Surah Ash Shura Tafseer
Tafseer of Ash-Shuraa : 36
Saheeh International
So whatever thing you have been given - it is but [for] enjoyment of the worldly life. But what is with Allah is better and more lasting for those who have believed and upon their Lord rely
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৬-৩৯ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতগুলোতে দুনিয়ার ধন-সম্পদ আখিরাতের নেয়ামতের তুলনায় অতি নগণ্য বস্তু সে কথাই আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন : দুনিয়াতে মানুষকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা অস্থায়ী, নশ্বর এবং তা তুচ্ছ বস্তু মাত্র। আর আখিরাতে মু’মিনদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট যা কিছু জমা রয়েছে তা উত্তম এবং চিরস্থায়ী। যা কোন দিনও শেষ হবে না। অতএব মু’মিন কখনো দুনিয়াকে আখিরাতের ওপর প্রাধান্য দিতে পারে না। আখিরাতের অবিনশ্বর নেয়ামত পাওয়ার জন্য সে যেকোন সময় আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় নিজের সম্পদ ও জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত। আল্লাহ তা‘আলার বিধান পালন করতে তার কোন কষ্ট ও ইতস্ততবোধ হবে না।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা সে উত্তম এবং চিরস্থায়ী নেয়ামত লাভ করার জন্য কিছু গুণাবলী উল্লেখ করেছেন, অবশ্যই মানুষকে সে গুণে গুণান্বিত হতে হবে। তবে সে সব গুণাবলীর পূর্বে সঠিক ঈমান আনতে হবে, কারণ ঈমান ছাড়া কোন সৎ আমল গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রথম গুণ :
(وَعَلٰي رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ)
অর্থাৎ সর্বকাজে ও সর্বাবস্থায় পালনকর্তার ওপর ভরসা রাখে। তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে কার্যনির্বাহী মনে করে না। বিপদে পড়লে আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কারো কাছে যায় না।
দ্বিতীয় গুণ :
(وَالَّذِيْنَ يَجْتَنِبُوْنَ كَبَا۬ئِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ)
অর্থাৎ যারা কবীরা গুনাহ বিশেষতঃ ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকে। কুরআনে প্রত্যেক স্থানে فَوَاحِشَ শব্দ ব্যভিচার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কবীরা গুনাহর মধ্যে সকল গুনাহ শামিল তারপরেও কেন আলাদাভাবে ব্যভিচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে? কারণ এটি একটি নির্লজ্জ কর্ম ও সংক্রামক ব্যাধি।
তৃতীয় গুণ :
(وَإِذَا مَا غَضِبُوْا هُمْ يَغْفِرُوْنَ)
অর্থাৎ তারা রাগান্বিত হয়েও মানুষকে ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখে। মানুষকে ক্ষমা করে দেয়া একটি মহৎ গুণের পরিচয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের জন্য কারো থেকে পরিশোধ নিতেন না, যদি আল্লাহ তা‘আলার সম্মান নষ্ট না করত। (সহীহ বুখারী হা. ৬৭৮৬)
চতুর্থ গুণ :
(وَالَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِرَبِّهِمْ وَأَقَامُوا الصَّلٰوةَ)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে কোন আদেশ পাওয়া মাত্রই বিনা দ্বিধায় তা কবূল করতে ও পালন করতে প্রস্তুত হয়ে যাওয়া। সে আদেশ মনের অনুকূলে হোক অথবা প্রতিকূলে হোক। এতে ইসলামের সকল ফরয কর্ম পালন এবং হারাম কর্ম থেকে বেঁচে থাকা শামিল। ফরয কর্মসমূহের মধ্যে সালাত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সালাত এমন একটি ইবাদত এটা পালন করলে অন্যান্য ফরয কর্ম পালন ও নিষিদ্ধ বিষয়াদি থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়।
পঞ্চম গুণ :
(وَأَمْرُهُمْ شُوْرٰي بَيْنَهُمْ)
অর্থাৎ পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কার্য সম্পাদন করে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ ج فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِط إِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّـلِيْنَ)
“এবং কার্য সম্পর্কে তাদের সাথে পরামর্শ কর; অতঃপর যখন তুমি (কোন বিষয়ে) সঙ্কল্প করছ তখন আল্লাহর প্রতি ভরসা কর এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ নির্ভরশীলগণকে ভালবাসেন।” (সূরা আলি ‘ইমরান ৩ : ১৫৯)
তাই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন কাজ করতেন তখন সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করে কাজ করতেন যাতে তাদের আত্মতৃপ্তি লাভ হয়। পরবর্তী খলীফাগণও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণে পরামর্শভিত্তিক কাজ করতেন। যেমন উমার (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি শুরা কমিটি গঠন করে গিয়েছিলেন যারা পরবর্তী খলীফা নির্ধারণ করেছিলেন।
ষষ্ঠ গুণ :
(وَمِمَّا رَزَقْنٰهُمْ يُنْفِقُوْنَ)
অর্থাৎ তারা আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক থেকে সৎ কাজে ব্যয় করে। ফরয যাকাত, নফল দান-সাদকাহ সবই এর মধ্যে শামিল। কিয়ামতের দিন সাত শ্রেণির লোক আল্লাহর আরশের ছায়াতলে ছায়া পাবে। তাদের এক শ্রেণি যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় দান করে এমনভাবে যে তার ডান হাত কী দান করেছে বাম হাত জানে না। অর্থাৎ মানুষকে দেখানোর জন্য ব্যয় করে না।
সপ্তম গুণ :
(وَالَّذِيْنَ إِذَآ أَصَابَهُمُ الْبَغْيُ هُمْ يَنْتَصِرُوْنَ)
অর্থাৎ তারা অত্যাচারিত হয়ে সমান সমান প্রতিশোধ গ্রহণ করে এবং তাতে সীমালংঘন করে না। এটা প্রকৃতপক্ষে তৃতীয় গুণের ব্যাখ্যা ও বিবরণ। তবে এখানে আলাদাভাবে উল্লেখের কারণ হল কেউ অত্যাচারিত হয়ে প্রতিশোধ নিলে তিরস্কার করা যাবে না।
তারা প্রতিশোধ নিতে চাইলে নিতে পারে। কিন্তু শক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা ক্ষমা করে দেয়াকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যেমন ইউসুফ (আঃ) বলেছিলেন,
(قَالَ لَا تَثْرِيْبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ ط يَغْفِرُ اللّٰهُ لَكُمْ ز وَهُوَ أَرْحَمُ الرّٰحِمِيْنَ )
“সে বলল : ‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’’ (সূরা ইউসুফ ১২ : ৯২)
অতএব যারা আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে সকল প্রকার কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবে, সালাত কায়েম করবে, পরামর্শ করে কাজ করবে এবং আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করবে তাদের জন্য রয়েছে আখিরাতে অপরিমেয় নেয়ামত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার আবাস ক্ষণস্থায়ী এবং তা ধ্বংসশীল।
২. পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে, তবে তা অবশ্যই সৎ কাজ, মন্দ কাজ নয়।
৩. প্রতিশোধ গ্রহণ অপেক্ষা ক্ষমা করে দেয়া উত্তম।
৪. রাগের মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings