Surah Al Fath Tafseer
Tafseer of Al-Fath : 28
Saheeh International
It is He who sent His Messenger with guidance and the religion of truth to manifest it over all religion. And sufficient is Allah as Witness.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৭-২৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ষষ্ঠ হিজরীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বপ্নযোগে দেখলেন যে, তিনি সাহাবীদের নিয়ে মক্কায় গিয়ে বাইতুল্লাহয় ওমরা পালন করছেন। নাবীদের স্বপ্ন সত্য ও ওয়াহী, সে স্বপ্নের বর্ণনা সাহাবীদের সামনে পেশ করলে সকলেই উমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় রওনা দিলেন। কিন্তু হুদায়বিয়াতে বাধাগ্রস্ত হয়ে ফিরে আসলে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বললেন, আমরা ওমরা করব। কিন্তু আমরা তো ওমরা করতে পারলাম না। এ কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শোনার পর বললেন : আমি কি তোমাদের বলেছি, এ বছরই ওমরা করব? সকলেই বলল, না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : অচিরেই তোমরা মক্কায় গিয়ে ওমরা আদায় করতে পারবে। (সহীহ বুখারী হা. ৩১৮১)
صدق শব্দটি كذب এর বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হয়। যে কথা বাস্তবের অনুরূপ তাকে صدق এবং যে কথা অনুরূপ নয় তাকে كذب বলা হয়। মাঝে মাঝে কাজকর্মের জন্যও এ শব্দ ব্যবহার করা হয়। তখন এর অর্থ হয় কোন কাজকে বাস্তবায়িত করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللّٰهَ عَلَيْهِ)
“মু’মিনদের মধ্যে কতক লোক এমনও আছে যারা আল্লাহ্র সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার বাস্তবায়িত করেছে” (সূরা আহযাব ৩৩ : ২৩) এমন সময় শব্দের দুটি কর্তৃবাচক ক্রিয়া থাকে। আলোচ্য আয়াতেও এমন দুটি ক্রিয়া রয়েছে : একটি হল رَسُوْلَهُ অপরটি হল الرُّؤْيا ।
পরবর্তী বছর মুসলিমরা নিরাপদে ওমরা আদায় করে। কেউ মাথা নেড়া করে আর কেউ চুল খাট করে। এদিকেই আয়াতগুলো ইঙ্গিত করছে।
ভবিষ্যত কাজের জন্য ইনশাআল্লাহ তা‘আলা বলা উচিত : এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মাসজিদে হারামে প্রবেশের কথা বলেছেন যা ভবিষ্যতে হওয়ার কথা ছিল তাই ইনশাআল্লাহ শব্দ ব্যবহার করেছেন। অথচ আল্লাহ তা‘আলা নিজের চাওয়া সম্পর্কে তিনি সর্বাধিক জ্ঞাত, তাঁর এরূপ বলার প্রয়োজন ছিলনা। এতে আল্লাহ তা‘আলা রাসূল ও তাঁর উম্মাতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ইনশাআল্লাহ ব্যবহার করলেন (কুরতুবী)। তাই ভবিষ্যতে কোন কাজ করার দৃঢ়সংকল্প করলে তাতে ইনশাআল্লাহ বলা উচিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَا تَقُوْلَنَّ لِشَیْءٍ اِنِّیْ فَاعِلٌ ذٰلِکَ غَدًاﭦاِلَّآ اَنْ یَّشَا۬ئَ اللہُ)
“কখনই তুমি কোন বিষয়ে বল না, “আমি সেটা আগামীকাল করব, ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ এ কথা না বলে।’ (সূরা কাহ্ফ ১৮ : ২৪)
সুলাইমান (আঃ) বলেছিলেন : আমি আজ রাতে একশত অথবা নিরানব্বই জন স্ত্রীর সাথে সহবাস করব, প্রত্যেকে এমন সন্তান প্রসব করবে যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তার জিহাদ করবে। তার সাথী তাকে বলল : ইনশাআল্লাহ বলেন। তিনি ইনশাআল্লাহ বললেন না, ফলে একজন ছাড়া কেউ গর্ভবতী হয়নি। (সহীহ বুখারী হা. ২৮১৯)
(مُحَلِّقِيْنَ رُؤُوْسَكُمْ وَمُقَصِّرِيْنَ)
“(কেউ কেউ) মাথা কামাবে, (কেউ কেউ) চুল কাটবে” সহীহ বুখারীতে এসেছে : পরবর্তী বছর কাযা ওমরায় মুআবিয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পবিত্র কেশ কাঁচি দ্বারা কর্তন করেছিলেন। এটা কাযা ওমরারই ঘটনা। কেননা বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা মুণ্ডন করেছিলেন (কুরতুবী)।
(فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا...... قَرِيبًا)
‘তিনি জানেন তোমরা যা জান না।’ অর্থাৎ সে বছর উমরা আদায় না করে ফিরে আসা তার পরবর্তী বছর উমরা করার মধ্যে যে কল্যাণ রয়েছে তা কেবল আল্লাহ তা‘আলাই জানেন, তোমরা জান না।
(فَتْحًا قَرِيبًا) নিকটতম বিজয় বলতে খায়বার ও মক্কা বিজয়সহ সন্ধির সফলতা অধিকহারে ইসলাম গ্রহণের কথাকে বুঝানো হয়েছে। কেননা এটাও এক প্রকার মহাবিজয়। হুদায়বিয়ার সময় মুসলিমরা ছিলেন দেড় হাজার। এর দু’বছর পর মুসলিমরা বিজয়ী হিসেবে মক্কায় প্রবেশ করেন তখন তাদের সংখ্যা ছিল দশ হাজার।
(لِيُظْهِرَهُ عَلَي الدِّينِ كُلِّهِ)
‘যাতে ঐ দীনকে অন্য সব দীনের ওপর বিজয়ী করেন’ অন্যান্য ধর্মসমূহের ওপর ইসলামের এ বিজয় দলীলাদির দিক দিয়ে তো সব সময়কার জন্য অনস্বীকার্য বটেই এমনকি পার্থিব ও সৈন্য সামন্তের দিক দিয়েও প্রথম শতাব্দী এবং তারপর সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত যতক্ষণ তারা জয়যুক্ত ছিলেন এবং আজও পার্থিব বিজয় লাভ সম্ভব যদি মুসলিমরা প্রকৃত ঈমানে উজ্জিবীত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَا تَهِنُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ)
“আর তোমরা হীনবল ও দুঃখিত হয়ো না বস্তুত যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তবে তোমরাই জয়ী হবে।” (সূরা আলি ইমরান ২ : ১৩৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. নাবীদের স্বপ্ন সত্য।
২. স্বপ্নের ব্যাখ্যা এক বছর বা তার বেশি সময় পরেও বাস্তবায়িত হতে পারে।
৩. হাজ্জ বা উমরার পর মাথা মুণ্ডণ বা চুল খাট করা উভয়টা যায়েয। তবে মুণ্ডণ করা উত্তম।
৪. ভবিষ্যতে করা হবে এমন যে-কোন কাজের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা উচিত।
৫. ইসলাম সত্য ও বিজয়ী ধর্ম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings