Surah Al Ahzab Tafseer
Tafseer of Al-Ahzab : 60
Saheeh International
If the hypocrites and those in whose hearts is disease and those who spread rumors in al-Madinah do not cease, We will surely incite you against them; then they will not remain your neighbors therein except for a little.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫৯-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ প্রদান করছেন, তিনি যেন তাঁর স্ত্রী, কন্যা এবং দুনিয়ার সকল মু’মিন মহিলাদেরকে বলে দেনন তারা যখন বাইরে যাবে তখন যেন সারা শরীর চাদর দিয়ে ঢেকে নেয়। এ নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত হল প্রত্যেক পরিবারের কর্তা বা দায়িত্বশীল। এ পর্দার বিধান সম্পর্কে সূরা নূরে আলোচনা করা হয়েছে।
يُدْنِيْنَ শব্দটি ادناء থেকে উদ্ভূত। এর শাব্দিক অর্থ নিকটে আনা। جَلَابِيْبِ শব্দটি جلباب এর বহুবচন। এমন বড় চাদরকে বলা হয়, যাতে পুরো শরীর ঢেকে যায়। ইবনু মাসউদ (রাঃ) এ চাদরের ধরণ সম্পর্কে বলেন: এ চাদর ওড়নার ওপর পরিধান করা হয়। (ইবনু কাসীর)
বিশিষ্ট তাবেয়ী মুহাম্মাদ বিন সিরীন বলেন: আমি ওবায়দা সালমানী -কে এ আয়াতের উদ্দেশ্য এবং জিলবাবের আকার-আকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি মস্তকের ওপর দিক থেকে চাদরকে মুখমন্ডলের ওপর লটকিয়ে মুখমন্ডল ঢেকে ফেললেন এবং কেবল বামচক্ষু খোলা রেখে ادناء ও جَلَابِيْبِ এর তাফসীর ব্যবহারিক দেখিয়ে দিলেন।
মস্তকের ওপরদিক থেকে মুখমন্ডলের ওপর চাদর লটকানো হচ্ছে عَلَيْهِنَّ শব্দের তাফসীর। অর্থাৎ নিজের ওপর চাদরকে নিকটবর্তী করার অর্থ চাদরকে মস্তকের ওপর দিক থেকে লটকানো।
সুতরাং এ আয়াত থেকে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে মুখমন্ডল আবৃত করা আবশ্যক। কারণ মুখমন্ডল হল সৌন্দর্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
যে সকল মহিলারা নিজেদেরকে আবৃত না করে অশালিন পোশাক পরিধান করে বাইরে গমনাগমন করে থাকে তাদের ব্যাপারে কঠিন ভাষায় কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কিছু কিছু মহিলা রয়েছে যারা কাপড় পরিধান করার পরেও উলঙ্গ, পুরুষদেরকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করে, তাদের মাথার চুলের খোপা উটের গজের মত উঁচু করে রাখে, তারা জান্নাতে যাবে না, এমনকি জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২১২৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ عَلَي قَوْمٍ لِيَجِدُوا مِنْ رِيحِهَا فَهِيَ زَانِيَةٌ)
-যে মহিলা আতর ব্যবহার করে কোন জাতির পাশ দিয়ে অতিক্রম করল যাতে তারা তার সুগন্ধি পায়, সে মহিলা ব্যভিচারিণী। (নাসায়ী হা: ৫১২৬, হাসান)
أَدْنٰيٓ أَنْ يُّعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ) (ذٰلِكَ
-‘এতে সহজেই তাদের পরিচয় পাওয়া যাবে, ফলে তারা লাঞ্ছিতা হবে না’ এখানে পরিচয় পাওয়ার অর্থ হল যে, কে সতী-সাধ্বী, ভাল, লজ্জাশীল তা বুঝা যায়।
এ আয়াতের শানে নুযূলে বলা হয় মদীনার মহিলারা প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য রাতের বেলা বাড়ির বাইরে যেত। মদীনায় কতক পাপিষ্ট লোক ছিল যারা দাসী নারীদেরকে উত্যক্ত করত, কিন্তু স্বাধীন নারীদেরকে তা করত না। কতক স্বাধীন মহিলা এমন পোশাক পরিধান করে বাইরে যেত যার দরুণ দাসীদেরদে তাদের থেকে আলাদা বুঝা যেত না। ফলে সে পাপিষ্ট লোকেরা দাসী মনে করে তাদেরকে উত্যক্ত করত। এ জন্য আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিলেন: তারা যখন বাড়ির বাইরে যাবে তখন যেন এমন পোশাক পরিধান করে যা মুখমন্ডল ঢেকে নেয় যাতে বুঝা যায় এরা দাসী নয়, এরা স্বাধীন নারী। এখানে কয়েকটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে: ১. একজন স্বাধীন সতী-সাধবী, লজ্জাশীল ও ভদ্র মহিলা কখনো বেপর্দায় বাড়ির বাইরে যেতে পারে না।
২. যারা বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় পর্দা করে যায় তারা কখনো দুশ্চরিত্র খারাপ লোক দ্বারা উত্যক্ত হয় না, তাদের সম্মান রক্ষিত থাকে ফলে তারা লাঞ্ছিত হয় না। উত্যক্ত কেবল তারাই হয় যারা অশালিন পোশাক পরিধান করে বাইরে যায়।
৩. অনেকে শানে নুযূল পড়ে এটা বুঝতে পারে যে, ইসলাম স্বাধীন নারীদেরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তা নয়, বরং স্বাধীন নারীদের অনুরূপ দাসীদেরকেও সতীত্ব রক্ষা করা ফরয করে দিয়েছে।
(لَئِنْ لَّمْ يَنْتَهِ الْمُنَافِقُوْنَ)
‘যদি বিরত না হয় মুনাফিকরা’ আয়াতের উল্লিখিত
(وَالَّذِيْنَ فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ)
যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা
(وَّالْمُرْجِفُوْنَ فِي الْمَدِيْنَةِ)
এবং মদীনায় গুজব রটনাকারীরা এসবগুলোই মুনাফিকদের খারাপ বৈশিষ্ট্য, তাদেরকে অধিক নিন্দাকরণার্থে ও তাদের এ সমস্যাগুলো তুলে ধরার জন্য আলাদা আলাদাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। مَّرَضٌ বা ইসলাম সম্পর্কে সংশয় বা কৃপ্রবৃত্তির ব্যাধি, আর الْمُرْجِفُوْنَ অর্থ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: ফিতনা সৃষ্টি করা, মিথ্যা ও বাতিল কথা রটিয়ে বেড়ানো। অর্থাৎ এসব মুনাফিকরা যদি মু’মিনদেরকে কষ্ট দেয়া ও ওপরোল্লিখিত কাজসহ তাদের থেকে যে সব ঘৃণিত চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে তা থেকে বিরত না হয় তাহলে তাদেরকে শাস্তি দেয়া ও হত্যা করার জন্য তোমাকে নির্দেশ দেব।
ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন: তারা যদি মু’মিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত না থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেবেন। ফলে তারা মদীনাতে তোমার প্রতিবেশী হিসেবে কয়েকদিন ছাড়া থাকতে পারবে না। হয় তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে অথবা তাদেরকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেবে। এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যারা মুসলিমদের মাঝে অনিষ্ট সৃষ্টি করে তাদেরকে হত্যা করা অথবা এলাকা থেকে বের করে দেয়া যাবে। (তাফসীর সাদী)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন: এ বিধি-বিধান শুধু বর্তমানেই নয়। বরং অতীতে যারা ছিল সকলের জন্যই আল্লাহ তা‘আলার একই বিধান কার্যকর ছিল। আল্লাহ তা‘আলার বিধানে কোন প্রকার পরিবর্তন নেই। যারা অপরাধ করবে তাদেরকেই তিনি এভাবে শাস্তি প্রদান করে থাকেন। কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেন না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নারীরা প্রয়োজনবশত গৃহ হতে বের হলে লম্বা চাদরে সর্বাঙ্গ আবৃত করে বের হবে এবং চাদরটি মাথার ওপরদিক থেকে ঝুলিয়ে মুখমন্ডলও আবৃত করবে, এতে সতী-সাধ্বী রমণীদের সতীত্ব রক্ষা পায় এবং সম্মান বহাল থাকে।
২. যারা বেপর্দায় বাইরে চলাফেরা করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
৩. মু’মিনদেরকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা যারা মু’মিনদেরকে কষ্ট দেয় তারা অভিশপ্ত।
৪. প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির উচিত তার অধিনস্ত মহিলাদেরকে পর্দার ব্যবস্থা করা।
৪. মুসলিম সমাজে যারা বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে তাদেরকে হত্যা করা বা দেশান্তর করে দেয়া বৈধ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings