42:1
حمٓ١
Saheeh International
Ha, Meem.
নামকরণ : الشوري শব্দের অর্থ হলো- পরামর্শ করা, উপদেশ দেয়া ইত্যাদি। এ সূরাতে পরামর্শ করে কাজ করা মু’মিনদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সূরার ৩৮ নম্বর আয়াতে শূরা শব্দটি উল্লেখ আছে। সেখান থেকেই এ নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। ১-৬ নম্বর আয়াতের তাফসীর : حٰمٓ (হা-মীম) এবং عٓسٓقٓ (আইন-সীন-ক্বফ) এ জাতীয় “হুরুফুল মুক্বাত্বআত” বা বিচ্ছিন্ন অক্ষর সম্পর্কে পূর্বে সূরা বাকারাতে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলোর সঠিক উদ্দেশ্য ও অর্থ একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এ পবিত্র কুরআন যেভাবে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবেই তোমার পূর্ববর্তী নাবীদের প্রতিও ওয়াহী করা হয়েছে। “ওয়াহী” হলো আল্লাহ তা‘আলার সেই বাণী, যা তিনি ফেরেশতার মাধ্যমে নাবী-রাসূলদের নিকট পাঠিয়েছেন। হাদীসে ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার ধরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে।‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, হারিস ইবনু হিশাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন : হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল! আপনার কাছে কিভাবে ওয়াহী আসে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার উত্তরে বলেন : কখনো আমার নিকট তা ঘন্টা ধ্বনির ন্যায় আসে, যা আমার কাছে খুব কঠিন ও ভারী মনে হয়। আর এ অবস্থা শেষ হয়ে গেলেই আমি তা মুখস্ত করে নেই। আবার কখনো ফেরেশতা আমার নিকট মানুষের আকৃতিতে আসে এবং আমার সাথে কথা বলেন : তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্ত করে নেই। (সহীহ বুখারী হা. ৩২১৫, সহীহ মুসলিম হা. ১৬০, ১৬১)এতে বুঝা যাচ্ছে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন নতুন নাবী নন, তাঁর পদ্ধতি ও পূর্ববর্তী নাবীদের পদ্ধতি একই, তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা পূর্ববর্তী নাবীদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বড়ত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের কথা বর্ণনা করছেন। تَكَادُ ক্রিয়াটি নিকটতম অবস্থা বুঝানো জন্য ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ আকাশসমূহ উপর থেকে ভেঙ্গে পড়ার সময় যেন খুব কাছে এসে গেছে। আকাশসমূহ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হওয়ার কারণ কী তা নিয়ে আলেম সমাজের দু’টি মত রয়েছে : (১) আল্লাহ তা‘আলার ভয় ও মহত্ত্বের কারণে তা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। এ কথার উপর প্রমাণ করে পূর্বের আয়াতের অংশ (وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ) ‘তিনি সর্বোচ্চ, মহান’।(২) কাফিররা আল্লাহকে যে সব অপবাদ দিয়ে থাকে যেমন তারা বলে আল্লাহর সন্তান রয়েছে, স্ত্রী রয়েছে ইত্যাদি এসব কারণে আকাশসমূহ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। যেমন আল্লাহ বলেন : (وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمٰنُ وَلَدًا لَقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا تَكَادُ السَّمٰوٰتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنْشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا) “তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’ তোমরা এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ যাতে আকাশসমূহ বিদীর্ণ হবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে ও পর্বতগুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পতিত হবে” (সূরা মারইয়াম ১৯ : ৮৮-৯০)এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : ফেরেশতাগণ তাঁর প্রশংসা করে এবং পৃথিবীবাসীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। এ সম্পর্কে সূরা আল মু’মিন-এর ৭ নম্বর আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা কাফির-মুশরিকদের হুশিয়ার করছেন : যারা أَوْلِيَا۬ءَ বা অন্য কিছুকে আল্লাহ তা‘আলার সাথে অংশী স্থাপন করে, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে তাদের ইবাদত করে ও তাদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে, তিনি তাদের সকল কাজ প্রত্যক্ষ করছেন, তদনুযায়ী তাদের প্রতিদান দেবেন।সুতরাং হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তুমি তাদের কর্মবিধায়ক নও; বরং সকল কিছুর কর্ম-বিধায়ক হলাম আমি আল্লাহ তা‘আলা। তোমার দায়িত্ব শুধু সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া। যারা আমাকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে ওলী তথা তাদের অভিভাবক ও মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে তাদের জন্য আমিই যথেষ্ট। মূলত একথার মধ্যে ধমক প্রকাশ পেয়েছে। আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে যারা অন্যদেরকে মা‘বূদ বানিয়ে নেবে তাদের পরিণতি খুবই খারাপ। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় : ১. আল্লাহ তা‘আলার মহত্ত্বের কথা জানতে পারলাম।২. আকাশ-জমিনে যা কিছু রয়েছে সকল কিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দায়িত্ব ছিল শুধু সত্যের বাণী পৌঁছে দেয়া। অনুরূপ বর্তমান ‘আলিমদের দায়িত্ব হলো সঠিক বিধানসমূহ জনগণকে জানিয়ে দেয়া।৪. ফেরেশতারাও আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করেন এবং তারা জমিনবাসীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us