Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 38
Saheeh International
And [also] those who spend of their wealth to be seen by the people and believe not in Allah nor in the Last Day. And he to whom Satan is a companion - then evil is he as a companion.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৩৭-৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ইরশাদ হচ্ছে- যারা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির কার্যে মাল খরচ করতে কার্পণ্য করে, যেমন বাপ-মাকে প্রদান করতে এবং আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, সম্পর্কযুক্ত ও সম্পর্ক বিঙ্কন প্রতিবেশী, মুসাফির এবং দাস-দাসীকে অভাবের সময় আল্লাহর ওয়াস্তে দান করার কার্যে কার্পণ্য করে, শুধু তাই নয় বরং লোকদেরকেও কার্পণ্য শিক্ষা দেয় এবং আল্লাহ তা'আলার পথে খরচ না। করার পরামর্শ দেয়, তাদের জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ কার্পণ্য অপেক্ষা বড় রোগ আর কি হতে পারে? তিনি আরো বলেছেনঃ “হে মানবমণ্ডলী! তোমরা কার্পণ্য হতে বেঁচে থাক। এটাই তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর কারণেই তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নতা, অন্যায় ও দুস্কার্য প্রকাশ পেয়েছিল।
এরপর বলা হচ্ছে- তারা এ দু'টি দুঙ্কার্যের সাথে সাথে আরও একটি দুষ্কার্যে লিপ্ত হয়। তা এই যে, তারা আল্লাহ তা'আলার নি'আমতসমূহ গোপন করে, ঐগুলো প্রকাশ করে না। ঐগুলো না তাদের খাওয়া পরায় প্রকাশ পায় না। আদান-প্রদানে প্রকাশিত হয়। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে- (আরবী) অর্থাৎ নিশ্চয়ই মানুষ তার প্রভুর প্রতি অকৃতজ্ঞ। আর নিশ্চয়ই সে নিজেই তার ঐ অবস্থা ও অভ্যাসের উপর সাক্ষী।' (১০০:৬-৭) তার পরে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই সে মালের প্রেমে পাগল।' (১০০:৮) এখানেও বলা হয়েছে যে, সে আল্লাহর অনুগ্রহ গোপন করছে। এরপর তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের জন্যে অপমানজনক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। কু' শব্দের অর্থ হচ্ছে গোপন করা এবং ঢেকে দেয়া। কৃপণও আল্লাহ তাআলার নিয়ামতকে গোপন করে, ওর উপরে পর্দা নিক্ষেপ করে, অর্থাৎ ঐ নিয়ামতসমূহ অস্বীকার করে। সুতরাং সে নিয়ামতসমূহের অস্বীকারকারী হয়ে গেল।
হাদীস শরীফে রয়েছেঃ “আল্লাহ তা'আলা যখন কোন বান্দার উপর স্বীয় নি'আমত দান করেন তখন চান যে, ওর চিহ্ন যেন তার উপরে প্রকাশ পায়। নবী (সঃ)-এর প্রার্থনায় রয়েছে-(আরবী) অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনি আপনার নি'আমতের প্রতি কৃতজ্ঞ বানিয়ে দিন এবং তার কারণে আমাদেরকে আপনার প্রশংসাকারী করুন, ওগুলো গ্রহণকারী বানিয়ে দিন ও ঐগুলো আমাদের উপর পূর্ণভাবে দান করুন।
পূর্ববর্তী কোন কোন মনীষীর উক্তি এই যে, এ আয়াতটি ইয়াহূদীদের ঐ কার্পণ্যের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয় যে কার্পণ্য তারা মুহাম্মাদ (সঃ)-এর গুণাবলী গোপন করার ব্যাপারে করতো। এ জন্যেই এর শেষে রয়েছে-‘আমি কাফিরদের জন্যে অপমানজনক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
এ আয়াতটি যে ইয়াহূদীদের কার্পণ্যের ব্যাপারেও হতে পারে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু স্পষ্টতঃ এখানে মালের কৃপণতার কথাই বর্ণনা করা হচ্ছে, যদিও ইলমের কৃপণতা এর অন্তর্ভুক্ত হওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত। এটা ভুললে চলবে না যে, এ আয়াতে আত্মীয়-স্বজন ও দুর্বলদেরকে মাল প্রদানের কথাই বর্ণনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে পরবর্তী আয়াতে লোকদেরকে দেখাবার জন্যে মাল প্রদানকারীদের নিন্দে করা হয়েছে। এখানে বর্ণনা দেয়া হয়েছে ঐ কৃপণদের যারা টাকা পয়সাকে দাঁত দিয়ে ধরে রাখে। তার পরে বর্ণনা দেয়া হয়েছে ঐ লোকদের যারা মাল খরচ তো করে বটে, কিন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে ও দুনিয়ায় নাম নেয়ার জন্যে।
যেমন হাদীস শরীফে রয়েছেঃ “যে তিন প্রকারের লোকের জন্যে জাহান্নাম প্রজ্জ্বলিত করা হবে, তারা এ রিয়াকারগণই হবে। রিয়াকার আলেম, রিয়াকার গাযী এবং রিয়াকার দাতা। এ দাতা বলবে, হে আল্লাহ! আমি আপনার প্রত্যেক রাস্তায় স্বীয় মাল খরচ করেছিলাম। তখন আল্লাহ তা'আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। তোমার ইচ্ছা তো শুধু এই ছিল যে, তুমি বড় দাতারূপে প্রসিদ্ধি লাভ কর। সুতরাং তা বলা হয়ে গেছে। অর্থাৎ তোমার উদ্দেশ্য ছিল দুনিয়ায় প্রসিদ্ধি লাভ। তা আমি তোমাকে দুনিয়াতেই দিয়ে দিয়েছি। কাজেই তুমি তোমার উদ্দেশ্য লাভ করেছ।
অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আদী ইবনে হাতিম (রাঃ)-কে বলেনঃ “তোমার পিতা স্বীয় দান দ্বারা যা চেয়েছিল তা সে পেয়ে গেছে। আর একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিজ্ঞাসিত হন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে জাদ আনতো একজন বড় দাতা ছিল। সে দরিদ্র ও অভাবীদের সাথে বড়ই উত্তম ব্যবহার করতো এবং আল্লাহর নামে বহু গোলাম আযাদ করেছিল, সে কি এর কোন লাভ পাবে না?' তিনি বলেনঃ না, সে তো সারা জীবনে একদিনও বলেনি-“হে আল্লাহ! কিয়ামতের দিন আমার পাপ মার্জনা করুন।
এজন্যেই এখানেও আল্লাহ তা'আল্লাহ বলেন-আল্লাহ ও কিয়ামতের উপর তাদের বিশ্বাস নেই, নতুবা তারা শয়তানের ফাঁদে পড়তো না এবং খারাপকে ভালো মনে করতো না। তারা শয়তানের সঙ্গী। সঙ্গীর দুস্কার্যের উপর তাদের দুষ্কার্য চিন্তা করে নাও। একজন আরব কবি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ মানুষের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করো না, বরং জিজ্ঞেস কর তার সাথী সম্বন্ধে, প্রত্যেক সাথী তার সাথীরই অনুসারী হয়ে থাকে। এরপর ইরশাদ হচ্ছে- তাদেরকে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নে, সঠিক পথে চলতে, রিয়াকারী পরিত্যাগ করতে এবং ইখলাসের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে কিসে বাধা দিচ্ছে? তাতে তাদের ক্ষতি কি আছে? বরং সরাসরি উপকারই রয়েছে। কারণ এর ফলে তাদের পরিণাম ভাল হবে। তারা আল্লাহর পথে খরচ করতে সংকীর্ণ মনোভাব প্রকাশ করছে কেন? তারা আল্লাহ তাআলার ভালবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করছে না কেন? আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে খুব ভাল করেই জানেন। তাদের ভাল ও মন্দ নিয়তের জ্ঞান তাঁর পুরোপুরিই রয়েছে। ভাল কার্যের তাওফীক লাভ করার যোগ্য ও অযোগ্য সবই তাঁর নিকট প্রকাশমান। ভাল লোকদেরকে তিনি ভাল কাজ করার তাওফীক প্রদান করতঃ স্বীয় সন্তুষ্টির কাজ তাদের দ্বারা করিয়ে নিয়ে তাদেরকে তার নৈকট্য দান করে থাকেন। পক্ষান্তরে মন্দ লোকদেরকে তিনি স্বীয় মহা মর্যাদাসম্পন্ন দরবার হতে দূরে সরিয়ে দেন। যার ফলে তাদের দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস হয়ে থাকে। আল্লাহ পাক আমাদেরকে ওটা হতে আশ্রয় দান করুন!
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings