Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 115
Saheeh International
And whoever opposes the Messenger after guidance has become clear to him and follows other than the way of the believers - We will give him what he has taken and drive him into Hell, and evil it is as a destination.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১১৪-১১৫ নং আয়াতের তাফসীর:
نجوي শব্দের অর্থ গোপনে কথা বলা। এখানে গুপ্ত পরামর্শকে পাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যত্র একে সরাসরি নিষেধ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يیٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْٓا اِذَا تَنَاجَیْتُمْ فَلَا تَتَنَاجَوْا بِالْاِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَمَعْصِیَتِ الرَّسُوْلِ وَتَنَاجَوْا بِالْبِرِّ وَالتَّقْوٰیﺚ وَاتَّقُوا اللہَ الَّذِیْٓ اِلَیْھِ تُحْشَرُوْنَﭘ اِنَّمَا النَّجْوٰی مِنَ الشَّیْطٰنِ لِیَحْزُنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَلَیْسَ بِضَا۬رِّھِمْ شَیْئًا اِلَّا بِاِذْنِ اللہِﺚ وعَلَی اللہِ فَلْیَتَوَکَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَﭙ)
“ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন কানে কানে কথা বল তখন পাপকার্য, সীমালঙ্ঘন ও রাসূলের অবাধ্যাচরণের বিষয়ে কানাকানি করনা। বরং সৎ কাজ ও তাক্বওয়াহ সম্পর্কে পরামর্শ কর। আর তোমরা ভয় কর আল্লাহকে যার কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে। এ কানাঘুষা তো কেবল শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে মু’মিনদেরকে দুঃখ দেয়ার জন্য। তবে শয়তান আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর একমাত্র আল্লাহর ওপরই যেন মু’মিনরা ভরসা করে।”(সূরা মুজাদালাহ ৫৮:৯-১০)
(গুপ্ত পরামর্শ) বলতে মুনাফিকদের সেই কথাবার্তাকে বুঝানো হয়েছে যা তারা আপোষে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বা একে অপরের বিরুদ্ধে করত।
(إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ)
‘তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় দান-খয়রাত’তবে গোপন পরামর্শ পাপ হবে না যখন তা কোন সদাক্বাহ বা ভাল কাজে হয়। এখানে সকল প্রকার জ্ঞানগত ও মালগত সদাক্বাহ শামিল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক তাসবীহ সদাক্বাহ, প্রত্যেক তাকবীর সদাক্বাহ, প্রত্যেক তাহলীল বলা সদাক্বাহ, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের বাধা সদাক্বাহ, এমনকি স্ত্রীর সাথে সহবাস করা সদাক্বাহ। (সহীহ বুখারী হা: ২৭০৭, সহীহ মুসলিম হা: ২৫৩)
(إِصْلَاحٍۭ بَيْنَ النَّاسِ)
‘মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের’মানুষের মাঝে সুষ্ঠু ফায়সালা করে শান্তি স্থাপন করা ভাল কাজ। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوْا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ج وَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ)
“মু’মিনরা পরস্পর ভাই। তাই তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।”(সূরা হুজুরাত ৪৯:১০)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَاِنْ طَا۬ئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اقْتَتَلُوْا فَاَصْلِحُوْا بَیْنَھُمَاﺆ فَاِنْۭ بَغَتْ اِحْدٰٿھُمَا عَلَی الْاُخْرٰی فَقَاتِلُوا الَّتِیْ تَبْغِیْ حَتّٰی تَفِیْ۬ ئَ اِلٰٓی اَمْرِ اللہِﺆ فَاِنْ فَا۬ءَتْ فَاَصْلِحُوْا بَیْنَھُمَا بِالْعَدْلِ وَاَقْسِطُوْاﺚ اِنَّ اللہَ یُحِبُّ الْمُقْسِطِیْنَ)
“যদি ঈমানদারদের দু’দল একে অপরের সাথে লড়াই করে তাহলে তাদের মধ্যে আপোষ করে দাও। এরপর যদি একদল অপর দলের সাথে বাড়াবাড়ি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা লড়াই কর; যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর হুকুমের দিকে ফিরে আসে। অতঃপর যদি (সে দলটি) ফিরে আসে তাহলে উভয় দলের মধ্যে ইনসাফের সাথে ফায়সালা করে দাও। আর সুবিচার কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায় বিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।”(সূরা হুজুরাত ৪৯:৯)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
لَيْسَ الْكَذَّابُ الَّذِيْ يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ فَيَنْمِيْ خَيْرًا أَوْ يَقُوْلُ خَيْرًا
যে ব্যক্তি কল্যাণের নিয়তে মানুষের মাঝে সংশোধন করে, সে ব্যক্তি মিথ্যুক নয়। (সহীহ বুখারী হা: ২৬৯২)
এছাড়াও উল্লিখিত আমলগুলোর অনেক ফযীলত সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
হালাল উপার্জন করে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় একটি খেজুর পরিমাণ সদাক্বার নেকীও উহুদ পাহাড়ের সমান। (সহীহ মুসলিম হা: সদাক্বাহ অধ্যায়)
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে সিয়াম, সালাত, সদাক্বাহ, সাহায্য অপেক্ষা অধিক মর্যাদার কথা বলে দেব না? সকলে বলল: অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আপোষে সদ্ভাব স্থাপন করা। (আবূ দাঊদ হা: ৪৯১৯, তিরমিযী হা: ১৯৩৮, সহীহ)
(وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ)
‘যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে’ অর্থাৎ হিদায়াতের পথ পরিস্কার হয়ে যাবার পরও যে গোঁড়ামী ও বাতিল তরীকা বহাল রাখতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথ ত্যাগ করে অন্য পথের অনুসরণ করে সে ইসলাম থেকে খারিজ বলে গণ্য হবে। সে জন্যই তার জন্য জাহান্নামের এ শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَي اللّٰهُ وَرَسُوْلُه۫ٓ أَمْرًا أَنْ يَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ط وَمَنْ يَّعْصِ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه۫ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِيْنًا)
“কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর জন্য এ অবকাশ নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন কাজের নির্দেশ দেন, তখন সে কাজে তাদের কোন নিজস্ব সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সে তো প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় নিপতিত হয়।” (সূরা আহযাব ৩৩:৩৬)
“মু’মিনদের পথ” বলতে সাহাবায়ে কিরামগণের আমল ও আকীদাকে বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ উম্মাতের ইজমার কথাও বলেছেন। তবে প্রথমটিই সঠিক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِنَّكَ لَعَلٰي خُلُقٍ عَظِيْمٍ)
“নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছ।”(সূরা কালাম ৬৮:৪)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমার প্রত্যেক উম্মাত জান্নাতে যাবে, তবে যারা ‘আবা’ তারা জান্নাতে যাবে না। বলা হল ‘আবা’ কারা হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: যারা আমার আনুগত্য করবে তারা জান্নাতে যা-এর সহীহ সুন্নাহকে বর্জন করে কোন ব্যক্তির মতাদর্শ, চিন্তাধারা ও তরিকা গ্রহণ করা কুফরী কাজ।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অসৎ কাজে গুপ্ত পরামর্শ করা হারাম।
২. মানুষের সাঝে সংশোধন করে দেয়া ঈমানের বৈশিষ্ট্য ও নেকীর কাজ।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহীহ হাদীস বর্জন করে অন্যের মতামত ও তরিকা গ্রহণ করা প্রকাশ্য বে-ঈমানী।
৩. সকল সাহাবাই অনুসণীয়। নির্দিষ্টভাবে কোন সাহাবী নন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings