2:256
لَآ إِكۡرَاهَ فِى ٱلدِّينِۖ قَد تَّبَيَّنَ ٱلرُّشۡدُ مِنَ ٱلۡغَىِّۚ فَمَن يَكۡفُرۡ بِٱلطَّٰغُوتِ وَيُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ٢٥٦
Saheeh International
There shall be no compulsion in [acceptance of] the religion. The right course has become clear from the wrong. So whoever disbelieves in Taghut and believes in Allah has grasped the most trustworthy handhold with no break in it. And Allah is Hearing and Knowing.
ধর্মের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি নেই মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿لَاۤاِكْرَاهَفِیالدِّیْنِ﴾ কাউকে জোর করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করো না। ইসলামের সত্যতা প্রকাশিত ও উজ্জ্বল হয়ে পড়েছে এবং এর দলীল প্রমানাদি বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং জোর-জবরদস্তি কি প্রয়োজন? যাকে মহান আল্লাহ্ সুপথ প্রদর্শন করবেন, যার বক্ষ খুলে দিবেন, যার অন্তর উজ্জ্বল হবে এবং যার চক্ষু দৃষ্টিমান হবে সে আপনা আপনিই ইসলামের প্রেমে পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু যার অন্তর-চক্ষু অন্ধ এবং কর্ণ বধির সে এর থেকে দূরে থাকবে। অতঃপর যদি তাদেরকে জোরপূর্বক ইসলামে দীক্ষিত করা হয়, তাতেই বা লাভ কি? তাই মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ‘কাউকেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ব্যাপারে জোর-জবরদস্তি করো না।’ আয়াতটি অবতীর্ণের কারণ এ আয়াতটির শান-ই-নুযূল এই যে, মাদীনার মুশরিকরা মহিলাদের সন্তান না হলে এই বলে ‘নযর’ মানতঃ ‘যদি আমাদের ছেলে-মেয়ে হয় তাহলে আমরা তাদেরকে ইয়াহূদী করে ইয়াহূদীদের নিকট সমর্পণ করবো।’ এভাবে তাদের বহু সন্তান ইয়াহূদীদের নিকট ছিলো। অতঃপর এ লোকগুলোও ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয় এবং মহান আল্লাহ্র দ্বীনের সাহায্যকারীরূপে গণ্য হয়। এদিকে ইয়াহূদীদের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ বাঁধে। অবশেষে তাদের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র ও প্রতারণা থেকে মুক্তিলাভের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কার করার নির্দেশ দেন। সেই সময় মাদীনার এই আনসার মুসলিমদের যেসব ছেলে ইয়াহূদীদের নিকট ছিলো তাদেরকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে এনে মুসলিম করার উদ্দেশে তাঁরা ইয়াহূদীদের কাছ থেকে ফেরত চান। সেই সময় এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং তাদেরকে বলা হয়ঃ‘তোমরা তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে জোর-জবরদস্তি করো না। নিশ্চয়ই বাতিল পথ হতে সৎপথের পার্থক্য পরিস্কার হয়ে গেছে। (হাদীস সহীহ। তাফসীর তাবারী -৫/৪০৮/৫৮১২, সুনান আবূ দাউদ-৩/৫৮/২৬৮২, সুনান নাসাঈ (কুবরা) -৬/৩৫৪/১১০৪৮, সহীহ ইবনু হিব্বান১/১৭৭/১৪০, সুনান বায়হাক্বী -৯/১৮৬) ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) এবং ইমাম নাসাঈ (রহঃ) -ও তাদের গ্রন্থে হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেছেন। (হাদীস নং ৩/১৩২ ও ৬/৩০৪) একটি বর্ণনায় আছে যে, আনসারদের বানূ সালিম ইবনু আওফ গোত্রের মধ্যে হুসাইন নামক একজন লোক ছিলেন। তিনি নিজে মুসলিম হলেও তার দু’টি ছেলে খ্রিষ্টান ছিলো। একবার তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আবেদন করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁকে অনুমতি দেন তাহলে ছেলে দু’টিকে তিনি জোরপূর্বক মুসলিম বানাবেন। কেননা তারা স্বেচ্ছায় মুসলিম হতে চায় না। তখন এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং এরূপ করতে নিষেধ করে দেয়া হয়। (হাদীসটি য‘ঈফ। তাফসীর তাবারী -৫/৪০৯/৫৮১৭) ‘আলিমদের অনেকই মনে করেন যে, এই আয়াতটি আহলে কিতাবদের ব্যাপারে প্রযোজ্য। যারা তাওরাত ও ইনজীলের রহিতকরণ ও পরিবর্তনের পূর্বে ‘ঈসা (আঃ) -এর ধর্ম গ্রহণ করেছিলো। আর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জিযিয়া প্রদানে সম্মত হয়েছিলো। কেউ কেউ বলেন যে, যুদ্ধের আয়াত এ আয়াতটিকে রহিত করেছে। এখন সমস্ত অমুসলমানকে এই পবিত্র ধর্মের প্রতি আহ্বান করা অবশ্য কর্তব্য। যদি কেউ এই ধর্ম গ্রহণে অস্বীকার করে এবং মুসলমানদের অধীনতা স্বীকার করে জিযিয়া প্রদানে অসম্মতি জানায় তবে অবশ্যই মুসলিমগণ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। যেমন মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿سَتُدْعَوْنَ اِلٰى قَوْمٍ اُولِیْ بَاْسٍ شَدِیْدٍ تُقَاتِلُوْنَهُمْ اَوْ یُسْلِمُوْنَ﴾ ‘তোমাদের যুদ্ধ করতে ডাকা হবে খুবই শক্তিশালী এক জাতির বিরুদ্ধে, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে অথবা তারা আত্মসমর্পণ করবে।’ (৪৮নং সূরাহ আল ফাতহ, আয়ত-১৬) অন্যত্র মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿يٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنٰفِقِیْنَ وَاغْلُظْ عَلَیْهِمْ﴾‘হে নবী! কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করো।’ (৯ নং সূরাহ আত তাওবাহ, আয়াত-৭৩) অন্যত্র মহান আল্লাহ্ বলেনঃ﴿یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قَاتِلُوا الَّذِیْنَ یَلُوْنَكُمْ مِّنَ الْكُفَّارِ وَلْیَجِدُوْا فِیْكُمْ غِلْظَةً١ؕ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ﴾ ‘হে মু’মিনগণ! যে সব কাফির তোমাদের নিকটবর্তী তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, যাতে তারা তোমাদের মধ্যে দৃঢ়তা দেখতে পায়। আর জেনে রেখো যে, মহান আল্লাহ্ মুত্তাক্বীদের সাথে আছেন।’ (৯নং সূরাহ আত তাওবাহ, আয়াত-১২৩) সহীহ হাদীসে আছেঃ عَجِبَ رَبُّكَ مِنْ قَوْمٍ يُقَادُونَ إِلَى الْجَنَّةِ فِي السَّلَاسِلِ. ‘তোমার প্রতিপালক ঐ লোকদের ওপর বিস্মিত হোন যাদেরকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে যুদ্ধের মাঠ হতে টেনে আনা হয়। অতঃপর তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং এর ফলে তাদের ভিতর ও বাহির ভালো হয়ে যায় এবং তারা জান্নাতের যোগ্য হয়ে যায়।’ (সহীহুল বুখারী-৬/১৬৮/৩০১০, সুনান আবূ দাউদ-৩/৫৬/২৬৭৭) ইমাম আহমাদ (রহঃ) তাঁর হাদীস গ্রন্থে আনাস (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন লোককে বললেনঃ ‘মুসলিম হয়ে যাও।’ সে বলেঃ আমার মন চায়না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মন না চাইলেও মুসলিম হও। (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -৩/১০৯, ৩/১৮১, আল মাজমা‘উয যাওয়ায়িদ-৫/৩০৫) এই হাদীসটি ‘সুলাসী।’ অর্থাৎ মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতে তিনজন বর্ণনাকারী রয়েছেন। কিন্তু এর দ্বারা এটা মনে করা উচিত হবে না যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বাধ্য করেছিলেন। বরং তাঁর এই কথার ভাবার্থ হচ্ছেঃ তুমি কালিমা পড়ে নাও, একদিন হয়তো এমন আসবে যে, মহান আল্লাহ্ তোমার অন্তর খুলে দিবেন এবং তুমি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যাবে। তুমি হয়তো উত্তম নিয়ম ও খাঁটি ‘আমলের তাওফীক লাভ করবে। তাওহীদ হলো ঈমানের মূল স্তম্ভ মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿ فَمَنْ یَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَیُؤْمِنْۢ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى١ۗ لَا انْفِصَامَ لَهَا١ؕ وَاللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴾ ‘যে ব্যক্তি প্রতিমা বা মূর্তি, বাতিল উপাস্য ও শায়তানী কথা পরিত্যাগ করে মহান আল্লাহ্র একাত্মবাদে বিশ্বাসী হয় এবং সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে সে সঠিক পথের ওপর রয়েছে। আবুল কাসীম আল বাগাবী (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ যে, جِبْت শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে যাদু এবং طَاغُوْت শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে যা শায়তান। বীরত্ব ও ভীরুত্ব এ দু’টি হচ্ছে উটের দু’দিকের দু’টি সমান বোঝা যা মানুষের মধ্যে রয়েছে। একজন বীর পুরুষ এক অপরিচিত লোকের সাহায্যার্থে জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করে না। পক্ষান্তরে একজন কাপুরুষ আপন মায়ের জন্যও সম্মুখে অগ্রসর হতে সাহসী হয় না। মানুষের প্রকৃত মর্যাদা হচ্ছে তার ধর্ম। মানুষের সত্য বংশ হচ্ছে তার উত্তম চরিত্র, সে যে বংশেরই লোক হোক না কেন। (তাফসীর তাবারী -৫/৪১৭/৫৮৩৪) ‘উমার (রাঃ) -এর طَاغُوْت-এর অর্থ ‘শায়তান’ নেয়া যথার্থই হয়েছে। কেননা সমস্ত মন্দ কাজই এর অন্তর্ভুক্ত যেগুলো অজ্ঞতা যুগের লোকদের মধ্যে বিদ্যমান ছিলো। যেমন মূর্তি পূজা, তাদের কাছে অভাব অভিযোগ পেশ করা এবং বিপদের মুহুর্তে তাদের নিকট সাহায্য চাওয়া ইত্যাদি। অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى ﴾ সে দৃঢ়তর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরল।’ অর্থাৎ ধর্মের সুউচ্চ ও শক্ত ভিত্তিকে গ্রহণ করলো যা কখনো ছিড়ে যাবে না। সুতরাং এ ব্যক্তি সুদৃঢ় অবস্থানে অবস্থান করবে এবং সরল সঠিক পথে অগ্রসর হবে। عُرْوَةِالْوُثْقٰى١ۗ শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে, ঈমান, ইসলাম, মহান আল্লাহ্র একাত্মবাদ, কুর’আন ও মহান আল্লাহ্র পথের প্রতি ভালোবাসা এবং তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য শত্রুতা পোষণ করা। এই রজ্জু তার জান্নাতে প্রবেশ লাভ পর্যন্ত ছিড়ে যাবে না। অন্য স্থানে মহান আল্লাহ্ বলেনঃ﴿ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتّٰى یُغَیِّرُوْا مَا بِاَنْفُسِهِمْ ﴾ ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতোক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে।’ (১৩ নং সূরাহ্ আর রা‘দ, আয়াত নং ১১) মুজাহিদ (রহঃ) বলেনঃ ধারণ করার জন্য শক্ত হাতল হচ্ছে ঈমান যা বিশ্বাস। (তাফসীর তাবারী ৫/৪২১) মুসনাদ আহমাদের একটি হাদীসে রয়েছে, কায়িস ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ ‘আমি মাসজিদে নাবাবীতে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় সেখানে এক ব্যক্তির আগমন ঘটে। তাঁর মুখমণ্ডলে মহান আল্লাহ্ভীতির লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিলো। তিনি হালকাভাবে দুই রাক‘আত সালাত আদায় করেন। জনগণ তাকে দেখে মন্তব্য করেনঃ এই লোকটি জান্নাতী। তিনি মাসজিদ হতে বের হলে আমিও তার পিছনে গমন করি। তার সাথে আমার কথাবার্তা চলতে থাকে। আমি তার মনোযোগ আকর্ষণ করে বলিঃ ‘আপনার আগমনকালে জনগণ আপনার সম্বন্ধে এরূপ মন্তব্য করেছিলো। তিনি বলেনঃ সুবহানাল্লাহ! কারো এরূপ কথা বলা উচিত নয় যা তার জানা নেই। তবে হ্যাঁ, এরূপ কথা তো অবশ্যই রয়েছে যে, আমি একবার স্বপ্নে দেখি, যেন একটি সবুজ শ্যামল ফুল বাগানে রয়েছি। ঐ বাগানের মধ্যস্থলে একটি লোহার স্তম্ভ রয়েছে যা ভূমি হতে আকাশ পর্যন্ত উঠে গেছে। এর চুড়ায় একটি আংটা রয়েছে। আমাকে এর ওপরে যেতে বলা হয়। আমি বলি যে, আমি তো উঠতে পারবো না। অতঃপর এক ব্যক্তি আমাকে ধরে থাকে এবং আমি অতি সহজেই উঠে যাই। তারপর আমি আংটিটিকে ধরে থাকি। লোকটি আমাকে বলেঃ খুব শক্ত করে ধরে থাকো। আংটিটি আমি ধরে রয়েছি এই অবস্থায়ই আমার ঘুম ভেঙে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আমি আমার এই স্বপ্নের কথা বর্ণনা করলে তিনি বলেনঃ‘ফুলের বাগানটি হচ্ছে ইসলাম, স্তম্ভটি ধর্মের স্তম্ভ এবং আংটিটি হচ্ছে عُرْوَةوُثْقَى তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এই লোকটি হচ্ছেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) । (মুসনাদ আহমাদ -৫/৪৫২, সহীহুল বুখারী-১২/৪১৮/৭০১৪, ১২/৪১৪/৭০১০, ৭/১৬১/৩৮১৩, সহীহ মুসলিম-৪/১৪৯/১৯৩১) এই হাদীসটি সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে। (ফাতহুল বারী -৭/১৬১, ২/৪১৮; ৪/১৯৩০) মুসনাদ আহমাদে রয়েছে যে তিনি সে সময় বৃদ্ধ ছিলেন ফলে লাঠির ওপর ভর দিয়ে মাসজিদে নাবাবীতে এসেছিলেন এবং একটি স্তম্ভের পিছনে সালাত পড়েছিলেন। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলে জান্নাত মহান আল্লাহ্র জিনিস। তিনি যাকে চান তাকেই তথায় নিয়ে যান। তিনি স্বপ্নের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন এক ব্যক্তি আমাকে একটি লম্বা চওড়া পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন মাঠে নিয়ে যান। তথায় আমি বাম দিকে চলতে থাকলে তিনি আমাকে বলেনঃ তুমি এই রূপ নও। আমি তখন ডান দিকে চলতে থাকি। হঠাৎ সুউচ্চ পাহাড় আমার চোখে পড়ে। তিনি আমার হাত ধরে আমাকে ওপরে উঠিয়ে নেন। আর এভাবে আমি চূড়া পর্যন্ত পৌছে যাই। তথায় আমি একটি উঁচু লোহার স্তম্ভ দেখতে পাই। এর মাথায় একটি সোনার কড়া ছিলো। আমাকে তিনি ঐ স্তম্ভের ওপর চড়িয়ে দেন। আমি ঐ কড়াটি ধরে নেই। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, খুব শক্ত করে ধরছো তো? আমি বলি হ্যাঁ। তিনি সজোরে ঐ স্তম্ভের ওপর পায়ের আঘাত করে বেরিয়ে যান এবং কড়াটি আমার হাতে থেকে যায়। অতঃপর এই স্বপ্নটি আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট বর্ণনা করি। তিনি বলেন এটা খুব উত্তম স্বপ্ন। মাঠটি হচ্ছে পুনরুত্থানের মাঠ। বাম দিকের পথটি হচ্ছে জাহান্নামের পথ। সুউচ্চ পর্বতটি হচ্ছে ইসলামের শহীদদের স্থান। কড়াটি হচ্ছে ইসলামের কড়া। মৃত্যু পর্যন্ত এটাকে শক্ত করে ধরে থাকো। এরপর ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেনঃ আমার আশাতো এই যে, মহান আল্লাহ্ আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। (মুসনাদ আহমাদ -৫/৪৫২, ৪৫৩, সুনান ইবনু মাজাহ-২/১২৯১/৩৯২০, সহীহ মুসলিম-৪/১৫০/১৯৩১)
Arabic Font Size
30
Translation Font Size
17
Arabic Font Face
Help spread the knowledge of Islam
Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.
Support Us