Surah Ghafir Tafseer
Tafseer of Ghafir : 12
Saheeh International
[They will be told], "That is because, when Allah was called upon alone, you disbelieved; but if others were associated with Him, you believed. So the judgement is with Allah, the Most High, the Grand."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১০-১৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
কাফির-মুশরিকরা যখন জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করবে এবং এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যাবে যে, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম তখন তারা নিজেদের প্রতি খুব ক্ষোভ ও ক্রোধ প্রকাশ করবে। এমন সময় তাদেরকে ডেকে বলা হবে, তোমাদের নিজেদের প্রতি তোমাদের ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লাহ তা‘আলার ক্ষোভ ছিল অধিক। কারণ যখন তোমাদেরকে এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর ঈমান আনতে বলা হয়েছিল তখন তোমরা অস্বীকার করেছিলে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّا كَذٰلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِيْنَ إِنَّهُمْ كَانُوْآ إِذَا قِيْلَ لَهُمْ لَآ إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ يَسْتَكْبِرُوْنَ)
“আমি অপরাধীদের সাথে এরূপই করে থাকি। যখন তাদেরকে বলা হত, আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন মা‘বূদ নেই, তখন তারা অহংকার করত।” (সূরা সাফফাত ৩৭ : ৩৫)
কাফিররা তখন তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করবে এবং জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ/মুক্তি পাবার রাস্তা অšে¦ষণ করবে, কিন্তু সেখান থেকে বের হবার কোনই রাস্তা থাকবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَوْ تَرٰٓي إِذِ الْمُجْرِمُوْنَ نٰكِسُوْا رُؤُوْسِهِمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ط رَبَّنَآ أَبْصَرْنَا وَسَمِعْنَا فَارْجِعْنَا نَعْمَلْ صَالِحًا إِنَّا مُوْقِنُوْنَ)
“আর যদি তুমি দেখতে, যখন পাপীরা তাদের প্রতিপালকের সামনে স্বীয় মাথা নীচু করে বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা দেখলাম ও শ্রবণ করলাম, (এখন) তুমি আমাদেরকে পুনরায় (পৃথিবীতে) প্রেরণ কর; আমরা নেক কাজ করব। আমরা তো দৃঢ় বিশ্বাসী হয়েছি।” (সূরা আস্ সাজদাহ্ ৩২ : ১২)
এভাবে কাফিররা জাহান্নাম থেকে বের হবার চেষ্টা করেও কোনই পথ পাবে না। কাফিররা দ্বিতীয়বার দুনিয়াতে আসার ফরিয়াদ করলেও তাদের সে সুযোগ দেয়া হবে না । কারণ যদিও তারা বলে দ্বিতীয়বার আসার সুযোগ দেয়া হলে সৎ আমল করে নেক্কারদের মধ্যে শামিল হয়ে মৃত্যু বরণ করবে কিন্তু এগুলো তাদের মুখের কথা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَوْ رُدُّوْا لَعَادُوْا لِمَا نُهُوْا عَنْهُ وَإِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ)
“এবং তারা প্রত্যাবর্তিত হলেও যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল পুনরায় তারা তাই করত এবং নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী।” (সূরা আন‘আম ৬ : ২৮)
(أَمَتَّنَا اثْنَتَيْنِ وَأَحْيَيْتَنَا اثْنَتَيْنِ)
‘আপনি আমাদেরকে মৃত অবস্থায় দুবার রেখেছেন এবং দু’বার আমাদেরকে প্রাণ দিয়েছেন’ অধিকাংশ মুফাসসিরদের মতে, প্রথম মৃত্যু হলো যখন বীর্য অবস্থায় পিতার পৃষ্ঠদেশে থাকে। অর্থাৎ অস্তিত্বের পূর্বে তার অস্তিত্বহীনতাকে মৃত্যু বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মৃত্যু হলো, যা মানুষ তার দুনিয়ার জীবন অতিবাহিত করার পর বরণ করে।
পক্ষান্তরে দুটি জীবন বলতে, একটি হলো এ পার্থিব জীবন, যার আরম্ভ হয় জন্ম থেকে এবং শেষ হয় মৃত্যুর দ্বারা। আর দ্বিতীয় জীবন হলো- সে জীবন, যা কিয়ামতের দিন কবর থেকে ওঠার পর লাভ করবে। এ দুটি মৃত্যু ও দুটি জীবনের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
(كَيْفَ تَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَكُنْتُمْ أَمْوَاتًا فَأَحْيَاكُمْ ج ثُمَّ يُمِيْتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيْكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ)
“কিভাবে তোমরা আল্লাহকে অস্বীকার করছ? অথচ তোমরা নির্জীব ছিলে, পরে তিনিই তোমাদেরকে জীবন দান করেছেন, এরপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, পরে আবার জীবিত করবেন, অবশেষে তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।” (সূরা আল বাক্বারাহ্ ২ : ২৮)
(وَإِنْ يُّشْرَكْ بِه۪ تُؤْمِنُوْا)
‘এবং আল্লাহর শরীক স্থির করা হলে তোমরা তা মেনে নিতে’ অর্থাৎ জাহান্নাম থেকে নিস্কৃতি না পাওয়ার কারণ হলো : দুনিয়াতে তারা আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদকে বর্জন করেছিল আর সর্বদা শির্কে লিপ্ত ছিল। তাই আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন।
(هُوَ الَّذِيْ يُرِيْكُمْ اٰيٰتِه)
‘তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান’ আল্লাহ তাঁর নিদর্শনাবলী মানুষকে প্রতিনিয়ত দেখাচ্ছেন কিন্তু মানুষ তা দেখেও শিক্ষা নেয় না বরং উপলব্ধী করার চেষ্টাও করে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّ فِي السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ لَاٰيٰتٍ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ وَفِيْ خَلْقِكُمْ وَمَا يَبُثُّ مِنْ دَا۬بَّةٍ اٰيٰتٌ لِّقَوْمٍ يُّوْقِنُوْنَ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمَآ أَنْزَلَ اللّٰهُ مِنَ السَّمَا۬ءِ مِنْ رِّزْقٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَتَصْرِيْفِ الرِّيٰحِ اٰيٰتٌ لِّقَوْمٍ يَّعْقِلُوْنَ)
“নিশ্চয়ই আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্য। তোমাদের সৃষ্টিতে এবং জীবজন্তুর বিস্তারে নিদর্শনাবলী রয়েছে দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য। রাত ও দিনের পরিবর্তনে, আল্লাহ আকাশ হতে যে পানি বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য।” (সূরা জাসিয়া ৪৫ : ৩-৫) এরূপ আরো অনেক আয়াত রয়েছে।
(وَيُنَزِّلُ لَكُمْ مِّنَ السَّمَا۬ءِ رِزْقًا)
তিনি আকাশ হতে রিযিক তথা বৃষ্টি বর্ষণ করেন যার দ্বারা সর্বপ্রকার শস্য, নানা রং ও স্বাদের ফল-মূল উৎপাদিত হয়ে থাকে। পানি ও জমিন এক হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত বিভিন্ন ফলের স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা এতসব দান করেছেন একমাত্র তাঁর জন্যই ইবাদত করব। কে খুশী হল আর কে রাগ করল তা দেখার বিষয় নয়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. মানুষের দুটি জীবন ও দুটি মৃত্যু হয় এ কথা জানতে পারলাম।
২. রিযিক দাতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, অন্য কেউ নয়।
৩. একনিষ্ঠভাবে কেবল আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করতে হবে।
৪. কর্তৃত্ব চলবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার, অন্য কারো নয়, যিনি একক ও অদ্বিতীয়।
৫. আল্লাহ তা‘আলার সাথে অংশী স্থাপন করলে তিনি তা সহ্য করেন না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings