُوْھٌﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اسْوَدَّتْ وُجُوْھُھُمْﺤ اَکَفَرْتُمْ بَعْدَ اِیْمَانِکُمْ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا کُنْتُمْ تَکْفُرُوْنَ)
“সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল এবং কিছু চেহারা হবে কালো। অতঃপর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে), তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমাদের কুফরী করার কারণে শাস্তি ভোগ কর।” (সূরা আলি ‘ইমরান ৩ : ১০৬)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ تَرَي الَّذِيْنَ كَذَبُوْا عَلَي اللّٰهِ وُجُوْهُهُمْ مُّسْوَدَّةٌ ط أَلَيْسَ فِيْ جَهَنَّمَ مَثْوًي لِّلْمُتَكَبِّرِيْنَ)
“তুমি কিয়ামতের দিন যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মুখ কাল দেখবে। অহংকারীদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়?” (সূরা যুমার ৩৯ : ৬০)
(فَيُؤْخَذُ بِالنَّوَاصِيْ وَالْأَقْدَامِ)
অর্থাৎ ফেরেশতারা তাদের ললাট ও পা একসাথে মিলিয়ে ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন এবং বলবেন : এটা হল সে জাহান্নাম যা তোমরা অস্বীকার করতে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : ললাট ও উভয় পা ধরা হবে, অতঃপর তা কাঠের মতো ভেঙ্গে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। যহহাক (রহঃ) বলেন : জাহান্নামীদের ললাট ও উভয় পা পেছন দিক থেকে শিকল দ্বারা বাধা হবে। (ইবনু কাসীর)
(يَطُوْفُوْنَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ حَمِيْمٍ اٰنٍ)
‘তারা জাহান্নামের ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটোছুটি করবে’ অর্থাৎ কখনো তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি দেয়া হবে, আবার কখনো ফুটন্ত পানি পান করার শাস্তি দেয়া হবে।
اٰنٍ গরম পানি, যে পানি নাড়ীভূঁড়ি গলিয়ে দেয়। ==
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِذِ الْأَغْلٰلُ فِيْٓ أَعْنَاقِهِمْ وَالسَّلٰسِلُ ط يُسْحَبُوْنَ- فِي الْحَمِيْمِ ثُمَّ فِي النَّارِ يُسْجَرُوْنَ)
“যখন তাদের গলদেশে বেড়ি ও শৃঙ্খল থাকবে, তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে দগ্ধ করা হবে অগ্নিতে।” (সূরা মু’মিন ৪০ : ৭১-৭২)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কিয়ামতের দিন আকাশের কী ভয়াবহ অবস্থা হবে তা জানতে পারলাম।
২. পাপাচারীদের কী লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি হবে তাও জানতে পারলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings