Surah Al Imran Tafseer
Tafseer of Ali 'Imran : 35
Saheeh International
[Mention, O Muhammad], when the wife of 'Imran said, "My Lord, indeed I have pledged to You what is in my womb, consecrated [for Your service], so accept this from me. Indeed, You are the Hearing, the Knowing."
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৩৫-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
হযরত ইমরানের যে পত্নী হযরত মারইয়াম (আঃ)-এর মা ছিলেন তাঁর নাম ছিল হিন্না বিনতে ফাকুয। হযরত মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেনঃ তার ছেলে মেয়ে হতো না। একদা তিনি একটি পাখীকে দেখেন যে, সে তার বাচ্চাগুলোকে আদর করছে। এতে তাঁর অন্তরে সন্তানের বাসনা জেগে উঠে। ঐ সময়েই তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট আন্তরিকতার সাথে সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন। আল্লাহ পাক তাঁর প্রার্থনা কবূল করেন; ঐ রাত্রেই তিনি গর্ভবতী হন।
গর্ভ ধারণের পূর্ণ বিশ্বাস হলে তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রতিজ্ঞা করেন (ন্যর মানেন) যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁকে সন্তান দান করলে তিনি তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাসের খিদমতের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নামে আযাদ করে দেবেন। অতঃপর পুনরায় তিনি মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেনঃ হে আল্লাহ! আপনি আমার এই নিষ্কলুষ নর কবুল করুন। আপনি আমার প্রার্থনা শুনতে রয়েছেন এবং আমার নিয়তের কথাও আপনি খুব অবগত আছেন। তখন পুত্র সন্তান হবে কি কন্যা সন্তান হবে তাতো আর জানা ছিল না। কাজেই সন্তান ভূমিষ্ট হলে দেখা যায়, তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন। আর বায়তুল মুকাদ্দাসের সেবা কার্য পরিচালনার যোগ্যতা কন্যা সন্তানের থাকতে পারে না। ওর জন্যে তো পুত্র সন্তানের প্রয়োজন ছিল। তাই তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে স্বীয় দুর্বলতার কথা আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রকাশ করতঃ বলেনঃ “হে আল্লাহ! আমি তো তাকে আপনার নামে, আযাদ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ যে কন্যা হয়ে গেল। (আরবী) এরূপও পড়া হয়েছে। অর্থাৎ এ উক্তিটিও হযরত হিন্নারই ছিল। তাহলে অর্থ হবে ‘আমি যে কন্যা সন্তান প্রসব করেছি তা আল্লাহ তাআলা খুব ভাল জানেন। আবার ‘অযাআত’ও পড়া হয়েছে। তখন অর্থ হবে সে যে কি সন্তান প্রসব করেছে তা আল্লাহ তা'আলা খুব ভাল জানেন। হযরত হিন্না বলেনঃ নর ও নারী সমান নয়। আমি তার নাম মারইয়াম রাখলাম। এর দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, জন্মের দিনও শিশুর নাম রাখা বৈধ। কেননা, পূর্ববর্তীদের শরীয়তও আমাদের শরীয়ত। আর এখানে এটা বর্ণনা করা হয়েছে এবং খণ্ডন করা হয়নি। বরং ওটাকে ঠিকই রাখা হয়েছে। হাদীস শরীফে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আজ রাত্রে আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে এবং তার নাম আমি আমার পিতা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর নামানুসারে ইবরাহীম রেখেছি'। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
হযরত আনাস (রাঃ)-এর একটি ভাই জন্মগ্রহণ করলে তিনি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বহস্তে তার মুখে খাবার পুরে দেন এবং তার নাম রাখেন আবদুল্লাহ। এ হাদীসটিও সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেনঃ “হে আল্লাহ রাসূল! রাত্রে আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। তার নাম কি রাখবো’? তিনি বলেনঃ “আবদুর রাহমান রাখ’-সহীহ বুখারী। আর একটি সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, হযরত আবু উসায়েদ (রাঃ)-এর একটি সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তাকে নিয়ে তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট উপস্থিত হন, যেন তিনি স্বীয় পবিত্র হস্তে তার মুখে খাবার পুরে দেন। তিনি অন্য দিকে মনোযোগ দেন এবং শিশুটির কথা বিস্মরণ হন। হযরত উসায়েদ (রাঃ) শিশুটিকে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) অবকাশ প্রাপ্ত হয়ে শিশুটির কথা খেয়াল করেন এবং তাকে দেখতে না পেয়ে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। তার সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করতঃ অবস্থা জানতে পেরে বলেনঃ “তার নাম রাখ মুনযির (অর্থাৎ ভয় প্রদর্শক)।” মুসনাদ-ই-আহ্মাদ ও সুনানের মধ্যে একটি হাদীস বর্ণিত আছে যাকে ইমাম তিরমিযী বিশুদ্ধ বলেছেন, তা এই যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক শিশু স্বীয় ‘আকীকায় বন্ধক থাকে। সপ্তম দিনে আকীকাহ দিতে হবে অর্থাৎ জন্তু যবেহ করতে হবে, শিশুর নাম রাখতে হবে এবং মস্তক মুণ্ডন করতে হবে।” অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, রক্তপাত করতে হবে। এ বর্ণনাটিই বেশী সঠিক রূপে প্রমাণিত। কিন্তু যুবাইর ইবনে বাকারের বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় পুত্র হযরত ইবরাহীম (রাঃ)-এর ‘আকীকাহ’ করেছিলেন এবং নাম রেখেছিলেন ইবরাহীম (রাঃ)। এ হাদীসটি সনদ দ্বারা সাব্যস্ত নয় এবং এর বিপরীত বিশুদ্ধ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। সামঞ্জস্য এভাবে হতে পারে যে, ঐদিনে ঐ নামটি প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। হযরত মারইয়াম (আঃ)-এর মাতাও স্বীয় শিশু কন্যাকে ও তার ভবিষ্যৎ সন্তানদেরকে বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট হতে আল্লাহ তাআলার আশ্রয়ে সমর্পণ করেন। মহান আল্লাহ তাঁর এ প্রার্থনাটি ককূল করেন। মুসনাদ-ই-আবদুর রাজ্জাকের মধ্যে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ‘শয়তান প্রত্যেক শিশুকেই তার জন্মের সময় আঘাত করে, ওরই কারণে সে চীষ্কার করে কেঁদে উঠে। কিন্তু হযরত মারইয়াম (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ) এটা হতে রক্ষা পেয়েছিলেন। এ হাদীসটি বর্ণনা করে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ “তোমরা ইচ্ছে করলে (আরবী)-এ আয়াতটি পড়ে নাও।' এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যেও বিদ্যমান রয়েছে। এটা আরও বহু কিতাবে বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত আছে। কোন একটিতে রয়েছে যে, এক ঘা বা দু ঘা দেয়। একটি হাদীসে শুধুমাত্র হযরত ঈসারই (আঃ) উল্লেখ আছে যে, শয়তান তাঁকেও ঘা দিতে চেয়েছিল কিন্তু তাঁকে লাগেনি, পর্দায় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings