Surah Al Imran Tafseer
Tafseer of Ali 'Imran : 180
Saheeh International
And let not those who [greedily] withhold what Allah has given them of His bounty ever think that it is better for them. Rather, it is worse for them. Their necks will be encircled by what they withheld on the Day of Resurrection. And to Allah belongs the heritage of the heavens and the earth. And Allah, with what you do, is [fully] Acquainted.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
১৭৬-১৮০ নং আয়াতের তাফসীর:
রাসূলুল্লাহ (সঃ) মানুষের উপর অত্যন্ত দয়ালু ছিলেন বলে কাফিরদের পথভ্রষ্টতা তাঁর নিকট খুবই কঠিন ঠেকছিল। যেমন তারা কুফরীর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, তেমন তিনি চিন্তিত হয়ে পড়ছিলেন। এজন্যই মহান আল্লাহ তাঁকে এটা হতে বিরত রাখছেন এবং বলছেন-এরই মধ্যে আল্লাহ পাকের নিপুণতা রয়েছে। হে নবী (সঃ)! তাদের কুফরী তোমার বা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। এসব লোক তাদের পরকালের অংশ ধ্বংস করতে রয়েছে এবং নিজেদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। তাদের বিরুদ্ধাচরণ হতে আল্লাহ তোমাকে নিরাপদে রাখবেন। সুতরাং তুমি তাদের জন্য দুঃখ করো না। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-“আমার নিকট এও নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে যে, যারা ঈমানকে কুফরীর দ্বারা পরিবর্তিত করে সেও আমার কোন ক্ষতি করতে পারে না বরং তারা নিজেদেরই ক্ষতি করছে এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা যে কাফিরদেরকে অবকাশ ও সুযোগ দিচ্ছেন এ জন্য তাদের অহংকারের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। যেমন অন্য স্থানে রয়েছে- ‘আমি যে কাফিরদের মাল-ধন ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দিয়েছি এটা আমার পক্ষ হতে তাদের জন্য মঙ্গলের নিদর্শন এই কি তারা ধারণা করেছে? না, বরং তারা নির্বোধ ও অবুঝ। অন্য জায়গায় রয়েছে-‘আমাকে ও এ কথার অবিশ্বাসীদেরকে ছেড়ে দাও, আমি তাদেরকে এমন আস্তে আস্তে ধরবো যে, তারা জানতেই পারবে না। আর এক জায়গায় ইরশাদ হচ্ছে-তাদের মাল ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাকে প্রতারিত না করে, আমি ওরই কারণে তাদরেকে দুনিয়াতেও শান্তি দিতে চাই এবং তাদের মৃত্যু কুফরীর উপরেই হবে'।
অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-“এটা মীমাংসিত ব্যাপার যে, কতগুলো পরীক্ষা দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তাঁর বন্ধু ও শত্রুকে যাচাই, বাছাই ও প্রকাশ করে দিতে চান। ধৈর্যশীল মুমিন ও পাপী মুনাফিকদের মধ্যে পার্থক্য পরিস্ফুট হয়ে উঠবে। এর দ্বারা উহুদের যুদ্ধকেই বুঝানো হয়েছে। ঐদিন একদিকে মুমিনদের ধৈর্য, স্থিরতা, দৃঢ়তা, নির্ভরশীলতা ও আনুগত্য প্রকাশ পেয়েছে এবং অপরদিকে মুনাফিকদের অসহিষ্ণুতা, বিরুদ্ধাচরণ, অবিশ্বাস করণ এবং আত্মসাৎকরণ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে। মোটকথা জিহাদের হুকুম, হিজরতের হুকুম প্রকৃতি যেন এক একটা পরীক্ষা ছিল যা ভাল ও মন্দের মধ্যে প্রভেদ আনয়ন করেছে। হযরত সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, জনগণ বলেছিল, 'যদি মুহাম্মাদ (সঃ) সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে, আমাদের মধ্যে কে সত্য মুমিন এবং কে মুমিন নয় তা বলে দিন তো? তখন (আরবী)-এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তাফসীর-ই-ইবনে জারীর) অতঃপর ইরশাদ হচ্ছে-‘তোমরা আল্লাহর অদৃশ্যকে জানতে পার না। তবে, তিনি এমন কারণ সৃষ্টি করে থাকেন যার ফলে মুমিন ও মুনাফিকদের মধ্যে প্রভেদ হয়ে যায়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূলগণের মধ্যে যাকে চান এ জন্যে মনোনীত করে থাকেন। যেমন এক জায়গায় রয়েছে-“আল্লাহ অদৃশ্য জানেন, অতঃপর তিনি কাউকেও সে অদৃশ্য সম্বন্ধে জ্ঞান দান করেন না, কিন্তু রাসূলগণের মধ্যে যাকে পছন্দ করেন (জ্ঞান দান করে থাকেন) তার সম্মুখে ও পিছনে রক্ষণাবেক্ষণকারী ফেরেশতা চালিত করেন।
অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন- “তোমরা আল্লাহর উপর ও তার রাসূলগণের উপর বিশ্বাস স্থাপন কর, অর্থাৎ তাদের আনুগত্য স্বীকার কর, শরীয়তের অনুসারী হও এবং জেনে রেখো যে, ঈমান ও খোদাভীরুতার ব্যাপারে তোমাদের জন্যে বড় প্রতিদান রয়েছে। এরপরে ইরশাদ হচ্ছে- 'কৃপণ ব্যক্তি যেন তার ধন-সম্পদকে তার জন্যে মঙ্গল মনে না করে, বরং ওটা তার জন্য চরম ক্ষতিকর। ধর্মের ব্যাপারে তো ক্ষতিকর বটেই, এমন কি কোন কোন সময় দুনিয়াতেও ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। এর পরিণাম এই হয় যে, ঐ কৃপণের মাল কিয়ামতের দিন তার গলায় জড়িয়ে দেয়া হবে।' সহীহ বুখারীর মধ্যে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেন এবং সে ঐ মালের যাকাত আদায় করে না, তার মাল কিয়ামতের দিন টেকো মাথা বিশিষ্ট এবং চোখের উপর দুটি চিহ্ন যুক্ত সর্প হয়ে গলাবন্ধের ন্যায় তার গলায় জড়িয়ে যাবে। অতঃপর তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলতে থাকবে, ‘আমি তোমার মাল, আমি তোমার ধন ভাণ্ডার। এরপর তিনি। (আরবী)-এ আয়াতটি পাঠ করেন। মুসনাদ-ই-আহমাদের একটি হাদীসে এও রয়েছে যে, লোকটি পালাতে থাকবে এবং সর্পটি তার পিছনে পিছনে দৌড়াতে থাকবে। অতঃপর তাকে ধরে নিয়ে গলাবন্ধের মত তার গলায় জড়িয়ে যাবে এবং তাকে দংশন করবে। মুসনাদ-ই-আবূ ইয়ালার মধ্যে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি তার পিছনে ধন ভাণ্ডার ছেড়ে মারা যাবে, সেই ধন ভাণ্ডার একটি কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত সর্পের আকারে- যার চক্ষু দ্বয়ের উপর দু’টি চিহ্ন থাকবে, তার পিছনে দৌড়াতে থাকবে। লোকটি পালাতে থাকবে এবং বলবে, ‘তুমি কে?’ সর্পটি বলবে, আমি তোমার সেই ধন ভাণ্ডার যা পিছনে ছেড়ে তুমি মারা গিয়েছিলে। শেষ পর্যন্ত সাপটি তাকে ধরে নেবে এবং তার হাত চিবাতে থাকবে, অতঃপর অবশিষ্ট শরীরও চিবাতে থাকবে। তাবরানীর হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি তার মনিবের নিকট নিজের অভাবের কথা বলে এবং উদ্বৃত্ত মাল থাকা সত্ত্বেও মনিব তাকে কিছুই দেয় না, তার জন্যে কিয়ামতের দিন ক্রোধে ফেঁস ফোঁসকারী বিষাক্ত সাপকে ডেকে আনা হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, যে অভাবী আত্মীয় তার ধনী আত্মীয়ের নিকট কিছু যাঙ্ক্ষা করে এবং সে কিছুই প্রদান করে না তারই এ শাস্তি হবে; ঐ সাপটি তার গলায় হার হয়ে যাবে'। (তাফসীর-ই-ইবনে জারীর) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এ আয়াতে ঐ আহলে কিতাবের শাস্তির বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যারা তাদের গ্রন্থের কথা পৌছিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কার্পণ্য করতো কিন্তু প্রথমটিই সঠিক কথা।
অতঃপর বলা হচ্ছে- ‘আল্লাহই হচ্ছেন নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের স্বত্বধিকারী। তিনি তোমাদের যা কিছু দিয়েছেন তা হতে তার নামে কিছু খরচ কর। সমস্ত কিছু তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। তোমরা দান করতে থাক, যেন কিয়ামতের দিন তা কাজে লাগে এবং জেনে রেখো যে, তোমাদের কথা এবং সমস্ত কাজের আল্লাহ তা'আলা পূর্ণ খবর রাখেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings