Surah Al Fath Tafseer
Tafseer of Al-Fath : 10
Saheeh International
Indeed, those who pledge allegiance to you, [O Muhammad] - they are actually pledging allegiance to Allah . The hand of Allah is over their hands. So he who breaks his word only breaks it to the detriment of himself. And he who fulfills that which he has promised Allah - He will give him a great reward.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৮-১০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে বলছেন, তিনি নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন তাঁর উম্মাতের ভাল-মন্দ কর্ম ও কথা প্রত্যক্ষ করার জন্য এবং আল্লাহ তা‘আলার একত্ব ও বড়ত্বের সাক্ষীরূপে, যারা তাঁর আনুগত্য করবে তাদের সুসংবাদদাতা ও যারা আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্য হবে তাদেরকে সতর্ককারীরূপে। অন্যত্র বলা হয়েছে তিনি তাঁকে কিয়ামাতের দিন তাঁর উম্মাতের সাক্ষীরূপে পুনরুত্থিত করবেন এবং তিনি মু’মিনদের সুসংবাদদাতা ও কাফিরদের সর্তককারী। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍۭ بِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰي هٰ۬ؤُلَا۬ءِ شَهِيْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?” (সূরা নিসা ৪ : ৪১)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَيَوْمَ نَبْعَثُ فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيْدًا عَلَيْهِمْ مِّنْ أَنْفُسِهِمْ وَجِئْنَا بِكَ شَهِيْدًا عَلٰي هٰ۬ؤُلَا۬ءِ)
“সেদিন আমি উত্থিত করব প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদেরই মধ্য হতে তাদের বিষয়ে এক একজন সাক্ষী এবং তোমাকে আমি আনব সাক্ষীরূপে এদের বিষয়ে।” (সূরা নাহল ১৬ : ৮৯)
আমর বিন আ‘স (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, কুরআনের এ আয়াত “আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে” তাওরাতে আল্লাহ তা‘আলা এভাবে বলেছেন : হে নাবী! আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও উম্মী লোকদের মুক্তিদাতারূপে। তুমি আমার বান্দা ও রাসূল। আমি তোমার নাম রেখেছি নির্ভরকারী- যে রূঢ় ও কঠোরচিত্ত নয়, বাজারে শোরগোলকারী নয় এবং মন্দকে মন্দ দ্বারা প্রতিহতকারীও নয় বরং তিনি ক্ষমা করবেন এবং উপেক্ষা করবেন। বক্র জাতিকে সোজা না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তাঁর জান কবয করবেন না। তা এভাবে যে, তারা বলবে- আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। ফলে খুলে যাবে অন্ধ চোখ, বধির কান এবং পর্দা ঢাকা অন্তরসমূহ। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৩৮)
وَتُعَزِّرُوْهُ وَتُوَقِّرُوْهُ
‘তাকে সাহায্য করবে ও সম্মান করবে’ ( ه) সর্বনামের উদ্দেশ্য হল নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাই এখানে পূর্ণ ওয়াকফ বা তেলাওয়াতকালে থামতে হয়। অর্থাৎ তোমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্মান করবে, মর্যাদা দেবে এবং তাঁর হককে প্রাধান্য দেবে।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মান ও মর্যাদা বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন : নিশ্চয়ই যারা তোমার কাছে বাইয়াত করেছে তারা মূলত আল্লাহ তা‘আলার কাছেই বাইয়াত করেছে। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللّٰهَ ج وَمَنْ تَوَلّٰي فَمَآ أَرْسَلْنٰكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا)
“কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে তোমাকে তাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক প্রেরণ করিনি।” (সূরা নিসা ৪ : ৮০)
আল্লাহ তা‘আলার হাত তাদের হাতের ওপর। এ বাইয়াতকে বাইয়াতে রিদওয়ান বলা হয়, কারণ এ বাইয়াতে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ছিল। অতএব যে ব্যক্তি এ অঙ্গীকার পূর্ণ করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে প্রতিদান দেবেন আর যে ভঙ্গ করবে তার খারাপ পরিণতি তার দিকেই বর্তাবে। যেমন : আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে তার বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইন্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে? তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও আর এটাই মহাসাফল্য।” (সূরা তাওবাহ ৯ : ১১১)
বাইয়াতে রিদওয়ানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
ষষ্ঠ হিজরীতে মদীনায় একদা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বপ্নযোগে দেখলেন যে, তিনি ও সাহাবীগণ মাসজিদে হারামে প্রবেশ করছেন, কাবার চাবি গ্রহণ করছেন, উমরা করছেন, কেউ মাথা নেড়া করছেন আর কেউ চুল খাট করছেন। নাবীদের স্বপ্ন সত্য ও ওয়াহী। এ সংবাদ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের মাঝে দিলেন। সকলেই খুশি যে, এ বছর উমরা করতে মক্কায় যাবে। ফলে সকলে প্রস্তুতি নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা করল। যুলকাদা মাসের শুরুর দিকে সোমবার সকালে এ যাত্রা শুরু করেন। হুদায়বিয়া নামক স্থানে আসার পর কুরাইশরা বাধা প্রদান করে। কোনক্রমেই তারা মুসলিমদেরকে মক্কায় প্রবেশ করতে দেবে না।
মীমাংসা করার জন্য বুদাইল বিন ওয়ারাকা মুসলিম ও কুরাইশদের মাঝে মধ্যস্থতা করে। সে ছিল খোযায়ী গ্রোত্রের লোক। তেহামার অধিবাসীদের মাঝে এ গোত্রই ছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হিতাকাক্সক্ষী। বুদাইল বলল : আমি কা‘ব বিন লুওয়ায়কে দেখেছি যে, আপনার সাথে যুদ্ধ করা ও আল্লাহ তা‘আলার ঘর হতে নিবৃত্ত রাখার জন্য তারা বদ্ধপরিকর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : কারো সাথে যুদ্ধ করার জন্য আমরা আসিনি। আমরা শুধু উমরা করার জন্য এসেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও অনেক কথা বললেন। শেষে বুদাইল বলল : আমি আপনার এসব কথা কুরাইশদের বলব। তারপর কুরাইশরা একের পর এক দূত প্রেরণ করতে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওসমান (রাঃ)-কে মক্কায় প্রেরণ করলেন এ নির্দেশ দিয়ে যে, তুমি গিয়ে বলবে আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি। আমরা এসেছি উমরা পালন করার জন্য। এদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, কুরাইশরা ওসমানকে হত্যা করেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এ সংবাদ শুনে ঘোষণা দিলেন- হে বৃক্ষের নিচে অবস্থানকারী সাহাবীগণ! আমার কাছে সংবাদ এসেছে, মক্কার কাফিররা ওসমানকে হত্যা করেছে। আমার কাছে বাইয়াত কর আমরা জীবন দিয়ে হলেও ওসমানের হত্যার প্রতিশোধ নেব অথবা মক্কা বিজয় করব। অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইয়াত গ্রহণ করলেন। সকলেই বাইয়াত করে এ বলে যে,
তারা মরে গেলেও পলায়ন করবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের হাতের ওপর অপর হাত রেখে বললেন, এটা ওসমানের পক্ষ হতে। বাইয়াত শেষে ওসমান (রাঃ) যখন ফিরে আসলেন তখন তিনিও বাইয়াত করলেন। এ বাইয়াত থেকে কেউ পিছপা হয়নি কেবলমাত্র একজন মুনাফিক ছাড়া। সে হল জাদ বিন কায়েস। এ বাইয়াতের ওপর আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট হয়ে আয়াত নাযিল করে দিলেন :
(لَقَدْ رَضِيَ اللّٰهُ عَنِ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذْ يُبَايِعُوْنَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে তোমার হাতে বাইয়াত করেছে।” (আর-রাহিকুল মাখতুম)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিয়ামত দিবসে সাক্ষী, মু’মিনদের জন্য সুসংবাদদাতা, এবং কাফিরদের জন্য সতর্ককারী।
২. বাইয়াত হবে কেবলমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র প্রধানের কাছে। তথাকথিত কোন পীর ফকীরদের কাছে না।
৩. ওসমান (রাঃ)-এর মর্যাদা ও ফযীলত জানলাম।
৪. বাইয়াতে রিদওয়ানের প্রেক্ষাপট জানতে পারলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings