Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 246
Saheeh International
Have you not considered the assembly of the Children of Israel after [the time of] Moses when they said to a prophet of theirs, "Send to us a king, and we will fight in the way of Allah "? He said, "Would you perhaps refrain from fighting if fighting was prescribed for you?" They said, "And why should we not fight in the cause of Allah when we have been driven out from our homes and from our children?" But when fighting was prescribed for them, they turned away, except for a few of them. And Allah is Knowing of the wrongdoers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৪৬-২৫২ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings