Surah Az Zumar Tafseer
Tafseer of Az-Zumar : 58
Saheeh International
Or [lest] it say when it sees the punishment, "If only I had another turn so I could be among the doers of good."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫৩-৫৯ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
প্রথমত আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেছেন, তোমরা কখনো আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। কারণ কাফির ব্যতীত কেউ আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে নিরাশ হয় না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে নিরাশ হওয়া কবীরা গুনাহ। (দুররুল মানছুর ২/১৪৭, বাযযার হা. ১০৬, হাসান)
إسراف (ইসরাফ) অর্থ পাপের প্রাচুর্য।
(لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللہِ)
“আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না” অর্থ ঈমান আনার পূর্বে বা তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুভূতি সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে যতই গুনাহ করে থাকে, মানুষ যেন এটা মনে না করে যে, আমি তো অনেক বড় পাপী, আমাকে আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে ক্ষমা করবেন? বরং পরিষ্কার হৃদয়ে যদি ঈমান আনে বা নিষ্ঠার সাথে যদি তাওবা করে, তবে আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত পাপকে মাফ করে দেবেন। এ আয়াতের শানে নুযূল হতেও এ অর্থই সাব্যস্ত হয়। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : কিছু কাফির ও মুশরিক এমন ছিল, যারা প্রচুর হত্যা ও ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল। এরা নাবী কারীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল যে, আপনার দাওয়াত তো সঠিক, কিন্তু আমরা অনেক পাপকার্য করেছি। যদি আমরা ঈমান আনি, তবে এ সমস্ত গুনাহ মাফ হবে কি? এরই ভিত্তিতে এ আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮১০) তাই আয়াতের বিষয়বস্তুর সারমর্ম এই যে, মৃত্যুর পূর্বে প্রত্যেক বড় গুনাহ এমনকি শির্ক ও কুফর থেকেও তাওবা করলে তাওবা কবূল করা হবে। সত্যিকার তাওবা দ্বারা সব রকম গুনাহই ক্ষমা করে দেয়া হয়। তাই আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে নিরাশ হওয়া উচিত নয়।
তবে এর অর্থ এই নয় যে, আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার আশায় খুব পাপ করে যাই। তাঁর যাবতীয় বিধি-বিধান ও ফরয কার্যাদির ব্যাপারে গাফিল হয়ে থাকি এবং আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত সীমা ও নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করি। এভাবে তাঁর ক্রোধ ও প্রতিশোধকে আহ্বান জানিয়ে তাঁর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার আশা করা একেবারে বোকামি ও খামখেয়ালী ছাড়া কিছুই নয়। এটা হল নীম গাছের বীজ লাগিয়ে আঙ্গুর ফলের আশা করার মতই। এ ধরণের অবাধ্যদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা
عزيز ذو انتقام
অর্থাৎ কঠোর ও প্রতিশোধগ্রহণকারীও বটে। তাই তো কুরআনের বিভিন্ন স্থানে উভয় দিককে এক সাথেই বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(نَبِّیْٔ عِبَادِیْٓ اَنِّیْٓ اَنَا الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُﮀﺫوَاَنَّ عَذَابِیْ ھُوَ الْعَذَابُ الْاَلِیْمُ)
“আমার বান্দাদেরকে বলে দাও যে, আমি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু, এবং আমার শাস্তি- সে অতি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি!” (সূরা হিজর ১৫ : ৪৯-৫০)
সম্ভবত এটাই কারণ যে, এখানে আয়াতের আরম্ভ يا عبادي (হে আমার বান্দাগণ!) দিয়ে হয়েছে। যার দ্বারা এটাই প্রমাণিত যে, যে ব্যক্তি ঈমান আনে অথবা পরিষ্কার হৃদয়ে তাওবা করে প্রকৃত অর্থে সে তাঁর বান্দা হয়ে যাবে, তার পাপ যতই বেশি হোক না কেন, তবুও তা মাফ হয়ে যায়। তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য অবশ্যই ক্ষমাশীল ও দয়াবান। যেমন হাদীসে একশত মানুষের খুনীর তাওবার ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে, যাকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করেছিলেন।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে সৎ আমল করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। কারণ সৎ আমল ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না।
আর যারা সৎ আমল করবে না তারা শুধু পরকালে আফসোসই করবে, কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যে-সকল বাহ্যিক আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন : যেমন সালাত, সিয়াম, যাকাত, হাজ্জ, সাদাকা ও সর্ব প্রকার ইহসান এবং যে-সকল অভ্যন্তরীণ আমলের নির্দেশ দিয়েছেন যেমন আল্লাহ তা‘আলাকে ভালবাসা, ভয় করা, ক্ষমার আশা করা, অপর ভাইয়ের জন্য কল্যাণ কামনা করা ও এর বিপরীত যা আছে তা বর্জন করা ইত্যাদি। সুতরাং যারা এসব বিধান অনুসরণ করবে তারাই আল্লাহ তা‘আলা অভিমুখী মুসলিম ।
তাই আমাদের উচিত, আযাব আসার পূর্বে তাওবা এবং নেক আমল করা। কেননা যখন আযাব আসবে, তখন আর কোন নিস্তার পাওয়া যাবে না। তাই যাতে আফসোস করতে না হয়, সে-জন্য পূর্ব থেকেই সৎ আমল করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। কারণ এটা কাফিরদের অভ্যাস।
২. শাস্তি আসার পূর্বেই ভাল আমল করতে হবে।
৩. পরকালে আফসোস করে কোন লাভ হবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings