Surah As Sajda Tafseer
Tafseer of As-Sajdah : 15
Saheeh International
Only those believe in Our verses who, when they are reminded by them, fall down in prostration and exalt [ Allah ] with praise of their Lord, and they are not arrogant.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৫-১৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: প্রকৃত ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য হল, তারা আন্তরিকতার সাথে কান লাগিয়ে আমার কথা শ্রবণ করে থাকে। আমার নির্দেশানুযায়ী তারা আমল করে। মুখে তারা এগুলো স্বীকার করে ও সত্য বলে মেনে নেয়, আর অন্তরেও তারা এগুলোকে সত্য বলেই জানে। আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াত তেলাওয়াত করা হয় তখন তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং প্রশংসার সাথে আমার তাসবীহ পাঠ করে। তারা কোন প্রকার গর্ব অহঙ্কার করে না। কারণ তারা জানে যে, যারা গর্ব অহঙ্কার করে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِيْٓ أَسْتَجِبْ لَكُمْ ط إِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِيْ سَيَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِيْنَ)
“তোমাদের প্রতিপালক বলেনঃ তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। যারা অহংকারে আমার ইবাদত বিমুখ, তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।” (সূরা মু’মিন ৪০:৬০)
প্রকৃত মুত্তাকী ও ঈমানদারদের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হল যে, তারা তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার জন্য রাত্রে বিছানা ত্যাগ করে এবং তাদের প্রতিপালককে জাহান্নামের ভয় ও জান্নাতের আশা নিয়ে আহ্বান করে। আর তাদেরকে যে রিযিক দেয়া হয়েছে তা হতে আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে।
ইবনু মাসঊদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা দু ব্যক্তির ওপর খুবই খুশি হন। এক ব্যক্তি, যে শান্তি ও আরামের নিদ্রায় বিভোর থাকে, কিন্তু হঠাৎ তার আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামত ও শাস্তির কথা স্মরণ হয়ে যায় এবং তখনই সে বিছানা ত্যাগ করে উঠে পড়ে এবং আল্লাহ তা‘আলার সামনে দাঁড়িয়ে সালাত শুরু করে দেয়। (মুসনাদ আহমাদ হা: ৩৯৪৭)
অন্য হাদীসে রয়েছে: মুআয বিন জাবাল (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি এক সফরে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। সকালের দিকে আমি তাঁর খুব নিকটবর্তী হয়ে চলছিলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম: হে আল্লাহ তা‘আলার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে ও জাহান্নাম হতে দূরে রাখবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “তুমি খুব বড় প্রশ্ন করেছ। তবে আল্লাহ তা‘আলা যার জন্য তা সহজ করে দেন তার জন্য তা সহজ হয়ে যায়। তাহলে শোন, তুমি আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না। সালাত কায়িম করবে, যাকাত দিবে, রমাযানের রোযা রাখবে ও বায়তুল্লাহর হাজ্জ করবে। অতঃপর তিনি বলেন: আমি তোমাকে কল্যাণের দরজাসমূহের কথা কি বলে দিব না? তা হল রোযা ঢালস্বরূপ, দান-খয়রাত পাপ ও অপরাধসমূহ মুছে ফেলে এবং মধ্য রাতে মানুষের সালাত। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্র আয়াতটি পাঠ করেন। (তিরমিযী হা: ২৬১৬, সহীহ)
এ ছাড়াও তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য সহীহ হাদীস রয়েছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়মিত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন। তাই তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্যশীল বান্দাদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন: কোন মানুষই জানে না যে, তার জন্য কী প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ জান্নাতে আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছেন তা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কেউ জানে না।
হাদীসে এসেছে যে, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَي قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ
আমি আমার সৎ বান্দাদের জন্য এমন (রহমত ও নেয়ামত) কিছু প্রস্তুত করে রেখেছি যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কর্ণ শোনেনি এবং কোন অন্তর কল্পনাও করতে পারেনি, তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত তেলাওয়াত করতে পার
(فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ)
(সহীহ বুখারী হা: ৩২৪৪)
অন্য এক বর্ণনাতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে তাকে যে নেয়ামত দেয়া হবে তা কখনো শেষ হবে না। তার কাপড় পুরাতন হবে না, তার যৌবনে ভাটা পড়বে না। তার জন্য জান্নাতে এমন নেয়ামত রয়েছে যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কর্ন শোনেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে কল্পনাও জাগেনি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭৮০, সহীহ মুসলিম ৪:২১৭৫)
এ সম্পর্কে আরো অনেক নির্ভরযোগ্য বর্ণনা পাওয়া যায় ।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৎ বান্দাদের জন্য এমন নেয়ামত তৈরি করে রেখেছেন যা বর্ণনাতীত। তাই আমাদের উচিত হবে সেসব নেয়ামত পাওয়ার জন্য যথোচিত সৎ আমল করা এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করা, হে আল্লাহ! তোমার কাছে জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করছি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মু’মিন বান্দাদের জন্য বৈশিষ্ট্য হল তারা আল্লাহ তা‘আলার আয়াত শুনে সিজদায় লুটে পড়ে এবং কোন প্রকার অহঙ্কার করে না।
২. তাহাজ্জুদ সালাতের ফযীলত সম্পর্কে জানলাম।
৩. দান করলে পাপসমূহ মোচন হয়ে যায়।
৪. সৎ বান্দাদের জন্য এমন জান্নাত তৈরি করে রাখা হয়েছে যা কোন মানুষ কল্পনাও করতে পারে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings