Surah Al Ahzab Tafseer
Tafseer of Al-Ahzab : 45
Saheeh International
O Prophet, indeed We have sent you as a witness and a bringer of good tidings and a warner.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৪৫-৪৮ নং আয়াতের তাফসীর:
আলোচ্য আয়াতগুলোতে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করার কিছু উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং তাঁর পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
(১) شَاهِدًا – রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাক্ষ্য দানকারীরূপে প্রেরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি স্বীয় উম্মাতের জন্য সাক্ষীস্বরূপ, যারা তাঁর ওপর ঈমান এনেছে ও সৎ আমল করে তাদের পক্ষে আর যারা কুফরী করবে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দান করবেন। এমনকি তিনি পূর্ববর্তী নাবীদের ব্যাপারেও সাক্ষ্য প্রদান করবেন যে, তাঁরা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের নিকট আল্লাহ তা‘আলার পয়গাম পৌঁছে দিয়েছিলেন। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে জানিয়ে দেবেন। বস্তুত এমন নয় যে, তিনি তা স্বচক্ষে দেখেছেন। আবূ সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীস, যার কিয়দাংশন হল কিয়ামতের দিন নূহ (عليه السلام) উপস্থিত হলে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি আমার বাণী তোমার উম্মাতের কাছে পৌঁছে দিয়েছ কি? তিনি বলবেন: হ্যাঁ, যথারীতি পৌঁছে দিয়েছি। অতঃপর তাঁর উম্মতকে জিজ্ঞেস করা হবে, তিনি কি তোমাদের কাছে আল্লাহ তা‘আলার বাণী পৌঁছে দিয়েছেন? তারা অস্বীকার করবে। নূহ (عليه السلام)-কে জিজ্ঞেস করা হবে, আপনার স্বপক্ষে কোন সাক্ষী আছে কি? তিনি বলবেন: মুহাম্মাদ ও তাঁর উম্মত সাক্ষী। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও উম্মাতে মুহাম্মাদী সাক্ষ্য দেবেন যে, তিনি আল্লাহ তা‘আলার বার্তা যথাযথভাবে পৌঁছে দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍۭ بِشَهِيْدٍ وَّجِئْنَا بِكَ عَلٰي هٰٓؤُلَا۬ءِ شَهِيْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?” (সূরা নিসা ৪:৪১)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَكَذٰلِكَ جَعَلْنٰكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَا۬ءَ عَلَي النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا)
“আর এভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী ন্যায়পরায়ণ উম্মত করেছি যেন তোমরা মানুষের জন্য সাক্ষী হও এবং রাসূলও তোমাদের জন্য সাক্ষী হবেন।” (সূরা বাকারাহ ২:১৪৩)
আবার কোন কোন বিদ‘আতী شَاهِدًا এর অর্থ বলেছে যে, ‘হাযির-নাযির’ অর্থাৎ সর্বস্থলে সর্বাবস্থায় উপস্থিত ও দর্শক। এটা সম্পূর্ণরূপে ভুল। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোথাও হাযের নাযের নন। একথা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।
(২ ও ৩) (وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا) –
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি সঠিক ঈমান ও সৎ আমলকারী মু’মিনদেরকে আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও জান্নাতের সুসংবাদ দানকারী এবং কাফির মুনাফিকদেরকে আল্লাহ তা‘আলার আযাব ও জাহান্নামের ব্যাপারে সতর্ককারী।
(فَضْلًا كَبِيْرًا)
‘মহা অনুগ্রহ’ যা মু’মিনদের জন্য প্রস্তুত আছে। এ মহা অনুগ্রহের বর্ণনা দিয়ে সূরা শুরাতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فِيْ رَوْضَاتِ الْجَنّٰتِ ج لَهُمْ مَّا يَشَا۬ءُوْنَ عِنْدَ رَبِّهِمْ ط ذٰلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الْكَبِيْرُ)
“তুমি জালিমদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবে তাদের কৃতকর্মের জন্য; আর এটাই আপতিত হবে তাদের ওপর। যারা ঈমান আনে ও সৎ আমল করে তারা থাকবে জান্নাতের বাগানসমুহে। তারা যা কিছু চাইবে তাদের প্রতিপালকের নিকট তাই পাবে। এটাই তো মহা অনুগ্রহ।” (সূরা শুরা ৪২:২২)
(৪) (وَّدَاعِيًا إِلَي اللّٰهِ) –
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আহ্বানকারী অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় ও অনুমতিতে তিনি মানুষকে এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের দিকে আহ্বান করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ هٰذِه۪ سَبِيْلِيْٓ أَدْعُوْآ إِلَي اللّٰهِ ﺩ عَلٰي بَصِيْرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِيْ ط وَسُبْحٰنَ اللّٰهِ وَمَآ أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ)
“বল: ‘এটাই আমার পথ: আল্লাহর প্রতি মানুষকে আমি আহ্বান করি সজ্ঞানে ও দলীল-প্রমাণের সাথে আমি এবং আমার অনুসারীগণও। আল্লাহ মহিমান্বিত এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ (সূরা ইউসূফ ১২:১০৮)
(৫) (وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا) –
উজ্জ্বল প্রদীপরূপে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রদীপের সাথে তুলনা করার কারণ হল প্রদীপ দ্বারা যেমন অন্ধকার দূর হয় অনুরূপ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বারাও কুফর ও শির্কের অন্ধকার দূর করা হয়েছে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উজ্জ্বল প্রদীপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এসব গুণ ও দায়িত্ব উল্লেখ করার পর সতর্ক করে বলছেন, হে নাবী! কখনো কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ কর না। বরং তোমার প্রতি যে ওয়াহী করা হয়েছে তার অনুসরণ কর। যদি তাদের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে, ফলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের শামিল হয়ে যাবে। তাই তাদের অনুরসরণ না করে সর্বদা সকল কাজে আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা রাখো। কেননা আল্লাহ তা‘আলাই সংরক্ষক হিসেবে যথেষ্ট।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করার উদ্দেশ্য জানলাম।
১. রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোথাও হাযির-নাযির নন।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শির্কের অন্ধকার দূর করার জন্য উজ্জ্বল প্রদীপরূপে প্রেরণ করা হয়েছে।
৩. কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা যাবে না।
৪. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার ওপরই ভরসা করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings