Surah Saba Tafseer
Tafseer of Saba : 37
Saheeh International
And it is not your wealth or your children that bring you nearer to Us in position, but it is [by being] one who has believed and done righteousness. For them there will be the double reward for what they did, and they will be in the upper chambers [of Paradise], safe [and secure].
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৪-৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
যুগে যুগে প্রত্যেক জনপদবাসীর বিত্তবান ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরাই রাসূলদের দাওয়াত বর্জন করতঃ তাদের সাথে কুফরী করেছে। মক্কার মুশরিকরাও এর ব্যতিক্রম ছিল না। তাই পূর্ববর্তী সেসব কাফিরদের ইতিহাস উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান করছেন। কিয়ামত পর্যন্তও এ শ্রেণির লোকেই ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে এমন আচরণ করবে। সুতরাং হে রাসূল! তোমাকেও অস্বীকার করাটাই স্বাভাবিক। এতে তুমি মনক্ষুণœ হয়ো না। তাদের কথা তুলে ধরে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَالَ الْمَلَأُ الَّذِيْنَ اسْتَكْبَرُوْا مِنْ قَوْمِه۪ لِلَّذِيْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِمَنْ اٰمَنَ مِنْهُمْ أَتَعْلَمُوْنَ أَنَّ صَالِحًا قَالَ الَّذِيْنَ اسْتَكْبَرُوْآ إِنَّا بِالَّذِيْٓ اٰمَنْتُمْ بِه۪ كٰفِرُوْنَ)
“তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক প্রধানেরা সে সম্প্রদায়ের ঈমানদার যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকে বলল: ‘তোমরা কি জান যে, সালেহ ‘আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত?’ তারা বলল: ‘তার প্রতি যে বাণী প্রেরিত হয়েছে আমরা তাতে বিশ্বাসী।’ তখন অহংকারীরা বললো, তোমরা যা বিশ্বাস কর আমরা তা অবিশ্বাস করি।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৭৫-৭৬)
আর গরীব লোকেরাই নবী-রাসূলদের বেশি অনুসরণ করত। আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
(قَالُوْآ أَنُؤْمِنُ لَكَ وَاتَّبَعَكَ الْأَرْذَلُوْنَ)
“তারা বলল: ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব অথচ নিচু শ্রেণির লোকেরা তোমার অনুসরণ করছে?’’ (সূরা শুআরা:২৬:১১১)
হিরাকল আবূ সুফিয়ানকে জিজ্ঞেস করল: সমাজের বিত্তশালী ও উচুঁ বংশের লোকজন তাঁর (মুহাম্মাদের) অনুসরণ করে, না দুর্বলরা? তিনি বললেন: দুর্বলরা। হিরাকল বলল: দুর্বলরাই রাসূলদের অনুসারী হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৭)
এরপর আল্লাহ বলেন: তারা বলত, আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধশালী, সুতরাং আমরা শাস্তি প্রাপ্ত হব না। আমরা আল্লাহ তা‘আলার শাস্তিযোগ্য হলে আমাদরেকে এ বিপুল ধনৈশ্বর্য কেন দিলেন? নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রিয়পাত্র, তিনি আমাদেরকে আযাব দেবেন না। আল্লাহ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলছেন বলে দাও; এ ধারণা সঠিক নয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি দিতে থাকেন। পার্থিব ধন-সম্পদ ও সম্মানকে আল্লাহ তা‘আলার প্রিয়পাত্র হওয়ার কারণ মনে করো না। বরং এসব সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যা তোমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার নিকটে পৌঁছে দিবে বলে বিশ্বাস কর তারা তা করতে পারবে না। আল্লাহর বাণী,
(أَيَحْسَبُوْنَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِه۪ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ لا نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ط بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ)
“তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করি। তাদের জন্য সকল প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না।” (সূরা মু’মিনূন ২৩:৫৫-৫৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَلَآ أَوْلَادُهُمْ ط إِنَّمَا يُرِيْدُ اللّٰهُ لِيُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كٰفِرُوْنَ)
“সুতরাং তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাকে যেন আশ্চর্য না করে, আল্লাহ তার দ্বারাই তাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান। তারা কাফির থাকা অবস্থায় তাদের আত্মা দেহত্যাগ করবে।” (সূরা তাওবাহ ৯:৫৫) তবে যদি ঈমান আনয়ন করে ও সৎ আমল করে এবং এসব সম্পদ সৎ পথে উপার্জন ও ব্যয় করতে পারে তাহলে উপকারে আসবে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: মৃত ব্যক্তির সাথে তিনটি জিনিস যায়, দুটি জিনিস ফিরে আসে, একটি জিনিস সাথে থাকে। তার পরিবার, সম্পদ ও আমল সাথে যায়, এর মধ্যে পরিবার ও সম্পদ ফিরে আসে, আর আমল তার সাথে থেকে যায়। (তিরমিযী হা: ২৩৭৯, সহীহ)
হাদীসে এসেছে, আবূ হুরাইরাহ্ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের চেহারা ও তোমাদের সম্পদের দিকে দেখবেন না। বরং তোমাদের অন্তর ও ‘আমালের দিকে দেখবেন। (সহীহ মুসলিম হা: ৩৪)
তাই ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি কোন কিছুই বিন্দু পরিমাণ উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। যারা সৎ কর্ম করবে তারা ভাল প্রতিদান পাবে আর যারা অসৎ কর্ম করবে তারা মন্দ প্রতিদান পাবে।
রিযিকের মালিক আল্লাহ তা‘আলা, তিনি যাকে খুশি রিযিক বর্ধিত করে দেন। আবার যার জন্য ইচ্ছা সীমিত করে দেন। কেউ চাইলেই সে তার রিযক বর্ধিত করতে পারে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, তোমরা যা কিছুই আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করো না কেন তার প্রতিদান তোমরা পাবে। দানের ফযীলত ও দানকারীর মর্যাদা সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছে।
আবূ হুরাইরাহ্ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “প্রত্যহ সকালে দু’জন ফেরেশ্তা অবতরণ করে। একজন দু‘আ করে হে আল্লাহ তা‘আলা! খরচকারীকে উত্তম প্রতিদান দাও। অন্যজন দু‘আ করে হে আল্লাহ তা‘আলা! কৃপণের মালকে ধ্বংস করে দাও।” (সহীহ বুখারী, হা: ১৪৪২, সহীহ মুসলিম হা: ১০১০)
অন্য এক হাদীসে বলা হয়েছে যে, আবূ হুরাইরাহ্ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তুমি খরচ করো, তোমার প্রতি খরচ করা হবে। তিনি আরো বলেন: আল্লাহ তা‘আলার হাত পরিপূর্ণ। দিবা-রাত্রির খরচ তাতে কোন কিছুই কমায় না।” (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৮৪, সহীহ মুসলিম হা: ৯৯৩)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করলে কোন কিছু কমে না বরং তা বৃদ্ধি পায় এবং আখিরাতে তা আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দান করবেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গরীব লোকদের মর্যাদা সম্পর্কে জানা গেল যে, তারাই মূলত নাবী-রাসূলদের বেশি অনুসরণ করে, আর ধনীরা বিরোধিতাই বেশি করে।
২. ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারে না, যদি সঠিক ঈমান ও সৎ আমল না থাকে।
৩. রিযক বাড়ানো বা কমানো আল্লাহ তা‘আলার হাতে, কোন মানুষের হাতে নয়।
৪. খরচ করলে ধন-সম্পদ কমে না বরং তা আল্লাহ তা‘আলার নিকট জমা থাকে ও আখিরাতে তার বিনিময়ে জান্নাত লাভ করা যায়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings