Surah Ash Shura Tafseer
Tafseer of Ash-Shuraa : 16
Saheeh International
And those who argue concerning Allah after He has been responded to - their argument is invalid with their Lord, and upon them is [His] wrath, and for them is a severe punishment.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৬-১৯ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
যে দীন দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন সে দীনের প্রতি আহ্বান করার পরেও যারা আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে বিতর্ক করে, বিভিন্ন যুক্তি-তর্ক পেশ করে, তাদের যুক্তি মূলত ভিত্তিহীন ও বাতিল আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কেননা তারা এ সকল বাতিল তর্ক-বিতর্কের ফলে আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধের পাত্রে পরিণত হয়েছে। এর দ্বারা ঐ সকল মুশরিদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ধর্মকে মেনে নিয়েছে এ উদ্দেশ্যে যে, যাতে করে তারা পুনরায় মু’মিনদেরকে সত্য পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইয়াহূদী এবং খ্রিস্টানরা, যারা মুসলিমদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করত এবং বলত : আমাদের ধর্ম তোমাদের ধর্মের চেয়ে উত্তম এবং আমাদের নাবী তোমাদের নাবীর পূর্বে এসেছিলেন। অতএব আমরা তোমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
دَاحِضَةٌ অর্থ হলো, দুর্বল, বাতিল, অসার, অনর্থক, ভিত্তিহীন ইত্যাদি। অর্থাৎ তাদের প্রমাণাদী আল্লাহ তা‘আলার কাছে অনর্থক।
الكِتٰبَ দ্বারা এখানে কুরআনসহ সমস্ত আসমানী কিতাবকে বুঝানো হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : তিনি وَالْمِيْزَانَ দাঁড়িপাল্লা নাযিল করেছেন। অর্থাৎ দাঁিড়পাল্লা দিয়ে ওজন করে সঠিকভাবে মেপে দেয়া হয়, কারো প্রতি জুলুম করা হয় না, তাই ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর তাফসীর করেছেন ন্যায়বিচার। মুজাহিদ বলেন : মানুষ ওজন করতে যে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করে এখানে তা-ই উদ্দেশ্য। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর তাফসীর অনুযায়ী, মিযান হল ন্যায়বিচারের। কারণ মিযান বা দাঁড়িপাল্লা স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য হল ন্যায়বিচার করা। অতএব এ দুয়ের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।
আল্লাহ তা‘আলা কিতাব ও ন্যায় বিচারসহ নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন তার বর্ণনা দিয়ে অন্যত্র বলেন :
(لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنٰتِ وَأَنْزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتٰبَ وَالْمِيْزَانَ لِيَقُوْمَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও মানদণ্ড যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে (সূরা হাদীদ ৫৭ : ২৫)
তাছাড়া মিযান দাঁড়িপাল্লা নামক যন্ত্রের নামও এসেছে, তবুও তার মূল উদ্দেশ্য হল ন্যায়বিচার করা। আল্লাহ আরো বলেন,
(وَالسَّمَا۬ءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيْزَانَ أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيْزَانِ وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيْزَانَ)
“আকাশকে সমুন্নত করেছেন এবং স্থাপন করেছেন (ন্যায়ের) মানদণ্ড, যাতে তোমরা পরিমাপে সীমালঙ্ঘন না কর। ওজনের ন্যায্য মান প্রতিষ্ঠিত কর এবং ওজনে কম দিও না।” (সূরা আর-রহমান ৫৫ : ৭-৯)
সুতরাং মানুষ লেনদেনের ক্ষেত্রে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করে যেমন ইনসাফ করে থাকে, তেমনি এর মাঝে এই ইঙ্গিতও রয়েছে যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা ইনসাফের দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করবেন, প্রত্যেককে তার আমলের যথার্থ প্রতিদান দেবেন, কারো প্রতি জুলুম করবেন না।
(يَسْتَعْجِلُ بِهَا الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِهَا)
‘যারা এর প্রতি বিশ্বাস করে না তারাই এটার (কিয়ামত) জন্য তড়িঘড়ি করে’ এখানে তিনটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে : (১) কাফিররা কিয়ামতকে বিশ্বাস করে না, অস্বীকার করে বিধায় তাড়াতাড়ি সংঘটিত হওয়া কামনা করে। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা তাদেরক কথা তুলে ধরে বলেন : তারা বলে :
( مَتٰي هٰذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ)
“তোমরা যদি সত্যবাদী হও (তবে বল : ) এ (কিয়ামতের) প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হবে?” (সূরা সাবা ৩৪ : ২৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(يَسْأَلُكَ النَّاسُ عَنِ السَّاعَةِ ط قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللّٰهِ ط وَمَا يُدْرِيْكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا )
“লোকেরা তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করে। তুমি বলে দাও- এর জ্ঞান শুধু আল্লাহরই কাছে রয়েছে। তুমি কি করে জানবে যে, হয়ত ক্বিয়ামত শীঘ্রই সংঘটিত হবে।” (সূরা আহযাব ৩৩ : ৬৩)
(২) মু’মিনরা কিয়ামতকে খুব ভয় করে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(الَّذِيْنَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ وَهُمْ مِّنَ السَّاعَةِ مُشْفِقُوْنَ)
“যারা না দেখেও তাদের প্রতিপালককে ভয় করে এবং তারা কিয়ামত সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত।” (সূরা আম্বিয়া ২১ : ৪৯)
(৩) মু’মিনরা জানে কিয়ামত সত্য, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন : হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিয়ামত কখন হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তোমার ধ্বংস হোক, তা অবশ্যই হবে, তুমি কিয়ামতের জন্য কী তৈরি করেছ? তিনি বললেন : আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালবাসা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তুমি যাকে ভালবাস তার সাথেই তুমি থাকবে।
সুতরাং যারা কিয়ামত সম্পর্কে ঝগড়া করে তারা মূলত পথভ্রষ্টতার মধ্যে নিপতিত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(بَلْ كَذَّبُوْا بِالسَّاعَةِ وَأَعْتَدْنَا لِمَنْ كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيْرًا )
“বরং তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে আর যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি।” (সূরা ফুরকান ২৫ : ১১)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. যারা ইসলাম গ্রহণ করার পর তা আবার ত্যাগ করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, আর তারা আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধের পাত্র।
২. আল্লাহ তা‘আলা ন্যায়ের মানদণ্ড দ্বারা তাঁর বান্দাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করবেন।
৩. কাফির ও মু’মিনের মধ্যে পার্থক্য জানা গেল।
৪. যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসবে সে কিয়ামতের দিন রাসূলের সাথে থাকবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings