Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 283
Saheeh International
And if you are on a journey and cannot find a scribe, then a security deposit [should be] taken. And if one of you entrusts another, then let him who is entrusted discharge his trust [faithfully] and let him fear Allah, his Lord. And do not conceal testimony, for whoever conceals it - his heart is indeed sinful, and Allah is Knowing of what you do.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৮২-২৮৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আয়াতের বাহ্যিক ভাব প্রমাণ করছে ঋণ লিখে রাখা অপরিহার্য। কিন্তু পরের আয়াত প্রমাণ করছে তা লিখে রাখা অপরিহার্য নয়। বরং লিখে রাখা উত্তম।
অত্র আয়াতকে “আয়াতুদ দাইন”বা ঋণের আয়াত বলা হয়। কুরআনুল কারীমের এটা সবচেয়ে বড় আয়াত। যেহেতু পূর্বের আয়াতে সুদকে কঠোরভাবে হারাম করে দান-সদাকাহ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে সেহেতু সমাজে বসবাসকারীদের মাঝে ঋণ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবেই। কারণ সুদ হারাম, সব মানুষ দান-সদাকাহ করার ক্ষমতা রাখে না। তাছাড়া সবাই দান-সদাকাহ নিতে পছন্দও করে না। সুতরাং প্রয়োজন সাড়ার অন্যতম উপায় ঋণ আদান-প্রাদান করা। ঋণ দেয়াও বড় ফযীলতের কাজ বলে হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কিয়ামতের দিন একজন লোককে আল্লাহ তা‘আলার সামনে আনা হবে। তাকে আল্লাহ তা‘আলা জিজ্ঞাসা করবেন: বল, তুমি আমার জন্য কী পুণ্য করেছ? সে বলবে: হে আল্লাহ! আমি এমন একটি অণু পরিমাণও পুণ্যের কাজ করতে পারিনি যার প্রতিদান আমি আপনার নিকট চাইতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা তাকে পুনরায় এটাই জিজ্ঞাসা করবেন এবং সে একই উত্তর দেবে। আল্লাহ তা‘আলা আবার জিজ্ঞাসা করবেন তখন সে বলবে: হে আল্লাহ! একটি সামান্য কথা মনে পড়েছে। আপনি দয়া করে আমাকে কিছু সম্পদ দান করেছিলেন। আমি ব্যবসায়ী ছিলাম। লোক আমার নিকট হতে কর্জ নিয়ে যেতো। আমি যখন দেখতাম যে, এ লোকটি দরিদ্র এবং পরিশোধ করতে পারছে না তখন তাকে কিছু সময় অবকাশ দিতাম। ধনীদের ওপরও পীড়াপীড়ি করতাম না। অত্যন্ত দরিদ্র ব্যক্তিদের ক্ষমা করে দিতাম। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাহলে আমি তোমার পথ সহজ করবো না কেন? আমি তো সর্বাপেক্ষা বেশি সহজকারী। যাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। তুমি জান্নাতে চলে যাও। (সহীহ বুখারী হা: ২০৭৭)
ঋণ বা যে কোন লেন-দেন আদান-প্রদানের কয়েকটি নিয়ম-কানুন আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে উল্লেখ করেছেন। কারণ সাধারণত টাকা-পয়সা ও মূল্যবান দ্রব্য লেন-দেনে কলহ-বিবাদ ও ভুল বুঝাবুঝি হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে মানুষের গভীর সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়। তাই এমন নাজুক পরিস্থিতি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলা বিধান দিলেন- (১) মেয়াদ নির্দিষ্ট করে নেয়া। (২) লিখে রাখা। (৩) দু’জন মুসলিম পুরুষকে বা একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলাকে সাক্ষী রাখা।
(وَلْيُمْلِلِ الَّذِي عَلَيْهِ)
“আর ঋণগ্রহীতা লেখার বিষয় বলে দেবে” এখানে বলা হচ্ছে ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল শিশু কিংবা পাগল হয় তাহলে তার অভিভাবকদের উচিত ইনসাফের সাথে লিখে নেয়া যাতে ঋণদাতার কোন ক্ষতি না হয়।
وَّامْرَاَتٰنِ “দু’জন মহিলা” এখানে একজন পুরুষের মোকাবেলায় দু’জন নারীকে সমান করা হয়েছে। কারণ মহিলারা দীনে ও স্মরণশক্তিতে পুরুষের চেয়ে দুর্বল। এখানে মহিলাদেরকে তুচ্ছ করে দেখা হয়নি। বরং সৃষ্টিগত দুর্বলতার কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِي لُبٍّ مِنْكُنَّ
“জ্ঞান ও দীনদারীত্ব কম হওয়া সত্ত্বেও জ্ঞানীদেরকে এত দ্রুত পরাস্ত করতে পারে, এমনটি তোমাদের (মহিলাদের) ছাড়া অন্য কাউকে দেখিনি। জিজ্ঞাসা করা হল- দীন ও জ্ঞান কম কোন্ দিক দিয়ে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: কিছু দিন তোমরা সালাত আদায় কর না এবং সিয়াম পালন কর না এটা দীনের দিক দিয়ে কম। আর তোমাদের দু’জনের সাক্ষ্য একজন পুরুষের সমান। এটা জ্ঞানের দিক দিয়ে কম।”(সহীহ বুখারী হা: ৩০৪, ১৪৬২)
(وَإِن كُنتُمْ عَلَي سَفَرٍ)
“আর যদি তোমরা সফরে থাক” যদি কারো সফরে লেনদেনের প্রয়োজন হয় আর লেখক না পায় তাহলে ঋণদাতা ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে কোন জিনিস বন্ধক রাখবে। বন্ধক রাখা শরীয়তসম্মত নিয়ম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বর্ম এক ইয়াহূদীর কাছে বন্ধক রেখেছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ২২০০)। বন্ধক রাখা জিনিস যদি এমন হয় যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়, তাহলে তার উপকারিতার অধিকারী হবে মালিক; ঋণদাতা নয়। অবশ্য বন্ধক রাখা জিনিসে যদি ঋণদাতার কোন কিছু ব্যয় হয়, তবে সে তার খরচ নিতে পারবে। খরচ নিয়ে নেয়ার পর অবশিষ্ট লাভ মালিককে দেয়া জরুরী।
(وَلَا تَكْتُمُواْ الشَّهَادَةَ)
‘আর তোমরা সাক্ষী গোপন কর না’সাক্ষ্য গোপন করা হারাম ও কবীরা গুনাহ। যে ব্যক্তি সাক্ষ্য গোপন করবে তার জন্য সহীহ হাদীসেও অনেক কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৩৫, ১৭১৯)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঋণ লেনদেন শরীয়তসম্মত, তবে অন্যায় ও পাপ কাজের জন্য ঋণ দেয়া যাবে না।
২. সকল লেনদেনে সময় উল্লেখ থাকা জরুরী।
৩. লেখককে অবশ্যই ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে লেখতে হবে, কোনরূপ কারচুপি করা যাবে না।
৪. ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও সাক্ষীর প্রয়োজন হলে রাখা উচিত।
৫. দুজন সাক্ষীর হিকমত হল একজন ভুলে গেলে অন্যজন স্মরণ করে দেবে।
৬. জেনে শুনে ও সত্যতার সাথে সাক্ষ্য দিতে হবে।
৭. কাউকে সাক্ষী হিসেবে থাকতে বললে বাধা দেয়া যাবে না।
৯. লেখা ও সাক্ষ্য দেয়ার ফলে প্রতিদান নেয়া যাবে না।
৮. সাক্ষ্য গোপন করা হারাম, তা দুনিয়ার কোন বিষয় হোক বা দীনের কোন বিষয় হোক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings