Surah Yasin Tafseer
Tafseer of Ya-Sin : 40
Saheeh International
It is not allowable for the sun to reach the moon, nor does the night overtake the day, but each, in an orbit, is swimming.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৭-৪০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
পূর্বের আয়াতে যেমন আল্লাহ তা‘আলা কয়েকটি নির্দশন বর্ণনা করেছেন এ আয়াতগুলোতেও সৌরজগৎ সম্পর্কীয় কয়েকটি নির্দশন বর্ণনা করেছেন। সেগুলো হলো- দিবস ও রজনী, একটি আলোকময় ও অন্যটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। উভয়টি পর্যায়ক্রমে আসা-যাওয়া করে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
(يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُه۫ حَثِيْثًا)
“তিনিই দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যাতে তাদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে।” (সূরা আ‘রাফ ৭ : ৫৪)
এখানেও আল্লাহ তা‘আলা সে কথাই বলেছেন, আমি রাত্রি হতে দিবসকে অপসারিত করি যার ফলে সকল জিনিস অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
এরপর তিনি বলেন : সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে। অর্থাৎ সূর্য তার অবস্থানস্থলের দিকে চলতে থাকে। এ অবস্থানস্থল স্থানগত ও কালগত উভয় প্রকার হতে পারে। مُسْتَقَرٍّ শব্দটি কখনো ভ্রমণের শেষ সীমার অর্থেও ব্যবহার হয় যদিও সাথে সাথে বিরতি না দিয়ে দ্বিতীয় ভ্রমণ শুরু হয়ে যায়। (ইবনু কাসীর)
কোন কোন মুফাসসির এখানে কালগত অবস্থানস্থল অর্থ নিয়েছেন; অর্থাৎ ঐ সময়, যখন সূর্য তার নির্দিষ্ট গতি সমাপ্ত করবে। সে সময়টি হল কিয়ামতের দিন। সুতরাং সূর্যের এ গতি চিরস্থায়ী নয়, তার নির্দিষ্ট সময় এসে গেলে নি®প্রভ হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ط كُلٌّ يَّجْرِيْ لِأَجَلٍ مُسَمًّي)
“তিনি নিয়মাধীন করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে। প্রত্যেকেই নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চলতে থাকবে।” (সূরা যুমার ৩৯ : ৫)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন : (إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ)
“সূর্যকে যখন গুটিয়ে আলোহীন করা হবে।” (সূরা তাকভীর ৮১ : ১)
مُسْتَقَرٍّ -এর দ্বিতীয় অর্থ হলো- নিজ অবস্থান ক্ষেত্র। সে নির্দিষ্ট স্থান থেকে এমন পরিক্রম আরম্ভ করে যে, ফিরে এসে সে স্থানেই ভ্রমণ শেষ করে। তা থেকে সামান্য পরিমাণও এদিক সেদিক হয় না। আর তার ঐ ক্ষেত্র হলো আরশের নিম্নদেশ। যেমন হাদীসে বলা হয়েছে-
আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : একদা আমি সূর্য অস্তমিত যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাসজিদে ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন : হে আবূ যার! তুমি কি জান, সূর্য কোথায় অস্ত যায়? বর্ণনাকারী বলেন : আমি বললাম : আল্লাহ তা‘আলা এবং তার রাসূলই ভাল জানেন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : সূর্য আরশের নীচে গিয়ে (আল্লাহ তা‘আলাকে) সাজদাহ্ করে। এ কথাই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে বলেছেন। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮০২-৩, সহীহ মুসলিম হা. ১৫৯)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তিনি চন্দ্রের জন্য বিভিন্ন কক্ষপথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। বলা হয় চাঁদের মোট ২৮টি কক্ষপথ আছে, প্রত্যহ একটি করে কক্ষপথ অতিক্রম করে। অতঃপর দু’ রাত্রি অদৃশ্য থেকে তৃতীয় রাত্রে বের হয়ে আসে। (কুরতুবী) সব কক্ষপথ অতিক্রম করে পূর্ণতা লাভ করে, পরে আবার প্রথম অবস্থার দিকে ফিরে আসে। শরীয়তের অনেক ইবাদত যেমন সালাত, সিয়াম, হজ্জ দিন-তারিখ ইত্যাদি চাঁদের সাথে সম্পৃক্ত। আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ الْأَهِلَّةِ ط قُلْ هِيَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ)
“তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তুমি বল : এটা হচ্ছে- মানুষের এবং হজ্জের জন্য সময় নির্ধারক” (সূরা বাকারাহ ২ : ১৮৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَا۬ءً وَّالْقَمَرَ نُوْرًا وَّقَدَّرَه۫ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِيْنَ وَالْحِسَابَ)
“তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং তার গতি পথসমূহ নির্দিষ্ট করেছেন যাতে তোমরা বছর গণনা ও সময়ের হিসেব জানতে পার।” (সূরা ইউনুস ১০ : ৫)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, অবশেষে চাঁদ পুরাতন খেজুর মোসার ডাঁটার মতো রূপ ধারণ করে। অর্থাৎ যখন শেষ কক্ষপথে পৌঁছে যায় তখন একেবারে সরু হয়ে যায়; যেমন খেজুরের পুরাতন মোচার ভাঁটা, যা শুকিয়ে বাঁকা হয়ে যায়।
অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, সূর্য-চন্দ্র, দিবা-রাত্রি প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে চলাচল করে। পর্যায়ক্রমে একটির পর অন্যটি আসে। কখনো সূর্যের সাথে চন্দ্র একত্রে আসে না আবার দিবস-রাত্রি একত্রে আসে না। বরং তারা নিজ নিজ কক্ষপথে নিজ নিজ নিয়ম ও সময় লক্ষ্য করে চলে এবং পর্যায়ক্রমে আসা-যাওয়া করে। এভাবে আল্লাহ তা‘আলা প্রতিটি সৃষ্টির জন্য এক-একটি নিয়ম নীতি বেঁধে দিয়েছেন। প্রত্যেকে সে সকল নিয়ম-নীতি মেনে চলে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. চন্দ্রের সাথে অনেক ইবাদত সম্পৃক্ত এবং চন্দ্রের মাধ্যমেই মাস, বছর ইত্যাদি গণনা করতে পারা যায়।
২. প্রতিটি বস্তুর জন্য আল্লাহ তা‘আলা নিয়ম-নীতি স্থির করে দিয়েছেন। ঐ নিয়ম-নীতি সকলেই মেনে চলে। অতএব মানুষকে যে নিয়ম-নীতি দেয়া হয়েছে তা মেনে চলা উচিত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings