Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 62
Saheeh International
So how [will it be] when disaster strikes them because of what their hands have put forth and then they come to you swearing by Allah, "We intended nothing but good conduct and accommodation."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬০-৬৩ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আবূ বারযাতা আল-আসলামী নামে একজন গণক ছিল। তার কাছে ইয়াহূদীগণ যে সকল বিচার নিয়ে আসত সে তার ফায়সালা করত। একদা কিছু মুসলিম তার কাছে বিচার নিয়ে আসে। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়
(أَلَمْ تَرَ إِلَي الَّذِيْنَ يَزْعُمُوْنَ.................. إِلَّآ إِحْسَانًا وَّتَوْفِيْقًا) ।
(লুবানুল নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃঃ ৮৬, সহীহ) বিশিষ্ট তাবেয়ী শা’বী (রহঃ) বলেন: জনৈক মুনাফিক ও ইয়াহূদীর মাঝে কোন বিষয়ে বিবাদ ছিল। ইয়াহূদী বলল: আমরা ফায়সালার জন্য মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে যাব। কারণ সে ইয়াহূদী জানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুষ নেন না। মুনাফিক বলল: আমরা ইয়াহূদীর কাছে যাব। সম্ভব সে ঘুষ নিয়ে আমার পক্ষে ফায়সালা দেবে। তারপর তারা উভয়ে একমত হল যে, তারা জুহায়না গোত্রের এক গণকের কাছে যাবে। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। এছাড়াও উমার (রাঃ) যে মুনাফিককে হত্যা করেছেন বলে জানা যায় তার ব্যাপারে নাযিল হয়েছে বলে বর্ণনা রয়েছে। (কিতাবুত তাওহীদ, তাফসীর কুরতুবী ৫/১৯৯)
যারা দাবী করে আল্লাহ তা‘আলা, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কিরামের প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তার প্রতি ঈমান এনেছে- আল্লাহ তা‘আলা তাদের ঈমানকে নাকচ করে দিয়ে বলেন: তারা ঈমানদার নয়, তারা মুনাফিক। প্রকৃত ঈমানদার হলে তারা কুরআন ও সুন্নাহর বিচার-ফায়সালা প্রতিষ্ঠিত থাকার পরেও অন্য কোন মানব রচিত বিধানের দিকে ধাবিত হত না।
আল্লাহ তা‘আলার কিতাব ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহীহ সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কিছুর কাছে বিচার ফায়সালা চাওয়া তাগুতকে মাথা পেতে মেনে নেয়ার শামিল।
অথচ এ তাগুতকে বর্জন করা ওয়াজিব। অন্যথায় প্রকৃত ঈমানদার হওয়া যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَدْ أُمِرُوْآ أَنْ يَّكْفُرُوْا بِه۪)
তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ তাগুতের সাথে কুফরী করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَمَنْ يَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَيُؤْمِنْۭ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰي)
“সুতরাং যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত রশি ধারণ করল।”(সূরা বাকারাহ ২:২৫৬)
ইসলাম বিনষ্টের অন্যতম একটি কারণ হলো: যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক প্রদর্শিত পথ ব্যতীত অন্যের প্রদর্শিত পথ অধিক পরিপূর্ণ অথবা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিচার ফায়সালা থেকে অন্যের বিচার ফায়সালা অতি উত্তম, তাঁর বিচার ফায়সালা বাদ দিয়ে অন্যের কাছে বিচার ফায়াসালা চাওয়া বৈধ, তাহলে সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে। কেননা এ ব্যক্তি দীনের জরুরী হারাম বিষয়কে হালাল মনে করছে।
এদের কথা হলো তাদের কথার মত, যারা বলে: ব্যভিচার করা বৈধ, কিন্তু আমি তা করি না, অথবা বলে সুদ খাওয়া বৈধ কিন্তু আমি সুদী লেনদেন করি না। এ ব্যক্তিও কাফির হয়ে যাবে। কেননা ব্যভিচার, সুদ ইসলামে হারাম, আপনি তা হালাল মনে করছেন অথচ তা দীনের জরুরী জ্ঞাত হারাম বিষয়। এটা কুফরী কাজ।
অনুরূপভাবে যদি কেউ বলে: মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার ফায়সালা জায়েয, তবে শরয়ী বিধান অধিক উত্তম, আমরা বলব: না; আপনি মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার ফায়াসালা বৈধ করে দিচ্ছেন, এটা কুফরী ও বর্জনীয়। কেননা আপনি দীনের জরুরী জ্ঞাত হারামকে হালাল মনে করছেন। তাই মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার-ফায়সালা করা ও গ্রহণ করা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যেমন ব্যভিচার, সুদ সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যে ব্যক্তি বলবে : সুদ, ব্যভিচার হালাল, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে যদি বলে : মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার-ফায়াসালা করা বৈধ সে কাফির হয়ে যাবে। যদিও সে বিশ্বাস করে শরয়ী বিচার ফায়াসালা অধিক উত্তম।
তাই যারা মুখে ঈমানের কথা বলে বেড়ায় আর বিচার-ফায়সালার ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহ অগ্রাহ্য করে, সাথে সাথে বলে বর্তমান যুগে কুরআন-সুন্নাহ অকেজো হয়ে গেছে তা দ্বারা বিচার করা সম্ভব নয়, কিংবা তাগুতের ফায়সালাকে কুরআন ও সুন্নাহ সমতুল্য মনে করে, তারা কখনো ঈমানদার থাকতে পারে না। তারা ইসলামের গণ্ডির বাইরে। যতই মুখে ঈমানের কথা বলুক।
এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে যাদেরকে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে ডাকা হলে বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে ইয়াহূদী-খ্রিস্টানদের পরিচয় দিয়ে থাকে।
বরং একজন প্রকৃত ঈমানদারকে যখন কুরআন ও সুুন্নাহর দিকে আহ্বান করা হবে তখন সে তা শুনবে এবং মেনে নেবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَي اللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَّقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا)
“মু’মিনদের উক্তি তো কেবল এই- যখন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহ্বান করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা শ্রবণ করলাম ও আনুগত্য করলাম।’ (সূরা নূর ২৪:৫১)
মুনাফিকরা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কারণে যখন আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত আযাবে নিপতিত হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে শপথ করে বলে আমরা তো তাদের কাছে গিয়েছিলাম একটি সুরাহা ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য। এরা মুখে যা বলে অন্তরে তা করে না ও ভাবে না।
আল্লাহ তা‘আলা এদের অন্তরের খবর জানেন। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সদুপদেশ প্রদান করতে বলেছেন।
তাই যারা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তাদের সাথে মু’মিনরা আন্তরিক কোন সম্পর্ক রাখবে না। তাদেরকে সদুপদেশ ও নসীহত করাই মু’মিনের একমাত্র কর্তব্য হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কুরআন ও সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কোন মানব রচিত বিধানের নিকট ফায়সালার জন্য যাওয়া শির্ক ও কুফরী।
২. তাগুতকে বর্জন করা ওয়াজিব।
৩. কেবল মুনাফিকরাই আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করতে পারে।
৪. মু’মিনদের উচিত কুরআন ও সুন্নাহকে মেনে চলা।
৫. কোন মত-বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফায়সালার ক্ষেত্রে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে আহ্বান করার পরে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া মুনাফিকদের পরিচয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings