Surah Al Fath Tafseer
Tafseer of Al-Fath : 22
Saheeh International
And if those [Makkans] who disbelieve had fought you, they would have turned their backs [in flight]. Then they would not find a protector or a helper.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২০-২৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
হুদায়বিয়ার পরের বছর ৭ম হিজরীতে সংঘটিত খায়বারের যুদ্ধ ও তার গনীমতের ব্যাপারে এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَعَدَكُمُ اللّٰهُ مَغَانِمَ كَثِيْرَةً)
‘আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ গনীমতের মাল দেয়ার ওয়াদা করছেন’ মুজাহিদ (রহঃ) বলেন : আজ পর্যন্ত মুসলিমরা যত গনীমত পেয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যত গনীমত পাবে সব এতে শামিল। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(فَعَجَّلَ لَكُمْ هَذِهِ)
‘এটা তিনি তোমাদের জন্য তরান্বিত করেছেন’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা খায়বার বিজয় করে দিয়ে নগদ তার গনীমতগুলো দিলেন।
(وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنْكُمْ)
‘আর তিনি মানুষের হাত তোমাদের (ওপর প্রসারিত করা) থেকে বিরত রেখেছেন’ অর্থাৎ তোমাদেরকে শত্র“দের অনিষ্ট থেকে হিফাযত করেছেন। যে অনিষ্ট করার জন্য তারা মনে মনে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিল। এরা হল উআইনা বিন হিচন আল ফাযারী, আউফ বিন মালেক ও তাদের সাথে আরও যারা খায়বারের ইয়াহূদীদের সাহায্য করার জন্য এসেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাদের অন্তরে ভয় সৃষ্টি করে দেন ফলে তারা তাদেরকে সহযোগিতা করেনি।
(وَلِتَكُوْنَ اٰيَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ)
‘যাতে মু’মিনদের জন্য এটা নিদর্শন হয়ে থাকে’ অর্থাৎ খায়বারের গনীমতের মাল প্রদান করলেন মু’মিনদের জন্য একটি নিদর্শনস্বরূপ যে, আল্লাহ তা‘আলা যে সংবাদ দেন তা সত্য, তিনি যে প্রতিশ্রুতি দেন তা সত্য এবং প্রতিদান দেবেন তাও সত্য।
(وَأُخْرٰي لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا)
‘এ ছাড়া আরও গনীমতের মাল (তোমাদের দেয়ার ওয়াদা তিনি করেছেন), যা এখনো তোমরা লাভ করতে পারনি’ অর্থাৎ আরও গনীমতের প্রতিশ্রুতি আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন যা সে সময় তোমরা অর্জন করতে সক্ষম হওনি, কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তা তোমাদের আয়ত্তে এনে দিয়েছেন। তা আল্লাহ তা‘আলার কর্তৃতাধীন। আল্লাহ ওয়াদা দিয়েছেন তা তোমাদের হস্তগত করে দেবেন। অতএব অবশ্যই তোমরা তা পাবে। এটা কোন গনীমত তা নিয়ে মতভেদ বিদ্যমান।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : তা হল খায়বার। কাতাদাহ বলেন : তা হল মক্কা বিজয়, হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন : তা হল ফারেস ও রোম বিজয়। ইবনু জারীর এ মত পছন্দ করেছেন।
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন : কিয়ামত পর্যন্ত যত বিজয় ও গনীমত পাওয়া যাবে তার সবই এতে শামিল। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
এটা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে মু’মিনদের জন্য একটি সুসংবাদ যে, তিনি মু’মিনদেরকে তাদের শত্র“দের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করবেন। কাফিররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মোকাবেলা ও যুদ্ধ করতে আসলে যুদ্ধে টিকে থাকতে পারবে না বরং মুসলিমদের শক্তি ও সাহস দেখে পেছনে পলায়ন করবে। সুতরাং মুসলিমদেরকে কাফিরদের শক্তি ও সংখ্যা দেখে ভয় করার কিছুই নেই। মুসলিমরা যদি সাহাবীদের মত ঈমানের শক্তিতে বলিয়ান হয় এবং দুনিয়ার ওপর পরকালকে প্রাধান্য দেয় তাহলে আল্লাহর এ কথার সত্যতা সাহাবীরা যেমন দেখেছেন বর্তমান মুসলিমরাও দেখতে পাবে।
بطن مكة - ‘বাতনে মাক্কা’ বলতে হুদায়বিয়া নামক স্থানকে বুঝানো হয়েছে।
(وَهُوَ الَّذِيْ كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ)
শানে নুযুল :
আনাস (রাঃ) বলেন : মক্কার ৮০ জনের মত লোক তানইমের পাহাড় হতে নাবী ও সাহাবীদের ওপর হামলা করার জন্য অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় আগমন করে। আমরা তাদের সহজেই ধরে ফেললাম এবং আমরা লজ্জাবোধ করলাম তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ মুসলিম হা. ১৮০৮)
মুসনাদ আহমাদের বর্ণনায় এসেছে- আব্দুল্লাহ বিন মুগাফফাল বলেন : আমরা হুদায়বিয়ায় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সে গাছের নিচে ছিলাম যে গাছের কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। একদা ত্রিশজন যুবক অস্ত্রসজ্জিত হয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালালে রাসূলুল্লাহ তাদের ওপর বদ দু‘আ করলেন ফলে আল্লাহ তাদের চক্ষু ছিনিয়ে নিলেন। আল্লাহর রাসূল তাদেরকে বললেন : তোমরা কি কারো ওয়াদা করে এসেছ অথবা তোমাদেরকে কি কেউ নিরাপত্তা দিয়েছে? তারা বলল : না, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের ছেড়ে দিলেন। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (মুসনাদ আহমাদ হা. ১৬৮০০, সহীহ)
অতএব আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের ওপর তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলছেন যে, তিনি তোমাদেরকে মক্কার কাফিরদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন এবং তারাও তোমাদের আয়ত্তে আসার পরেও রক্ষা পেয়ে গেছে। এরা ছিল মক্কার সেই মুশরিকরা যারা হুদায়বিয়ার দিন মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বের হয়েছিল, মুসলিমরা তাদেরকে ধরে ফেলেছিল কিন্তু ছেড়ে দিয়েছে, যুদ্ধ করেনি, তারা আনুমানিক ৮০ জনের মত। (তাফসীর মুয়াসসার পৃঃ ৫১৪)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলার প্রতিশ্রুতি সত্যে পরিণত হয়েছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় ও তার ইনতেকালের পরেও।
২. মু’মিনদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ।
৩. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে শত্র“দের বিরুদ্ধে সাহায্য করেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings