Surah Ghafir Tafseer
Tafseer of Ghafir : 33
Saheeh International
The Day you will turn your backs fleeing; there is not for you from Allah any protector. And whoever Allah leaves astray - there is not for him any guide.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৩০-৩৫ নং আয়াতের তাফসীর:
ঐ মুমিন লোকটির নসীহতের শেষাংশের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তিনি স্বীয় কওমকে সম্বোধন করে আরো বলেনঃ “হে আমার কওম! যদি তোমরা আল্লাহর এই রাসূল (সঃ)-কে নামানো এবং নিজেদের হঠকারিতার উপর স্থির থাকো তবে আমি আশংকা করছি যে, তোমাদের পূর্ববর্তী কওমের মত তোমাদের উপরও আল্লাহর আযাব এসে পড়বে। হযরত নূহ (আঃ)-এর সম্প্রদায়, আ’দ সম্প্রদায় এবং সামূদ সম্প্রদায়ের প্রতি লক্ষ্য কর যে, রাসূলদেরকে (আঃ) না মানার কারণে তাদের উপর কি ভীষণ আযাবই না আপতিত হয়েছিল! এমন কেউ ছিল না যে, তাদেরকে ঐ আযাব হতে রক্ষা করতে পারে। এতে তাদের প্রতি মহান আল্লাহর কোন যুলুম ছিল না। তার মহান সত্তা বান্দাদের উপর যুলুম করা হতে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। ওটা ছিল তাদের নিজেদেরই কৃতকর্মের ফল। আমি তোমাদের ব্যাপারে কিয়ামত দিবসের শাস্তিকে ভয় করি, যেই দিন অত্যন্ত ভয়াবহ হবে।”
শিংগায় ফুৎকার দেয়ার হাদীসে রয়েছে যে, যখন যমীনের উপর ভূমিকম্প আসবে এবং যমীন ফেটে যাবে তখন জনগণ ভয় ও সন্ত্রাসে হতবুদ্ধি হয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করবে এবং একে অপরকে ডাকাডাকি করতে থাকবে। যহহাক (রঃ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, এটা ঐ সময়ের বর্ণনা, যখন জাহান্নামকে আনয়ন করা হবে এবং জনগণ ওটা দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পালাতে থাকবে এবং ফেরেশতামণ্ডলী তাদেরকে হাশরের ময়দানের দিকে ফিরিয়ে আনবেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “ফেরেশতারা আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে।” আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে জ্বিন ও মনুষ্য সম্প্রদায়! আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার, অতিক্রম কর, কিন্তু তোমরা তা পারবে না শক্তি ব্যতিরেকে।” (৫৫:৩৩)
হযরত হাসান (রঃ) ও হযরত কাতাদা (রঃ)-এর কিরআতে অর্থাৎ (আরবী) অক্ষরে তাশদীদ রয়েছে। এটা (আরবী) বাক্য হতে গৃহীত হয়েছে। যখন উট বেয়াড়া ও উদ্ধত হয়ে উঠে তখন এই বাক্য বলা হয়ে থাকে।
বলা হয়েছে যে, যে দাঁড়িপাল্লায় আমল ওযন করা হবে সেখানে একজন ফেরেশতা থাকবেন। যার পুণ্য বেশী হবে তার ব্যাপারে ঐ ফেরেস্তা উচ্চ স্বরে ডাক দিয়ে বলবেনঃ “হে জনমণ্ডলী! অমুকের পুত্র অমুক সৌভাগ্যবান হয়ে গেছে এবং আজকের পরে তার ভাগ্য কখনো আর খারাপ হবে না। আর যার পুণ্য কমে যাবে তার সম্পর্কে ঐ ফেরেশতা উচ্চ স্বরে ডাক দিয়ে বলবেনঃ “অমুকের পুত্র অমুক হতভাগ্য হয়ে গেছে এবং সে ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে।”
হযরত কাতাদা (রঃ) বলেনঃ কিয়ামতকে (আরবী) বলার কারণ এই যে, প্রত্যেক কওমকে তাদের আমলসহ ডাক দেয়া হবে। জান্নাতবাসী ডাকবে জান্নাতবাসীকে এবং জাহান্নামবাসী ডাকবে জাহান্নামবাসীকে। এ কথাও বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদেরকে ডাক দিবে এবং জাহান্নামবাসীরা জান্নাতবাসীদেরকে আহ্বান করবে বলেই কিয়ামত দিবসকে (আরবী) বলা হয়েছে। যেমন জান্নাতীরা জাহান্নামীদের ডাক দিয়ে বলবেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যা বলেছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছো কি? তারা বলবে, হাঁ।” (৭:৪৪) আর জাহান্নামীরা জান্নাতীদেরকে সম্বোধন করে বলবেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাদের উপর কিছু পানি ঢেলে দাও, অথবা আল্লাহ্ জীবিকারূপে তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা হতে কিছু দাও। তারা বলবেঃ আল্লাহ্ এ দু'টি নিষিদ্ধ করেছেন কাফিরদের উপর।”(৭:৫০) আর এ কারণেও যে, আরাফবাসীরা জান্নাতবাসীদেরকে ও জাহান্নাম বাসীদেরকে ডাক দিবে। যেমন এগুলো সূরায়ে আ'রাফে বর্ণিত হয়েছে।
ইমাম বাগাভী (রঃ) প্রমুখ গুরুজন এটাই গ্রহণ করেছেন যে, এসব কারণেই কিয়ামত দিবসকে (আরবী) বলা হয়েছে। এই উক্তিটি খুবই পছন্দনীয় বটে। তবে এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ।
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ সেই দিন মানুষ পশ্চাৎ ফিরে পলায়ন করতে চাইবে, কিন্তু পালাবার কোন জায়গা পাবে না এবং তাদেরকে বলা হবেঃ আজ অবস্থান স্থল এটাই। সেই দিন আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করার কেউ থাকবে না। আল্লাহ ছাড়া ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী আর কেউই নেই। তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্যে কোন পথ প্রদর্শক নেই।
এরপর ইরশাদ হচ্ছে ? ইতিপূর্বে মিসরবাসীদের নিকট হযরত ইউসুফ (আঃ) আল্লাহর নবী হিসেবে আগমন করেছিলেন। তিনিই প্রেরিত হয়েছিলেন হযরত মূসা (আঃ)-এর পূর্বে। মিসরের আযীযও তিনি ছিলেন। তিনি স্বীয় উম্মতকে আল্লাহর পথে আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু তাঁর কওম তার কথা মানেনি। তবে পার্থিব শাসন ক্ষমতা তার ছিল বলে পার্থিব দিক দিয়ে তাদেরকে তাঁর অধীনতা স্বীকার করতেই হয়েছিল। তাই মহান আল্লাহ্ বলেনঃ পরিশেষে যখন ইউসুফ (আঃ)-এর মৃত্যু হলো তখন তোমরা বলেছিলেঃ তার পরে আল্লাহ্ আর কাউকেও রাসূল করে প্রেরণ করবেন না। এই ছিল তাদের কুফরী ও অবিশ্বাসকরণ। এই ভাবে আল্লাহ্ বিভ্রান্ত করেন সীমালংঘনকারী ও সংশয়বাদীদেরকে। অর্থাৎ তোমাদের যে অবস্থা হয়েছে এই অবস্থাই এমন সবারই হয়ে থাকে যারা সীমালংঘন করে সংশয় সন্দেহের মধ্যে পতিত হয়। যারা সত্যকে মিথ্যা দ্বারা সরিয়ে দেয় এবং বিনা দলীলে প্রকৃত দলীলসমূহ পরিহার করে ও বিতর্কে লিপ্ত হয়। এ কারণে আল্লাহ তাদের প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট। তাদের এ কার্যকলাপ যখন আল্লাহ্ তা'আলার অসন্তুষ্টির কারণ তখন মুমিনরাও তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট। যেসব লোকের মধ্যে এই ঘৃণ্য বিশেষণ থাকে তাদের অন্তরে আল্লাহ্ তা'আলা মোহর মেরে দেন, যার কারণে এর পরে তারা না ভাল-কে ভাল বলে বুঝতে পারে, না . মন্দকে মন্দ জ্ঞান করতে পারে। তাই তো মহান আল্লাহ বলেনঃ এই ভাবে আল্লাহ্ প্রত্যেক উদ্ধত ও স্বৈরাচারী ব্যক্তির হৃদয়কে মোহর করে দেন।
হযরত শা'বী (রঃ) বলেন যে, জাব্বার হলো ঐ ব্যক্তি যে দু’জন লোককে হত্যা করে। আবূ ইমরান জাওনী (রঃ) এবং কাতাদা (রঃ) বলেন যে, যে অন্যায়ভাবে কাউকেও হত্যা করে সেই হলো জাব্বার। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings