Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 242
Saheeh International
Thus does Allah make clear to you His verses that you might use reason.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
সূরাহ্ আল বাক্বারার ২৪০ নং আয়াত বাতিল হওয়া প্রসঙ্গ
অধিকাংশ মুফাস্সিরের উক্তি এই যে, এই আয়াতটি (২৪০নং আয়াত) এর পূর্ববর্তী আয়াত (২৩৪ নং আয়াত, অর্থাৎ চার মাস দশ দিন ইদ্দত বিশিষ্ট আয়াত) দ্বারা রহিত হয়েছে। ইবনু যুবাইর (রাঃ) ‘উসমান (রাঃ) -কে বলেনঃ ‘এ আয়াতটি রহিত হয়ে গেছে, সুতরাং আপনি এটাকে আর কুর’আন মাজীদের মধ্যে লিখিয়ে নিচ্ছেন কেন?’ তিনি বলেনঃ হে ভ্রাতুস্পুত্র! পূর্ববর্তী কুর’আনে যেমন এটা বিদ্যমান রয়েছে তেমনই এখানেও থাকবে। আমি কোন হের ফের করতে পারি না।’ (সহীহুল বুখারী- ৮/৪৮/৪৫৩৬, ফাতহুল বারী -৮/৪২) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ ‘পূর্বে এই নির্দেশ ছিলো যে, পূর্ণ এক বছর ঐ বিধবা স্ত্রীদেরকে তাদের মৃত স্বামীদের সম্পদ হতে খাদ্য-পোশাক দিতে হবে এবং তাদেরকে ঐ বাড়ীতে রাখতে হবে। অতঃপর উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আয়াত এটাকে রহিত করে এবং স্বামীর সন্তান থাকলে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে স্ত্রীর জন্য এক অষ্টমাংশ, আর সন্তান না থাকলে এক চতুর্থাংশ নির্ধারণ করা হয়। আর স্ত্রী ইদ্দতকাল নির্ধারিত হয় চার মাস দশ দিন।’ (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম২/৮৭১)
অধিকাংশ সাহাবী (রাঃ) ও তাবি‘ঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। এই আয়াতটি রহিত হয়েছে। সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়াব (রহঃ) বলেন যে, সূরাহ্ আহযাবের ﴿یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنٰتِ﴾ এই আয়াত দ্বারা সূরাহ্ বাক্বারার এই হাদীসটিকে রহিত করা হয়েছে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, এক বছরের মধ্যে চার মাস দশ দিন তো হচ্ছে মূল ইদ্দতকাল এবং এটা অতিবাহিত করা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। আর অবশিষ্ট সাত মাস ও বিশ দিন স্ত্রী তার মৃত স্বামীর বাড়ীতেও থাকতে পারে অথবা চলেও যেতে পারে। মীরাসের আয়াত এটাকেও মানসূখ করে দিয়েছে। সে যেখানে পারে সেখানে গিয়ে ইদ্দত পালন করবে। বাড়ীর খরচ বহন স্বামীর দায়িত্বে নেই। সুতরাং এসব উক্তি দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, এই আয়াত তো এক বছরের ইদ্দতকে ওয়াজিবই করেনি। সুতরাং রহিত হওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। এটা তো শুধুমাত্র স্বামীর ওয়াসীয়াত এবং সেটাকেও স্ত্রী ইচ্ছা করলে পুরা করবে, আর ইচ্ছা না হলে করবে না। তার ওপর কোন বাধ্য বাধকতা নেই।
সুতরাং স্ত্রীরা যদি পুরা এক বছর তাদের মৃত স্বামীদের বাড়ীতেই থাকে তাহলে তাদেরকে বের করে দেয়া হবে না। যদি তারা ইদ্দতকাল কাটিয়ে সেচ্ছায় চলে যায় তাহলে তাদেরকে বাধা দেয়া হবে না।
ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ) -ও এই উক্তিকেই পছন্দ করেন। আরো বহু লোক এটাকেই গ্রহণ করে থাকেন। আর অবশিষ্ট দল এটাকে ‘মানসূখ’ বলে থাকেন। এখন যদি ইদ্দতকালের পরবর্তী কাল ‘মানসূখ’ হওয়াই তাদের উদ্দেশ্য হয় তাহলে তো ভালো কথা, নচেৎ এ ব্যাপারে ইমামগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন যে, স্ত্রীকে অবশ্যই মৃত স্বামীর বাড়ীতে ইদ্দতকাল অতিবাহিত করতে হবে। তাদের দলীল হচ্ছে মুওয়াত্তা মালিকের এ হাদীসটিঃ আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) -এর ফারী‘আহ বিনতি মালিক (রাঃ) -এর নিকট এসে বলেনঃ ‘আমাদের কৃতদাসিরা পালিয়ে গিয়েছিলো। আমার স্বামী তাদের খোঁজে বেরিয়েছিলেন। ‘কুদুম’ নামক স্থানে তার সাথে তাদের সাক্ষাৎ ঘটে এবং তারা তাকে হত্যা করে। তার কোন ঘর-বাড়ী নেই যেখানে আমি ইদ্দতকাল অতিবাহিত করবো এবং কোন পানাহারের জিনিসও নেই। সুতরাং আপনার অনুমতি হলে আমি আমার পিত্রালয়ে চলে গিয়ে সেখানে আমার ইদ্দতকাল কাটিয়ে দেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘অনুমতি দেয়া হলো।’ আমি ফিরে যেতে উদ্যত হয়েছি এমন সময় তিনি আমাকে ডেকে পাঠান বা নিজেই ডাক দেন এবং জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘তুমি কি বলছিলে?’ আমি পুনরায় ঘটনাটি বর্ণনা করি। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত তুমি বাড়ীতেই থাকো।’ (মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/৮৭/৫৯১, সুনান আবূ দাউদ-২/২৯১/২৩০০, জামি‘তিরমিযী -৩/৫০৮/১২০৪, সুনান নাসাঈ -২/৫১০/৫১১, সুনান ইবনু মাজাহ-১/৬৫৪/২০৩১) সুতরাং আমি সেখানেই আমার ইদ্দতকাল চার মাস দশ দিন অতিবাহিত করি।’ অতঃপর ‘উসমান (রাঃ) তার খিলাফাতকালে আমাকে ডেকে পাঠান এবং এই মাস’আলাটি জিজ্ঞেস করেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ফায়সালাসহ আমার ঘটনাটি বর্ণনা করি। ‘উসমান (রাঃ) -এরই অনুসরণ করেন এবং এটাই ফায়সালা দেন।’ (মুওয়াত্তা২/৫৯১) আবূ দাঊদ (রহঃ) , তিরমিযী (রহঃ) , নাসাঈ (রহঃ) , ইবনু মাজাহ (রহঃ) -ও এটি বর্ণনা করেছেন। (হাদীস নং২/৭৭৩, ৪/৩১৯ও৩৯০; ৬/২০০, ১/৬৫৪) ইমাম তিরমিযী (রহঃ) এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
তালাক দেয়ার সময় অর্থ প্রদান করার যুক্তি
﴿ وَلِلْمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِیْنَ ﴾ তালাক প্রাপ্ত নারীদেরকে ‘মাত‘আ’ দেয়ার সম্বন্ধে জনগণ বলতোঃ ‘আমার ইচ্ছা হলে দিবো, না হলে না দিবো।’ তখন এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতটিকে সামনে রেখেই কেউ কেউ প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্ত নারীকেই, নির্দিষ্ট অর্থ নির্ধারণ করা না থাকলেও কিংবা একত্রে বসবাস না করলেও, কিছু অর্থ দেয়া ওয়াজিব বলে থাকতেন। আর কেউ কেউ এটাকে শুধুমাত্র এই সব নারীর স্বার্থে নির্দিষ্ট মনে করেন যাদের বর্ণনা পূর্বে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ঐ সব নারী যাদের সাথে সহবাস হয়নি এবং মোহরও নির্ধারিত হয়নি এমতাবস্থায় তালাক দেয়া হয়েছে কিন্তু পূর্ব দলের উত্তর এই যে, সাধারণভাবে কোন নারীর বর্ণনা দেয়া ঐ অবস্থার সাথে ঐ নির্দেশকে নির্দিষ্ট করে না। এটাই হচ্ছে প্রসিদ্ধ অভিমত। অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمْ اٰیٰتِه﴾ এভাবেই মহান আল্লাহ্ স্বীয় নিদর্শনাবলী হালাল, হারাম, ফারায়িয, হুদূদ এবং আদেশ ও নিষেধ সম্বন্ধে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যেন কোন কিছু গুপ্ত ও অস্পষ্ট না থাকে এবং যেন তা সবার বোধগম্য হয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings