2:244

وَقَٰتِلُواۡ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱعۡلَمُوٓاۡ أَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ٢٤٤

Saheeh International

And fight in the cause of Allah and know that Allah is Hearing and Knowing.

Tafsir "Ibn Kathir Partial" (Bengali)

মুত্যু ঘটানো লোকদের বর্ণনা ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এই লোকগুলো সংখ্যায় চার হাজার ছিলো। অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, তারা ছিলো আট হাজার। ইবনু আবী হাতিম (রহঃ) বর্ণনা করেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আয়াতে যে লোকদের কথা বলা হয়েছে তারা ‘দাওয়ারদান’ নামক এক এলাকার বাসিন্দা ছিলো। ‘আলী ইবনু ‘আসিম (রহঃ) -ও বলেন যে, তারা দাওয়ারদান এলাকার অধিবাসী ছিলো যা ‘ইরাকের ওয়াসিত নামক স্থান থেকে কয়েক মাইল দূরে একটি গ্রাম। ওয়াকী‘ ইবনু জাররাহ (রহঃ) তার তাফসীরে বর্ণনা করেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তারা সংখ্যায় ছিলো চার হাজার। প্লেগের ভয়ে তারা নিজ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা বলেছিলোঃ আমাদের এমন এক স্থানে চলে যাওয়া উচিত যেখানে গেলে মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। অতঃপর তারা এমন এক এলাকায় উপস্থিত হয় যেখানে পৌঁছার পর মহান আল্লাহ্‌ বলেন, ‘মরে যাও’ ফলে তারা সবাই সেখানেই মারা যায়। কিছু কাল অতিক্রান্ত হওয়ার পর কোন এক নবী ঐ স্থান অতিক্রম করার সময় মহান আল্লাহ্‌র কাছে দু‘আ করলে মহান আল্লাহ্‌ তার দু‘আ কবূল করে তাদেরকে পুনর্জীবিত করেন। তাদের ব্যাপারেই মহান আল্লাহ্‌ এ আয়াতটি (২ নং সূরাহ বাকারাহ, আয়াত নং ২৪৩) নাযিল করেন। কেহ কেউ বলেন যে, তারা একটি জনশূন্য নির্মল বায়ুযুক্ত খোলা মাঠে অবস্থান করছিলো। অতঃপর তারা দু’জন ফিরিশতার চিৎকারে ধ্বংস হয়েগিয়েছিলো। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার ফলে তাদের অস্থিগুলোও ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। সেই জায়গায় জনবসতি গড়ে উঠে। একবার হিযকীল নামে বানী ইসরাঈলের একজন নবী সেখান দিয়ে গমন করেন। তিনি তাদের পুনর্জীবনের জন্য প্রার্থনা করেন এবং মহান আল্লাহ্‌ তার প্রার্থনা কবূল করেন। মহান আল্লাহ্‌ নির্দেশ দেনঃ ‘তুমি বলো, ‘হে গলিত অস্থিগুলো! মহান আল্লাহ্‌র নির্দেশক্রমে তোমরা একত্রিত হয়ে যাও।’ অতঃপর প্রত্যেক শরীরের অস্থির কাঠামো দাঁড়িয়ে গেলো। এরপর তার ওপর মহান আল্লাহ্‌র নির্দেশ হলোঃ ‘তুমি বলো, ‘হে অস্থিগুলো! মহান আল্লাহ্‌র নির্দেশক্রমে তোমরা গোশত, শিরা ইত্যাদিও তোমাদের ওপর মিলিয়ে নাও।’ অতঃপর ঐ নবী (আঃ) -এর চোখের সামনে এটাও হয়ে গেলো। এরপর তিনি মহান আল্লাহ্‌র নির্দেশক্রমে আত্মাগুলোকে সম্বোধন করে বলেনঃ ‘হে আত্মাসমূহ! তোমরা মহান আল্লাহ্‌র হুকুমে পূর্বের নিজ নিজ দেহের ভিতর প্রবেশ করো।’ সাথে সাথে যেমন তারা এক সাথে সব মরে গিয়েছিলো তেমনই সবাই এক সাথে জীবিত হয়ে গেলো এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের মুখে উচ্চারিত হলোঃ سُبْحَانَكَلَاإِلٰهَإِلَّاأَنْتَ অর্থাৎ ‘আপনি পবিত্র! আপনি ছাড়া কেউ উপাস্য নেই।’ কিয়ামতের দিন ঐ দেহের সাথেই দ্বিতীয়বার আত্মার উত্থিত হওয়ার এটা দলীল। অতঃপর বলা হচ্ছেঃ ﴿اِنَّاللّٰهَلَذُوْفَضْلٍعَلَىالنَّاسِ﴾মানুষের ওপর মহান আল্লাহ্‌র বড়ই অনুগ্রহ রয়েছে যে, তিনি মহাশক্তির বড় বড় নিদর্শনাবলী তাদেরকে প্রদর্শন করছেন। কিন্তু ﴿اَكْثَرَالنَّاسِلَایَشْكُرُوْنَ﴾এটা সত্ত্বেও অধিকাংশ লোক মহান আল্লাহ্‌র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে না। এ আয়াত থেকে জানা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ্‌ ছাড়া প্রাণ রক্ষা ও আশ্রয়লাভে অন্য কোন উপায় নেই। ঐ লোকগুলো প্লেগের ভয়ে পলায়ন করছিলো এবং ইহলৌকিক জীবনের প্রতি লোভী ছিলো, তাই তাদের প্রতি মহান আল্লাহ্‌র শাস্তি এসে যায় এবং তারা ধ্বংস হয়। মুসনাদ আহমাদে রয়েছে, যখন ‘উমার (রাঃ) সিরিয়ার দিকে গমন করেন এবং ‘সারাগ’ নামক স্থানে পৌঁছেন তখন আবূ ‘উবাইদাহ ইবনু জাররাহ (রাঃ) প্রমুখ সেনাপতিদের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটে। তারা তাঁকে সংবাদ দেয় যে, সিরিয়ায় প্লেগ রোগ হয়েছে। তখন তারাও সেখানে যাবেন নাকি যাবে না এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়। অবশেষে, ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আউফ (রাঃ) এসে তাদের সাথে মিলিত হোন এবং বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃإِذَا كَانَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ فِيهَا فَلَا تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ، وَإِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلَا تَقْدَمُوا عَلَيْهِ" فَحَمِدَ اللَّهَ عُمَرُ ثُمَّ انْصَرَفَ. ‘যখন এমন জায়গায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে যেখানে তোমরা অবস্থান করছো তখন তোমরা তার ভয়ে পলায়ন করো না। আর যখন তোমরা কোন জায়গায় বসে সেখানকার সংবাদ শুনতে পাও তখন তোমরা সেখানে যেয়ো না।’ ‘উমার (রাঃ) এ কথা শুনে মহান আল্লাহ্‌র প্রশংসা করে সেখান হতে ফিরে যান। (মুসনাদ আহমাদ -১/১৯৪/১৬৮২, সহীহুল বুখারী-৬/৫৯২/৩৪৭৩, ফাতহুল বারী -১০/১৮৯, ১৯০১২/৩৬১, সহীহ মুসলিম-৪/১৭৪২/১০০) জিহাদ থেকে পলায়ন করলেই মৃত্যু থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না অতঃপর বলা হচ্ছেঃ ﴿ وَ قَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴾ ঐ লোকদের পলায়ন যেমন তাদেরকে মৃত্যু হতে রক্ষা করতে পারলো না, তদ্রুপ তোমাদেরও যুুদ্ধ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বৃথা। মৃত্যু ও আহার্য দু’টোই ভাগ্যে নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। নির্ধারিত আহার্য বাড়বেও না কমবেও না। তদ্রুপ মৃত্যুও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেও আসবে না অথবা পিছনেও সরে যাবে না। অন্য জায়গায় রয়েছেঃ﴿ اَلَّذِیْنَ قَالُوْا لِاِخْوَانِهِمْ وَ قَعَدُوْا لَوْ اَطَاعُوْنَا مَا قُتِلُوْا قُلْ فَادْرَءُوْا عَنْ اَنْفُسِكُمُ الْمَوْتَ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴾ ‘ওরা তারা, যারা গৃহে বসে স্বীয় নিহত ভাইদের সম্বন্ধে বলেঃ যদি তারা আমাদের কথা মান্য করতো তাহলে নিহত হতো না। তুমি বলোঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে নিজেদেরকে মৃত্যু হতে রক্ষা করো। (৩ নং সূরাহ্ আলি ‘ইমরান, আয়াত নং ১৬৮) অন্যস্থানে রয়েছেঃ﴿وَقَالُوْا رَبَّنَا لِمَ كَتَبْتَ عَلَیْنَا الْقِتَالَ١ۚ لَوْ لَاۤ اَخَّرْتَنَاۤ اِلٰۤى اَجَلٍ قَرِیْبٍ١ؕ قُلْ مَتَاعُ الدُّنْیَا قَلِیْلٌ١ۚ وَالْاٰخِرَةُ خَیْرٌ لِّمَنِ اتَّقٰى١۫ وَ لَا تُظْلَمُوْنَ فَتِیْلًا۝۷۷ اَیْنَ مَا تَكُوْنُوْا یُدْرِكْكُّمُ الْمَوْتُ وَ لَوْ كُنْتُمْ فِیْ بُرُوْجٍ مُّشَیَّدَةٍ ﴾ ‘আর তারা বললোঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি কেন আমাদের ওপর যুদ্ধ ফরয করলেন? কেন আমাদের আর কিছু কালের জন্য অবসর দিলেন না? তুমি বলোঃ পার্থিব ফায়দা সীমিত এবং ধর্মভীরুগণের জন্য পরকালই কল্যাণকর; এবং তোমরা খর্জুর বীজ পরিমাণও অত্যাচারিত হবে না। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে পেয়ে যাবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দূর্গে অবস্থান করো। (৪নং সূরাহ নিসা, আয়াত নং৭৭-৭৮) এ স্থলে ইসলামী সৈনিকদের উদ্যমশীল নেতা, বীর পুরুষদের অগ্রগামী, মহান আল্লাহ্‌র তরবারী এবং ইসলামের আশ্রয়স্থল আবূ সুলাইমান খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাঃ) -এর ঐ উক্তি উদ্ধৃত করা সম্পূর্ণ সময়োপযোগী হবে যা তিনি ঠিক মৃত্যুর সময় বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ ‘মৃত্যুকে ভয়কারী, যুদ্ধ ক্ষেত্র হতে পলায়নকারী কাপুরুষের দল কোথায় রয়েছে? তারা দেখুক যে, আমার গ্রন্থিসমূহ মহান আল্লাহ্‌র পথে আহত হয়েছে। দেহের কোন জায়গা এমন নেই যেখানে তীর, তরবারী , বর্শা ও বল্লমের আঘাত লাগেনি। অথচ দেখো যে, আমি যুদ্ধ ক্ষেত্রে না থেকে বিছানায় পড়ে মৃত্যু বরণ করছি। (তাহযিব আত তাহযিব ৩/১২৪) ‘উত্তম ঋণ’ এবং এর প্রতিদান ﴿ مَنْ ذَا الَّذِیْ یُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا ﴾ অতঃপর বিশ্বপ্রভু তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর পথে খরচ করার উৎসাহ দিচ্ছেন। এরূপ উৎসাহ তিনি বিভিন্ন স্থানে দিয়েছেন। হাদীস-ই নযুলেও রয়েছেঃ ‘কে এমন আছে যে, সেই মহান আল্লাহ্‌কে ঋণ দিবে যিনি না দরিদ্র, আর না অত্যাচারী?’ (সহীহ মুসলিম-১/১৭১/৫২২, সুনান বায়হাক্বী-৩/২, মুসনাদ আবূ আওয়ানাহ-১/১৪৫) এই আয়াতটি (২ ঃ ২৪৫) শুনে আবুদ দাহ্দাহ আনসারী (রাঃ) বলেছিলেনঃ হে মহান আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! ‘মহান আল্লাহ্‌ কি আমাদের নিকট ঋণ চাচ্ছেন?’ তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ’। আবূদ দাহ্দাহ (রাঃ) তখন বলেনঃ ‘আমাকে আপনার হাতখানি দিন।’ অতঃপর তিনি তার হাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হতে নিয়ে বলেনঃ ‘আমি আমার ছয়শ’ খেজুর গাছ বিশিষ্ট বাগানটি আমার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত মহান প্রভুকে ঋণ প্রদান করলাম।’ সেখান হতে সরাসরি তিনি বাগানে আগমন করেন এবং স্ত্রীকে ডাক দেনঃ ‘হে উম্মুদ দাহ্দাহ!’ স্ত্রী উত্তরে বলেনঃ ‘আমি উপস্থিত রয়েছি।’ তখন তিনি তাকে বলেনঃ ‘তুমি বেরিয়ে এসো। আমি এই বাগানটি আমার মহা সম্মানিত প্রভুকে ঋণ দিয়েছি।’ (হাদীসটি য‘ঈফ। তাফসীর ইবনু আবী হাতিম, আল মাজমা‘উযযাওয়ায়িদ-৩/১১৩) ‘করয-ই হাসান’ এর ভাবার্থ হলো মহান আল্লাহ্‌র পথে খরচ করা, সন্তানদের জন্য খরচ করা এবং মহান আল্লাহ্‌র পবিত্রতাও বর্ণনা করা। অতঃপর মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ﴿فَیُضٰعِفَهٗ لَهٗۤ اَضْعَافًا كَثِیْرَةً﴾ মহান আল্লাহ্‌ তা দ্বিগুণ বা বহুগুণ করে দিবেন।’ যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ﴿مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۢبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ كُلِّ سُنْۢبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ١ؕ وَ اللّٰهُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَآءُ﴾ ‘যারা মহান আল্লাহ্‌র পথে স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা যেমন একটি শস্য বীজ, তা হতে উৎপন্ন হলো সাতটি শীষ প্রথ্যেক শীষে উৎপন্ন হলো একশত শস্য, এবং মহান আল্লাহ্‌ যার জন্য ইচ্ছা করেন বর্ধিত করে দেন। (২ নং সূরাহ বাকারাহ, আয়াত নং ২৬১) এই আয়াতের তাফসীর ইনশা’আল্লাহ্‌ অতি সত্ত্বরই আসছে। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) -কে আবূ ‘উসমান আন নাহদী (রহঃ) জিজ্ঞেস করেন যে, আমি শুনেছি আপনি বলেন যে, এক একটি পুণ্যের বিনিময়ে এক লক্ষ পুণ্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন এতে তুমি বিস্ময়বোধ করছো? আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট শুনেছি একটি পুণ্যের বিনিময়ে দু’লক্ষ পুণ্য পাওয়া যায়। (হাদীসটি সহীহ। মুসনাদ আহমাদ -২/২৯৬/৭৯৩২) কিন্ত এ হাদীসটি গরীব। অতঃপর মহান আল্লাহ্‌ বলেন, ‘আহার্যের হ্রাস ও বৃদ্ধি মহান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ্‌র পথে খরচ করায় কার্পণ্য করো না। যাকে তিনি বেশি দিয়েছেন তার মধ্যেও যুক্তি সঙ্গত কারণ রয়েছে এবং যাকে দেননি তার মধ্যেও দূরদর্শীতা রয়েছে। তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন তাঁর নিকট প্রত্যাবতীর্ত হবে।

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us