Surah Saba Tafseer
Tafseer of Saba : 15
Saheeh International
There was for [the tribe of] Saba' in their dwelling place a sign: two [fields of] gardens on the right and on the left. [They were told], "Eat from the provisions of your Lord and be grateful to Him. A good land [have you], and a forgiving Lord."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৫-২১ নং আয়াতের তাফসীর:
পৃথিবীতে যে সকল গোত্র, জাতি ও বংশধরকে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী ও নিয়ামতের অকৃজ্ঞতার কারণে ধ্বংস করা হয়েছিল তাদের মধ্যে সাবা অন্যতম একটি গোত্র। সাবা একটি গোত্রের নাম, যার রাণী সাবা নামে প্রসিদ্ধ ছিল। যিনি সুলাইমান (عليه السلام)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে এ দেশ ইয়ামান নামে প্রসিদ্ধ।
সাবাবাসীদেরকে যে সকল নেয়ামত দেয়া হয়েছিল এবং এগুলোর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়ার ফলে তাদের প্রতি যে মর্মান্তিক শাস্তি নেমে এসেছিল তারই বর্ণনা দেয়া হয়েছে অত্র আয়াতগুলোতে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, সাবাবাসীদেরকে দু’টো উদ্যান দান করা হয়েছিল একটি ডান দিকে অন্যটি বাম দিকে। তাদেরকে বলা হয়েছিল যে, তোমরা এগুলো থেকে ভক্ষণ করো এবং মহান আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া করো। আর তাদের এ বাসস্থান ছিল খুবই উত্তম একটি বাসস্থান। কিন্তু তারা আল্লাহ তা‘আলার এ নির্দেশ অমান্য করল ফলে তাদের ওপর প্রবাহিত হলো বাঁধ ভাঙ্গা বন্যা এবং তাদের উদ্যান দু’টিকে পরিবর্তন করে দেয়া হলো এমন দু’টো উদ্যানে যাতে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউগাছ এবং কিছু কুল গাছ। এ শাস্তি ছিল মূলত তাদের কুফরীর কারণে এবং তারা মহান আল্লাহ তা‘আলার সাথে অংশীদার স্থাপন করত। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَمَکَثَ غَیْرَ بَعِیْدٍ فَقَالَ اَحَطْتُّ بِمَا لَمْ تُحِطْ بِھ۪ وَجِئْتُکَ مِنْ سَبَۭا بِنَبَاٍ یَّقِیْنٍﭥ اِنِّیْ وَجَدْتُّ امْرَاَةً تَمْلِکُھُمْ وَاُوْتِیَتْ مِنْ کُلِّ شَیْءٍ وَّلَھَا عَرْشٌ عَظِیْمٌﭦ وَجَدْتُّھَا وَقَوْمَھَا یَسْجُدُوْنَ لِلشَّمْسِ مِنْ دُوْنِ اللہِ وَزَیَّنَ لَھُمُ الشَّیْطٰنُ اَعْمَالَھُمْ فَصَدَّھُمْ عَنِ السَّبِیْلِ فَھُمْ لَا یَھْتَدُوْنَ)
“অনতিবিলম্বে হুদ্হুদ্ এসে পড়ল এবং বলল: ‘আপনি যা অবগত নন আমি তা অবগত হয়েছি এবং ‘সাবা’ হতে সুনিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি। ‘আমি এক নারীকে দেখলাম তাদের ওপর রাজত্ব করছে। আর তাকে সকল কিছুই দেয়া হয়েছে এবং তার আছে এক বিরাট সিংহাসন। ‘আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজ্দা করছে। শয়তান তাদের কার্যাবলী তাদের নিকট সুশোভিত করেছে এবং তাদেরকে সৎ পথ হতে বাঁধা দিয়েছে, ফলে তারা সৎ পথ পায় না; (সূরা নামল:২৭:২২-২৪)
এছাড়াও তাদেরকে আরো যে সকল নেয়ামত দান করা হয়েছিল সেগুলো হলো, তারা বহু জনপদ একত্রে বসবাস করত এবং তাদের সফরের জন্য কোন খাবার বা প্রয়োজনীয় কোন কিছু সাথে বহন করতে হত না এবং তারা তথায় প্রত্যেক দিবস ও রাত্রিতে আরামের সাথে ও নিরাপদে আসা-যাওয়া করত। কিন্তু এটা তাদের নিকট পছন্দনীয় হলো না। ফলে তারা দাবী করল যে, তাদের ভ্রমণস্থল যেন দূরবর্তী হয়। অর্থাৎ কাছাকাছি জনবসতি না হয়ে মাঝখানে জঙ্গল ও জনমানবহীন প্রান্তর ও মরুভূমি বেয়ে আমাদেরকে পার হতে হয়। মোটকথা ভ্রমণ যেন কষ্টকর হয়।
তাদের এ সকল বাড়াবাড়ি ও যুল্ম করার কারণে মহান আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে কাহিনীর বিষয়বস্তুতে পরিণত করলেন। অর্থাৎ তাদেরকে এমনভাবে সর্বস্বান্ত করা হলো যে, দুনিয়াতে তাদের এ ধ্বংসাত্মক ঘটনা প্রসিদ্ধ হয়ে গেল এবং তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হল। তাদের এ সকল কর্মের মাধ্যমে শয়তানী কর্ম তাদের ওপর প্রাধান্য পেল এবং ইবলীস তাদের ওপর বিজয়ী হলো এবং সে তার প্রতিশ্র“তিকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলো। যেমন সে বলেছিল,
(قَالَ أَرَأَيْتَكَ هٰذَا الَّذِيْ كَرَّمْتَ عَلَيَّ ز لَئِنْ أَخَّرْتَنِ إِلٰي يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَأَحْتَنِكَنَّ ذُرِّيَّتَه۫ٓ إِلَّا قَلِيْلًا)
“সে বলেছিল: ‘আপনি কি বিবেচনা করেছেন, আপনি আমার ওপর এ ব্যক্তিকে মর্যাদা দান করলেন, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ব্যতীত তার বংশধরগণকে অবশ্যই কর্তৃত্বাধীন করে ফেলব।’’ (সূরা বানী ইসরাঈল ১৭:৬২)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(ثُمَّ لَاٰتِيَنَّهُمْ مِّنْۭ بَيْنِ أَيْدِيْهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَانِهِمْ وَعَنْ شَمَآئِلِهِمْ ط وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شٰكِرِيْنَ)
‘‘অতঃপর আমি তাদের নিকট আসবই তাদের সম্মুখ, পশ্চাৎ, ডান ও বাম দিক হতে এবং তুমি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবে না।’’ (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭)
অর্থাৎ সাবা সম্প্রদায়ের উত্থান-পতন ও অবস্থার পরিবর্তনের মধ্যে অনেক নিদর্শন ও শিক্ষা রয়েছে। শিক্ষা রয়েছে সে ব্যক্তির জন্য যে অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। অর্থাৎ যে ব্যক্তি বিপদ ও কষ্টে পতিত হয়ে সবর করে এবং নিয়ামত পেয়ে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(عَجَبًا لِأَمْرِ الْمُؤْمِنِ، إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ، وَلَيْسَ ذَاكَ لِأَحَدٍ إِلَّا لِلْمُؤْمِنِ، إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ، فَكَانَ خَيْرًا لَهُ، وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ، صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ)
মু’মিনের অবস্থা বিস্ময়কর, তার প্রত্যেকটি কাজ মঙ্গলজনক, এটা মু’মিন ছাড়া অন্য কারো জন্য নয়। যদি কোন সুখ ও আনন্দের বিষয় লাভ করে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করে, এটা তার জন্য মঙ্গলজনক। আর কোন বিপদদাপদে আক্রান্ত হলে সবর করে, এটাও তার জন্য মঙ্গলজনক। (সহীহ মুসলিম হা: ২৯৯৯)
অতএব পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিদের ধ্বংসের কারণ জেনে তা থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে আমাদের নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে, অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না।
২. শয়তানের মানুষের ওপর কোনই আধিপত্য নেই। বরং শয়তান তার জাল বিস্তার করে ফলে যারা কাফির তারা তার ধোঁকায় পড়ে মন্দ কর্মে লিপ্ত হয়।
৩. শয়তানকে মানুষের শত্র“ বানানোর হিকমাত হলো যে, এর দ্বারা সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী নির্ণয় করা।
৪. শয়তান মু’মিনদের ওপর কখনো জয়ী হতে পারে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings