Surah Az Zukhruf Tafseer
Tafseer of Az-Zukhruf : 73
Saheeh International
For you therein is much fruit from which you will eat.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬৬-৭৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
যে সকল কাফির-মুশরিকরা কিয়ামত বিশ্বাস করে না, হঠাৎ করে কিয়ামত চলে আসুক এটা তারা কামনা করে। অথচ কিয়ামত তাদের ওপর এমনভাবে চলে আসবে, তারা তা উপলব্ধিও করতে পারবে না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(ثَقُلَتْ فِي السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ لَا تَأْتِيْكُمْ إِلَّا بَغْتَةً)
“সেটা হবে আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে একটি ভয়ংকর ঘটনা। আকস্মিকভাবেই সেটা তোমাদের ওপর আসবে।” (সূরা আ‘রাফ ৭ : ১৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(فَهَلْ يَنْظُرُوْنَ إِلَّا السَّاعَةَ أَنْ تَأْتِيَهُمْ بَغْتَةً فَقَدْ جَا۬ءَ أَشْرَاطُهَا ج فَأَنّٰي لَهُمْ إِذَا جَا۬ءَتْهُمْ ذِكْرَاهُمْ)
“তবে এরা কি শুধু কিয়ামতেরই অপেক্ষায় আছে যে, তা হঠাৎ তাদের ওপর এসে পড়–ক? কিয়ামতের লক্ষণগুলো তো এসেই গেছে। (যখন কিয়ামত এসে যাবে) তখন তাদের নসীহত কবূল করার আর কোন সুযোগ কোথায়?” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭ : ১৮)
কিয়ামতের ভয়াবহ ও কঠিন পরিস্থিতি দেখে প্রকৃত বন্ধুদের পরিচয় পাওয়া যাবে। আল্লাহ বলেন : মুত্তাকিদের বন্ধুত্ব ছাড়া সকল প্রকার বন্ধু সেদিন শত্র“তে পরিণত হয়ে যাবে। কেননা, কাফিরদের বন্ধুত্ব কেবল কুফরী ও পাপাচারের ভিত্তিতে হয় এবং এ কুফরী ও পাপাচারই তাদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। আর এরই কারণে তারা একে অপরকে দোষারোপ করবে এবং পরস্পরের শত্র“ হয়ে যাবে। সেদিন তারা খারাপ লোকদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করার কারণে আফসোস করবে, যেমন আল্লাহ বলেন :
(يٰوَيْلَتٰي لَيْتَنِيْ لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيْلًا)
‘হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম! (সূরা ফুরকান ২৫ : ২৮)
পক্ষান্তরে ঈমানদার ও আল্লাহ ভীরু লোকদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও ভালবাসা যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের ভিত্তিতে হয়, আর এ দীন ও ঈমানই হলো কল্যাণ ও সওয়াব লাভের মাধ্যম, সেহেতু তাদের এ বন্ধুত্বে কোন বিচ্ছেদ ঘটবে না। আখিরাতেও তাঁদের এ বন্ধুত্ব অটুট থাকবে; যেমন দুনিয়াতে ছিল।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন ও মুত্তাকীদের পরকালীন সুখ ও শান্তি, দুশ্চিন্তামুক্ত বসবাস এবং তাদের আবাসস্থল জান্নাতের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। যারা ঈমানদার ও আল্লাহ তা‘আলার কাছে আত্মসমর্পণকারী তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন আহ্বান করবেন যা তাদের অন্তরে প্রশান্তি বয়ে আনবে ও সকল অনিষ্ট আর বিপদ কেটে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন : হে আমার বান্দারা! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা চিন্তিতও হবে না। ফেরেশতারাও এ কথা বলবে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّ الَّذِيْنَ قَالُوْا رَبُّنَا اللّٰهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوْا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلٰ۬ئِكَةُ أَلَّا تَخَافُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَأَبْشِرُوْا بِالْجَنَّةِ الَّتِيْ كُنْتُمْ تُوْعَدُوْنَ )
“নিশ্চয়ই যারা বলে : আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় ফেরেশতা এবং বলেঃ তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার সুসংবাদ পেয়ে আনন্দিত হও।” (সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪১ : ৩০)
(وَأَزْوَاجُكُمْ)
‘তোমাদের সহধর্মিনীগণও’ কেউ বলেছেন- সহধর্মিণী দ্বারা উদ্দেশ্য হল দুনিয়াতে তাদের যে সব সহধর্মিণী তাদের মত মুত্তাকী ও ঈমানদার ছিল। কেউ বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল জান্নাতী স্ত্রীগণ, যা জান্নাতীদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর)
জান্নাতে মন যা চাইবে এবং যা দ্বারা চক্ষু শীতল হবে এমন সব কিছুই দেয়া হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَي قَلْبِ بَشَرٍ
আমি আমার বান্দাদের জন্য এমন কিছু তৈরি করে রেখেছি যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং মানুষের অন্তরে কল্পনাও জাগেনি। (সহীহ বুখারী হা. ৩২৪৪)
(وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِيْٓ أُوْرِثْتُمُوْهَا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ)
‘এটাই জান্নাত, তোমাদেরকে যার অধিকারী করা হয়েছে, তোমাদের কর্মের ফলস্বরূপ।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমাদের কেউ আমলের বিনিময়ে জান্নাতে যেতে পারবে না। সাহাবীরা বলল : আপনিও না, হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন : আমিও না, তবে যদি আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তাঁর রহমত ও অনুগ্রহ দ্বারা আচ্ছাদিত করে না নেন। (সহীহ বুখারী হা. ৫৬৭৪) আয়াত ও হাদীসের মাঝে বাহ্যিক বৈপরিত্য দেখা গেলেও মূলত কোন বৈপরিত্য নেই, কারণ আমল ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না, আমল হল জান্নাতে যাওয়ার প্রধান মাধ্যম। আর হাদীসে যে আমলের কথা বলা হয়েছে তা হল এমন আমল যা আল্লাহ তা‘আলা কবূল করেন। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সুতরাং শুধু আমল করে কেউ জান্নাতে যাবে এমন নয়, বরং আমলের সাথে আল্লাহর অনুগ্রহ লাগবে। তাই সৎ আমল করার সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ কামনা করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কিয়ামত অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে আর তা আকস্মিকভাবে চলে আসবে।
২. কাফিররা পরস্পর শত্র“ হয়ে যাবে আর মু’মিনদের বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হবে।
৩. জান্নাতে জান্নাতীরা অসংখ্য নেয়ামত ভোগ করবে।
৪. প্রকৃত বন্ধুত্ব তা-ই যা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য হয়।
৫. জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম উপায় হল সৎ আমল।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings