Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 276
Saheeh International
Allah destroys interest and gives increase for charities. And Allah does not like every sinning disbeliever.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
সুদের মধ্যে মহান আল্লাহ্র বরকত নেই
মহান আল্লাহ্ বলেন যে, তিনি সুদকে সমূলে ধ্বংস করেন। অর্থাৎ হয় এটাকেই সরাসরি নষ্ট করেন, না হয় এর বরকত নষ্ট করেন। দুনিয়ায়ও এটা ধ্বংসের কারণ হয় এবং পরকালেও শাস্তির কারণ হয়। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ
﴿قُلْ لَّا یَسْتَوِی الْخَبِیْثُ وَ الطَّیِّبُ وَ لَوْ اَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِیْثِ﴾
‘তুমি বলে দাওঃ পবিত্র ও অপবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে।’ (৫ নং সূরাহ মায়িদাহ, আয়াত নং ১০০) অন্য স্থানে রয়েছেঃ
﴿وَ یَجْعَلَ الْخَبِیْثَ بَعْضَهٗ عَلٰى بَعْضٍ فَیَرْكُمَهٗ جَمِیْعًا فَیَجْعَلَهٗ فِیْ جَهَنَّمَ﴾
‘আর কু-জনদের সকলকে একজনের ওপর অপরজনকে স্তুপীকৃত করবেন এবং অতঃপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (৮ নং সূরাহ্ আনফাল, আয়াত নং ৩৭) অন্যত্র মহান আল্লাহ্ বলেনঃ
﴿وَ مَاۤ اٰتَیْتُمْ مِّنْ رِّبًا لِّیَرْبُوَاۡ فِیْۤ اَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا یَرْبُوْا عِنْدَ اللّٰهِ﴾
‘মানুষের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় সুদে যা কিছু তোমরা দিয়ে থাকো, মহান আল্লাহ্র দৃষ্টিতে তা বৃদ্ধি পায় না।’ (৩০ নং সূরাহ রুম, আয়াত নং ৩৯) এজন্যই ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন যে, সুদ বেশি হলেও প্রকৃতপক্ষে তা কমেই যায়। (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -১/৩৯৫/৩৭৫৪, তাফসীর তাবারী -৬/১৫, সুনান ইবনু মাজাহ-২/৭৬৫/২২৭৯) মুসনাদ আহমাদের অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে, আমিরুল মু’মিনীন ‘উমার ফারুক (রাঃ) মাসজিদ হতে বেরিয়ে শস্য ছড়ানো দেখে জিজ্ঞেস করেনঃ এ শস্য কোথা থেকে এসেছে? জনগণ বলেনঃ বিক্রির জন্য এসেছে। তিনি বলেনঃ মহান আল্লাহ্ এতে বরকত দান করুন। জনগণ বলেনঃ হে আমীরুল মু’মিনীন ! এই শস্য উচ্চ মূল্যে বিক্রির জন্য পূর্ব হতেই জমা করে রেখেছিলো। তিনি জিজ্ঞেস করেন, কে জমা করে রেখেছিলো? জনগণ বলেন, একজন হচ্ছে ‘উসমান (রাঃ) ক্রীতদাস ফারুক এবং অপর জন হচ্ছে আপনার আযাদকৃত গোলাম। তিনি উভয়কে ডেকে আনেন এবং বলেনঃ তোমরা কেন এরূপ করেছিলে? তারা বলেঃ আমরা আমাদের মাল দ্বারা ক্রয় করি এবং যখন ইচ্ছে বিক্রি করি তিনি বলেনঃ ‘জেনে রেখো! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মুখে শুনেছিঃ مَنِ احْتَكَرَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ طَعَامَهُمْ ضَرَبَهُ اللهُ بِالْإِفْلَاسِ أَوْ بِجُذَامٍ.
‘যে ব্যক্তি মুসলিমদের মধ্যে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে খাদ্য শস্য জমা করে রাখে তাকে মহান আল্লাহ্ দরিদ্র করে দিবেন অথবা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত করবেন।’ (মুসনাদ আহমাদ -১/২১, সুনান ইবনু মাজাহ-২/৭২৯/হা-২১৫৫) এই কথা শুনে ফাররূখ (রহঃ) বলেনঃ আমি মহান আল্লাহ্ নিকট তাওবাহ করেছি এবং আপনার নিকট অঙ্গীকার করছি যে, এই কাজ আর কখনো করবো না। কিন্তু ‘উমার (রাঃ) -এর আযাদকৃত ক্রীতদাস পুনরায় একথাই বলেঃ আমি আমার মাল দিয়ে ক্রয় করছি এবং লাভ নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে আবার ক্ষতি কি? ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেন, আমি তাকে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াতে দেখেছি।
সুনান ইবনু মাজায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি মুসলিমদের মধ্যে উচ্চ মূল্যের উদ্দেশ্যে খাদ্য শস্য বিক্রি বন্ধ করে রাখে, মহান আল্লাহ্ তাকে দরিদ্র করবেন অথবা কুষ্ঠ রোগী করবেন।’
মহান আল্লাহ্ দান-সাদাকাহকে বৃদ্ধি করেন
অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَ یُرْبِی الصَّدَقٰتِ﴾ তিনি দানকে বৃদ্ধি করেন।’ সহীহুল বুখারীতে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
من تصدق بعدل تمرة مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ وَلَا يَقْبَلُ اللهُ إِلَّا الطِّيبَ وَإِنَّ اللهَ لَيَقْبَلُهَا بِيَمِينِهِ ثُمَّ يُرَبِّيهَا لِصَاحِبِهِ كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ فَلُوَّه، حَتَّى يَكُونَ مِثْلَ الْجَبَلِ
‘যে ব্যক্তি তার হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুরও দান করে, মহান আল্লাহ্ তা ডান হাতে গ্রহণ করেন, অতঃপর তিনি তা বর্ধিত করতে থাকেন যেমন তোমরা তোমাদের পশু লালন পালন করে থাকো এবং এমনকি তিনি তার সাওয়াব বড় পাহাড় সমান করে দেন। (সহীহুল বুখারী-১/৪২৬/হা-৭৪৩০, ৩/৩২৬/হা১৪১০, ফাতহুল বারী ৩/৩২৬, ১৩/৪২৬, সহীহ মুসলিম-২/৬৩/৭০২) আর তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অপবিত্র জিনিস গ্রহণ করেন না। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, একটি খেজুরের পুণ্য উহুদ পাহাড়ের সমান হয়ে থাকে। অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক গ্রাস খাবারে উহুদ পাহাড়ের সমান পুণ্য পাওয়া যায়। সুতরাং তোমরা দান খয়রাত করতে থাকো।
অবিশ্বাসী পাপীদেরকে মহান আল্লাহ্ পছন্দ করেন না
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَاللّٰهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِیْمٍ﴾ মহান আল্লাহ্ অবিশ্বাসী পাপাচারীদেরকে ভালোবাসেন না। ভাবার্থ এই যে, যারা দান খায়রাত করে না, মহান আল্লাহ্র বেশি দেয়ার প্রতিশ্র“তির ওপর আস্থা রেখে ধৈর্যধারণ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে দুনিয়ায় সম্পদ জমা করতে থাকে, জঘন্য ও শারী‘আত পরিপন্থি উপায়ে উপার্জন করে এবং বাতিল ও অন্যয়ভাবে জনগণের মাল ভক্ষণ করে তারা মহান আল্লাহ্র শত্রু। এই কৃতঘ্ন ও পাপীদের প্রতি মহান আল্লাহ্র দয়া ভালোবাসা নেই।
মহান আল্লাহ্ শোকর আদায়কারীর প্রশংসা করেন
অতঃপর যারা মহান আল্লাহ্র রাবুবিয়াতে ঈমান আনে, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলে, সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে, মহান আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, মহান আল্লাহ্ তাদের প্রশংসা করেছেন। তারা সালাত আদায় করে, যাকাত প্রদান করে এবং গরীব আত্মীয়-স্বজনদের হক আদায় করে। তাদের জন্য কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ্র কাছে রয়েছে মহা পুরস্কার ও সম্মান এবং তারা অত্যাচারিত হবে না। তাদের কোন ভয় ও চিন্তা থাকবে না। বরং পরম করুণাময় আল্লাহ্ তাদেরকে সেই দিন বড় বড় পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings