Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 45
Saheeh International
And seek help through patience and prayer, and indeed, it is difficult except for the humbly submissive [to Allah ]
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সাহায্য লাভ হবে
এ আয়াতে মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাতের কাজে ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে।
মহান আল্লাহর বান্দাদেরকে কর্তব্য পালন করতে এবং সালাত আদায় করতে বলা হয়েছে। সিয়াম পালন করাও হচ্ছে ধৈর্য ধারণ করা। এ জন্যই রামাযান মাসকে ধৈর্যের মাস বলা হয়েছে। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৫৪) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘সিয়াম অর্ধেক ধৈর্য।’ ধৈর্যের ভাবার্থ পাপের কাজ হতে বিরত থাকাও বটে। এ আয়াতে যদি ধৈর্যের ভাবার্থ এটাই হয়ে থাকে তাহলে মন্দ কাজ হতে বিরত থাকা ও সাওয়াবের কাজ করা এ দু’টিই বর্ণনা হয়ে গেছে। সাওয়াবের কার্যসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে সালাত। ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ ‘ধৈর্য দু’প্রকার। (১) বিপদের সময় ধৈর্য। (২) পাপের কাজ হতে বিরত থাকার ধৈর্য। দ্বিতীয় ধৈর্য প্রথম ধৈর্য হতে উত্তম।’ সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) বলেনঃ ‘প্রত্যেক জিনিস মহান আল্লাহর পক্ষ হতে হয়ে থাকে মানুষের এটা স্বীকার করা, সাওয়াব প্রার্থনা করা এবং বিপদের প্রতিদানের ভাণ্ডার মহান আল্লাহর নিকট আছে এটা মনে করার নাম ধৈর্য।’ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজে ধৈর্যধারণ করলেও মহান আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করা হয়। সাওয়াবের কাজে সালাত দ্বারা বিশেষ সাহায্য পাওয়া যায়। কুর’আন মাজীদে ঘোষিত হয়েছেঃ
﴿اُتْلُ مَاۤ اُوْحِیَ اِلَیْكَ مِنَ الْكِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوةَ١ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَآءِ وَ الْمُنْكَرِ١ؕ وَلَذِكْرُ اللّٰهِ اَكْبَرُ﴾
তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব আবৃত্তি করো এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত করো। নিশ্চয়ই সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। মহান আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। (২৯ নং সূরাহ্ ‘আনকাবূত, আয়াত নং ৪৫) হুযাইফা (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখনই কোন কঠিন ও চিন্তাযুক্ত কাজের সম্মুখীন হতেন তখনই তিনি সালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন। সম্ভবত এখানে সর্বনাম প্রয়োগ করা হয়েছে উপদেশ দানের উদ্দেশে, ধৈর্য এবং সালাতের মাধ্যমে, যেমনটি উল্লেখ পাওয়া যায় একই আয়াতে। অনুরূপ, কুরুন সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
﴿وَ قَالَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ وَیْلَكُمْ ثَوَابُ اللّٰهِ خَیْرٌ لِّمَنْ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا١ۚ وَ لَا یُلَقّٰىهَاۤ اِلَّا الصّٰبِرُوْنَ﴾
আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিলো তারা বললোঃ ধিক্ তোমাদেরকে! যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য মহান আল্লাহর পুরস্কার শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ব্যতীত এটা কেউ পাবে না। (২৮ নং সূরাহ্ কাসাস, আয়াত নং ৮০) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেনঃ
﴿وَ لَا تَسْتَوِی الْحَسَنَةُ وَ لَا السَّیِّئَةُ١ؕ اِدْفَعْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ فَاِذَا الَّذِیْ بَیْنَكَ وَ بَیْنَهٗ عَدَاوَةٌ كَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیْمٌ۳۴ وَ مَا یُلَقّٰىهَاۤ اِلَّا الَّذِیْنَ صَبَرُوْا١ۚ وَ مَا یُلَقّٰىهَاۤ اِلَّا ذُوْ حَظٍّ عَظِیْمٍ﴾
ভালো কাজ এবং মন্দ কাজ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত করো উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো। এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা ধৈর্যশীল, এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা মহাভাগ্যবান। (৪১ নং সূরাহ্ হা-মিম সাজদাহ, আয়াত নং ৩৪-৩৫)
খন্দকের যুদ্ধে রাতের বেলায় হুযাইফা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে হাযির হলে তাঁকে সালাত আদায় করতে দেখতে পান। অন্যত্র ‘আলী (রাঃ) বলেনঃ ‘বদর যুদ্ধের রাতে আমরা সবাই শুইয়ে পড়েছি, আর জেগে দেখি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সারা রাত সালাত আদায়ে রত রয়েছেন। সকাল পর্যন্ত তিনি সালাত ও প্রার্থনায় মশগুল ছিলেন।’
وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ আর তাঁরই দিকে প্রতিগমন করবে। অর্থাৎ তাদের বিষয় সম্পূর্ণই মহান আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল, তিনি তাঁর বান্দার ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। যেহেতু তারা জানেন যে, তাদেরকে অবশ্যই মহান আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে এবং তাদেরকে চেনা যাবে সেহেতু মহান আল্লাহর নির্ধারিত ‘আমলসমূহ পালন করা এবং নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকা সহজ।
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সফরে তাঁর ভাই কাসাম (রাঃ)-এর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ﴿ اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ﴾ ) (২ নং সূরাহ্ বাকারাহ, আয়াত নং ১৫৬)পাঠ করে পথের এক ধারে সরে গিয়ে উটকে বসিয়ে দেন এবং সালাত শুরু করেন। দীর্ঘক্ষণ সালাত আদায় করার পর সাওয়ারীর নিকট আসেন এবং এই আয়াত দু’টি পাঠ করতে থাকেন। মোট কথা, ধৈর্য ও সালাত এ দু’টি দ্বারা মহান আল্লাহর করুণা লাভ করা যায়। মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿وَ رَاَ الْمُجْرِمُوْنَ النَّارَ فَظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ مُّوَاقِعُوْهَا﴾
পাপীরা আগুন অবলোকন করে আশঙ্কা করবে যেন তারা এতেই পতিত হবে, বস্তুত এটা হতে তারা পরিত্রাণ পাবে না। (১৮ নং সূরাহ্ কাহফ, আয়াত নং ৫৩)
একটি সহীহ হাদীসে আছে যে, কিয়ামতের দিন এক পাপীকে আল্লাহ তা‘আলা বলবেনঃ ‘আমি কি তোমাকে স্ত্রী ও সন্তানাদি দেইনি? তোমার প্রতি কি নানা প্রকারের অনুগ্রহ করিনি, ঘোড়া ও উটকে কি তোমার অধীনস্থ করিনি? তোমাকে কি শান্তি, আরাম, আহার্য ও পানীয় দেইনি?’ সে বলবে, ‘হ্যাঁ, হে প্রভু! এ সব কিছ্ইু ছিলো।’ তখন মহান আল্লাহ বলবেনঃ ‘তাহলে তোমার কি এই জ্ঞান ও বিশ্বাস ছিলো না যে, তোমাকে আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে? সে বলবেঃ ‘হ্যাঁ হে প্রভু! এর প্রতি আমার বিশ্বাস ছিলো।’ মহান আল্লাহ বলবেনঃ ‘তুমি যেমন আমাকে ভুলে গিয়েছিলে তেমনই আমিও তোমাকে ভুলে গেলাম।’ (সহীহ মুসলিম ৪/২২৭৯)
এর আরো বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা ইনশা’আল্লাহ نَسُوا اللّٰهَ فَنَسِیَهُمْ – (৯ নং সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্, আয়াত নং ৬৭)এর তাফসীরে আসবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings