Surah Muhammad Tafseer
Tafseer of Muhammad : 20
Saheeh International
Those who believe say, "Why has a surah not been sent down? But when a precise surah is revealed and fighting is mentioned therein, you see those in whose hearts is hypocrisy looking at you with a look of one overcome by death. And more appropriate for them [would have been]
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২০-২৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
মু’মিনরা জিহাদের প্রতি খুব আশা ব্যক্ত করে বলে : কেন এমন একটি সূরা অবতীর্ণ হয় না যাতে জিহাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু যখন মুহকাম সূরা তথা যার বিধান মানসুখ হয়নি বরং তাতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জিহাদ ফরয করে দেয়া হয়েছে এমন সূরা নাযিল হয় তখন তাদের মধ্যে যাদের অন্তরে দীনের ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে এবং মুনাফিকী রয়েছে তারা মুমূর্ষু ব্যক্তি মৃত্যুর সময় যেমন করে চোখ উলটিয়ে তাকায় তারাও জিহাদে না যাওয়ার বাহানা করে এমনভাবে তাকায়। অর্থাৎ তারা কাপুরুষ, জিহাদ করতে ভয় পায়, তাদের জন্য আফসোস।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যাদেরকে বলা হয়েছিল, ‘তোমরা তোমাদের হস্ত সংবরণ কর, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত দাও?’ অতঃপর যখন তাদেরকে যুদ্ধের বিধান দেয়া হল তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করছিল আল্লাহকে ভয় করার মত অথবা তদপেক্ষা অধিক, এবং বলতে লাগল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান কেন দিলে? আমাদেরকে কিছু দিনের অবকাশ দাও না! বল : ‘পার্থিব ভোগ সামান্য এবং যে মুত্তাকী তার জন্য আখিরাতই উত্তম। তোমাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হবে না।’ (সূরা নিসা ৪ : ৭৭)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন : ‘আল্লাহর প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলের সঙ্গী হয়ে জিহাদ কর’- এ মর্মে যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের মধ্যে যাদের শক্তিসামর্থ্য আছে তারা তোমার নিকট অব্যাহতি চায় এবং বলে : ‘আমাদেরকে রেহাই দাও, যারা বসে থাকে আমরা তাদের সঙ্গেই থাকব।’
তারা স্ত্রীদের সঙ্গে অবস্থান করাই পছন্দ করেছে এবং তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে; ফলে তারা বুঝতে পারে না। (সূরা তাওবা ৯ : ৮৬-৮৭)
(الَّذِيْنَ فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ)
এরা হল মুনাফিক, যাদের কাছে জিহাদ বড় কষ্টকর মনে হত। কিছু কিছু দুর্বল মু’মিনরাও মাঝে মাঝে তাদের দলভুক্ত হয়ে যায়।
(فَأَوْلٰي لَهُمْ طَاعَةٌ وَّقَوْلٌ مَّعْرُوْفٌ)
‘তাদের জন্য উত্তম ছিল যে, আনুগত্য করবে এবং উত্তম কথা বলবে।’ অর্থাৎ জিহাদের নির্দেশ পেয়ে বিচলিত না হয়ে মু’মিনদের এটাই উচিত ছিল, টালবাহানামূলক কথা না বলে আনুগত্যমূলক কথা বলবে। কারণ কোন বিষয়ে নির্দেশ আসলে তা পালন করা কল্যাণকর।
(فَإِذَا عَزَمَ الْأَمْرُ)
‘কিন্তু যখন (জিহাদের) স্পষ্ট হুকুম এসে গেল’ তাদের আশা মতে যখন জিহাদ ফরয হয়ে গেল তখন তারা যদি আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য কামনা করত প্রচেষ্টা করে নির্দেশ বাস্তবায়ন করত তাহলে এটাই তাদের জন্য কল্যাণকর ছিল।
(فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ)
আভিধানিক দিক দিয়ে تولي শব্দের দুই অর্থ হয়ে থাকে- (১) মুখ ফিরিয়ে নেয়া, (২) কোন দলের ওপর শাসনক্ষমতা লাভ করা।
কেউ কেউ প্রথম অর্থ নিয়েছেন। যেমন আল্লামা সা‘দী (রহঃ) বলেন : সুতরাং দুটি বিষয়- হয় আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করবে, তাঁর নির্দেশ মেনে নেবে। তাহলে এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। অথবা আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নেবে, ফলে অন্যায়-অবিচার ও খারাপ কাজ করে জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। (তাফসীর সা‘দী)
আবার কেউ কেউ দ্বিতীয় অর্থ নিয়েছেন, যেমন ইমাম কুরতুবী (রহঃ) আয়াতের অর্থ হিসেবে বলেন, তোমাদের মনোবাঞ্ছনা পূর্ণ হলে অর্থাৎ দেশ ও জাতির শাসনক্ষমতা লাভ করলে এর ফলে এছাড়া কিছুই হবে না যে, তোমরা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। (কুরতুবী) অতএব মুসলিমরা যখন আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাবে, জিহাদ বর্জন করবে তখন জমিনে ফাসাদ বেড়ে যাবে, অন্যায় কাজ স্বাভাবিক হয়ে যাবে, অনর্থক মানুষ মারা যাবে, নিহত ব্যক্তি নিজেও জানবে না কি জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সুতরাং অত্র আয়াতে সাধারণভাবে পৃথিবীতে ফাসাদ ও অশান্তি সৃষ্টি এবং বিশেষভাবে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অধিকন্তু জমিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত মাখলুক সৃষ্টি করলেন। অতঃপর যখন সৃষ্টি থেকে অবসর হলেন, তখন আত্মীয়তা উঠে দাঁড়ালো এবং রহমানের (আল্লাহ তা‘আলার) কোমর ধরে নিলো (এবং ফরিয়াদ করল) আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তুমি থাম। আত্মীয়তা আরজ করল : এ স্থান তার, যে আপনার সামনে আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ হতে রেহাই প্রার্থনাকারী। আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তুমি কি এতে সন্তুষ্ট না যে, যে ব্যক্তি তোমাকে বহাল ও সমুন্নত রাখবে তার সাথে আমিও সদাচরণ করব আর যে তোমাকে ছিন্ন করবে। আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। আত্মীয়তা আরজ করল : হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট আছি। আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তাহলে তোমার সাথে এ ওয়াদাই রইল। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন : তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াতটি পড়। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৩২)
(أُولٰ۬ئِكَ الَّذِيْنَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ)
‘এরাই ঐসব লোক, যাদের ওপর আল্লাহ লা’নত করেছেন’ অর্থাৎ যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদের ওপর লা’নত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বধির বানিয়ে দিয়েছেন, ফলে তাদের জন্য কল্যাণকর কোন বিষয় শুনতে পায় না এবং তাদেরকে অন্ধ বানিয়ে দিয়েছেন ফলে তারা কল্যাণকর জিনিস দেখতে পায় না।
অতএব, যে কোন উপায়ে ও যেকোন স্বার্থে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা একটি মারাত্মক অপরাধ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না। (সহীহ বুখারী হা. ৫৯৮৪, সহীহ মুসলিম হা. ২৫৫৬)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কল্যাণকর কাজের আকাক্সক্ষা করা জায়েয।
২. কাপুরুষতা ও আন্তরিক দুর্বলতাকে তিরস্কার করা হয়েছে।
৩. যারা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করে তারা খারাপ জাতি।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কোমর আছে, এর প্রমাণ পেলাম। কিন্তু কেমন তা জানি না।
৫. মুসলিমরা আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ বর্জন করলে পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি হবে এবং নিজেদের ওপর লাঞ্ছনা নেমে আসবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings