Surah Al Fath Tafseer
Tafseer of Al-Fath : 26
Saheeh International
When those who disbelieved had put into their hearts chauvinism - the chauvinism of the time of ignorance. But Allah sent down His tranquillity upon His Messenger and upon the believers and imposed upon them the word of righteousness, and they were more deserving of it and worthy of it. And ever is Allah, of all things, Knowing.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৫-২৬ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
মক্কার কুরাইশ কাফিরদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন যে, তারা নিজেরা আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদকে অস্বীকার করেছে, তোমাদেরকে হুদায়বিয়ার দিন মাসজিদে হারামে যেতে বাধা দিয়েছিল এবং হাদী (যে পশু হাজীরা সাথে নিয়ে এসেছিল) তা স্বস্থানে তথা হারামে পৌঁছতে বাধা দিয়েছিল। তাদেরকে এসব অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু মক্কায় এমন কিছু দুর্বল মু’মিন নর-নারী ছিল যারা ঈমান গোপন করে রেখেছিল তাদের সম্পর্কে তোমরা জানতে না। যদি যুদ্ধের অনুমতি দিতেন তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হত ফলে তোমরাও অজ্ঞাতসারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে।
জুনাইদ বিন সাবা বলেন : দিনের প্রথমভাগে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে কাফির অবস্থায় যুদ্ধ করেছিলাম। আর দিনের শেষভাগে মুসলিম হয়ে তার সাথে যুদ্ধ করেছি। আমাদের ব্যাপারেই নাযিল হয়েছে :
(وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُوْنَ وَنِسَا۬ءٌ مُؤْمِنَاتٌ)
তিনি বলছেন : আমরা ৯ জন ছিলাম; ৭ জন পুরুষ, দুজন স্ত্রী। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, ৯/৩৯৮, সনদ জাইয়িদ)
مَعْكُوْفًا অর্থ বা আটক করা, বাধা দেয়া। অর্থাৎ মক্কার মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীদের সাথে কুরবানীর পশু জবাই করার স্থানে পৌঁছতে বাধা দিয়েছিল। হাদীর সংখ্যা ছিল ৭০টি। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগ্রহে সেস্থানে হালাল হওয়ার সুযোগ করে দিলেন। এ থেকে জানা গেল ইহরাম বাঁধার পর মক্কা প্রবেশ করতে বাধাগ্রস্থ হলে সে স্থানেই ইহরাম থেকে হালাল হয়ে কুরবানী করে নেবে। যেমন সাহাবী জাবের (রাঃ) বলছেন, আমরা হুদায়বিয়ার বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উটে সাত জন আর গরুতে সাত জন শরীক হয়ে কুরবানী করেছি। (সহীহ মুসলিম হা. ১৩১৮)
ইবনু উমার বলেন : উমরার উদ্দেশ্যে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বের হলাম, কুরাইশরা বাইতুল্লাহ থেকে আমাদেরকে বাধা দিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার উট জবাই করলেন এবং মাথা মুণ্ডন করে নিলেন। (সহীহ বুখারী হা. ১৮১২)
مَّعَرَّةٌ অর্থ পাপ, জরিমানা, ইমাম কুরতুবী বলেন, এর অর্থ হল দোষ। অর্থাৎ অজ্ঞাতসারে মক্কার মুসলিমদের ক্ষতি করলে তোমাদের পাপ হত, জরিমানা আবশ্যক হত এবং তোমরা দোষের পাত্র হতে।
لَوْ تَزَيَّلُوا শব্দের অর্থ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, আলাদা হয়ে থাকা। অর্থাৎ যদি মু’মিনরা মক্কার কাফিরদের থেকে আলাদা থাকত তাহলে তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি দিয়ে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিতাম। সুতরাং কোন এলাকায় কাফিরদের সাথে মুসলিম থাকলে পৃথক না করা পর্যন্ত হামলা করা যাবে না।
(إِذْ جَعَلَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِيْ قُلُوْبِهِمُ)
‘যখন কাফিররা তাদের অন্তরে জাহেলী ধরনের বিদ্বেষ পোষণ করল’ এটা হল সে সময়ের কথা যখন উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে হুদায়বিয়ার সন্ধি লেখা হয়। আলী (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দিলেন বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম লিখতে। তিনি লিখলেন। কাফিররা প্রতিবাদ জানালো যে, রহমান ও রহীমকে আমরা চিনি না। আমরা যে শব্দ ব্যবহার করি বিসমিকাল্লা-হুম্মা (হে আল্লাহ তা‘আলা তোমার নাম নিয়ে) তাই দিয়ে শুরু কর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেনে নিলেন। অতঃপর রাসূল লেখালেন : ‘এটা সেই চুক্তিপত্র যাতে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল মুহাম্মাদ মক্কাবাসীদের সাথে সন্ধি করছেন। কাফিররা বলতে লাগল : ঝগড়ার মূল কারণ হল আপনার রিসালাত নিয়ে। আমরা যদি আপনার রিসালাত মেনেই নিতাম তাহলে যুদ্ধই হতো না। অতএব মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ’র পরিবর্তে মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ লেখুন। আলী (রাঃ)-কে এ রকমই লেখার নির্দেশ দিলেন। (সহীহ বুখারী হা. ২৬৯৮, সহীহ মুসলিম হা. ১৭৮৩)
আয়াতে (حَمِيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ)
বলতে কাফিররা যে বিসমিল্লহির রহমানির রহীম ও মুহাম্মাদ রাসূলল্লাহ লেখাকে মেনে নিতে পারেনি তার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এসব জাহিলী যুগের কাজ। তাদের পাপের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তর কুফরীতে বদ্ধমূল করে দিয়েছেন।
(فَأَنْزَلَ اللّٰهُ سَكِينَتَهُ عَلَي...)
‘তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন’ অর্থাৎ মু’মিনরা বাহ্যিক দেখতে পাচ্ছে এ সন্ধির সকল শর্ত তাদের বিপক্ষে। যার কারণে তারা রাগান্বিত। ফলে আল্লাহ তা‘আলা প্রশান্তি নাযিল করলেন যাতে তাঁর বিধানের ওপর ধৈর্যধারণ করে, রাগান্বিত না হয়। আর তাকওয়ার বাক্য
لا إله إلا الله
এর ব্যাপারে সুদৃঢ় রাখলেন।
অত্র আয়াতের তাফসীরে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তাকওয়ার কালিমা হল লা ইলাহা ইল্লালাহ। (তিরমিযী হা. ৩২৬৫, সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কেউ হাজ্জ বা উমরা উদ্দেশ্যে মক্কায় যেতে বাধাপ্রাপ্ত হলে সে ব্যক্তি যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবে সেখানেই হালাল হয়ে যাবে এবং হাদী জবাই করে নেবে।
২. মুসলিমদের ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকা আবশ্যক যাতে অজ্ঞাতসারে তাদের দ্বারা কোন মুসলিম কষ্ট না পায়।
৩. হুদায়বিয়ার সন্ধি বাহ্যিক দিক থেকে মুসলিমদের বিপক্ষে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ছিল মুসলিমদের বিজয়ের অন্যতম মাধ্যম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings