Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 95
Saheeh International
Not equal are those believers remaining [at home] - other than the disabled - and the mujahideen, [who strive and fight] in the cause of Allah with their wealth and their lives. Allah has preferred the mujahideen through their wealth and their lives over those who remain [behind], by degrees. And to both Allah has promised the best [reward]. But Allah has preferred the mujahideen over those who remain [behind] with a great reward -
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৯৫-৯৬ নং আয়াতের তাফসীর:
সহীহ বুখারী শরীফে রয়েছে, হযরত বারা’ (রাঃ) বলেন যে, যখন এ আয়াতের প্রাথমিক শব্দগুলো অবতীর্ণ হয়-‘গৃহে উপবিষ্টগণ ও ধর্মযোদ্ধাগণ সমান নয়’ তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত যায়েদ (রাঃ)-কে ডেকে নিচ্ছিলেন এমন সময়ে হযরত উম্মে মাকতুম (রাঃ) উপস্থিত হন এবং বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি তো অন্ধ।' তখন (আরবী)-এ অংশটুকু অবতীর্ণ হয়। অর্থাৎ ঐ উপবিষ্টগণ সমান নয় যারা বিনা ওযরে গৃহে উপবিষ্ট থাকে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত যায়েদ (রাঃ) স্বীয় দোয়াত, কলম ও কালি নিয়ে এসেছিলেন। অন্য হাদীসে রয়েছে যে, ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) বলেছিলেন , ‘হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! যদি আমার ক্ষমতা থাকতো তবে আমি অবশ্যই জিহাদে অংশগ্রহণ করতাম। তখন (আরবী) -এ শব্দগুলো অবতীর্ণ হয়। সে সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উরু হযরত যায়েদ (রাঃ)- এর উপর ছিল। হযরত যায়দ (রাঃ)- এর উরুর উপর এত চাপ পড়ে যে, যেন তা ভেঙ্গেই যাবে। আর একটি হাদীসে রয়েছে, হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) বলেন, যখন এ শব্দগুলোর অহী রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর অবতীর্ণ হয় এবং সকীনা’ তাকে আবৃত করে সে সময় আমি তার পার্শ্বদেশে বসেছিলাম, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উরু আমার উপর এত ভারী অনুভূত হয় যে, আমি এত ভারী বোঝা কখনও বহন করিনি। অতঃপর অহী সরে যাওয়ার পর তিনি (আরবী) পর্যন্ত আয়াত লিখিয়ে নেন। আমি ওটা কাধের অস্থির উপর লিখে লই।
অন্য একটি হাদীসে নিম্নের শব্দগুলো রয়েছেঃ “তখনও ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ)-এর কথাগুলো শেষ হয়নি এর মধ্যেই রাসূলুল্লাহ (সঃ) -এর উপর অহী অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়ে যায়।'
হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) বলেন, ‘ঐ দৃশ্য এখনও আমার চোখের সামনে ভাসছে, আমি যেন দেখছি। পরে অবতীর্ণ এ শব্দগুলো আমি পূর্ব লিখার সঙ্গে সংযোগ করে দেই।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এ আয়াত দ্বারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এবং যুদ্ধে অনুপস্থিতদেরকে বুঝান হয়েছে। বদরের যুদ্ধের সময় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রাঃ) এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) এসে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা দু'জন তো অন্ধ। আমাদের জন্যে অবকাশ রয়েছে কি?' তখন তাঁদেকে কুরআন কারীমের এ আয়াতের মাধ্যমে অবকাশ দেয়া হয়। সুতরাং মুজাহিদগণকে যে উপবিষ্টদের উপর মর্যাদা দেয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন ঐসব লোক যারা সুস্থ ও সবল। প্রথমে মুজাহিদগণকে সাধারণভাবে উপবিষ্টদের উপর মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। অতঃপর (আরবী)-এ শব্দগুলো অবতীর্ণ করতঃ যাদের শরীয়ত সমর্থিত ওযর রয়েছে, তাদেরকে সাধারণ উপবিষ্টগণ হতে পৃথক করা হয়। যেমন অন্ধ, খোড়া, রুগ্ন ইত্যাদি। এসব লোক মুজাহিদগণেরই শ্রেণীভুক্ত। অতঃপর মুজাহিদগণের যে মর্যাদা বর্ণনা করেছেন ওটাও ঐসব লোকের উপর, যারা বিনা কারণে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন না। যেমন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর তাফসীরে বর্ণিত হয়েছে। আর এটা হওয়াই উচিতও বটে।
সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ মদীনায় এমন কতক লোকও রয়েছে যে, তোমরা যে যুদ্ধের সফর কর এবং যে জঙ্গল অতিক্রম কর, তারা পুণ্যে তোমাদের সমান। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, যদিও তারা মদীনাতেই অবস্থান করেন?' রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ হ্যা, কেননা ওযর তাদেরকে বাধা দিয়ে রেখেছে? অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “তোমরা যা খরচ কর তার পুণ্য তোমরাও যেমন পাও, তারাও তেমনই পেয়ে থাকে। এ ভাবার্থকেই একজন কবি নিম্নের কবিতায় বর্ণনা করেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ হে আল্লাহর ঘরের দিকে হজ্ব যাত্রীগণ! তোমরা যদিও সশরীরে ঐ দিকে চলেছো, কিন্তু আমরা রূহানী গতিতে ঐ দিকে চলেছি। জেনে রেখো যে, শক্তিহীনতা ও ওযর আমাদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং এটা স্পষ্ট কথা যে, ওযরের কারণে বাড়ীতে অবস্থানকারী যাত্রীদের অপেক্ষা কোন অংশে কম নয়।'
এরপর আল্লাহ তাআলা বলেন-“সকলকেই আল্লাহ তাআলা কল্যাণপ্রদ প্রতিশ্রুতি দান করেছেন। এর দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, জিহাদ ফরযে আইন নয়, বরং ফরযে কিফায়া। তারপরে ইরশাদ হচ্ছে-‘বাড়ীতে উপবিষ্টদের উপর মুজাহিদগণের বড়ই মর্যাদা রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ পাক তাদের উচ্চ পদ-মর্যাদা, তাদের পাপ মার্জনা করণ এবং তাদের উপর যে করুণা ও অনুগ্রহ রয়েছে তা বর্ণনা করেছেন। তারপর স্বীয় সাধারণ ক্ষমা ও সাধারণ দয়ার সুসংবাদ দিয়েছেন।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ জান্নাতে একশ দরজা রয়েছে। যেগুলো আল্লাহ তা'আলা তাঁর পথে জিহাদকারীদের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন এবং প্রত্যেক দরজার মধ্যে এ পরিমাণ দূরত্ব রয়েছে যে পরিমাণ দূরত্ব রয়েছে। আসমান ও যমীনের মধ্যে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে তীর চালনা করে সে জান্নাতের দরজা লাভ করে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেনঃ দরজা কি? তিনি বলেনঃ “ওটা তোমাদের এখানকার ঘরের দরজার সমান নয় বরং দু' দরজার মধ্যে শত বছরের দূরত্ব রয়েছে।”
________________________________________
৯৭। নিশ্চয়ই যারা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছিল ফেরেশতা তাদের প্রাণ হরণ করে বলবে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলবে, আমরা দুনিয়ায় অসহায় ছিলাম; তারা বলবে, আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিল না যে, তন্মধ্যে তোমরা হিজরত করতে? অতএব ওদেরই বাসস্থান জান্নাম এবং ওটা নিকৃষ্ট গন্তব্য স্থান।
৯৮। কিন্তু পুরুষ, নারী এবং শিশুগণের মধ্যে অসহায়তা বশতঃ যারা কোন উপায় করতে পারে না অথবা কোন পথ প্রাপ্ত হয় না।
৯৯। ফলতঃ তাদেরই আশা আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।
১০০। আর যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করেছে সে পৃথিবীতে বহু প্রশস্ত স্থান ও স্বচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে, এবং যে কেউ গৃহ হতে বহির্গত হয়ে আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করে- তৎপর সে মৃত্যু মুখে পতিত হয়। তবে নিশ্চয়ই এর প্রতিদান আল্লাহর উপর ন্যস্ত রয়েছে; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings