Surah Az Zumar Tafseer
Tafseer of Az-Zumar : 69
Saheeh International
And the earth will shine with the light of its Lord, and the record [of deeds] will be placed, and the prophets and the witnesses will be brought, and it will be judged between them in truth, and they will not be wronged.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬৮-৭০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
( وَنُفِخَ فِي الصُّوْرِ..... يَّنْظُرُوْنَ)
‘এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে’ কারো কারো মতে এখানে যে ফুঁৎকারের কথা বলা হয়েছে সেটা হবে দ্বিতীয় ফুঁক। অর্থাৎ এটা হবে বেহুঁশ হবার ফুঁক। যার ফলে সবাই মারা যাবে। আবার কারো মতে এটা হবে প্রথম ফুঁক। এর ফলেই প্রথমত সকলে কঠিন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়বে এবং পরে সবাই মৃত্যু মুখে পতিত হবে।
আবার কেউ এ ফুঁকগুলোকে এভাবে বর্ণনা করেছেন- প্রথম : نفخة الفناء তথা ধ্বংসের ফুঁক। দ্বিতীয় : نفخة البعث তথা পুনরুত্থানের ফুঁক। তৃতীয় : نفخة الصعق তথা বেহুঁশ হবার ফুঁক। চতুর্থ : نفخة القيام তথা বিশ্ব প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার ফুঁক। (আইসারুত তাফাসীর)
আবার কারো মতে ফুঁক দু’টো হবে- نفخة الموت তথা মৃত্যুবরণ করার ফুঁক এবং نفخة البعث তথা পুনরুত্থানের ফুঁক। আবার কারো মতে, ফুঁক দেয়া হবে তিনটি।
এ ফুঁৎকারের ফলে, আকাশ ও জমিনে যা কিছু থাকবে সকলে মৃত্যুমুখে পতিত হবে। তবে আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা করবেন সে ব্যতীত। এরপর যখন ফুঁৎকার দেয়া হবে তখন সকলে আল্লাহ তা‘আলার দিকে ছুটে আসবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(فَاِنَّمَا ھِیَ زَجْرَةٌ وَّاحِدَةٌﭜﺫ فَاِذَا ھُمْ بِالسَّاھِرَةِﭝ)
“এটা তো একটি ভয়ঙ্কর ধমক মাত্র। ফলে হঠাৎ প্রশস্ত ময়দানে তাদের আবির্ভাব হবে।” (সূরা না-যি‘আ-ত ৭৯ : ১৩-১৪)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(يَوْمَ يَدْعُوْكُمْ فَتَسْتَجِيْبُوْنَ بِحَمْدِه۪ وَتَظُنُّوْنَ إِنْ لَّبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيْلًا)
‘যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহ্বান করবেন এবং তোমরা তাঁর প্রশংসার সাথে তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবে এবং তোমরা মনে করবে, তোমরা অল্প সময়ই (দুনিয়াতে) অবস্থান করেছিলে।’ (সূরা বানী ইসরা-ঈল ১৭ : ৫২)
হাদীসে বলা হয়েছে, আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : শেষ ফুঁক দেয়ার পর আমিই হব প্রথম ব্যক্তি, যে তার মাথা উঠাবে। আমি তখন দেখব যে, মূসা (আঃ) আরশের খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানি না সে-কি পূর্বে থেকেই (অর্থাৎ তাঁকে কি বেহুঁশ করা হয়নি) নাকি ফুঁক দেয়ার পর (তিনি উঠেছেন)। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮১৩, সহীহ মুসলিম হা. ২৩৭৩-৩২৭৬)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- সেদিন অর্থাৎ কিয়ামতের দিন পৃথিবী তাঁর জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা পেশ করা হবে, নাবীদেরকে ও সাক্ষীদেরকে উপস্থিত করা হবে এবং সেদিন সকলের মধ্যে ন্যায় বিচার করা হবে। কারো প্রতি কোন প্রকার জুলুম, অত্যাচার করা হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَنَضَعُ الْمَوَازِيْنَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيٰمَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا ط وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا ط وَكَفٰي بِنَا حٰسِبِيْنَ)
“এবং কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড। সুতরাং কারও প্রতি কোন অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি সরিষার দানা পরিমাণ ওজনেরও হয় তবুও সেটা আমি উপস্থিত করব; হিসেব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট।” (সূরা আল আম্বিয়া- ২১ : ৪৭)
জুলুম তো করা হবেই না বরং যদি কারো কোন নেকী থাকে তাহলে তিনি ওটাকে আরো দ্বিগুণ করে দেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّ اللّٰهَ لَا يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ ج وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُّضٰعِفْهَا وَيُؤْتِ مِنْ لَّدُنْهُ أَجْرًا عَظِيْمًا)
“আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। আর কোন পুণ্য কর্ম হলে আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ করেন এবং আল্লাহ তাঁর নিকট হতে মহাপুরস্কার প্রদান করেন।” (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৪০)
তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন যে, সেদিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
(فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَه۫ ط وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَه۫ )
“অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎ কর্ম করলে তা দেখতে পাবে, এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কর্ম করলে তা-ও দেখতে পাবে।” (সূরা আয্ যিলযা-ল ৯৯ : ৭-৮)
সাক্ষী দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে তা নিয়ে মতামত রয়েছে; কেউ বলেছেন, সাক্ষীরা হলেন- যে-সকল ফেরেশতাগণ বান্দাদের আমল লিখতেন তারা। যেমন সূরা ক্বাফের ২১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। কেউ বলেছেন- সাক্ষী হলেন উম্মাতে মুহাম্মাদী, তারা পূর্ববর্তী উম্মতের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে। যেমন সূরা বাকারার ১৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। আবার বলা হয়- যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় শহীদ হয়েছেন তারা। তবে সঠিক কথা এই যে, এখানে সাক্ষী দ্বারা উদ্দেশ্য রাসূলগণ, যাদেরকে তাঁদের উম্মতের প্রতি প্রেরণ করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা সূরা ইউনুসের ৪৭ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করেছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলার নূর বা জ্যোতি রয়েছে। যা দ্বারা পৃথিবী একদিন উদ্ভাসিত হবে।
২. কিয়ামতের মাঠে মানুষের প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে, কারো প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings