Surah Az Zukhruf Tafseer
Tafseer of Az-Zukhruf : 8
Saheeh International
And We destroyed greater than them in [striking] power, and the example of the former peoples has preceded.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
الزخرف (যুখরুফ) শব্দের অর্থ চাকচিক্য, কারুকার্য, স্বর্ণ ইত্যাদি। সূরার ৩৫ নম্বর আয়াতে زخرف শব্দটি উল্লেখ রয়েছে, সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, তবে মুকাতিল (রহঃ) বলেন :
(وَسْئَلْ مَنْ أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رُّسُلِنَآ)
আয়াতটি মদীনায় অবতীর্ণ।
এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সূরা। সূরাতে প্রত্যেক জাতির কাছে আগত নাবী-রাসূলদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা, মক্কার মুশরিকদের আল্লাহর রুবুবিয়্যাহ স্বীকার করা, মানুষের জন্য আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত অসংখ্য নেয়ামত প্রদান করা, অধিংকাশ মানুষ পূর্বপুরুষের দোহাই দিয়ে সত্যবিমুখ হওয়া, শির্ক ও মুশরিকদের সাথে আপোষহীন নাবী ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর কথা পরবর্তীদের জন্য শিক্ষাস্বরূপ বহাল রাখা, প্রত্যেকের উপযুক্ত রিযিক বন্টন করে দেয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১-৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
حٰمٓ (হা-মীম) এ জাতীয় “হুরূফুল মুক্বাত্বআত” বা বিচ্ছিন্ন অক্ষর সম্পর্কে সূরা আল বাকারার শুরুতেই আলোচনা করা হয়েছে। এগুলোর সঠিক উদ্দেশ্য/অর্থ একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন।
আল্লাহ তা‘আলা সুস্পষ্ট কিতাবের অর্থাৎ- কুরআনের শপথ করে বলেছেন, নিশ্চয়ই আমি এ কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করেছি যাতে করে মানুষের বুঝতে সহজ হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْاٰنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ )
“কুরআনকে আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, সুতরাং উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?” (সূরা কামার ৫৪ : ১৭) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
(قُرْاٰنًا عَرَبِيًّا غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُوْنَ)
“এ কুরআন আরবি ভাষায়, এতে বিন্দুমাত্রও বক্রতা নেই, যাতে তারা সাবধানতা অবলম্বন করে।” (সূরা যুমার ৩৯ : ২৮)
আরবি ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করার হেকমত আল্লাহ তা‘আলা নিজেই বলে দিচ্ছেন যে, যাতে তোমরা এ কুরআন বুঝতে পার। আরবি এমন একটি ভাষা যা সকলের বোধগম্য এবং তা অল্প কথায় অনেক কিছু বুঝায় যা অন্যান্য ভাষায় এ বৈশিষ্ট্য নেই। তাছাড়া আরো দুটো কারণ হতে পারে। যেমন-
১. যেহেতু তা দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম ভাষা এবং সহজ ভাষা।
২. প্রাথমিক পর্যায়ে সম্বোধন আরবদেরকেই করা হয়েছে। তাই তাদের ভাষাতেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। যাতে তারা সহজেই বুঝতে ও উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।
(أُمِّ الْكِتٰبِ) দ্বারা এখানে লাওহে মাহফূযকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ- এ কুরআন লাওহে মাহফূযে সংরক্ষিত রয়েছে, যা সুউচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন এবং তাতে কোন মতবিরোধ ও বৈপরিত্য নেই।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : কোন জাতি অন্যায় কাজে লিপ্ত হলেই তাদের অন্যায় কাজের কারণে তাদের থেকে উপদেশবাণী প্রত্যাহার করে নেন না। বরং তাদের কাছে নাবী-রাসূল, কিতাব প্রেরণ করতে থাকেন। যাতে তারা কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা‘আলার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে না পারে।
এর দ্বারা বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্য হতে পারে।
১. তোমরা যেহেতু পাপসমূহে একেবারে মেতে আছ এবং অব্যাহতভাবে তা করেই যাচ্ছ বলে কি তোমরা ভেবে নিয়েছ যে, আমি তোমাদেরকে ওয়ায-নসীহত করা ছেড়ে দেব?
২. অথবা তোমাদের কুফরী ও সীমাতিক্রম করার জন্য আমি তোমাদেরকে কিছুই বলব না এবং আমি তোমাদেরকে এমনিই ছেড়ে দেব?
৩. অথবা আমি তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেব এবং তোমাদেরকে না কোন বিষয়ের নির্দেশ দেব, আর না কোন কর্ম থেকে নিষেধ করব।
৪. অথবা, এমনটিও হতে পারে যে, তোমরা যেহেতু কুরআনের ওপর ঈমান আনছ না। তাই আমি কুরআন অবতীর্ণ করার ধারাই বন্ধ করে দেব। এটা আল্লাহ তা‘আলার অশেষ অনুগ্রহ যে, তিনি কল্যাণ যিক্র-এর প্রতি দা‘ওয়াত দেয়ার ধারাবাহিকতা বন্ধ করে দেননি, যদিও তারা বিমুখ হওয়া এবং অস্বীকার করার ব্যাপারে সীমাতিক্রম করছিল।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান করছেন যে, মক্কার কুরাইশরা সত্যের দা‘ওয়াত থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নেয়া নতুন কোন বিষয় নয়, বরং ইতোপূর্বে যত নাবী-রাসূল এসেছেন তাদের সাথে জাতির অধিকাংশ লোকেরাই হাসি-তামাশা ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেছে এমনকি তাঁদেরকে হত্যাও করেছে। তাদের এ সকল বাড়াবাড়ি করার ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন, যারা ছিল মক্কার কুরাইশদের তুলনায় অধিক শক্তিশালী।
যেমন- আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন :
(يَا حَسْرَةً عَلَي الْعِبَادِ مَا يَأْتِيْهِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ إِلَّا كَانُوْا بِه۪ يَسْتَهْزِئُوْنَ أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِّنَ الْقُرُوْنِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لَا يَرْجِعُوْنَ )
“আফসোস বান্দাদের জন্য! তাদের কাছে কখনও এমন কোন রাসূল আসেনি, যাকে নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেনি। তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, আমি তাদের পূর্বে বহু মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, যারা তাদের দিকে আবার ফিরে আসবে না?” (সূরা ইয়াসীন ৩৬ : ৩০)
এটা মূলত মক্কার কুরাইশদের জন্য ধমকস্বরূপ বলা হয়েছে যে, পূর্বের জাতিরা এত শক্তিশালী থাকার পরও যেহেতু নিজেদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারেনি, তারাও যদি এরূপ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে তাহলে তাদের ন্যায় এরাও ধ্বংস হয়ে যাবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়েছে যাতে সহজেই মানুষ বুঝতে পারে।
২. কোন সম্প্রদায়ের অন্যায়ের কারণে আল্লাহ তা‘আলা সেখানে সতর্ককারী পাঠানো বন্ধ করে দেন না বরং নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তাদেরকে সতর্ক করেই যান।
৩. আল্লাহ তা‘আলার সম্মুখে কোন শক্তিশালীর শক্তিই কোন উপকারে আসবে না। যত শক্তিশালীই হোক না কেন যদি অপরাধ করে তাহলে তার শাস্তি তাকে ভোগ করতেই হবে।
৪. দাওয়াত কবূল করবে না বলে নিরাশ হয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই, বরং চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings