2:273
لِلۡفُقَرَآءِ ٱلَّذِينَ أُحۡصِرُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ لَا يَسۡتَطِيعُونَ ضَرۡبًا فِى ٱلۡأَرۡضِ يَحۡسَبُهُمُ ٱلۡجَاهِلُ أَغۡنِيَآءَ مِنَ ٱلتَّعَفُّفِ تَعۡرِفُهُم بِسِيمَٰهُمۡ لَا يَسۡــَٔلُونَ ٱلنَّاسَ إِلۡحَافًاۗ وَمَا تُنفِقُواۡ مِنۡ خَيۡرٍ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌ٢٧٣
Saheeh International
[Charity is] for the poor who have been restricted for the cause of Allah, unable to move about in the land. An ignorant [person] would think them self-sufficient because of their restraint, but you will know them by their [characteristic] sign. They do not ask people persistently [or at all]. And whatever you spend of good - indeed, Allah is Knowing of it.
মুশরিকদেরকে দান করা প্রসঙ্গ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, মুসলিম সাহাবীগণ তাঁদের মুশরিক আত্মীয়দের সাথে আদান-প্রদান করতে অপছন্দ করতেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এই সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হয়। তখন এই ২৭২নং আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং তাঁদেরকে তাঁদের মুশরিক আত্মীয়দের সাথে লেনদেন করার অনুমতি দেয়া হয়। (হাদীসটি সহীহ। সুনান নাসাঈ -৬/৩০৫/১১০৫২, মুসতাদরাক হাকিম-২/২৮৫) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ ‘সাদাকাহ শুধুমাত্র মুসলিমদেরকে দেয়া হবে।’ যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘ভিক্ষুক যে কোন মতাবলম্বী হোক কেন, তোমরা তাদেরকে সাদাকাহ প্রদান করো। (হাদীসটি য‘ঈফ। তাফসীর ইবনু আবী হাতিম) আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসটি-﴿لَا یَنْهٰىكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِیْنَ لَمْ یُقَاتِلُوْكُمْ فِی الدِّیْنِ وَلَمْ یُخْرِجُوْكُمْ مِّنْ دِیَارِكُمْ﴾ ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি, আর তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের করে দেয়নি’ (৬০ নং মুমতাহিনাহ, আয়াত-৮) এই আয়াতের তাফসীরে ইনশা’আল্লাহ্ আসবে। এখানে মহান আল্লাহ্ বলেন, وَمَاتُنفِقُوْامِنْخَيْرٍفَلانفُسِكُمْ ‘তোমরা যা কিছু খরচ করবে তা নিজেদের উপকারের জন্যই করবে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ﴿وَ مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِاَنْفُسِهِمْ یَمْهَدُوْنَ﴾যারা সৎ কাজ করে তারা নিজেদেরই জন্য রচনা করে সুখ-শয্যা। (৩০ নং সূরাহ্ রূম, আয়াত নং ৪৪) অপর আয়াতে মহান আল্লাহ্ আরো বলেনঃ ﴿ مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهٖ﴾যে ব্যক্তি ভালো কাজ করলো তা তার নিজের জন্যই করলো। (৪১ নং সূরাহ্ হা-মীম সাজদাহ, আয়াত নং ৪৬) এ ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে।অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ وَمَاتُنْفِقُوْنَإِلَّاابْتِغَاءوَجْهِاللهِ হাসান বাসরী (রহঃ) বলেনঃ ‘মুসলিমের প্রত্যেক খরচ মহান আল্লাহ্র জন্যই হয়ে থাকে, যদিও সে নিজেই খায় ও পান করে।’ (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ৩/১১৫) ‘আতা খুরাসানী (রহঃ) এর ভাবার্থ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ যখন তুমি মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে দান করবে তখন দান গ্রহীতা যে কেউ হোক না কেন এবং যে কোন কাজই করুক না কেন তুমি তার পূর্ণ প্রতিদান লাভ করবে।’ (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ৩/১১৫) এই ভাবার্থটিও খুব উত্তম। মোট কথা এই যে, সৎ উদ্দেশ্যে দানকারীর প্রতিদান যে মহান আল্লাহ্র দায়িত্বে রয়েছে তা সাব্যস্ত হয়ে গেলো। এখন সেই দান কোন সৎ লোকের হাতেই যাক বা কোন মন্দ লোকের হাতেই যাক, এতে কিছু যায় আসে না। সে তার সৎ উদ্দেশের কারণে প্রতিদান পেয়েই যাবে। যদিও সে দেখে-শুনে ও বিচার-বিবেচনা করে দান করে থাকে অতঃপর ভুল হয়ে যায় তাহলে তার দানের সাওয়াব নষ্ট হবে না। এ জন্য আয়াতের শেষে প্রতিদান প্রাপ্তির সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃقَالَ رَجُلٌ لَأَتَصَدَّقَنَّ اللَّيْلَةَ بِصَدَقَةٍ، فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ زَانِيَةٍ، فَأَصْبَحَ النَّاسُ يَتَحَدَّثُونَ: تُصُدِّقَ عَلَى زَانِيَةٍ، فَقَالَ: اللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ، لَأَتَصَدَّقَنَّ اللَّيْلَةَ بِصَدَقَةٍ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ غَنِيٍّ، فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ: تُصُدِّقَ الليلة على غني، قال: اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى غَنِيٍّ، لَأَتَصَدَّقَنَّ اللَّيْلَةَ بصدقة، فخرج فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ: تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى سَارِقٍ، فَقَالَ: اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ وَعَلَى غَنِيٍّ وَعَلَى سَارِقٍ، فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ: أَمَّا صَدَقَتُكَ فَقَدْ قُبِلَتْ، وَأَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا أَنْ تَسْتَعِفَّ بِهَا عَنْ زِنَاهَا، وَلَعَلَّ الْغَنِيَّ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقُ مِمَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ، وَلَعَلَّ السَّارِقَ أَنْ يَسْتَعِفَّ بِهَا عَنْ سَرِقَتِهِ.‘এক ব্যক্তি ইচ্ছা করলোঃ ‘আজ আমি রাতে দান করবো।’ অতঃপর সে দান নিয়ে বের হয় এবং একটি ব্যভিচারিনীর হাতে দিয়ে দেয়। সকালে জনগণের মধ্যে এই কথা নিয়ে সমালোচনা হতে থাকে যে, এক ব্যভিচারিণীকে সাদাকাহ দেয়া হয়েছে। এ কথা শুনে লোকটি বললোঃ ‘হে মহান আল্লাহ্! আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা যে, আমার দান ব্যভিচারিণীর হাতে পড়েছে।’ আবার সে বললোঃ ‘আজ রাতেও আমি অবশ্যই সাদাকাহ প্রদান করবো। অতঃপর এক ধনী ব্যক্তিকে দিয়ে দেয়। আবার সকালে জনগণ আলোচনা করতে থাকে যে, রাতে এক ধনী লোককে দান করা হয়েছে। সে বললোঃ হে মহান আল্লাহ্! আপনার জন্যই সমুদয় প্রশংসা যে, আমার দান একজন ধনী ব্যক্তির ওপরে পড়েছে।’ আবার সে বললোঃ ‘আজ রাতেও আমি অবশ্যই দান করবো।’ অতঃপর সে এক চোরের হাতে দিয়ে দেয়। সকালে পুনরায় জনগণের মধ্যে আলোচনা হতে থাকে যে, রাতে এক চোরকে সাদাকাহ দেয়া হয়েছে। তখন সে বললোঃ হে মহান আল্লাহ্! আপনার জন্য সমস্ত প্রশংসা যে, আমার ব্যভিচারিণী, ধনী ও চোরের হাতে পড়েছে।’ অতঃপর সে স্বপ্নে দেখে যে, একজন ফিরিশতা এসে বলেছেনঃ তোমার দানগুলো মহান আল্লাহ্র নিকট গৃহীত হয়েছে। সম্ভবত দুশ্চরিত্র নারীটি তোমার দান পেয়ে ব্যভিচার থেকে বিরত থাকবে,হয়তো ধনী লোকটি এর দ্বারা শিক্ষা গ্রহণ করবেন এবং সেও দান করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে, আর হতে পারে যে, মাল পেয়ে চোরটি চুরি করা ছেড়ে দিবে।’ (সহীহুল বুখারী-৩/৩৪০/১৪২১, ফাতহুল বারী -৩/৩৪০, সহীহ মুসলিম-২/৭০৯/৭৮, মুসনাদ আহমাদ -২/৩২২) কে দান-সাদাকাহ পাওয়ার যোগ্য মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿لِلْفُقَرَآءِالَّذِیْنَاُحْصِرُوْافِیْسَبِیْلِاللّٰهِ﴾ সাদাকাহ ঐ মুহাজিরদের প্রাপ্য যারা ইহলৌকিক সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বদেশ পরিত্যাগ করে, আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে একমাত্র মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে মাদীনায় উপস্থিত হয়েছে। তাদের জীবন যাপনের এমন কোন উপায় নেই যা তাদের জন্য যথেষ্ট হতে পারে এবং তারা সফরও করতে পারে না যে, চলে-ফিরে নিজেদের খাওয়া পরার ব্যবস্থা করতে পারে।’ অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿ وَ اِذَا ضَرَبْتُمْ فِی الْاَرْضِ فَلَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ اَنْ تَقْصُرُوْا مِنَ الصَّلٰوةِ ﴾‘আর যখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে ভ্রমণ করো তখন সালাত সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই।’ (৪ নং সূরাহ্ নিসা, আয়াত নং ১০১) অন্যত্র মহান আল্লাহ্ আরো বলেনঃ﴿عَلِمَ اَنْ سَیَكُوْنُ مِنْكُمْ مَّرْضٰى١ۙ وَ اٰخَرُوْنَ یَضْرِبُوْنَ فِی الْاَرْضِ یَبْتَغُوْنَ مِنْ فَضْلِ اللّٰهِ١ۙ وَ اٰخَرُوْنَ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ﴾‘মহান আল্লাহ্ জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেউ কেউ মহান আল্লাহ্র অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেউ কেউ মহান আল্লাহ্র পথে সংগ্রামে লিপ্ত হবে।’ (৭৩ নং সূরাহ্ মুয্যাম্মিল, আয়াত নং ২০) তাদের অবস্থা যাদের জানা নেই তারা তাদের বাহ্যিক পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে এবং কথা-বার্তা শুনে তাদেরকে ধনী মনে করে। বিশুদ্ধ হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ لَيْسَ الْمِسْكِينُ بِهَذَا الطَّوَّافِ الَّذِي تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ، وَاللُّقْمَةُ وَاللُّقْمَتَانِ، وَالْأُكْلَةُ وَالْأُكْلَتَانِ، وَلَكِنَّ الْمِسْكِينَ الَّذِي لَا يَجِدُ غِنًى يُغْنِيهِ، وَلَا يُفْطَنُ لَهُ فَيُتَصَدقَ عَلَيْهِ، وَلَا يَسْأَلُ النَّاسُ شَيْئًا. ‘ঐ ব্যক্তি মিসকীন নয়, যে বাড়ী বাড়ী ঘুরে বেড়ায়, কোথায়ও হয়তো একটি খেজুর পেলো, কোথায়ও হয়তো দু’এক গ্রাস খাবার পেলো, আবার কোন জায়গায় হয়তো দু’একদিনের খাদ্য প্রাপ্ত হলো। বরং মিসকীন ঐ ব্যক্তি যার নিকট ঐ পরিমাণ খাদ্য নেই যার দ্বারা সে অমুখাপেক্ষী হতে পারে এবং সে তার অবস্থাও এমন করেনি যার ফলে মানুষ তার অভাব অনুভব করে তার প্রতি কিছু অনুগ্রহ করবে। আবার ভিক্ষা করার অভ্যাসও তার নেই।’ (সহীহুল বুখারী-৩/৩৯৯/১৪৭৯, ফাতহুল বারী -৩/৩৯৯, সহীহ মুসলিম-২/১০১/৭১৯, মুসনাদ আহমাদ -২/৩১৬) ইমাম আহমাদ (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (মুসনাদ আহমাদ -১/৩৮৪) কিন্তু যাদের অন্তরদৃষ্টি রয়েছে তাদের কাছে এদের অবস্থা গোপন থাকেনা। যেমন অন্যত্র মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿ سِیْمَاهُمْ فِیْ وُجُوْهِهِمْ ﴾তাদের মুখে সাজদার চিহ্ন থাকবে। (৪৮ নং সূরাহ্ ফাত্হ, আয়াত নং ২৯) অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ্ আরো বলেনঃ ﴿وَ لَتَعْرِفَنَّهُمْ فِیْ لَحْنِ الْقَوْلِ﴾তুমি অবশ্যই কথার ভঙ্গিতে তাদের চিনতে পারবে। (৪৭ নং সূরাহ্ মুহাম্মাদ, আয়াত নং ৩০) অতঃপর তিনি নিম্নের আয়াতটি পাঠ করেনঃلَا يَسْأَلُوْنَ النَّاسَ إِلْحَافًا ‘তারা কাকুতি মিনতি করে কারো কাছে প্রার্থনা করে না’ অর্থাৎ তারা যাঞ্চার দ্বারা মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করে না এবং তাদের কাছে সামান্য কিছু থাকা অবস্থায় তারা মানুষের কাছে হাত বাড়ায় না। প্রয়োজনের উপযোগী কিছু বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও যে ভিক্ষাবৃত্তি পরিত্যাগ করে না তাকেই পেশাগত ভিক্ষুক বলা হয়। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বর্ণনা করেন, আবূ সা‘ঈদ (রহঃ) বলেনঃ আমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছ থেকে কিছু সাহায্য পাবার উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে পাঠালেন। কিন্তু আমি তাঁর কাছে যাওয়ার পর কিছু না চেয়ে ওখানে বসে পড়লাম। তিনি আমার দিকে ফিরে তাকালেন এবং বললেনঃ যে অল্পতে তুষ্টি লাভ করে মহান আল্লাহ্ তার ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে দিবেন, যে ব্যক্তি বিনয়ী হবে মহান আল্লাহ্ তাকে সজ্জন হিসাবে চিহ্নিত করবেন, যে ব্যক্তি তার কাছে যা আছে তাতেই খুশি থাকে মহান আল্লাহ্ তার অভাব পূরণ করে দিবেন, যে সামান্য কিছু থাকা সত্ত্বেও মানুষের কাছে যাঞ্চা করে বেড়ায় মহান আল্লাহ্ তার ভিক্ষাবৃত্তি দূর করবেন না। আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি মনে মনে বললামঃ আমার তো ‘ইয়াকুতাহ’ নামের একটি উষ্ট্রী রয়েছে যার মূল্য ‘সামান্য কিছুর’ এর চেয়ে অনেক বেশি, সুতরাং আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে কোন কিছু না চেয়ে বরং সেখান থেকে চলে আসি। (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -৪/১৩৮, আল মাজমা‘উয যাওয়ায়িদ-৩/৯৫, সুনান আবূ দাঊদ ২/২৭৯, সুনান নাসাঈ -৫/৯৫) অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِه عَلِیْمٌ﴾ তোমাদের সমস্ত দান সম্বন্ধে মহান আল্লাহ্ সম্যক অবগত রয়েছেন।’ অতএব যখন তোমরা সম্পূর্ণরূপে তাঁর মুখাপেক্ষী হয়ে যাবে তখন তিনি তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দিবেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নেই। আল কুর’আনে দান-সাদাকাকারীর প্রশংসা করা হয়েছে ﴿اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ بِالَّیْلِ وَ النَّهَارِ سِرًّا وَّ عَلَانِیَةً فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ١ۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَؔ﴾এরপর মহান আল্লাহ্ ঐসব লোকের প্রশংসা করেছেন যারা মহান আল্লাহ্র নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর পথে খরচ করে। তাদেরকেও প্রতিদান দেয়া হবে এবং তারা যে কোন ভয় ও চিন্তা হতে নিরাপত্তা লাভ করবে। পরিবারের খরচ বহন করার কারণেও তাদেরকে প্রতিদান দেয়া হবে। যেমন সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে, মাক্কা বিজয়ের বছর এবং অন্য বর্ণনায় রয়েছে, বিদায় হাজ্জের বছর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) -কে রোগাক্রান্ত অবস্থায় দেখতে গিয়ে বলেনঃ وَإِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا ازْدَدْتَ بِهَا دَرَجَةً وَرِفْعَةً، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِي فِي امْرَأَتِكَ. ‘তুমি মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যা খরচ করবে তিনি এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন, এমনকি তুমি স্বয়ং তোমার স্ত্রীকে যা খাওয়াবে তারও প্রতিদান তোমাকে দেয়া হবে।’ (সহীহুল বুখারী-১/১৬৫/৫২, ৩/১৯৬/১২৯৫, ৭/৭১২/৪৪০৯, ফাতহুল বারী -৩/১৯৬, সহীহ মুসলিম-৩/১২৫০,১২৫১,/৫, সুনান আবূ দাউদ-৩/১১২/২৮৬৪, জামি‘ তিরমিযী-৪/৩৭৪/২১১৬, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/৪/৭৬৩, মুসনাদ আহমাদ -১/১৭৯) মুসনাদ আহমাদে রয়েছে যেঃ إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا أَنْفَقَ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةً يَحْتَسِبُهَا كَانَتْ لَهُ صَدَقَةً.‘মুসলিম ব্যক্তি সাওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে নিজের ছেলে-মেয়ের জন্য যা খরচ করে তাও সাদাকাহ।’ ইমাম বুখারী (রহঃ) মুসলিম (রহঃ) ’ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (সহীহুল বুখারী- ১/১৯৫/৫৫, মুসনাদ আহমাদ -৪/১২২, ফাতহুল বারী -১/৫৫, সহীহ মুসলিম-২/৬৯৫/৪৮) মহান আল্লাহ্র আনুগত্য লাভ করার উদ্দেশ্যে যারা রাতে ও দিনে গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করে, তাদের প্রভুর নিকট তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না।
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us