Surah Ash Shura Tafseer
Tafseer of Ash-Shuraa : 7
Saheeh International
And thus We have revealed to you an Arabic Qur'an that you may warn the Mother of Cities [Makkah] and those around it and warn of the Day of Assembly, about which there is no doubt. A party will be in Paradise and a party in the Blaze.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭-৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করা হয়েছে বা অবতীর্ণ করার একমাত্র উদ্দেশ্য এই যে, মানুষদেরকে জাহান্নামের শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করা এবং জান্নাতের আরাম-আয়েশের ব্যাপারে সুসংবাদ প্রদান করা। যাতে মানুষ শাস্তির ভয়ে এবং জান্নাত লাভের আকাক্সক্ষায় বেশি বেশি সৎ আমল করে এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে।
وَكَذٰلِكَ অর্থাৎ যেভাবে পূর্ববর্তী নাবীদের প্রতি ওয়াহী করেছি তেমনি তোমার প্রতি এ কুরআন আরবি ভাষায় ওয়াহীর মাধ্যমে নাযিল করেছি। প্রথম আয়াতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে।
(أُمَّ الْقُرٰي) উম্মূল কুরা- দ্বারা এখানে পবিত্র মক্কা মুর্কারমাকে বুঝানো হয়েছে। আর মক্কাকে বিশেষ করে উল্লেখ করার কারণ সূরা আন‘আমের ৯২ নম্বর আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আর মক্কাকে “উম্মুল কুরা” বলার কারণ হলো এটা সমস্ত শহর হতে শ্রেষ্ঠ। হাদীসে বলা হয়েছে-
‘আবদুল্লাহ ইবনু আদী হামরা ইবনুল যুহরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার এক বাজারে দাঁড়িয়েছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেন : হে মক্কাভূমি! আল্লাহ তা‘আলার শপথ! তুমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে সবচেয়ে উত্তম এবং সবচেয়ে প্রিয় ভূমি। আল্লাহ তা‘আলার শপথ! যদি তোমার থেকে আমাকে বের করে দেয়া না হত তাহলে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না। (মুসনাদ আহমাদ ৪/৩০৫, আত্ তিরমিযী হা. ৩৯২৫, হাসান সহীহ, গরীব)
حَوْلَهَا দ্বারা প্রাচ্যের ও পাশ্চাত্যের সমস্ত শহর ও জনপদকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ সমস্ত মানব জাতি। এ আয়াত এটাও প্রমাণ করছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুধু আরবদের নাবী নন; বরং সারা জাহানের নাবী।
(يَوْمَ الْجَمْعِ)
দ্বারা কিয়ামত দিবস বুঝানো হয়েছে। এ দিনের ব্যাপারে কোনই সন্দেহ সংশয় নেই। আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ الْجَمْعِ ذٰلِكَ يَوْمُ التَّغَابُنِ)
“(স্মরণ কর!) যেদিন তিনি তোমাদেরকে সমবেত করবেন মহা সমাবেশ দিবসে সেদিন হবে লাভ লোকসানের দিন।” (সূরা তাগাবুন ৬৪ : ৯)
(فَرِيْقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيْقٌ فِي السَّعِيْر)
‘(সেদিন) একদল জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ অর্থাৎ কিয়ামতের দিন বিচার ফায়সালা করার পর একদল হবে জান্নাতী আর একদল হবে জাহান্নামী। যারা দুনিয়াতে ভাল কাজ করবে তারা হবে জান্নাতী আর যারা খারাপ কাজ করবে তারা হবে জাহান্নামী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
( يَوْمَ يَأْتِ لَا تَكَلَّمُ نَفْسٌ إِلَّا بِإِذْنِه۪ج فَمِنْهُمْ شَقِيٌّ وَّسَعِيْدٌ فَأَمَّا الَّذِيْنَ شَقُوْا فَفِي النَّارِ لَهُمْ فِيْهَا زَفِيْرٌ وَّشَهِيْقٌ)
“যখন সেদিন আসবে তখন আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কেউ কথা বলতে পারবে না; তাদের মধ্যে কেউ হবে হতভাগ্য ও কেউ ভাগ্যবান। অতঃপর যারা হতভাগ্য তারা থাকবে অগ্নিতে এবং সেথায় তাদের জন্য থাকবে চীৎকার ও আর্তনাদ। (সূরা হূদ ১১ : ১০৫-১০৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
(هُوَ الَّذِيْ خَلَقَكُمْ فَمِنْكُمْ كٰفِرٌ وَّمِنْكُمْ مُّؤْمِنٌ ط وَاللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ)
“তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ হয় কাফির এবং কেউ হয় মু’মিন। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা তাগাবুন ৬৪ : ২)
হাদীসে বলা হয়েছে, আবূ নাযরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ আব্দুল্লাহ (রাঃ) নামক একজন সাহাবী রুগ্ন ছিলেন। সাহাবীগণ তাকে দেখতে যান। তারা দেখেন যে, তিনি ফুপিয়ে কাঁদছেন। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কাঁদছেন কেন? অথচ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে শুনিয়েছেন : গোঁফ ছোট করে রাখবে যে পর্যন্ত না তুমি আমার সাথে মিলিত হবে। ঐ সাহাবী উত্তরে বললেন : এটা ঠিকই বটে। কিন্তু আমাকেতো ঐ হাদীসটি কাঁদাচ্ছে যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় ডান মুষ্টির মধ্যে কিছু মাখলূক রাখেন অনুরূপভাবে অপর মুষ্টির মধ্যেও কিছু মাখলূক রাখেন, অতঃপর বলেন : এ লোকগুলো জান্নাতের জন্য এবং এ লোকগুলো জাহান্নামের জন্য, আর এতে আমি কোন পরোয়া করি না। সুতরাং আমার জানা নেই যে, আমি তাঁর কোন মুষ্টির মধ্যে আছি। (আহমাদ ৪/১৭৬) এটি তাকদীর প্রমাণকারী একটি হাদীস। তাকদীর প্রমাণ করার আরো বহু হাদীস আলী, ইবনু মাসঊদ ও আয়িশাহ (রাঃ) প্রমুখ সাহাবী থেকে সহীহ, সুনান এবং মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণিত আছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : যদি আমি ইচ্ছা করতাম তাহলে সকল উম্মাতকে একই উম্মাতে পরিণত করতে পারতাম। অর্থাৎ সকলেই হিদায়াত লাভ করত, ফলে সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করত। কিন্তু এটা তিনি করেননি এজন্য যে, যাতে তিনি সকলকে পরীক্ষা করতে পারেন। এ সম্পর্কে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
সুতরাং আমল বর্জন করে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। বরং তাকদীরের ওপর বিশ্বাস রেখে সৎ আমলের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. কুরআন পাপাচারীদের জন্য সতর্ককারী ও মু’মিনদের জন্য সুসংবাদবাহী একটি গ্রন্থ।
২. মানুষের মধ্যে একদল জান্নাতী এবং একদল জাহান্নামী হবে।
৩. মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে মূলত পরীক্ষা করার জন্য- কে ভাল কাজ করে আর কে মন্দ কাজ করে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings