Surah Sad Tafseer
Tafseer of Sad : 11
Saheeh International
[They are but] soldiers [who will be] defeated there among the companies [of disbelievers].
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৪-১১ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
শানে নুযূল :
ইবনু ‘আব্বাস বলেন : আবূ ত্বালিব যখন অসুস্থ হয়ে পড়লেন তখন তার নিকট আবূ জাহল-সহ কুরাইশদের একটি দল হাজির হল। তারা তাকে বলল : আপনার ভ্রাতুষ্পুত্র আমাদের মা‘বূদদেরকে গালি দেয়/অবজ্ঞা করে, সে অমুক অমুক কাজ করছে ও বলছে। আপনি তাঁকে ডেকে পাঠান এবং বলে দিন- সে যেন এরূপ না করে। তখন তিনি তাঁকে খবর দেন অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে প্রবেশ করলেন। আবূ ত্বালিব ও ঐ বাহিনীর মাঝখানে একজন লোক বসার জায়গা ছিল। আবূ জাহল আশঙ্কা করল যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ জায়গায় আবূ ত্বালিব-এর পাশে যদি বসেন তাহলে তাঁর সাহচর্যের কারণে আবূ ত্বালিব-এর হৃদয় ইসলামের দিকে ঝুঁকে যাবে। তাই সে লাফ দিয়ে উঠে ঐ খালি জায়গায় বসে পড়ল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচার কাছে বসার কোন জায়গা না পেয়ে দরজার একপাশে বসলেন। আবূ ত্বালিব তাঁকে বললেন : হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! তোমার গোত্রের লোকেরা তোমার বিরুদ্ধে নালিশ করছে যে, তুমি নাকি তাদের দেবতাদের ব্যাপারে কটুক্তি করছ এবং এরূপ এরূপ কথা বলছ? তারা তোমার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ নিয়ে এসেছে। এর উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : হে আমার চাচা! আমি তো তাদের কাছ থেকে শুধু একটি কালিমার স্বীকৃতি চাচ্ছি, যদি তারা তা করে তাহলে সমগ্র আরব জাতি তাদেরকে অনুসরণ করবে এবং অনারবরা তাদেরকে জিযিয়া প্রদান করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলতে চাচ্ছেন তা তারা চিন্তিত মনে বুঝতে চেষ্টা করল এবং শেষে বলল : একটি মাত্র কালিমা! তোমার পিতার শপথ, একটি নয়, বরং আমরা দশটি কালিমা হলেও বলতে রাজী আছি। বলো, কী সে কালিমা? আবূ ত্বালিবও বললেন : হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! সে কালিমাটি কী? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তা হলো
لَا إِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ
“আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত সত্যিকার কোন মা‘বূদ নেই” এ কথা শোনার সাথে সাথে তারা সবাই রাগে-ক্রোধে দাঁড়িয়ে গেল এবং তাদের পরিধেয় বস্ত্র মাটিতে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে এই বলে চলে গেল :
(أَجَعَلَ الْاٰلِهَةَ إلٰهًا وَّاحِدًا إِنَّ هٰذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ)
তখন ঐ আয়াতটিসহ
(بَلْ لَمَّا يَذُوقُوا عَذَابِ)
পর্যন্ত অবতীর্ণ হয়। (মুসনাদে আহমাদ : - ১/৩৬২, তিরমিযী হা. ৩২৩২, ইমাম তিরমিযী হাসান বলেছেন, আলবানী সনদ দুর্বল বলেছেন)
তারা আরো আশ্চর্যান্বিত হয়েছিল এই ভেবে যে, একজন সাধারণ লোককে আল্লাহ তা‘আলা নাবী করে পাঠিয়েছেন তার সাথে সাথে সে আবার এতগুলো মা‘বূদকে এক মা‘বূদে পরিণত করেছে! এরূপ কথা আমরা ইতোপূর্বে কোন ধর্মে শুনতে পাইনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি উদ্দেশ্য মূলক কথা যার দ্বারা সে আমাদেরকে আমাদের উপাস্য থেকে দূরে সরিয়ে তাঁর অনুসারী বানাতে এবং নিজের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব বাস্তবায়ন করতে চায়। এমনকি তারা এ টালবাহানাও দেখাল যে, আল্লাহ তা‘আলা যদি নাবী পাঠাতেন তাহলে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে আরো বড় বড় নেতৃবর্গ রয়েছে তাদের একজনকে নাবী হিসেবে প্রেরণ করতেন। এরূপ সাধারণ মানুষের নবুওয়াত মানতে পারব না। যেমন তারা বলত,
(وَقَالُوْا لَوْلَا نُزِّلَ هٰذَا الْقُرْاٰنُ عَلٰي رَجُلٍ مِّنَ الْقَرْيَتَيْنِ عَظِيْمٍ)
“এবং তারা বলে : এই কুরআন কেন অবতীর্ণ করা হল না দুই জনপদের কোন প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির ওপর?” (সূরা যুখরুফ ৪৩ : ৩১)
অবশেষে তাদের এ সকল মিথ্যা টালবাহানা তাদেরকে ঈমান আনা থেকে বিরত রাখল ও তারা শিরকের ওপর দৃঢ়তার সাথে স্থির রইল এবং সাধারণ লোকদেরকে দেব-দেবীর পূজা করার নির্দেশ প্রদান করল।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা এ সকল কাফিরদেরকে লক্ষ করে বলেন : তাদের নিকট কি আল্লাহ তা‘আলার রহমতের ধন-ভাণ্ডার রয়েছে, অথবা আকাশসমূহ ও জমিনের কর্তৃক্ত রয়েছে? মূলত এগুলোর কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার, তাই তিনি তাঁর ইচ্ছা মতো যাকে খুশি নবুওয়াত দান করতে পারেন। এগুলোর ওপর যদি মানুষের কর্তৃত্ব থাকত তাহলে তারা কাউকে কোন কিছুই দিত না বরং উপেক্ষা করে চলত। আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(قُلْ لَّوْ أَنْتُمْ تَمْلِكُوْنَ خَزَا۬ئِنَ رَحْمَةِ رَبِّيْٓ إِذًا لَّأَمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ الْإِنْفَاقِ ط وَكَانَ الْإِنْسَانُ قَتُوْرًا)
“বল : ‘যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভাণ্ডারের অধিকারী হতে, তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এ আশঙ্কায় তোমরা তা ধরে রাখতে; মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’ (সূরা বানী ইসরাঈল ১৭ : ১০০)
অতএব সকল নেয়ামত, রহমত ও ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর অনুগ্রহ দান করে থাকেন। তাই একজন অসহায় দরিদ্র ব্যক্তি যদি দীনের সঠিক জ্ঞান রাখে তাহলে তার সত্যের দাওয়াত বর্জন করার কোন সুযোগ নেই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন জাদুকর, কবি ছিলেন না এবং মিথ্যাবাদীও নন বরং তিনি ছিলেন সত্যসহ প্রেরিত একজন নাবী ও রাসূল।
২. দীনের কাজ করতে গিয়ে যদি কোন দুঃখ-কষ্ট আসে তাহলে বিচলিত না হয়ে বরং ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
৩. আকাশসমূহ ও জমিনের যাবতীয় রাজত্ব আল্লাহ তা‘আলার। তাঁর বিরুদ্ধে কোন বাহিনীই জয়ী হতে পারবে না।
৪. আল্লাহ তা‘আলাই হচ্ছেন একমাত্র মা‘বূদ। তিনি ব্যতীত আর সত্য কোন মা‘বূদ নেই।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings