Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 41
Saheeh International
And believe in what I have sent down confirming that which is [already] with you, and be not the first to disbelieve in it. And do not exchange My signs for a small price, and fear [only] Me.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
বানী ইসরাঈলকে ইসলামের দিকে আহ্বান
আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলকে ইসলাম কবূল করতে আদেশ করেছেন এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুসরণ করতে বলেছেন। বানী ইসরাঈলদের নবী ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বানী স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যিনি তার অনুসারীদেরকে বলেছিলেনঃ ওহে ধর্মভীরুগণ যারা মহান আল্লাহকে মান্য করছো! তোমরা তোমাদের পূর্ব-পুরুষদের মত সত্য ধর্মকে অনুসরণ করো। যেমন বলা হয়ে থাকেঃ হে অমুক ধার্মিক ব্যক্তির সন্তান! এটা করো অথবা উহা করো, অথবা হে সাহসী ব্যক্তির সন্তান! জিহাদে অংশ নিয়ে জীবন-পণ যুদ্ধ করো, অথবা হে অমুক জ্ঞানী ব্যক্তির সন্তান! জ্ঞানের অন্বেষন করো। অনুরূপ আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
﴿ذُرِّیَّةَ مَنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوْحٍ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ عَبْدًا شَكُوْرًا﴾
তোমরাই তো তাদের বংশধর যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম, সে তো ছিলো পরম কৃতজ্ঞ দাস। (১৭ নং সূরাহ্ ইসরাহ, আয়াত নং ৩)
ইয়া‘কূব (আঃ)-এর নাম ছিলো ইসরাঈল
আবূ দাঊদ তায়ালিসী (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বরাতে বর্ণনা করেছেন, ইয়াহূদীদের একটি দল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলে তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি জান যে, ইয়া‘কূব (আঃ)-এর অপর নাম ছিলো ইসরাঈল? তারা বললোঃ মহান আল্লাহ স্বাক্ষী! (তায়ালেসী ৩৫৬) অবশ্যই আমরা জানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে মহান আল্লাহ! তুমি স্বাক্ষী থাকো। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন যে, ইসরাঈল অর্থ হচ্ছে মহান আল্লাহর দাস বা বান্দা। (তাফসীর তাবারী ১/৫৫৩)
বানী ইসরাঈলকে অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে
বানী ইসরাঈলদেরকে ঐ সব অনুগ্রহের কথা স্মরণ করানো হচ্ছে যা ব্যাপক ক্ষমতার বড় বড় নিদর্শন ছিলো। যেমন পাথর হতে ঝর্ণা বা নদী প্রবাহিত করা, ‘মান্না’ ও ‘সালাওয়া’ অবতরণ করা, ফির‘আউনের দলবল হতে রক্ষা করা। (তাফসীর তাবারী ১/৫৫৬) আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) বানী ইসরাঈলদের মধ্য হতেই বিভিন্ন রাসূল প্রেরণ, তাদের জন্য ধর্মীয় গ্রন্থ অবতরণ ও রাজ্য শাসনের কথাও উল্লেখ করেছেন। (তাফসীর তাবারী ১/৫৫৬) আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) আরো বলেনঃ মহান আল্লাহর অনুগ্রহের কথা বলার অর্থ হচ্ছে তাদের মাঝে নবী ও রাসূল হিসাবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করা এবং কুর’আন অবতরণ করা। এ ব্যাপারে মূসা (আঃ) বানী ইসরাঈলকে যেমনটি বলেছিলেনঃ
﴿یٰقَوْمِ اذْكُرُوْا نِعْمَةَ اللّٰهِ عَلَیْكُمْ اِذْ جَعَلَ فِیْكُمْ اَنْۢبِیَآءَ وَ جَعَلَكُمْ مُّلُوْكًا١ۖۗ وَّ اٰتٰىكُمْ مَّا لَمْ یُؤْتِ اَحَدًا مِّنَ الْعٰلَمِیْنَ﴾
হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতি মহান আল্লাহর নি‘য়ামতকে স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে বহু নবী সৃষ্টি করলেন, রাজ্যাধিপতি করলেন এবং তোমাদেরকে এমন বস্তুসমূহ দান করলেন যা বিশ্ববাসীদের কাউকেও দান করেননি। (৫ নং সূরাহ্ মায়িদাহ, আয়াত নং ২০)
মহান আল্লাহর সাথে বানী ইসরাঈলের ওয়া‘দার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে
আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ﴿وَ اَوْفُوْا بِعَهْدِیْۤ اُوْفِ بِعَهْدِكُمْ﴾ ‘আমার অঙ্গীকার পুরা করো’ অর্থাৎ তোমাদের কাছে যে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, যখন মুহাম্মাদ আগমন করবেন এবং তাঁর ওপর আমার কিতাব অবতীর্ণ হবে তখন তোমরা তাঁর ওপর ও কিতাবের ওপর ঈমান আনবে। তিনি তোমাদের বোঝা হালকা করবেন, তোমাদের শৃংখল ভেঙ্গে দিবেন এবং গলাবদ্ধ দূরে নিক্ষেপ করবেন। অর্থাৎ তোমরা আমার সাথে কৃত ওয়া‘দার কথা স্মরণ করো যে, তোমাদের কাছে যখন আমার রাসূল আগমন করবে তখন তাঁকে মান্য করবে এবং আমিও তোমাদেরকে তা প্রদান করবো যার প্রতিশ্র“তি আমি তোমাদেরকে দিয়েছি। তোমাদের কারণে তোমাদের প্রতি যে ‘আযাব আপতিত হয়েছে আমি তা দূর করে দিবো। (তাফসীর তাবারী ১/৫৫৫, ৫৫৭) হাসান বাসরী (রহঃ) আরো বলেনঃ মহান আল্লাহর সাথে বানী ইসরাঈলদের যে চুক্তির কথা বলা হয়েছে তা নিম্নের আয়াত থেকে জানা যায়। (তাফসীর তাবারী ১/১০৯)
﴿وَ لَقَدْ اَخَذَ اللّٰهُ مِیْثَاقَ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ١ۚ وَ بَعَثْنَا مِنْهُمُ اثْنَیْ عَشَرَ نَقِیْبًا١ؕ وَ قَالَ اللّٰهُ اِنِّیْ مَعَكُمْ١ؕ لَىِٕنْ اَقَمْتُمُ الصَّلٰوةَ وَ اٰتَیْتُمُ الزَّكٰوةَ وَ اٰمَنْتُمْ بِرُسُلِیْ وَ عَزَّرْتُمُوْهُمْ وَ اَقْرَضْتُمُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا لَّاُكَفِّرَنَّ عَنْكُمْ سَیِّاٰتِكُمْ وَ لَاُدْخِلَنَّكُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ١ۚ فَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذٰلِكَ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیْلِ﴾
আর মহান আল্লাহ বানী ইসরাঈলদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম, আমি তাদের মধ্য হতে বারো জন দলপতি নিযুক্ত করেছিলাম এবং বলেছিলেনঃ আমি তোমাদের সাথে রয়েছি, যদি তোমরা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করো ও যাকাত দিতে থাকো এবং আমার রাসূলদের ওপর ঈমান আনো ও তাদেরকে সাহায্য করো এবং মহান আল্লাহকে উত্তমরূপে কর্য দিতে থাকো; তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের পাপগুলো তোমাদের থেকে মুছে দিবো এবং অবশ্যই তোমাদেরকে এমন উদ্যানসমূহে দাখিল করো যার তলদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে অতঃপর যে ব্যক্তি এরপরও কুফরী করবে, নিশ্চয়ই সে সোজা পথ থেকে দূরে সরে পড়লো। (৫ নং সূরাহ্ মায়িদাহ, আয়াত নং ১২)
ইমাম রাযী (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে বড় বড় নবীগণের ভবিষ্যদ্বাণী উদ্ধৃত করেছেন। এও বর্ণিত আছে যে, বান্দার অঙ্গীকারের অর্থ হচ্ছে ইসলামকে মান্য করা এবং তার ওপর ‘আমল করা। (তাফসীর তাবারী ১/৫৫৮) আর মহান আল্লাহর অঙ্গীকার পুরা করার অর্থ হচ্ছে, তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে জান্নাত দান করা। ‘আমাকেই ভয় করো’ এর অর্থ হচ্ছে এই যে, মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে বলছেন যে, তাঁর বান্দাদের তাঁকে ভয় করা উচিত। কেননা যদি তারা তাঁকে ভয় না করে তাহলে তাদের ওপরও এমন শাস্তি এসে পড়বে যে শাস্তি তাদের পূর্ববর্তীদের উপর এসেছিলো। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৪৪)
বর্ণনা রীতি কি চমৎকার যে, উৎসাহ প্রদানের পরই ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে। উৎসাহ ও ভয় প্রদর্শন একত্রিত করে সত্য গ্রহণ ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ অনুসরণের প্রতি আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। কুর’আন মাজীদ হতে উপদেশ গ্রহণ করতে, তাতে বর্ণিত নির্দেশাবলী পালন করতে এবং নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এ জন্যই এর পরেই মহান আল্লাহ তাদেরকে বলছেন যে, তারা যেন সেই কুর’আনের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে যা তাদের নিজস্ব কিতাবেরও সত্যতা স্বীকার করে। এটা এনেছেন এমন নবী যিনি নিরক্ষর ‘আরবী, সুসংবাদ প্রদানকারী, ভয় প্রদর্শনকারী, আলোকময় প্রদীপ সাদৃশ্য, যাঁর নাম মুহাম্মাদ, যিনি তাওরাত ও ইনজীলকে সত্য প্রতিপন্নকারী এবং যিনি সত্যের বিস্তার সাধনকারী। তাওরাত ও ইনজীলেও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ণনা ছিলো বলে তাঁর আগমনই ছিলো তাওরাত ও ইনজীলের সত্যতার প্রমাণ। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৪৫) আর এ জন্যই তাদেরকে বলা হচ্ছে যে, তিনি তাদের কিতাবের সত্যতার প্রমাণরূপে আগমন করেছেন। সুতরাং তাদের অবগতি সত্ত্বেও যেন তারা তাঁকে প্রথম অস্বীকার না করে বসে। কেউ কেউ বলেন যে, بِهِ-এর সর্বনামটি কুর’আনের দিকে ফিরেছে। কেননা পূর্বে بِمَا أَنْزَلْتُ এসেছে। প্রকৃতপক্ষে দু’টি মতই সঠিক। কেননা কুর’আনকে মান্য করার অর্থ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মান্য করা এবং রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সত্যতা স্বীকার করে নেয়া। أَوَّلَ كَافِرٍ-এর ভাবার্থ হচ্ছে বানী ইসরাঈলের প্রথম কাফির। কারণ কুরাইশ বংশীয় কাফিররাও তো কুফরী ও অস্বীকার করেছিলো। কিন্তু বানী ইসরাঈলদের কুফরী ছিলো আহলে কিতাবের প্রথম দলের কুফরী। এ জন্যই তাদেরকে প্রথম কাফির বলা হয়েছে। তাদের সেই অবগতি ছিলো যা অন্যদের ছিলো না। ‘আমার আয়াতসমূহের পরিবর্তে তুচ্ছ বিনিময় গ্রহণ করো না। এর ভাবার্থ হচ্ছে এই যে, বানী ইসরাঈল যেন মহান আল্লাহর আয়াতসমূহের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সত্যতা স্বীকার ত্যাগ না করে। এর বিনিময়ে যদি সারা দুনিয়াও তারা পেয়ে যায় তথাপি আখিরাতের তুলনায় এটা অতি তুচ্ছ ও নগণ্য। আর এটা স্বয়ং তাদের কিতাবেও বিদ্যমান রয়েছে।
হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যে বিদ্যা দ্বারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, তা যদি কেউ দুনিয়া লাভের উদ্দেশে শিক্ষা করে তাহলে সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত পাবে না।’ (সুনান আবূ দাঊদ) নির্ধারণ না করে ধর্মীয় বিদ্যা শিক্ষা দেয়ার মজুরী নেয়া বৈধ। শিক্ষক যেন স্বচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারেন এবং স্বীয় প্রয়োজনাদি পুরা করতে পারেন সেজন্য বায়তুল মাল হতে গ্রহণ করাও তাঁর জন্য বৈধ। যদি বায়তুল মাল হতে কিছুই পাওয়া না যায় এবং বিদ্যা শিক্ষা দেয়ার কারণে শিক্ষক অন্য কাজ করারও সুযোগ না পান তাহলে তার জন্য বেতন নির্ধারণ করাও বৈধ। ইমাম মালিক (রহঃ), ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ), ইমাম আহমাদ (রহঃ) এবং অধিকাংশ ‘উলামার এটাই অভিমত।
সহীহুল বুখারীর ঐ হাদীসটিও এর দালীল যা আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নির্ধারণ করে মজুরী নিয়েছেন এবং একটি সাপে কাটা রোগীর ওপর কুর’আন পড়ে ফুঁক দিয়েছেন। এ ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বলেনঃ ‘যার ওপরে তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাকো তার সবচেয়ে বেশি হকদার হচ্ছে মহান আল্লাহর কিতাব।’
শুধুমাত্র মহান আল্লাহকেই ভয় করার অর্থ এই যে, মহান আল্লাহর রহমতের আশায় তাঁর ‘ইবাদত ও আনুগত্যে অটুট থাকতে হবে এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে তাঁর অবাধ্যতা ত্যাগ করতে হবে। এই দু’ অবস্থায়ই স্বীয় রবের পক্ষ হতে সে একটি জ্যোতির ওপর থাকে। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১৪৭) মোট কথা তাদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে যে, তারা যেন দুনিয়ার লোভে তাদের কিতাবে উল্লিখিত নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাবুওয়াতের সত্যতা গোপন না করে এবং দুনিয়ার শাসন ক্ষমতার মোহে পড়ে বিরুদ্ধাচরণ না করে, বরং রাব্বকে ভয় করে সত্যকে প্রকাশ করতে থাকে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings