Surah Az Zukhruf Tafseer
Tafseer of Az-Zukhruf : 36
Saheeh International
And whoever is blinded from remembrance of the Most Merciful - We appoint for him a devil, and he is to him a companion.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৬-৪৫ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
এ আয়াতগুলোর প্রথমাংশে আল্লাহ তা‘আলা সে সকল দুর্ভাগা লোকদের বিবরণ তুলে ধরছেন যারা আল্লাহ তা‘আলার যিকির তথা ইবাদত থেকে গাফেল থাকে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য শয়তান নিযুক্ত করে দেন, ফলে শয়তান তাদেরকে এমনভাবে করায়ত্ত করে নেয় যে, মৃত্যু অবধি ইবাদত বিমুখ করে রাখে। অবশেষে যখন কিয়ামতের মাঠে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেখতে পাবে তখন আফসোস করবে কিন্তু সে আফসোস কোন কাজে আসবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ م بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدٰي وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّه۪ مَا تَوَلّٰي وَنُصْلِه۪ جَهَنَّمَ ط وَسَا۬ءَتْ مَصِيْرًا )
“কারো নিকট সৎ পথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর তা কতই না মন্দ আবাস!” (সূরা নিসা ৪ : ১১৫)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলছেন : যাদের কান থাকা সত্ত্বেও সত্য শ্রবণে বধির, চোখ থাকা সত্ত্বেও সত্য দর্শনে অন্ধ তাদেরকে যতই আহ্বান করা হোক না কেন তারা যেন মৃত মানুষের মতই। মৃত মানুষ যেমন সকল কিছু থেকে বিমুখ অনুরূপ তারাও সত্য গ্রহণ করা হতে বিমুখ। তাদেরকে যতই আহ্বান করা হোক না কেন আর যতই সু-পথ দেখানো হোক না কেন তারা সঠিক পথে আসবে না। এ সম্পর্কে সূরা আন্ নাম্ল-এর ৮০ নম্বর আয়াতসহ অন্যত্র আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, হে নাবী! যদি আমি ঐ সকল কাফিরদেরকে তোমার জীবদ্দশায় শাস্তি প্রদান করি তাহলে আমি তাদের ওপর ক্ষমতাবান আর যদি তোমার মৃত্যুর পর তাদেরকে শাস্তি দেই তাহলেও আমি তাদের ওপর এ ব্যাপারে ক্ষমতাবান। অর্থাৎ- তারা শাস্তি ভোগ করবেই, এ শাস্তি থেকে তারা রেহাই পাবে না।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :
النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ، فَإِذَا ذَهَبَتِ النُّجُومُ أَتَي السَّمَاءَ مَا تُوعَدُ، وَأَنَا أَمَنَةٌ لِأَصْحَابِي، فَإِذَا ذَهَبْتُ أَتَي أَصْحَابِي مَا يُوعَدُونَ، وَأَصْحَابِي أَمَنَةٌ لِأُمَّتِي، فَإِذَا ذَهَبَ أَصْحَابِي أَتَي أُمَّتِي مَا يُوعَدُونَ
তারকা আকাশের নিরাপত্তা স্বরূপ। যখন তারকা চলে যাবে তখন আকাশ থেকে যে বালা মসিবত আসার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা আসবে, আমি আমার সাহাবীদের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ, আমি চলে গেলে আমার সাহাবীদের যে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা আসবে। আমার সাহাবীগণ উম্মাতের নিরাপত্তা স্বরূপ যখন আমার সাহাবীরা চলে যাবে তখন আমার উম্মতকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা আসবে। ( সহীহ মুসলিম হা. ৬৬২৯)
(نَذْهَبَنَّ بِكَ) ‘তোমাকে নিয়ে যাব’ কেউ বলেছেন মক্কা থেকে মদীনায় নিয়ে আসবেন, কেউ বলেছেন মৃত্যু বরণ করাবেন। অর্থাৎ হে নাবী! তুমি মক্কা থেকে বের হয়ে গেলেও বা মৃত্যু বরণ করলেও তাদের থেকে প্রতিশোধ নেবই। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা এ প্রতিশ্রুতি বদরের দিন দেখিয়েছেন। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন জাতির কল্যাণ চান তখন তাদের প্রতি প্রেরিত নাবীকে তাড়াতাড়ি নিয়ে নেন, আর যখন কোন জাতিকে শাস্তি দিতে চান তখন নাবীর জীবদ্দশায় শাস্তি দেন যাতে তা দেখে নাবীর চোখ শীতল হয় তারা যে তাঁকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং অবাধ্য হয়েছে। (সিলসিলা সহীহাহ হা. ৩০৫৯)
সুতরাং তুমি এ বিষয়ে বিচলিত না হয়ে বরং তোমার প্রতি অবতীর্ণ কুরআন দৃঢ়ভাবে ধারণ করো। নিশ্চয়ই তুমি সিরাতুল মুসতাকীমের ওপরে রয়েছ। কুরআনের অনেক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর ওপর অবতীর্ণ ওয়াহীর অনুসরণ করতে বলেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَّاتَّبِعْ مَا يُوْحٰٓي إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ ط إِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرًا)
“আর তুমি অনুসরণ কর যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি ওয়াহী করা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমরা যা কর সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন।” (সূরা আহযাব ৩৩ : ২)
অর্থাৎ কুরআন তোমার ও তোমার জাতি কুরাইশদের জন্য একটি মর্যাদার বস্তু। কুরআন কুরাইশদের ভাষায় নাযিল হয়েছে এবং তোমাদের মধ্য হতে একজন ব্যক্তির ওপর নাযিল হয়েছে। ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন : সঠিক কথা হল কুরআন তাদের জন্য মর্যাদার বস্তু যারা তার ওপর আমল করবে সে কুরাইশ হোক আর অন্য কোন গোত্রের হোক। কুরআন দ্বারা উপকৃত হলেই সে মর্যাদা বহাল থাকবে অন্যথায় তার জন্য জিজ্ঞাসিত হতে হবে।
অতএব এ বিষয়ে আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে যেন কখনো আমরা আল্লাহ তা‘আলার যিকির হতে বিমুখ না হই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. যারা সৎ পথ বিচ্যুত তাদের সঙ্গী হলো শয়তান।
২. যারা কাফির তারা অবশ্যই শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।
৩. আখিরাতে মানুষকে তার আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings