Surah Adh Dhariyat Tafseer
Tafseer of Adh-Dhariyat : 53
Saheeh International
Did they suggest it to them? Rather, they [themselves] are a transgressing people.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫২-৬০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, মক্কার কাফিররা তোমাকে জাদুকর ও পাগল বলে যে ঠাট্টা করছে তা নতুন কথা নয়। বরং পূর্বে যত নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলাম সবাইকে তাদের উম্মতের লোকেরা এরূপ কথা বলেছিল।
(أَتَوَاصَوْا بِهِ)
অর্থাৎ তারা একে অপরকে কি এ কথাই বলার (নাবীদেরকে পাগল, জাদুকর) ওসিয়ত করে। না, তারা এরূপ ওসিয়ত করে যায়নি? বরং তারা প্রত্যেকেই স্ব-স্ব স্থানে সীমালঙ্ঘনকারী। কারণ কাফিরদের অন্তর ও আমল কুফরী ও অবাধ্য কাজে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ط تَشَابَهَتْ قُلُوْبُهُمْ)
“এদের পূর্বে যারা ছিল তারাও এদের অনুরূপ কথা বলত। তাদের সবারই অন্তর পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ।” (সূরা বাকারাহ ২ :১১৮)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবাধ্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করছেন। কারণ তাদের কাছে দা‘ওয়াত পৌঁছার পরেও অপরাধে লিপ্ত হলে আপনাকে তিরস্কার করা হবে না। আপনার দায়িত্ব কেবল পৌঁছে দেয়া। আর তা আপনি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلٰغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ)
“তোমার কর্তব্য তো কেবল প্রচার করা এবং হিসেব-নিকেশ একমাত্র আমার কাজ।” (সূরা রাদ ১৩ :৪০)
(فَإِنَّ الذِّكْرَي تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِينَ)
স্মরণ করিয়ে দেয়া দু’প্রকার- (১) এমন বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়া যা বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানা নেই, কিন্তু মূল কথা স্বভাব ও জ্ঞান দ্বারা জ্ঞাত। যেমন কল্যাণকর জিনিসকে পছন্দ করা, অকল্যাণকর জিনিসকে অপছন্দ করা। (২) এমন বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়া যা মু’মিনদের জানা। কিন্তু ভুলে গেছে, অসচেতন হয়ে গেছে।
এক্ষেত্রে মু’মিনকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমলের ওপর প্রতিষ্টিত করা। উভয়ভাবেই স্মরণ করানো মু’মিনের উপকারে আসে। কারণ তার মাঝে যে ঈমান ও আল্লাহ তা‘আলার ভয় রয়েছে তা কাজ করে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(فَذَکِّرْ اِنْ نَّفَعَتِ الذِّکْرٰیﭘ سَیَذَّکَّرُ مَنْ یَّخْشٰیﭙوَیَتَجَنَّبُھَا الْاَشْقَی)
“অতএব উপদেশ দাও যদি উপদেশ উপকারী হয়। যারা ভয় করে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে। আর তা উপেক্ষা করবে সে, যে নিতান্ত হতভাগ্য।” (সূরা আলা ৮৭ :৯-১১)
(إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ)
‘তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে’ এটাই হলো মানব ও জিন জাতি সৃষ্টির একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন :
إلا ليوحدون
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য জিন ও মানব জাতি সৃষ্টি করেছেন। আলী (রাঃ) বলেন : অর্থাৎ আমি জিন ও মানুষ সৃষ্টি করিনি, তবে (সৃষ্টি করে) তাদেরকে ইবাদত করার নির্দেশ দিয়েছি (কুরতুবী)। সুতরাং প্রত্যেক মানুষ ও জিন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না এটাই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। তবে মনে রাখতে হবে ইবাদত শুধু সালাত, সিয়াম, হাজ্জ ও যাকাতের মাঝে সীমাবদ্ধ নয় বরং ইবাদত একটি ব্যাপক নাম। প্রত্যেক কথা ও কাজ তা বাহ্যিক হোক আর আভ্যন্তরীন হোক যা আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন তাই ইবাদত।
আল্লাহ তা‘আলা মানুষের নিকট থেকে কোন রিযিকও চান না, আর তারা কোন কিছু তাঁকে খাওয়াবে তাও তিনি চান না, কারণ তিনি বান্দাদের রিযিক দান করেন। তিনি সকল কিছু থেকে অমুখাপেক্ষী। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(لَنْ يَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَلَا دِمَا۬ؤُهَا وَلٰكِنْ يَّنَالُهُ التَّقْوٰي مِنْكُمْ)
“আল্লাহর নিকট পৌঁছে না তাদের গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাক্ওয়া।” (সূরা হাজ্জ ২২ :৩৭)
ذَنُوبِ অর্থ : ভরা বালতি। যেমন কুয়া থেকে পানি তুলে বণ্টন করা হয় এদিক দিয়ে এখানে বালতিকে অংশের অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ হলো : অত্যাচারীদের প্রাপ্য শাস্তির অংশ আছে। যেমন ইতোপূর্বে কুফ্রী ও র্শিককারীদের তাদের শাস্তির অংশ পেতে হয়েছে। অর্থাৎ মক্কার যে সকল মুশরিকরা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের জন্য আযাবের একটি অংশ রয়েছে যেমন পূর্ববর্তী উম্মতের যারা তাদের নাবীদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের জন্য নির্ধারিত আযাবের একটি অংশ রয়েছে (আযওয়াউল বায়ান)।
তবে এ শাস্তির অংশ তারা কখন পাবে, তা নির্ভর করে আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছার ওপর। সুতরাং শাস্তি চাওয়ার ব্যাপারে তারা যেন তাড়াহুড়া না করে।
(مِنْ يَوْمِهِمُ الَّذِي يُوعَدُونَ)
‘যে দিনের ভয় তাদেরকে দেখানো হয়েছে’ সে প্রতিশ্র“ত দিন হলো কিয়ামতের দিন। অতএব আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন সে উদ্দেশ্য যেন ভ্রষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সকল কাফিরদের স্বভাব, রীতিনীতি এক ও অভিন্ন।
২. অন্যায় ও সীমালঙ্ঘনের পরিণতি নিজের ওপরেই বর্তায়।
৩. মু’মিনদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়া উচিত।
৪. মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানলাম।
৫. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টি থেকে অমুখাপেক্ষী।
৬. কাফিরদের স্থায়ী ঠিকানা জাহান্নাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings