Surah Saba Tafseer
Tafseer of Saba : 14
Saheeh International
And when We decreed for Solomon death, nothing indicated to the jinn his death except a creature of the earth eating his staff. But when he fell, it became clear to the jinn that if they had known the unseen, they would not have remained in humiliating punishment.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
এখানে আল্লাহ তাআলা হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর মৃত্যুর অবস্থা বর্ণনা। করছেন। হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর মৃত্যুর পরেও তাঁর মৃতদেহটি তাঁর লাঠির উপর ভর করে দাঁড়িয়েই ছিল। তাঁর অধীনস্থ জ্বিনেরা তিনি জীবিতই আছেন ভেবে মাথা নীচু করে বড় বড় কঠিন কাজে লিপ্তই ছিল।
হযরত মুজাহিদ (রঃ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, এভাবেই প্রায় এক বছর কেটে যায়। যে লাঠিটির সাহায্যে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন তাতে যখন উই ধরে ওটাকে খেয়ে শেষ করে দেয় তখন তাঁর মৃতদেহ পড়ে যায়। ঐ সময় তারা তার মৃত্যুর খবর জানতে পারে। তখন শুধু মানুষই নয়, বরং জ্বিনদেরও এ দৃঢ় বিশ্বাস জনিলো যে, তাদের মধ্যে কেউই গায়েবের খবর রাখে না।
একটি মুনকার ও গারীব মারফু হাদীসে আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেন, হযরত সুলাইমান (আঃ) যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন সামনে কোন গাছ দেখতে পেলে জিজ্ঞেস করতেনঃ “তোমার নাম কি? তোমার দ্বারা কি কাজ হয়?” গাছটি তখন তার নাম বলতো এবং কি কাজে ব্যবহৃত হয় সেটাও বলতো। তখন হযরত সুলাইমান (আঃ) ওটাকে ঐ কাজেই ব্যবহার করতেন। একবার তিনি নামাযে দাঁড়িয়ে যান এবং একটি গাছ দেখতে পেয়ে ওকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমার নাম কি? উত্তরে গাছটি বলেঃ “আমার নাম খারূব।” আবার তিনি গাছটিকে প্রশ্ন করেনঃ “তুমি কি কাজে লাগবে?” গাছটি জবাব দেয়ঃ “এই ঘরকে উজাড় ও ধ্বংস করার কাজে আমি ব্যবহৃত হবো।” তখন হযরত সুলাইমান (আঃ) প্রার্থনা করলেনঃ “হে আল্লাহ! আমার মৃত্যুর খবর আপনি জ্বিনদেরকে জানতে দিবেন না। যাতে মানুষের মনে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, জ্বিনেরা গায়েব জানে না।”
অতঃপর তিনি একটি লাঠির উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং জ্বিনদেরকে কঠিন কাজে লাগিয়ে দিলেন। এমতাবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়ে গেল। কিন্তু লাঠির উপর তার মৃতদেহ দাঁড়িয়েই ছিল। জ্বিনেরা তাকে দেখছিল আর ভাবছিল যে, তিনি জীবিতই আছেন। সুতরাং তারা তাদের উপর অর্পিত কাজ করতেই থাকলো। এভাবেই এক বছর কেটে গেল। হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর লাঠিতে উঁই ধরলো এবং লাঠিকে খেতে শুরু করলো। এক বছরে ঐ লাঠিকে খেয়ে শেষ করে দিলো। তখন হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর মৃতদেহ মাটিতে পড়ে গেল। তখন মানুষ জানতে পারলো যে, জ্বিনেরা গায়েবের খবর রাখে না। তা না হলে। দীর্ঘ এক বছর তারা এ কঠিন কাজে লিপ্ত থাকতো না।” (এ হাদীসটি তাফসীরে ইবনে জারীরে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে কিন্তু হাদীসটি মার’রূপে বর্ণিত হওয়া সঠিক নয়)
কোন কোন সাহাবী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে যে, কোন সময় তিন বছর ধরে এবং কোন সময় দু' বছর ধরে মসজিদে কুদসে ইতেকাফে বসে যাওয়া হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর অভ্যাস ছিল। প্রত্যহ সকালে তিনি তাঁর সামনে একটি গাছ দেখতে পেতেন। তিনি গাছটিকে ওর নাম জিজ্ঞেস করতেন এবং ওর। উপকারিতা কি তা জানতে চাইতেন। গাছটি বলতো এবং তিনি ওকে ঐ কাজে ব্যবহার করতেন। অবশেষে একটি গাছ প্রকাশিত হয় এবং ওটা নিজের নাম ‘খারূবাহ' বলে। হযরত সুলাইমান (আঃ) ওকে প্রশ্ন করেনঃ “তোমার উদ্দেশ্য কি?” গাছটি জবাবে বলেঃ “এই মসজিদকে ধ্বংস করার জন্যে আমি প্রকাশিত হয়েছি। হযরত সুলাইমান (আঃ) বুঝতে পারলেন। সুতরাং তিনি গাছটিকে বললেনঃ “আমার জীবিতাবস্থায় তো এই মসজিদ ধ্বংস হবে না। অবশ্যই তুমি আমার মৃত্যু ও ধ্বংসের জন্যেই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি গাছটিকে তার বাগানে লাগিয়ে দিলেন। মসজিদের মধ্যে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে তার লাঠির উপর ভর করে তিনি নামায শুরু করে দেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়ে যায়। কেউই তা জানতে পারলো না। শয়তানরা তার আদেশ অনুযায়ী নিজ নিজ দায়িত্ব প্রতিপালনে লেগে থাকলো। তারা চিন্তা করছিল যে, যদি তাদের কাজে কোন শৈথিল্য প্রকাশ পায় এবং আল্লাহর নবী হযরত সুলাইমান (আঃ) তা দেখে নেন তবে তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিবেন। তারা মেহরাবের সামনে ও পিছনে এসে গেল। তাদের মধ্যে যে একজন বড় দুষ্ট শয়তান ছিল সে বললোঃ “দেখো, এর আগে ও পিছনে ছিদ্র রয়েছে। যদি আমি এখান হতে গিয়ে সেখান হতে বেরিয়ে আসতে পারি তবে তোমরা আমার শক্তির কথা স্বীকার করবে তো?” অতঃপর সে গেল এবং বেরিয়ে আসলো। কিন্তু সে হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর কোন শব্দ শুনতে পেলো না। কিন্তু সে তো তাঁর দিকে তাকিয়ে তাঁকে দেখতে পারছিল না। কেননা, তাঁর দিকে তাকালেই সে জ্বলে পুড়ে মরে যেতো। কিন্তু তার মনে সন্দেহের উদ্রেক হলো। সুতরাং সে আরো সাহস দেখালো। সে মসজিদের মধ্যে চলে গেল। দেখলো যে, সেখানে যাওয়ার পরেও সে জুলে পুড়ে গেল না। কাজেই তার সাহস আরো বেড়ে গেল। সে চোখ ভরে তাকে দেখলো। তখন দেখলো যে, তিনি পড়ে আছেন এবং তাঁর মৃত্যু হয়ে গেছে। তখন এসে সে সবাইকে খবর দিলো। লোকেরা আসলো এবং মেহরাব খুলে দেখলো যে, সত্যিই আল্লাহর নবী (আঃ) ইন্তেকাল করেছেন। তারা তাঁকে মসজিদ হতে বের করে আনলো। তার ইন্তেকাল কতদিন পূর্বে হয়েছে তা পরীক্ষা করার জন্যে তারা তাঁর লাঠিকে উঁই এর সামনে রেখে দিলো। একদিন ও একরাত ধরে উঁই লাঠিটিকে যে পরিমাণ খেলো তা দেখে তারা অনুমান করলো যে, এক বছর পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। সমস্ত লোকের তখন দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিলো যে, জ্বিনেরা যে গায়েবের খবর জানে বলে দাবী করে তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তা না হলে দীর্ঘ এক বছর ধরে তারা লাঞ্ছনাজক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। ঐ সময় হতে জ্বিনেরা ঘুণের পোকাকে মাটি ও পানি এনে দেয়। এটা যেন তাদের ঘুণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। তারা পোকাগুলোকে একথাও বলেছিলঃ “তোমরা যদি কিছু খেতে ও পান করতে তবে আমরা ভাল ভাল খাদ্য তোমাদেরকে এনে দিতাম।”
কিন্তু এগুলো সব বানী ইসরাঈলের আলেমদের কথা। তবে তাদের এ কথাগুলোর যেটা হক বা সত্য সেটা আমাদের কাছে গ্রহণীয়। আর যা সত্যের বিপরীত তা বর্জনীয়। এগুলোকে না সত্য বলে মেনে নেয়া যায়, না মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া যায়। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের। অধিকারী।
হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত সুলাইমান (আঃ) মালাকুল মাউতকে বলে রেখেছিলেনঃ “আমার মৃত্যুর সময়টা আমাকে কিছুকাল পূর্বে জ্ঞাত করাবেন।” তার এ কথা অনুযায়ী মালাকুল মাউত (মৃত্যুর ফেরেশতা) তাঁকে তাঁর মৃত্যুর সময়টা জানিয়ে দিলেন। তখন তিনি দরবিহীন একটি শীশার ঘর নির্মাণ করার জন্যে জ্বিনদেরকে আদেশ করলেন। তাতে তিনি একটি লাঠির উপর ভর করে নামায শুরু করে দিলেন। এটা তার মৃত্যু-ভয়ের কারণে ছিল না। মালাকুল মাউত সময়মত এসে যান এবং তাঁর রূহ কবয করে নিয়ে চলে যান। অতঃপর তার মৃতদেহ এক বছর ধরে লাঠির উপর দাঁড়িয়েই থাকে। জ্বিনেরা তাঁকে জীবিত মনে করে নিজেদের কাজে লেগেই থাকে। কিন্তু যে পোকা তাঁর লাঠিকে খাচ্ছিল, যখন অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে তখন ঐ লাঠি আর তার মৃতদেহ ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি। সুতরাং তার মৃতদেহ পড়ে যায়। তখন জ্বিনেরা জানতে পারে যে, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। অতঃপর তারা সেখান থেকে পলায়ন করে। পূর্বযুগীয় গুরুজন হতে আরো বহু কিছু বর্ণিত আছে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings