Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 78
Saheeh International
And among them are unlettered ones who do not know the Scripture except in wishful thinking, but they are only assuming.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
‘উম্মী’ শব্দের অর্থ
ومنهم ‘তাদের মাঝে’ অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মাঝে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেনঃ أُمِّيُّنَ শব্দটি أُمِّيٌّ এর বহু বচন। আর أُمِّىْ শব্দের অর্থ হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে ভালোভাবে লেখতে জানে না। আবুল ‘আলিয়া, রাবী‘ ইবনে আনাস, কাতাদাহ, ইবরাহীম আন নাখ‘ঈ (রহঃ) সহ অনেকই এরূপ বলেছেন। আর এটাই মহান আল্লাহ্র বাণী لَا یَعْلَمُوْنَ الْكِتٰبَ ‘কিতাবের কোন জ্ঞানই নেই’ এর বাহ্যিক অর্থ। অর্থাৎ তারা জানে না যে তার মধ্যে কি রয়েছে। আর এজন্যেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বিশেষণ হচ্ছে أُمِّىْ। কেননা তিনি ভালো লেখতে জানতেন না। মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿وَ مَا كُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِهٖ مِنْ كِتٰبٍ وَّ لَا تَخُطُّهٗ بِیَمِیْنِكَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ﴾
‘তুমি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করোনি এবং স্বহস্তে কোন দিন কিতাব লেখোনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।’ (২৯ নং সূরা ‘আনকাবূত, আয়াত নং ৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"إنا أمة أمية، لا نكتب ولا نحسب، الشهر هكذا وهكذا وهكذا"
‘আমরা তো এক ‘উম্মী’ ও নিরক্ষর জাতী, আমরা লেখতেও জানি না এবং হিসাবও বুঝিনা, মাস কখনো এরকম হয় এবং কখনো এরকম ও এরকম হয়।’ (হাদীস সহীহ। সহীহুল বুখারী ৪/১৯১৩, সহীহ মুসলিম ২/২৩১৯, সুনান নাসাঈ ৪/২১৩৯, মুসনাদে আহমাদ ২/৪৩, ৫২, ১২২, ১২৯, ফাতহুল বারী ৪/১৫১) প্রথমবারে তিনি তাঁর দু’হাতের সমস্ত আঙ্গুল তিনবার নীচের দিকে ঝুঁকিয়ে দেন অর্থাৎ ত্রিশ দিনে এবং দ্বিতীয় বারে দু’বার দু’হাতের সমস্ত অঙ্গুলি ঝুঁকান এবং তৃতীয়বার এক হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি বৃত্ত করে রাখেন, অর্থাৎ উনত্রিশ দিনে। ভাবার্থ এই যে, আমাদের ‘ইবাদত এবং এর সময় হিসাব নিকাশের ওপর নির্ভর করে না। কুর’আন মাজীদের এক স্থানে আছেঃ
﴿هُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّنَ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ﴾
তিনিই উম্মীদের মধ্যে তাদের মধ্যেকারই একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূল রূপে। (৬২ নং সূরা আল জুমু‘আহ, আয়াত নং ২)
ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। أَمَىَّ এর অর্থ হচ্ছে মিথ্যা আশা ও মন ভুলানো কথা। (তাফসীর তাবারী ২/২৬১)
‘তারা শুধু ধারণার ওপরই রয়েছে’ অর্থাৎ তারা প্রকৃত ব্যাপার অবগত নয়; বরং নিরর্থক ধারণা করে থাকে। অতঃপর ইয়াহুদীদের অন্য এক শ্রেণীর লোকের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তারা লেখা পড়া জানতো এবং জনগণকে ভ্রান্ত পথের দিকে আহ্বান করতো। মহান আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলতো এবং শিষ্যদের নিকট হতে টাকা পয়সা আদায় করার উদ্দেশ্যে ভুল পন্থা অবলম্বন করতো।
অয়েল শব্দের অর্থ ও বিশ্লেষণ
وَيْلٌ এর অর্থ হচ্ছে ‘দুর্ভাগ্য’ ও ‘ক্ষতি’- এটা একটি প্রসিদ্ধ শব্দ। সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন, এটা জাহান্নামের একটি গর্তের নাম। ‘আত্বা ইবনু ইয়াসার বলেন, অয়েল হলো জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম, যার আগুনের তাপ এতো প্রচণ্ড যে, তার ভিতর পাহাড় নিক্ষেপ করলেও তা গলে যাবে।
মুসনাদ ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে, আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "ويل واد في جهنم، يهوي فيه الكافر أربعين خريفًا قبل أن يبلغ قعره".
‘জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম হলো অয়েল। যার মধ্যে কাফিরকে নিক্ষেপ করা হলে চল্লিশ বছর পর তার তলদেশে গিয়ে পৌছবে।’ (হাদীসটি য ‘ঈফ। জামি ‘তিরমিযী ৫/৩১৬৪, সহীহ ইবনে হিব্বান ৯ম খন্ড ২৭৭ পৃষ্ঠা, হাদীস ৭৪২৪, মুসনাদে আহমাদ ৩/৭৫, মুসতাদরাক হাকিম ৪/৫৯৬, তারগীব ওয়াত তারহীব ৪/২৬৫) কেননা এর গভীরতা খুবই বেশি। কিন্তু সনদ হিসেবে এ হাদীসটি গারীব বা দুর্বল।
ইয়াহুদীরা তাওরাতের মধ্যে পরিবর্তন করেছিলো। তাওরাতে উল্লেখ রয়েছে যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নাম তা হতে মুছে ফেলেছিলো।
এ আয়াতাংশের তাফসীরে ইবনে জারীর (রহঃ) ‘উসমান ইবনে ‘আফ্ফান (রাঃ) এর একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"الويل جبل في النار. وهو الذي أنزل في اليهود؛ لأنهم حَرَّفوا التوراة، زادوا فيها ما أحبوا، ومحوا منها ما يكرهون، ومحوا اسم محمد صلى الله عليه وسلم من التوراة. ولذلك غضب الله عليهم، فرفع بعض التوراة، فقال: { فَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا يَكْسِبُونَ
অয়েল জাহান্নামের একটি পাহাড়, যাতে ইয়াহুদীদেরকে নিক্ষেপ করা হবে। কেননা তারাই তাওরাতের মধ্যে পরিবর্তন করেছিলো। পছন্দনীয় বিষয় বৃদ্ধি করেছিলো আর অপছন্দনীয় বিষয়গুলো তারা মিটিয়ে দিয়েছিলো। এমনটি তারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামও তাওরাত থেকে মুছে ফেলেছিলো। এ জন্য তাদের ওপর মহান আল্লাহ্র অভিশাপ নাযিল হয়েছিলো। অতঃপর মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্র আয়াতটি পাঠ করেনঃ
فَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَهُمْ مِمَّا يَكْسِبُونَ
‘যা তারা হাত দ্বারা লিখেছে এবং যা কিছু উপার্জন করেছে তার জন্য তাদের সর্বনাশ হবে।’ (তাফসীরে ত্বাবারী-১/১৩৯৮। সনদটি অপরিচিত)
‘অয়েল’ এর অর্থ কঠিন শাস্তি, ভীষণ ক্ষতি, ধ্বংস, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদিও হয়ে থাকে।
সত্যত্যাগী ইয়াহুদীদের জন্য দুর্ভোগ
এখানে ইয়াহুদী ‘আলেমদেরকে নিন্দা করা হচ্ছে যে, তারা নিজেদের কথাকে মহান আল্লাহ্র কালাম বলে আখ্যায়িত করতো এবং নিজেদের লোককে সন্তুষ্ট করে দুনিয়ায় উপার্জন করতো। ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলতেনঃ ‘তোমরা কিতাবীদেরকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করো কেন? তোমাদের কাছে তো নব প্রেরিত মহান আল্লাহ্র কিতাবই বিদ্যমান আছে। কিতাবীরা তো মহান আল্লাহ্র কিতাবের মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলেছে। নিজেদের হস্তলিখিত কথাকেই মহান আল্লাহ্র দিকে সম্বন্ধ লাগিয়ে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। কাজেই তোমাদের নিজস্ব কিতাব বাদ দিয়ে তাদের পরিবর্তিত কিতাবের কি প্রয়োজন? বড়ই দুঃখের বিষয় এই যে, তারা তোমাদেরকে জিজ্ঞস করছে না, অথচ তোমরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করছো।’ (তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/২৪৫, ফাতহুল বারী ৫/২৪৪, ১৩/৩৪৫, ৫৫৫)
‘অল্প মূল্যে’র অর্থ হচ্ছে আখিরাতের তুলনায় বর্তমান দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন এবং এর সাথের নি ‘য়ামত। (তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/২৪৭) অর্থাৎ ওর বিনিময়ে সারা দুনিয়া পেলেও আখিরাতের তুলনায় এটা অতি নগণ্য জিনিস। অতঃপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা ‘আলা বলেন ﴿ وَ وَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا یَكْسِبُوْنَ﴾ তারা যে এভাবে নিজেদের কথাকে মহান আল্লাহ্র কথা বলে জনগণের কাছ থেকে স্বীকৃতি নিচ্ছে এবং এর বিনিময়ে দুনিয়া উপার্জনই করছে, এর ফলে তাদের সর্বনাশ হবে। (তাফসীর তাবারী ২/২৭৩)
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings