Surah Ash Shura Tafseer
Tafseer of Ash-Shuraa : 52
Saheeh International
And thus We have revealed to you an inspiration of Our command. You did not know what is the Book or [what is] faith, but We have made it a light by which We guide whom We will of Our servants. And indeed, [O Muhammad], you guide to a straight path -
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫১-৫৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতসমূহের প্রথম আয়াত ইয়াহুদীদের এক হঠকারিতামূলক দাবীর জবাবে অবতীর্ণ হয়েছে। ইমাম বাগভী ও কুরতুবী (রহঃ) বলেন : ইয়াহুদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আপনি যদি নাবী হন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কথা বলেন না কেন, তাঁকে দেখেন না কেন, যেমন মুসা (আঃ) কথা বলেছেন এবং দেখেছেন? আপনি এরূপ না করা পর্যন্ত আমরা ঈমান আনব না। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : মূসা (আঃ) আল্লাহ তা‘আলাকে দেখেননি। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (কুরতুবী, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আয়াতগুলোতে কোন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তা‘আলার কথা বলার মাধ্যমগুলোর বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা মানুষের সাথে তিনটি পদ্ধতিতে কথা বলেন :
(১) وَحْيًا ওয়াহী তথা কোন ফেরেশতার মাধ্যম ছাড়াই রাসূলের অন্তরে ওয়াহী ছুড়ে দেন। এরূপ পদ্ধতিকেنفث বলা হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : জিবরীল (আঃ) আমার অন্তরে ছুড়ে দিয়েছে যে, কোন আত্মা তার রিযিক ও আয়ু পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মারা যায় না। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর ও উত্তম রিযিক তালাশ কর। যা হালাল তা গ্রহণ কর আর যা হারাম তা বর্জন কর। (সিলসিলা সহীহাহ হা. ২৮৬৬)
(২) জাগ্রত অবস্থায় পর্দার আড়াল থেকে সরাসরি কথা বলা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর সাথে তূর পাহাড়ে কথা বলেছিলেন।
(৩) ফেরেশতার মাধ্যমে স্বীয় ওয়াহী প্রেরণ করা। যেমন জিবরীল (আঃ) ওয়াহী নিয়ে আগমন করতেন এবং নাবীদেরকে শুনাতেন।
সুতরাং দুনিয়াতে কোন মানুষ আল্লাহ তা‘আলার সাথে সামনা-সামনি কথা বলতে পারে না।
روح ‘ রূহ’ বলতে এখানে কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যেভাবে আমি তোমার পূর্বে অন্যান্য নাবীর প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম, অনুরূপ তোমার প্রতি কুরআন ওয়াহী করেছি। কুরআনকে “রূহ্” বলে এ জন্য আখ্যায়িত করা হয়েছে যে, কুরআন দ্বারা অন্তঃকরণের জীবন লাভ হয়।
(مَا كُنْتَ تَدْرِيْ مَا الْكِتٰبُ وَلَا الْإِيْمَانُ)
‘তুমি তো জানতে না কিতাব কী ও ঈমান কী’ “কিতাব” দ্বারা কুরআন উদ্দেশ্য। অর্থাৎ নবুওয়াতের পূর্বে কুরআনের কোন জ্ঞান তোমার ছিল না। অনুরূপ ঈমান তথা ইসলামী শরীয়তের বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কেও তোমার কোন জ্ঞান ছিল না। এগুলো ওয়াহী দ্বারা তোমাকে জানানো হয়েছে। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : আমি এ কুরআনকে করেছি নূর বা জ্যোতি। এর দ্বারা আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে চাই হিদায়াত দান করি। অর্থাৎ কুরআন দ্বারা হিদায়াত কেবল তারাই পায় যাদের মধ্যে ঈমানের অনুসন্ধান ও তা গ্রহণের প্রতি তীব্র আগ্রহ থাকে, তারা এটাকে হিদায়াত লাভের নিয়্যাতে পড়ে থাকে। তাই আল্লাহ তা‘আলা এদের সাহায্য করেন এবং এদের জন্য হিদায়াতের পথ সুগম করে দেন। এ পথের ওপরই এরা চলতে থাকে। কিন্তু যারা নিজের চোখ বন্ধ করে নেয় ও কানে ছিপি লাগিয়ে নেয় এবং জ্ঞান-বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না, তারা হিদায়াত কিভাবে পেতে পারে?
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَوْ جَعَلْنٰھُ قُرْاٰنًا اَعْجَمِیًّا لَّقَالُوْا لَوْلَا فُصِّلَتْ اٰیٰتُھ۫ﺛ ءَاَعْجَمِیٌّ وَّعَرَبِیٌّﺚ قُلْ ھُوَ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا ھُدًی وَّشِفَا۬ئٌﺚ وَالَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ فِیْٓ اٰذَانِھِمْ وَقْرٌ وَّھُوَ عَلَیْھِمْ عَمًیﺚ اُولٰ۬ئِکَ یُنَادَوْنَ مِنْ مَّکَانٍۭ بَعِیْدٍ)
“আমি যদি আজমী (অনারবীয়) ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করতাম তবে তারা অবশ্যই বলত : এর আয়াতগুলো বিশদভাবে বর্ণিত হয়নি কেন? কী আশ্চর্য যে, এর ভাষা আজমী (অনারবীয়), অথচ রাসূল আরবীয়। বল : মু’মিনদের জন্য এটা পথ-নির্দেশ ও ব্যাধির প্রতিকার; কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন হবে তাদের জন্য অন্ধত্ব। তারা এমন যে, যেন তাদেরকে আহ্বান করা হয় বহু দূর হতে।” (সূরা হা-মীম আস্ সাজদাহ্ ৪১ : ৪৪)
(وَإِنَّكَ لَتَهْدِيْٓ إِلٰي صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ)
‘তুমি অবশ্যই প্রদর্শন কর সরল পথ’ অর্থাৎ তুমি মানুষকে সিরাতুল মুসতাকিমের পথ দেখাও। এটাকে
(هداية الارشاد والدلالة)
বা পথ প্রদর্শন ও নির্দেশনামূলক হিদায়াত বলা হয়। নাবী-রাসূলসহ সকল মানুষ এ প্রকার হিদায়াত বা পথপ্রদর্শন করতে পারে। কিন্তু প্রথম হিদায়াত দ্বারা উদ্দেশ্য (هداية التوفيق) হিদায়াতুত তাওফীক : সরল সঠিক পথের দিশা দান করতঃ তার ওপর মজবুত ও অটুট থাকার তাওফীক দান করা। এ প্রকার হিদায়াত শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার কাছে সঠিক পথের হিদায়াত চাইতে হবে এবং তার ওপর বহাল থাকার জন্য বেশি বেশি এ দু‘আ করতে হবে-
يَا مُقَلِّبَ القُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَي دِينِكَ
হে অন্তরের পরিবর্তনকারী, আমার অন্তরকে দীনের ওপর অটল রাখ। স্বয়ং রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু‘আ বেশি বেশি পাঠ করতেন। কারণ কোন পীর, মুরশিদ ও বাবা হিদায়াতের মালিক নয়, যদি আল্লাহ তা‘আলা হিদায়াত না দেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. মানুষের সাথে আল্লাহ তা‘আলার কথা বলার তিনটি পদ্ধতি জানতে পারলাম। এ তিনটি পদ্ধতির বাইরে কোন ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কথা বলার দাবী করলে সে মিথ্যাবাদী।
২. কুরআন মু’মিনের জন্য হিদায়াতস্বরূপ।
৩. আল্লাহ তা‘আলার কাছে হিদায়াত কামনা করব এবং তার ওপর অটল থাকার জন্য বেশি বেশি দু’আ করব।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings